পদ্মার পর মেরে ফেলার আয়োজন চলছে আমাদের আরেক বড় নদী মেঘনাকে। সঙ্গে সুরমা ও কুশিয়ারাকেও। ভারত ফারাক্কা বাঁধ ও তিস্তা ব্যারেজের পর এবার সুরমা, কুশিয়ারা ও মেঘনা নদী ব্যবস্থার মূল উৎসধারা বরাক নদীর ওপর টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ করে এনেছে। ফারাক্কা বাঁধের মাধ্যমে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বদ্বীপ অঞ্চলের নদ-নদীগুলো প্রায় মুমূর্ষু অবস্থায় উপনীত হয়েছে। ভারতের পানি আগ্রাসনের ফলে প্রমত্ত পদ্মা আজ ধু-ধু বালুচর। এর প্রতিক্রিয়ায় গোটা উত্তরবঙ্গেই চলছে মরুকরণ প্রক্রিয়া। 'মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা'র মতো ভারতের উত্তরবঙ্গের যোগীগোপা নামক স্থানে তিস্তা নদীতে বাঁধ দিয়ে এ মরুকরণ প্রক্রিয়াকে আরো ভয়াবহ সর্বগ্রাসী করে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলকে পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিয়েছে ভারত।
এখন তারা সুরমা-কুশিয়ারা নদী দ্বয়ের উৎসধারা বরাক নদীর ওপর টিপাইমুখ মাল্টিপারপাস বাঁধ নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ করে এনেছে। এ বাঁধ চালু হলে সুরমা-কুশিয়ারার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের পুরো উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সকল নদী ধীরে ধীরে মরে যাবে। একই সঙ্গে মেঘনা নদী ব্যবস্থার সাথে সম্পর্কিত দেশের পূর্বাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সকল উপনদী-শাখানদী ও মূল মেঘনা নদীও অন্তিম পরিণতির দিকে যাত্রা শুরু করবে। ফারাক্কার সময় আমরা ঘুমিয়েছিলাম, তিস্তা আগ্রাসনের সময় ছিলাম উদাসীন; আর সুরমা-কুশিয়ারা-মেঘনাকে মেরে ফেলার আয়োজনের সময় আমরা নির্বিকার। চুপচাপ অকারণে সদা তৎপর বুদ্ধিজীবী সমাজ, সাংবাদিক, মিডিয়া ও সরকার।
তথ্যসূত্র:
ভারতের টিপাইমুখ বাঁধ: আরেক অভিশপ্ত ফারাক্কা
ড. মোহাম্মদ আবদুর রব
প্রফেসর, ভুগোল ও পরিবেশ বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়