বেশ কিছুদিন আগের কথা, আব্বার অসুস্থতার কথা শুনে হঠাৎ বাড়িতে যেতে হল মুষল-ধারে নামা বৃষ্টি উপেক্ষা করে। খুলনা থেকে যশোর বেশ ভালভাবে গেলাম। যশোর থেকে মাগুরা আগে এক্সপ্রেস বাস যেত , এখন আর সেই সার্ভিস নেই ,সব লোকাল সার্ভিস হয়ে গেছে। টিকেট কাউন্টার থেকে টিকেট নিয়ে শূন্য একটা আসন দেখে বসে পড়লাম। এই রোডের কিছু নিয়ম আছে যেমন ঃ দূরের যাত্রী ছাড়া বসতে সিট দেওয়া হয় না, সবাইকে টিকেট নিতে হয় বাসে ওঠার আগে ইত্যাদি। আর কাছের যাত্রীরা বাস ছাড়ার পূর্ব মুহূর্তে বাসে ওঠে দাঁড়িয়ে থাকে।
অল্প সময়ে দেখি বাসে অনেক যাত্রী হয়ে গেছে। এর মধ্য একজন চল্লিশ ঊর্ধ্ব লোক আমার অনুমতি নিয়ে আমার পাশের সিটে বসে পরলেন। উনাকে বসতে দেখে বাসের হেল্পার ছেলেটি উনাকে বলল টিকিত নিতে অন্যথায় বাসে উঠা যাবে না। লোকটি নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে তর্ক শুরু করে দিল। পুলিশ লোকটির গন্তব্য যশোর শহর থেকে মাত্র ৫/৭ কি মিঃ দূরের মনোহরপুর, কাজেই লোকটিকে কোনভাবেই টিকেট দিবে না এবং সিট ও দিবে না । আর অন্যদিকে পুলিশ লোকটি টিকেট নিবে ও না আবার সিটে বসবে । মহা হট্টগোল বেধে গেল। এক পর্যায়ে কাউন্টার থেকে কত্রিপক্ষের লোক এসে উনাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলেন। পুলিশ লোকটি বললেন "আমি কি মাগনা যাচ্ছি, যা ভাড়া তাই দিব"। বাস সুপার ভাইজারের বিশেষ অনুরোধ ও ক্ষমা চাওয়ার(টিকেট কাটতে বলার অপরাধে) পরে উনি কিছুটা শান্ত হন এবং চালকের পাশের ইঞ্জিন কাভারের উপর বসতে সম্মত হন। আমি অবাক হলাম যখন দেখি তিনি আমার পাশের সিটেই বসে আছেন এবং পুলিশি ক্ষমতা নিয়ে একাএকা বকে যাচ্ছেন। অতঃপর একসময় টিকেট চেকার আসলেন আমি আমার টিকেট দেখালাম তারপর পুলিশ লোকটার কাছে ভাড়া চাইতেই টাকা দিয়ে দিলেন। টিকেট চেকার লোকটি দ্বিধান্বিত হয়ে টাকাটা নিলেন , বুঝলাম উনি কিছু বলতে যেয়ে ও বললেন না। এক সময় পুলিশ লোকটি নেমে গেলেন। আমি টিকেট চেকার লোকটিকে ডেকে জিজ্ঞেস করলান উনি কত টাকা দিলেন, উত্তরে পুলিশ নামে একটা গালি দিয়ে বললেন অর্ধেক ভাড়া ও দেইয়নি উপরন্তু ইঞ্জিন কাভারের পরিবর্তে সিটে বসেই গেল , যা কিনা দূরের যাত্রীদের জন্য নির্ধারিত।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুন, ২০১৩ রাত ৯:১৩