পড়ালেহা ভালো লাগে নাই কুনু কালেই আমার। তাই এই নিরস কামরে হগগলসুমি অপসোনাল হিসেবে নিয়া দুনিয়ার বাকি কাম নিয়া ব্যস্ত থাকছি। আমি জানতাম পড়াশোনা আমারে কোনোকালেই ভালো কিছু করবার দিবনা।তয় বাপের জোরাজুরি আর মায়ের প্যানপ্যানানি থিকা বাঁচার লাইগা কোনোরহমে অই করল্লাল রস পড়ালেহা চালু রাইখা আমি সরকারি কলেজ থিকা কৃতিত্বের সাথে স্নাতক (সম্মান ) পাস দিছি। এর মধ্যে সখিনার সাথে পিরিতটাও ভালোই জমছিল। মাগার জীবনে কিছু করতে পারুমনা বুঝতে পাইরা সেও ভাইগ্যা গেছে। বাপে কয় বাইর হ বাড়িত থিকা হারামজাদা। এত বড় ধামরা হইয়া গেছ, এতো বড় পাস (স্নাতক) তবু কোন কাম কাজ না কইরা খালি আমার অন্ন ধ্বংস করস। এই অপমান কী আর আমার কোমল পরানে সহ্য অয়! আমি মায়েরে বুঝাইয়া কোনরকমে লাখ দশেক ট্যাকা ম্যানেজ কইরা এম.পি স্যারের হাতে পায় ধইরা কইলাম, স্যার! আমার জীবন মরণ আপনার হাতে স্যার, গ্রামের ওই কলেজে যে কইরাই হোক আমারে ঢুকিয়ে দেন। হা হা হা ! আমি এখন ক কলেজের সম্মানিত প্রভাষক।বাপ এহন আর আমারে খুব একটা গালাগাল করেনা। নিজের পড়ালেহার অবস্থা, রেজাল্ট আর সখিনা জরিনার লগে ঘুইরা কাটানো সময় বিবেচনা কইরা আমি নিজেরে সান্ত্বনা দেই এই কইয়া যে , যার নাই কোন গতি , হ্যায় করে মাস্টারি।নিজের মনের মধ্যে এহন ইট্টু ভালোলাগন কাম করে। আহ! সারাজীবন ঘুইরা ফিরা , পড়ালেহা ভালো কইরা না করলেও আমি এহন জাতির মেরুদণ্ড গড়ার প্রজেক্ট হাতে নিছি। দাদি সবসুম কইত আমার নাতিটার রাজকপাল।আর আমার বাপে - মায় দাদির কথাটারে কুনুদিনই দাম দিতনা। অবশ্য আমিও কখনো দাম দেই নাই। কিন্তু আমি বা বাপে মায়ে কেউই তো আর জানিনা যে দাদির কথা অবশ্যই ফলবে, আমার কপাল আসলেই রাজকপাল। ভাইজান, আপনেরাও বুঝতাইছেন না যে আমার কেমনে রাজকপাল হইল। তাইলে হুনেন আমার রাজকপালী হওয়ার গল্প।।মাইনসে বি.সি.এস পরীক্ষা দেয়। এর জন্যি যে কী কষ্টডা করন লাগে তা যে পরীক্ষাডা দেয় হেই জানে। এইবার ৩৮ তম বি.সি.এস পরীক্ষায় ৩ লাখ ৯০ হাজার আবেদন জমা পড়েছে যেখান থেকে সর্বশেষ নিয়োগ পাবে মাত্র ২০২৪ জন। এর জন্য দিতে হবে ২০০ মার্কের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। এখানে টিকে থাকবে বড়জোড় ১০/১৫ হাজার। এরপর দিবে ৯০০/১১০০ মার্কের রিটেন পরীক্ষা। কী যন্ত্রণারে ভাই!!!এখানে পাস করবে ৪/৪.৫ হাজার। এরপর আসবে ২০০ মার্কের ভাইবা।ভাইবা বোর্ডে উপস্থিত হওয়া মানে ৩/৪ জন সম্মানিত সদস্যের প্রশ্নবাণে জর্জরিত হয়ে ক্ষতবিক্ষত হওয়া। হা হা হা। কেন যে পাগল গুলা বি.সি.এস পরীক্ষা দেয়!! ভাইবাতে পাস করবে হাজার তিনেক। ভাইয়া প্রায় চার লাখ থিকা কিন্তু হাজার তিনেকে নেমে আসছে সংখ্যাটা। ভাইবা পাস মানেই বি.সি. এস ক্যাডার নয় ভাইয়া।এরপর আছে স্বাস্থ্য পরীক্ষা। আবার আছে কয়েক ধাপে পুলিশ ভেরিফিকেশন। পুলিশ, এসবি. ডিবি, এন এস আই......। এখানেও বাদ পরে যাবে অনেকেই। এত প্যারা নিয়ে ক্যাডার হওয়ার কোন দরকার আছে???? আমার মতো একটা বেসরকারি কলেজের প্রভাষক হন সিস্টেম দিয়া, দেখবেন এক সকালে আপনিও হয়ে যাবেন আমার মতো শর্টকাট ওয়েতে ক্যাডার।
ভাইয়া খালি পড়ালেহা করিলিই হবেনা, শর্টকাট ওয়ে জানতি হবে। এবার বুঝলেন কেন আমি রাজকপালী?????
(প্রমিত ও আঞ্চলিক শব্দ একইসাথে ব্যবহার করার জন্য দুঃখিত}
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১০:০২