বাস্তবতার আলোকে পর্ব-১
পৃথিবীতে সকল মানুষের মাঝে বর্তমানে দুটি বিশ্বাসই চালু রয়েছে। ১ম বিশ্বাস হল ঈশ্বর আছে বা আস্তিকতা, ২য় বিশ্বাস হল ঈশ্বর বলতে কিছু নেই বা নাস্তিকতা। যদি প্রমান করা যায় যে ঈশ্বর বলতে আসলেই কিছু নেই তবে শুধু শুধু এসব কল্প কাহিনী মানার কোন প্রয়োজন নেই। আর যদি ঈশ্বর বলতে সত্যিই কিছু থাকে এবং প্রমানও পাওয়া যায় তবে তা অবশ্যই বোঝা যাবে । তাই আমাদের এখন করনীয় হওয়া উচিত কোন মতবাদটি আসলে সঠিক তা বাস্তবতার আলোকে ভালভাবে নিরপেক্ষতার সংগে যাচাই বাচাই করে তারপর সেটিতে বিশ্বাস করা।
১মত দেখা যায় যে, নাস্তিকদের দাবী হল- ঈশ্বর বলতে কিছু নেই, জীবন একটাই আর এই জীবনেই সবকিছু এবং মৃত্যুর দারা সব শেষ। অর্থাৎ কোন কাজের প্রতিফল জীবন থাকতে না পাওয়া গেলে মৃত্যুর পর আবার পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু আস্তিকদের দাবী এর সম্পুর্ন বিপরীত, তাদের দাবী ঈশ্বর অবশ্যই আছেন এবং এই জীবনই শেষ নয়, মৃত্যুর পর ঈশ্বর দুনিয়ার জীবনের ভাল মন্দ কাজের বিনিময়ে অবিশ্বাষ্য পুরস্কার বা চরম শাস্তি দিবেন স্বর্গ ও নরকের দ্বারা, আবার বেশিরভাগ ধর্ম অনুযায়ি পরকালের জীবন হবে অসীম, আর স্বর্গ ও নরকও হবে চিরস্থায়ী। এমনকি ঈশ্বরকে না মেনে ভাল কাজ করলেও মৃত্যুর পর আগুনে জ্বলতে হবে চিরকাল। এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে, আস্তিকদের দাবী অবশ্যই গুরুত্বপুর্ণ ও মারাত্বক। তাই এই দাবীকে বাস্তবতার ভিত্তিতে ১০০ভাগ ভুল প্রমান না করা পর্যন্ত নাস্তিক হয়ে জীবন যাপন করা খুবই রিস্কি কারন এতবড় ১টি ব্যাপার। যেহেতু আস্তিকেরা এতবড় একটা দাবী করছে তাই প্রতিটা মানুষেরই ১ম কর্তব্য হওয়া উচিত ধর্ম নিয়ে ব্যাপক গবেষনা করে তারপর ১টা সঠিক সিদ্ধান্তে পৌছা এবং এক্ষেত্রে শুধুই অন্যের মতবাদ ও তথ্যের উপর উপর নির্ভর না করে প্রত্যেককেই স্বতন্ত্রভাবে পার্ট টাইম গবেষনা ও চিন্তাভাবনা করে সঠিক মতবাদে পৌছানোর মাধ্যমে সত্যিকারে সফলতা ও আত্ব্যতৃপ্তি অর্জন করা। ২য়ত দেখা যায় নাস্তিকদের দাবী হল- যেহেতু ঈশ্বর বলতে কিছু নেই তাই মৃত্যুর পর কোন জীবন এবং জবাবদিহিতা নেই। যদি নাস্তিকদের এই দাবীই ১০০ভাগ ঠিক হয় তবে দেখা যায় ঈশ্বর না থাকায় মৃত্যুর পর আস্তিক ও নাস্তিক সবাই পার পেয়ে যাচ্ছে। অথচ ঈশ্বরে বিশ্বাষী হওয়ায় আস্তিকেরা দুনিয়ার ভোগ-বিলাস(খাদ্য,বস্ত্র,যৌন,সম্মান ইত্যাদি) নাস্তিকদের তুলনায় তেমন কম করে না। আবার ঈশ্বরের ভয়ে অনেক ভাল কাজও করে এবং উন্নত জীবন যাপন করে, আর ইবাদত করে যে সময় টুকু নষ্ট করে তাতে সে আত্বতৃপ্তি পায় এবং মৃত্যুকে কম ভয় করে। অর্থাৎ ঈশ্বর না থাকলেও আস্তিকেরা তেমন একটা ঠকছে না এবং খুব বেশি বোকামীও করছে না তুলনামুলক ভাবে। কিন্তু যদি সত্যিই ঈশ্বর থাকে, তবে কিন্তু নাস্তিকদের কঠিন বিপদ কারন আস্তিকরা তখন বেঁচে গেলেও নাস্তিকদের পার পাওয়া অসম্ভব। অথচ নাস্তিকেরা ঈশ্বরকে না মেনে সারা জীবনে আর কতই সুখ-শান্তি করতে পারে আস্তিকদের তুলনায়, সত্তিকার্থে পুরোটা জীবনে সবক্ষেত্রেই কেউ পরিপূর্ণ সুখি হতে পারে না বরং মানুষের জন্ম ১মেই কান্না দিয়ে শুরু। তাই অল্প সময়ের এই জীবনে ঈশ্বরকে না মেনে সে কতই আর আরাম আয়েশ করবে, অথচ পরকালে তার বিনিময়ে অনন্তকাল সাস্তি ভোগ করবে, যদিও সে পাশাপাশি অনেক ভাল কাজও করে থাকে। তাই ঈশ্বরের অস্তিত্ব্য থাকলে দেখা যায় যে এই বিচারে, নাস্তিকরা হল বড়ই দুর্ভাগা এবং চরম বোকা । অথচ সাধারন বিচার বুদ্ধি বলে সত্যপন্থীদেরই বেশী লাভবান হবার কথা কিন্তু নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে দেখা যায় ঈশ্বর থাকলে বা না থাকলেও আস্তিকেরাই নাস্তিকদের চেয়ে বেশী লাভবান হচ্ছে এমনকি তুলনামুলকভাবে বেশি বুদ্ধিমত্তারও পরিচয় দিচ্ছে কেননা নাস্তিকেরা ঈশ্বর না থাকার পক্ষে সত্যিকারের স্পষ্ট কোন প্রমানই দেখাতে পারছে না ।
এখন বাস্তবতার আলোকে আমাদের দেখতে হবে যে, সত্যিই কি ঈশ্বর বলতে কিছু আছে ? সাধারনত নাস্তিকেরা যুক্তি দেখায় যে, মানুষ আসলে প্রকৃতির বিভিন্ন ভীতিকর জিনিস দেখে, মৃত্যু দেখে ভীত হয়ে বাঁচার জন্য এবং ভয় দূর করার উদ্দেশ্যে ঈশ্বরের ধারনা সৃষ্টি করেছে, আসলে ঈশ্বরের ধারনা মানুষের ১ধরনের কল্পনা মাত্র। কিন্তু আস্তিকেরা বলে-মানুষ তো বিভিন্ন শারিরিক রোগের ভয়ে ভীত হয়ে ঔষধ এবং চিকিৎসা শাস্ত্রের সৃষ্টি করেছে, কিন্তু চিকিৎসা শাস্ত্র তো আর শুধুই অবাস্তব কল্পনা নয় বরং বাস্তব সত্য। সবচেয়ে বড় কথা হল এসব সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য মানুষ ঈশ্বরের সরানাপন্ন হয়ে ১০০ভাগ ফল পেয়েছে, আর ঈশ্বরই দুনিয়াতে বিভিন্ন সমস্যা, মৃত্যু ও ভীতকর জিনিস তৈরী করে রেখেছেন যেগুলোর দ্বারা মানুষ নিজে থেকেই ঈশ্বরের দিকে ধাবিত হবে। তাছারা নিজে থেকে ঈশ্বরকে খুজে পাওয়ার ব্যাবস্থাস্বরুপ বিভিন্ন নিদর্শন যদি স্বয়ং ঈশ্বরই না করে রাখেন তবে মানুষগুলো ঈশ্বরকেই দায়ী করত। বিভিন্ন ভীতিকর জিনিস, মৃত্যু এসবই হল ঈশ্বরকে খুজে পাওয়ার ব্যাবস্থাস্বরুপ বিভিন্ন নিদর্শন ।
এবারে আসা যাক বাস্তবতার নিরিখে পরীক্ষা ও প্রমান। সব নাস্তিকেরাই বাস্তবতা দেখায় যে, ঈশ্বরের অস্তিত্ব্য থাকলে অবশ্যই বাস্তুবে আমাদের দৃষ্টিগোচর হত, তাই যাকে দেখি না তাঁকে মানিও না। এখন পরীক্ষা করা যেতে পারে যে, দৃষ্টির দ্বারা না দেখতে পাওয়া জিনিস মাত্রই অস্তিত্বহীন কিনা ? সাধারনত আমরা সবাই জানি যে, দেখা সম্ভব নয় কিন্তু অস্তিত্ব্য আছে এমন অনেক জিনিসই আছে আমাদের মাঝে, যেমনঃ এমন ১টি অস্তিত্ব্য হল-বাতাস। অদৃশ্য বায়ুকে দেখা সম্ভব না হলেও কিন্তু নাস্তিকেরা বায়ুকে অস্বিকার করে না কিন্তু ঈশ্বরকে অস্বিকার করে। আবার আমরা জানি যে, বিদ্যুৎ হল ইলেকট্রনের এক ধরনের প্রবাহ মাত্র। আর এই ইলেকট্রনের মাইনাস চার্জের প্রবাহের দ্বারাই বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়ে থাকে যাকেও খালি চোখ দিয়ে দেখা সম্ভব নয়। যেমনঃ বিদ্যুৎ পরিবহন করে যেসব বৈদ্যুতিক তার, সেসব তারের মধ্যে বিদ্যুৎ থাকাবস্থায় অনুবিক্ষন যন্ত্র দিয়ে শত চেষ্টা করলেও মানব চক্ষু দ্বারা বৈদ্যুতিক চার্জকে দেখা যাবে না কারন বিদ্যুৎ হল এক ধরনের শক্তি আর শক্তিকে কখনও চোখ দিয়ে দেখা সম্ভব নয়। তাই বলে কি নাস্তিকেরা বিদ্যুৎকে অস্বিকার করে ? সুতারাং প্রমান পাওয়া গেল যে, কখনো দেখা সম্ভব নয় কিন্তু অস্তিত্ব অবশ্যই আছে এমন অনেক জিনিসই এই পৃথিবীতে বিদ্যমান, বরং এসব অদৃশ্য জিনিসগুলো সাধারন দৃশ্যমান জিনিসের তুলনায় আরো বেশি মৌলিক শক্তির কারণ হয়ে থাকে। তাই সকল শক্তির স্রষ্টা ঈশ্বরকে মানব চক্ষু দ্বারা দুনিয়ায় দেখা না গেলেও তাঁর অস্তিত্বও অবশ্যই থাকতে পারে। এখন বাস্তবতার ভিত্তিতে প্রশ্ন হল, বিদ্যুৎকে তো বাল্ব জ্বালিয়ে বা টেস্টার দিয়ে এবং অন্নান্য যন্ত্র দিয়ে(পরীক্ষাগারে ইলেকট্রনের বীমসহ ল্যাপটনস) ইলেকট্রনের চার্জকেও তো প্রমান করা যায়, ঈশ্বরকে কি প্রমান করা যায় এবং বাতাসকে না দেখলেও তো সবাই অনুভব ঠিকই করতে পারে, ঈশ্বরকে কি সবাই এইভাবে অনুভব করতে পারে ? হ্যাঁ । ঈশ্বরকেও প্রমান করা যায়-সত্যিকারের বিশ্বাসী হয়ে তার ইবাদত করার পর তাঁর কাছে কোন জিনিস চেয়ে তা পাওয়ার মাধ্যমে এবং ঈশ্বর যা যা বলেছেন আমাদের ব্যাপারে বা আমাদের পরিপার্শ্ব সম্পর্কে, তা হুবহু সত্যে পরিনত হতে দেখার মাধ্যমে। তাছারা বাতাসকে ভালভাবে অনুভব করার জন্য অবশ্যই আমাদেরকে হয় প্রবাহমান বাতাসের কাছে যেতে হয় নয়তো কোন মাধ্যম দ্বারা বাতাসকেই আমাদের দিকে ধাবিত করতে হয়। ঠিক তেমনি ঈশ্বরকেও অনুভব করার জন্য বিশ্বাসী হয়ে ইবাদতের মাধ্যমে তাঁর সরনাপন্ন হতে হয়। এভাবে সৃষ্টির দ্বারাই স্রষ্টার প্রমান পাওয়া গেলেও ঈশ্বরের সমর্থ থাকার পরও দুনিয়াতে আমাদের সামনে দেখা দেন না কারন তাঁকে স্বচোক্ষে দেখলে সবাই ভাল কাজ করত, তাহলে পরীক্ষা বলতে আর কিছু থাকে না এই দুনিয়ায়, যার দ্বারা তিনি আমাদের পরবর্তীতে বড় ধরনের প্রতিফল দিবেন। সুতারাং "দেখা যায় না বলেই সেটির অস্তিত্ব্য নেই"নাস্কিকদের এই যুক্তিটি সম্পুর্নভাবে বাস্তবতা বিবর্জিত প্রমান হল ।
আবার নাস্তিকেরা বাস্তবতা দেখায় যে, মানুষ তো মৃত্যুর পর পঁচে গলে নিঃশ্বেষ হয়ে যায় তাই পরের জীবনে যায় কিভাবে ? কিন্তু বাস্তবতার নিরিখে আমরা জানি যে, মানুষ যখন ঘুমায় তখন ঘুমের মধ্যে যেসব স্বপ্ন দেখে তা শুধু তার কাছেই চরম বাস্তব অনুভুতি এবং ভীতকর বা সুখকর কোন ঘটনা যা তার মস্তিস্কে সত্যিই ঘটেছে যদিও সে স্বপ্নগুলোর কর্ম পরিপূর্নভাবে নিজস্ব অংগ দ্বারা করেনি তবুও ভীতকর বা সুখকর স্বপ্নের দরুন তার শরীরেরও কিছু প্রভাব পরে যেমনঃ তার নিঃশ্বাষ দ্রুত হয়, শরীর ঘামে এবং বীর্যপাতও হয়ে থাকে অতএব শুধুই মস্তিস্কের প্রভাবের কারনে ঘুমন্ত ব্যাক্তির কাছে স্বপ্ন হল ১টি অর্ধ বাস্তব ঘটনা। কিন্তু যেসব ব্যাক্তি তার পাশে নির্ঘুম, তাদের অভিজ্ঞতা হল সে একজন চিত হয়ে পরে থাকা অচল এবং স্থির ১টি বস্তু। ঘুমন্ত ব্যাক্তির সাথে স্বপ্নে কি কি ঘটছে তার কিছুই বুঝতে পারবে না । ঠিক একইভাবে কোন ব্যাক্তির যদি মৃত্যু ঘটে, তবে মৃত ব্যাক্তিটির কাছে আর স্বপ্নের মত অর্ধেক বাস্তব ঘটনা ঘটে না, তখন যা ঘটে তা হল পুরোপুরিই বাস্তব এবং শুধু তার সাথেই। আর এটিই হল মৃত্যুর পর আত্ব্যার অবস্থা। কিন্তু মৃত ব্যাক্তি ব্যাতীত সবাই দেখবে তার শুধুই দৈহিক অবস্থা যে, সে মরে পঁচে গলে যাচ্ছে। সত্যিকার্থে তার দেহ পঁচে গলে যাচ্ছে কিন্তু সে নিঃশেষ হয়নি বরং এখন দেহবিহীন অবস্থায় যা দেখছে তা হল পরিপূর্ণ বাস্তব। এখন প্রশ্ন হতে পারে যে স্বপ্ন যেমন মনের কল্পনা মৃত্যুর পরবর্তী জীবনও তেমন কল্পনা নয় তো ? উত্তর হল না! স্বপ্ন মনের কল্পনা হলেও মনের মধ্যে ঘটে ঠিকই তেমনি মৃত্যুর পরবর্তী জীবনও ঘটবে ঠিকই, ২য়ত প্রশ্ন- স্বপ্ন যে ১টি অর্ধ বাস্তব ঘটনা তার প্রমান কি? প্রমানস্বরুপ-যদি অন্ধ ব্যাক্তিকে অন্যের ঘরে বসিয়ে যদি বলা হয় এটা তার নিজের ঘর তবে সে তার মস্তিস্কের মাধ্যমে অন্যের ঘরেই নিজের ঘরের অনুভুতি লাভ করবে, আবার যে কারও হাতে অবসের ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে যদি মস্তিস্কের কানেকশন বন্ধ করে তার হাত কাটা হয় তবে সে কিছুই বুঝবে না, কিন্তু যেহেতু তার হাত ঠিকই কাটা হয়েছে তাই অনুভুতি ফিরে আসার পুর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত ঐ ঘটনাটি ১টি অর্ধ ঘটনা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হবে শুধু তার কাছেই। অর্থাৎ এর দ্বারা প্রমান হয় যে স্বপ্ন হল ঘুমন্ত ব্যাক্তির নিকট ১টি অর্ধেক বাস্তব ঘটনা কেননা মন বা মস্তিষ্ক ও শরীরের দুটোর প্রভাব থাকলেই কেবল পুর্ন বাস্তব ঘটনা বলা যাবে ,কিন্তু যদি শুধুই শরীর বা শুধুইই ব্রেনের প্রভাব থাকে তবে তাকে আধা বাস্তব ঘটনা বলতে হবে। আর এজন্যই মহান স্রষ্টা ঘুমকে অর্ধমৃত অবস্থা বলেছেন, এই সুত্রানুসারেই বুঝা যায় মৃত্যু হল এমনি ঘুম যে ঘুমের স্বপ্ন শুধুই স্বপ্ন নয় বরং বাস্তবতা। অথচ মৃত্যুর পর পুনুরুত্থান বুঝার জন্য ঘুমের মত এমন নিদর্শন থাকা সত্তেও নাস্তিকরা তা নিয়ে চিন্তা করে না।
আর সবচেয়ে বড় কথা হল ধর্ম সত্যিই ঠিক বলে প্রমান হয় তখনই, যখন দেখা যায় যে ঈশ্বর ধর্ম গ্রন্থে যা যা বলছেন তা সত্য বলে প্রমান হয়। অর্থাৎ বাস্তবতা, প্রতিষ্ঠিত সত্য এবং ভবিষ্যতবানী এসব ক্ষেত্রে ঈশ্বরের কথা আশানুরুপভাবে ঠিক প্রমান হলেই আর কোন সন্দেহ থাকার কথা নয় ধর্মের প্রতি। এক্ষেত্রে দেখা যায় যে, বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে ১মাত্র ইসলাম ধর্মই বাস্তবতা, প্রতিষ্ঠিত সত্য এবং বর্তমানে ঘটে যাওয়া ভবিষ্যতবানী সম্পর্কে একদম ১০০ভাগ সত্য বলেছে। যেগুলো পরের পর্বগুলোতে আলোচনা করা হবে। কিন্তু যেগুলো এখনও ঘটেনি বা শুধুই থিউরি অর্থাৎ প্রতিষ্ঠিত সত্য নয় সেগুলোর ব্যাপারে মানুষের মতবাদের সাথে ইসলাম ধর্মের অনেকটাই অমিল পাওয়া যায়। কিন্তু যখন সেই বিষয় গুলোও ঘটবে এবং মানুষও সেগুলোকে ১০০ভাগ প্রমান করবে, তখন দেখা যাবে সেগুলোও হুবহু ইসলাম ধর্মের কথার সাথে মিলে যাচ্ছে, তার কারন এই পৃথিবীর বুকে আর কোন গ্রন্থের কথা এত সত্য ও বাস্তবে পরিনত হয়নি। অথচ নাস্তিকেরা যে বিজ্ঞানের দোহাই দেয় সেই বিজ্ঞান আজ এটা বলছে কাল ওটা বলছে আর তারা যতগুলো গ্রন্থই পড়ুক না কেন সব গ্রন্থেই কিছু না কিছু ভুল আছেই। কিন্তু ইসলাম ধর্মের আল কোরআন গ্রন্থে মহান স্রষ্টা আল্লাহ(সুবঃ) সবাইকে চ্যালেঞ্চ করছেন যে- যদি এই কুরান আল্লাহ ছারা অন্য কারও কাছ হতে আসত তবে তাতে অবশ্যই অনেক ভুল থাকত। অর্থাৎ কুরানে ১টিও ভুল কেউ বের করতে পারবে না। এরকম নির্ভুল গ্রন্থ ১মাত্র সৃষ্টিকর্তার পক্ষেই তৈরী সম্ভব। তবে ইসলাম ধর্মের বিরোধিরা কুরানের অনেক ভুলই ধরেছে, তবে সত্য এটাই যে তারা যেসব ভুল ধরে অপপ্রচার চালিয়েছে তার সবগুলোই হল- ভাল আরবী না জানার কারনে ভুল ব্যাখ্যা এবং মিথ্যা অপবাদ। এসব ভুল ব্যাখ্যা এবং অপবাদগুলোকে ইসলাম ধর্মের বিজ্ঞরা আবার কুরান দ্বারাই সঠিক ব্যাখ্যা করে তাদের মিথ্যা অপবাদগুলোর জবাব দিতে মোটেও বিলম্ব করেনি। কিন্তু মিডিয়া ইসলাম ধর্মের বিরোধিদের হাতে থাকায় তা খুব কম মানুষই জানতে পেরেছে। আবার দেখা যায়, অন্যান্ন ধর্ম গ্রন্থগুলোরও কিছু কথা বাস্তবতা, প্রতিষ্ঠিত সত্য এবং ভবিষ্যতবানী এসব ক্ষেত্রে মিলে যায়। এসব কথা মিলে যাওয়ার কারন হল, ইসলাম ধর্ম বলে যে পূর্বে আল্লহ-ই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জাতির উপর নবীদের দ্বারা একের পর এক বিভিন্ন আসমানী কিতাব অবতীর্ণ করেছিলেন শুধুমাত্র নির্দিষ্ট একটি সময়কালের জন্য তাই কিছু কথা মিলে। কিন্তু অন্যান্ন ধর্ম গ্রন্থগুলোর অনেক কথাই মিলে না আল্লাহর বাণী হওয়ার পরও তার কারন, পরবর্তীতে মানুষেরা ধর্মগ্রন্থগুলোকে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী বিকৃত করে ফেলেছে, তাই বেশির ভাগই মিলে না। আর মানুষের দ্বারা বিকৃত হওয়ায় আল্লাহ(সুবঃ) শেষে কুরান অবতীর্ণ করেন সমস্ত জাতির উপর এবং অতীতের ধর্মগ্রন্থগুলোকে ব্যান্ড করে দেন আর ইসলামকে একমাত্র গৃহিত ধর্ম হিসাবে কেয়ামতের পূর্ব পর্যন্ত বহাল রাখেন । আর নবী সাঃ উপর আল্লাহ (সুবঃ) যে জিকর বা উপদেশবানী নাজিল করেছেন তার দায়িত্ব্যভার এবার স্বয়ং আল্লাহ(সুবঃ)ই নিয়েছেন বলেই হয়ত আজ ১৪০০বছর হয়েছে কিন্তু শুধুমাত্র যে উসমান রাঃ এর আমলে সংকলিত কুরানেরই ১টি অক্ষরও কেউ পরিবর্তন করতে পারেনি এমনটি নয় বরং নবী সাঃ এর অসংখ্য হাদিস ভান্ডারগুলোও আল্লাহ পাক এমনি ভাবে সহী ও জয়ীফ আলাদা করে সংরক্ষন করিয়েছেন যে অনেক বিধর্মী শত চেষ্টা করেও বিকৃত করতে পারেনি এবং পারবেও না।
আর সবচেয়ে বড় কথা হল- এই মহাবিশ্বের প্রভু মাত্র ১জনই এবং সত্য ধর্মও ১টিই। যদি ধর্ম বিভিন্ন হত তবে প্রভুও বিভিন্ন হত, আর এরকম হলে এক ঈশ্বরের সঙ্গে আরেক ঈশ্বরের যুদ্ধ লেগে এই দুনিয়াই ধ্বংস হয়ে যেত। তাই অন্নান্য ধর্মের অনুসারী এবং নাস্তিকদের এসব নিয়ে চিন্তা ভাবনা না করে জীবন যাপন করা অবশ্যই বড় ধরনের বোকামী ও রিস্কি।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০১৮ রাত ৮:৫২