“নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি প্রত্যেক হিজরী শতকের শুরুতে একজন ব্যক্তিকে প্রেরণ করবেন, যিনি দ্বীন (ইসলাম) কে পুনর্জীবন দান করবেন”। [আবূ দাউদ শরীফ]
অর্থাৎ প্রত্যেক শতাব্দীর শুরুতেই এমন এক মহান ব্যক্তির আগমণ ঘটবে যিনি ইসলামকে পরিশুদ্ধ করবেন। মানে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নাম দিয়ে বিভিন্ন হারাম কাজ প্রবেশ করবে এবং তিনি সেই সকল হারাম কাজগুলো পরিষ্কার করে দিবেন। যেমন:
-পঞ্চম হিজরী শতাব্দীর মুযাদ্দিদ ইমাম গাজ্জালি রহমতুল্লাহি ইসলামের ভেতর থেকে টেনে বের করেছিলেন কুফরী গ্রিক দর্শনকে,
-ষষ্ঠ হিজরী শতাব্দীর মুযাদ্দিদ বড় পীর সাহেব রহমতুল্লাহি ইসলামের ভেতর থেকে বের করেছিলেন মুতাজিলাদের কুফরী আকিদাকে
-একাদশ হিজরী শতাব্দীর মুযাদ্দিদ হযরদ মুযাদ্দিদে আলফে সানী রহমতুল্লাহি ইসলামের ভেতর থেকে বের করেছিলেন কুফরী দ্বীন-ই-ইলাহিকে।
ঠিক তেমনি বর্তমানেও ইসলামের ভেতর ইসলামের নাম দিয়ে প্রবেশ করেছে
১) হারাম গণতন্ত্র
২) হারাম ছবি ও টিভি
৩) হারাম হরতাল, হারাম লংমার্চ
৪) হারাম নারী নেতৃত্ব
৫) হারাম খেলাধূলা
৬) হারাম গান-বাজনা
৭) হারাম সুদ
৮) মহিলাদের সাথে দেখা সাক্ষাত তথা বেপর্দা হওয়া
এরকম অসংখ্য হারাম উপাদান। বর্তমান নামধারী আলেম-পীর-সূফি-দরবেশ নাম দিয়ে এসমস্ত হারাম কাজগুলো নিদ্বিধায় করে যাচ্ছে। কিন্তু বর্তমান কালে একমাত্র রাজারবাগ দরবার শরীফের সম্মানিত পীর সাহেবই পবিত্র কুরআন হাদীসের দলিল দিয়ে প্রকাশ করেছেন এগুলো হারাম ও নাজায়িজ। কারণ তিনি মুজাদ্দিদ, তিনি কিন্তু পবিত্র ইসলামের ভেতরে কোন হারাম উপাদান প্রবেশ করতে দিবেন না। ইসলামকে পরিশুদ্ধ করবেন। কিন্তু পরিশুদ্ধ করতে গেলে বাদশাহ আকবরের দরবারী আলেম আবুল ফযল, ফৈজী, মোল্লা মুবারক নাগরীমত ভন্ডদের মুখোশ খুলে যায়। তখনই তারা এ জামানার সম্মানিত মুযাদ্দিদের বিরোধীতায় লিপ্ত হয়।
উল্লেখ্য, জৈনক রেজাখানী-মাইজভান্ডারী ঘরনার এক লেখক রাজারবাগ দরবার শরীফের সম্মানিত পীর সাহেবকে নিয়ে একটি বিশেষ অজ্ঞ গবেষণা তৈরী করেছে অনলাইনে। সে বলেছে, সে নাকি ৪ বছর গবেষণার করে লেখা তৈরী করেছে। কিন্তু, সত্য কথা হচ্ছে হয়ত এক-দুবার দরবার শরীফে এসে, কিংবা লোকমুখে শুনেই তার কথিত গবেষণালব্ধ ফল প্রকাশ করেছে। কিন্তু ফিল্ড পর্যায়ে সে কোন গবেষণা করেনি। যদি করতোই তবে এ মিথ্যা কথাগুলো লিখতে পারতো না। তবে বিরোধীতা করার জন্যই যদি বিরোধীতা হয় তবে ভিন্ন, হক্ব প্রকাশ তাদের উদ্দেশ্য নয়।
যেমন:
(১) ভণ্ড রেজাখানী-মাইজভান্ডারী ঘরনার মূর্খ লেখক বলেছে: রাজারবাগ দরবার শরীফের সম্মানিত পীর সাহেব নাকি বাসা থেকে বের হন না। মূর্খ লেখককে বলবো, সে যেনো রাজারবাগ দরবার শরীফের সম্মানিত পীর সাহেব সম্পর্কে ৬৪ জেলায় একটু খবর নিযে দেখে। নিলেই জানতে পারবে, তিনি প্রত্যেক জেলায় একাধিক বার (কোন কোন জেলায় ১৫-২০ বার) মাহফিল করেছেন, ওয়াজ নসিহত করেছেন। এমনকি রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, কিংবা সন্দীপের মত সমুদ্রের মাঝে কিংবা বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে দুর্গম এলাকাগুলোতেও ১০-এর উপর তিনি নিজেই ওয়াজ মাহফিল করেছেন। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন পত্রিকা-কিতাব প্রকাশনা, এবং দরবার শরীফে ৩৫৬ দিন ব্যাপী মাহফিল হওয়ায় তিনি সাধারণত বাইরে যান না, ভেতরেই কাজে ব্যস্ত থাকেন। এখানে জানার প্রয়োজন ঢাকা রাজারবাগ দরবার শরীফের সম্মানিত পীর সাহেব নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সম্মানার্থে ৩৬৫ দিনব্যাপী দরবার শরীফে (সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ বা ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ উদাযাপনে) মাহফিল করেন। সেখানে তিনি আগত সবাইকে পোলাও-গোশত তবারক হিসেবে খাওয়ান। একই সাথে তিনি দোয়া করেছেন, এ মাহফিল যেন অনন্তকাল ব্যাপী জারি থাকে। সুবাহানাল্লাহ। সত্যিই কথা বলতে, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতটুকু মুহব্বত থাকলে একজন সারা বছর এমনি অনন্তকাল ব্যাপী সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ মাহফিলের নিয়ত করতে পারেন ?? এবং এত এত খরচ করতে পারেন ?? এগুলো চিন্তা করা সাধারণ মানুষের পক্ষে কখনই সম্ভব নয়। তবে তিনি যেহেতু এ জামানার মুযাদ্দিদ তাই উনার পক্ষেই এ ধরনের চিন্তা ফিকির করা সম্ভব।
তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে ছোট লোকদের চিন্তাভাবনাগুলো সব সময় হয় ছোট লোকদের মত। তিনি কেন নিচে আসছেন না, তাদের মত ফুটপাতে ঘুরাঘুরি করছেন না, এটাই তাদের মাথা ব্যাথ্যার কারণ। ধরুন একজন সাধারণ মানুষ যদি চিন্তা করে, “হায়রে প্রধানমন্ত্রী কেন আমার মত রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে না ?? সে কেন গাড়ি দিয়ে ঘুরে ?? এত সিকিউরিটি কেন ?? আমার তো সিকিউরিটি লাগে না ?? তাহলে কি হবে ?? প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব অফিস আছে, সেখানে সে বসবে, সেখানে তার সাথে কথা বলতে হবে।
তেমনি রাজাবাগ দরবার শরীফের সম্মানিত পীর সাহেব একজন ওলী আল্লাহ। তিনি অসংখ্য গবেষণাধর্মী কাজের আঞ্জাম দিচ্ছেন, প্রতিদিন দৈনিক পত্রিকা আল ইহসান, মাসিক আল বাইয়্যিনাত এবং বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে, প্রতিদিন তিনি মাহফিল প্রধান অতিথি হয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন।কেউ যদি উনার সাথে দেখা চায়, তবে প্রতিদিন রাতে খানকাহ শরীফে দেখা করা উন্মুক্ত। এছাড়া জোহরের সময়ও চাইলে দেখা করা যায়। এছাড়া বিশেষ প্রয়োজনে ফজর, আসর, মাগরীবেও উনার খানকা শরীফে দেখা করা যায়। এখন কোন মূর্খ যদি একদিন দরবার শরীফে এসে কারো কাছে জিজ্ঞেস করে কিংবা নিজেই ধারণা করে ভাবে, তিনি মনে হয় কোন সমস্যা আক্রান্ত নাহলে দেখা যায় না কেন ?? তাহলে আর কি বলবো ?? পেচা অন্ধকারে থাকতে ভালোবাসে, তার কখন সূর্য দেখার সৌভাগ্য হয় না।
(২) রেজাখানী-মাইজভান্ডারী ঘরনার মূর্খ লেখক বলেছে: রাজারবাগ দরবার শরীফের সম্মানিত শাহজাদা কিবলা নাকি বাইরে বের হন না, শুধু কুরবানীর সময় বের হন। এখানে বলবো, মূর্খ লেখক এমনভাবে নাস্তিকদের মত লিখেছে মনে হচ্ছে কুরবানী সময় ছুরি নিয়ে বের হওয়া মনে হয় অপরাধীদের কাজ। অথচ ঈদের দিনে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সবচেয়ে পছন্দের কাজটি হচ্ছে রক্ত প্রবাহিত করা। আর শাহজাদা কিবলা ঐ পছন্দের কাজটি করার জন্য নিচে আসেন, এটা দোষের কি আমি বুঝলাম না।
পাশাপাশি আরো বলতে হয়, ছোটলোকের চিন্তা ছোট লোকের মত, সে প্রাসাদের মধ্যে রাজা-বাদশাহরা কি করে সেটা বুঝবে কিভাবে?? যেমন হযরত শাহজাদা কিবলা তিনি সবার আড়লে থেকে কি কি করেন সেটা বুঝার জন্য আমি যা দেখেছি তাই বলছি,
ক) তিনি একটি ইসলামীক সৌর ক্যালেন্ডার চালু করেছেন, যার নাম আত তাক্বউইমুশ শামসি। কারণ মুসলমানরা এখন খ্রিস্টানদের খ্রিস্ট ক্যালেন্ডার ইউজ করে যেটা প্রত্যেকটি নাম বিভিন্ন দেব-দেবী ও কাফিরদের নাম অনুসারে। মুসলমানদের যে একটি পৃথক সৌর ক্যালেন্ডার প্রয়োজন এটা আবিষ্কার করা তো দূরের কথা, এটা যে দরকার সেটাই কেউ কখন চিন্তা করেছে কিনা সন্দেহ। এ বিশেষ ক্যালেন্ডার সম্পর্কে জানতে এ লিঙ্কটি দেখতে পারেন: http://attaqweemush-shamsi.net/
খ) তিনি একটি বই প্রকাশ করেছেন, নাম: “বিজ্ঞান-ই মুসলমানগণ উনাদের অবদান” (বইটি আপনারা দরবার শরীফের কিতাব বিক্রয় কেন্দ্র থেকে সংগ্রহ করতে পারেন)। এ বইটিতে দলিল প্রমাণসহকারে প্রকাশ করা হয়েছে প্রত্যেকটি বড় বড় আবিষ্কার মুসলমানরেই করেছে কিন্তু কাফিররা চুরি করে তাদের নামে চালিয়ে দিয়েছে। এ বইটির প্রথম খণ্ড বের হয়েছে, আরো কয়েকশ’ খণ্ড ইনশাআল্লাহ বের হবে। এ ইতিহাসগুলো নির্ভেজালভাবে বের করে প্রকাশ করার জন্য কঠোর পরিশ্রমের দরকার রয়েছে। যেটা তিনি নিরলসভবে করে যাচ্ছেন। এ্ই বইগুলো যে বর্তমান ও পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কি উপকারে আসবে সেটা যারা বুঝার তারা বুঝবে। কিন্তু মুসলমানদের জ্ঞান বিজ্ঞানের পুরো ইতিহাস যে একত্র করে প্রকাশ করা দরকার সেটা কয়েজনে চিন্তা করেছে বলুন তো ??
আমি আবার বলছি, ওলী আল্লাহদের কাজ ওলী আল্লাহদের মত। মুযাদ্দিদদের কাজ মুযাদ্দিদদের মত। উনাদের চিন্তাধারা কার্যক্রম সবকিছু সাধারণ মানুষের জ্ঞানের উর্ধে। কিন্তু ছোট লোকরা চিন্তা করে ছোট লোকদের মত, তাদের চিন্তা কি করে পীর-মুরিদি নাম দিয়ে কিছু ধান্ধা করা যায়, কি করে নারী নেতৃত্ব করে কিছু ক্ষমতা পাওয়া যায়, কি করে খোটা-খুটি করে কিছু প্রচার পাওয়া এতটুকুই। কিন্তু রাজারবাগ দরবার শরীফের সম্মানিত পীর সাহেব এবং উনার সম্মানিত শাহজাদা উনারা সমস্ত উম্মাহ’র জন্য কাজ করে যাচ্ছেন, সেটা এ সমস্ত মূর্খদের পক্ষে অনুধাবন করা কষ্মিনকালেও সম্ভব হবে না।
(এটা প্রথম পর্ব, পরেরগুলো আসছে। আমার লেখা পড়ার পর যদি আপনারা সত্যতা যাচাই করতে চান, তবে দরবার শরীফে এসে সত্যতা যাচাই করতে পারেন, কোন সমস্যা নেই।)