নিমতলি ছাতা মসজিদের পাশে যে দু তলা বাড়িটা আছে তার নিচ তলায় স্তী ও একটি কণ্যা সহ আহসান সাহেবের বাস। তিনি ঢাকা কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক। কেন জানি পূ্র্ব পাকিস্তানের পতাকা কে তার আপন মনে হতনা। স্বপ্ন দেখেন একদিন তার মাতৃভূমিতে এমন এক পতাকা উঠবে যাকে অনেক আপন মনে হবে। ভাবেন এমন দিন আসবে যখন ছাএদের কষ্টকরে উর্দূ শিখতে হবেনা। সর্বোস্তরে চালু হবে বাংলা ভাষা। নতুন ঐ পতাকার স্বপ্নে মেয়ের নাম রেখেছেন ণিশান। নিশানের বয়স এখন ৩ বছর। একটু চন্চল স্বভাবের খুবই মিষ্টি মিয়ে সে। বাসায় কেউ নক করলে গেট সেই খুলবে, বিশেষ করে আহসান সাহেব নক করলে গেট তাকে খুলতেই হবে। বাবাকে দেখেই তার আবদার থাকে চকলেট।তাই বাড়ি ফেরার সময় মেয়ের জন্য চকলেট নিতে কখনো ভুল হয়না তার। মার্চ মাস চলছে। দেশটা দিনদিন যেন কেমন হয়ে যাচ্ছে। ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু জাতীর উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন। মনে হচ্ছে বাঙ্গালীরা নিজেদের দাবি ঠিক আদায় করে নিবে। এর মাঝে এসে গেল ২৫ শে মার্চ। ঘরে এসে দরজায় নক করলেন আহসান সাহেব। অন্যদিনের মত যথারীতি গেট খুলল নিশান আর সাথে সাথে চকলেটের আবদার, কিন্তু আজ তিনি চকলেট আনতে ভুলেগেছেন। কি করে যে এমন ভুল হল, তিনি কাল মেয়েকে অনেক চকলেট এনে দিবেন বলে মেয়ের কান্না থামালেন। রাত তখন বারটা হঠাৎ চারিদিকে গুলাগুলির শব্দ। নিশানের ঘুম ভেঙ্গে গেল। কারা যেন গেট এ জুরে জুরে ধাক্কা দিচ্ছে। হঠাৎ এক নিস্ঠুর ধাক্কায় দরজাটা ভেঙ্গে যায় আর গৃহে প্রবেশ কর হায়েনার দল।তারপর কিছু গুলির শব্দ। শেষ সব শেষ। না কিছুই শেষ হয়নি। এমন অনেক আহসান সাহেবের এমন অনেক নিশানের জীবনের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি আমাদের বিজয় নিশান।
(১৯৭১ আমি দেখিনি, তবে ইতিহাস থেকে যা জেনেছি তারই অবলম্বনে একটি কাল্পনিক ঘটনা তুলে ধরলাম। বাস্তবতা আরও নির্মম ছিল। ১৯৭১ এর সকল শহিদ কে জানাই আমাদের পরন শ্রদ্ধা। তোমাদের এই আত্বত্যগের বিনিময়ে আজ আমরা স্বাধীন। বাংলার আকাশে উড়ছে বিজয় নিশান।)
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই আগস্ট, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৪৯