ছেলেটা ছোটবেলায় খুব ইমোশনাল ছিল।সবাই বলতো তার নাকের ঢগায় রাগ।অল্পতেই ইমোশনাল হয়ে যেত। এখনো যে নেই তা কিন্তু না।তবে জীবনের বাঁকে বাঁকে ধাক্কা খেতে খেতে তা অনেকটা অক্কা পেয়েছে।আসলে জীবনে অনেক ধরণের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়েই তো তাকে যেতে হয়েছে।
ছেলেটিকে নিয়ে পরিবারের অনেক আশাই ছিল।কিন্তু ১২ বছরের শিক্ষাজীবনেই দুই দুই বার ফেল করে সবাইকে কষ্ট দিয়ে ফেলেছে।ইন্টারে চরম বাজে রেজাল্ট করে হতাশা জনক পুরো একটা বছর কাটিয়ে নিজের মধ্যেই গুটিয়ে গেছে।অনেকটাই হারিয়ে ফেলেছে নিজেকে। এই জীবনেই প্রিয় ৩টা মানুষের মৃত্যু দেখেছে।
ইন্টারে থাকতে MLM কোম্পানির প্রলোভনে পড়ে সবার অমতে বাবার ৫ হাজার টাকা একপ্রকার নষ্টই করেছে যা তাকে এখনো অপরাধী করে রেখেছে ফ্যামিলি থেকে এটা নিয়ে কিছু না বললেও।
একসময় ছেলেটি সবাইকে মেন্টাল সাপোর্ট দিত যাতে সে খারাপ সময়টা পেরোতে পারে। অথচ ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, সেই তাকেই একসময় অন্যের সাপোর্ট নিয়ে চলতে হয়েছে।খারাপ সময়ে একজন মানুষের মানসিক অবস্থা কেমন থাকে তা একমাত্র সেই মানুষটাই জানে যে ঐ অবস্থার মধ্যে দিয়ে গেছে।
এই বয়সেও নিজের পকেট খরচটাও নিজে চালাতে পারে না এটা তাকে খুব কষ্ট দেয়।এটা সব সময় তাকে খোঁচতে থাকে।সবসময় চেষ্টা করে বাবার উপর থেকে চাপটা কমাতে কিন্তু যখন সেটা পারেনা তখন তার কষ্টই লাগে। জানেন,ছেলেটা আগে খুব মজা করতো।একাই পুরো আড্ডা মাতিয়ে রাখতে পারতো। আর এসব করতে গিয়েই অনেকের কাছ থেকে অনেক কথাই শুনেছে।তাই এখন এসব বন্ধ করে দিচ্ছে। আগে ছিল বক্তা আর এখন হয়ে শ্রোতা। ভালই আছে এখন...
কষ্টগুলো সব সময় নিজের মধ্যেই রাখে।কাউকে কখনো বুঝতে দেয়নি নিজের ভিতরের জমানো কষ্টগুলোকে। সবসময় ফানি মুডে থেকে সবাইকে বিশ্বাস করিয়েছে সে খুব সুখী ছেলে। কতদিন যে ঘুমানোর সময় বালিশ ভিজিয়েছে তা কিন্তু কাউকে টের পেতে দেয়নি এমনকি পাশে শুয়ে থাকা বড়ভাইকেও না।
ছেলেটা অনেকের জন্য অনেক কিছুই করে দিয়েছে কিন্তু ফলাফল শূণ্য।সে এখন বুঝতে শিখেছে একতরফা কোন কিছুই ভাল নয়।
ছেলেটা সব সময় ভাবে সে এখনো নিজেকেই চিনতে পারে নি।তাই এমন কিছুর খোঁজ করছে যা তাকে " নিজেকে " চিনাবে।তার ভিতরের শক্তিটাকে চিনাবে,তা কাজে লাগাতে সাহায্য করাবে।এমন একটি জগত্ যেখানে তার নিজেকে রাজা মনে হবে...
ছেলেটা একটু স্বাধীনচেতা।কেউ তার উপর খবরদারি করবে, তার উপর কিছু চাপিয়ে দিবে এটা তার খুবই অপছন্দ।কিন্তু এটাই তারসাথে বেশি হয়....(চলবে)