ছোটবেলা থেকেই আমি বইপড়ুয়া মানুষ | আমার বাবা বাংলার লেকচারার হওয়াতে না চাইতেই অনেক বড় একটা গিফট আমি পেয়েছিলাম আর তা হলো আমার আব্বুর গড়ে তোলা বিশাল লাইব্রেরি | আমি শরত্চন্দ্র,হুমায়ূন আহমেদ,সমরেষ মজুমদার সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অনেক লেখক এর বই পড়তাম নাওয়া খাওয়া ফেলে |সৃজনশীল পরীক্ষায় না আসলেও আমি বারবার রিভাইস দিতাম বইগুলো, প্রত্যেকবারই যেন নতুন সাধ পেতাম বইগুলো পড়তে গেলে | তবে এখন আমি কেন জানি সেই সাধের বইগুলো বা নতুন কোন বই পড়তে পারছি না অন্য এক বই আমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকে|
বুঝতে পারছি কেন জুকারবার্গ এই নীল জগতের নাম রেখেছিলেন চেহারা বই (ফেসবুক এর আক্ষরিক অনুবাদ) |আজ চেহারাবই আমাকে কারনে অকারনে ডাকছে, দিনে দুপুরে ডাকছে, ঘরে বাইরে ডাকছে | চেহারা বই, অন্য বই থেকে আলাদা কারন এর আছে অসীম সম্মোহন ক্ষমতা ঠিক যেমনটা নবমী রূপসীর মাঝে থাকে | যখন একবার কেউ এর মোহে পড়ে তখন এটা ঐ মানুষের সবচেয়ে প্রিয় ও গুরুত্বপূর্ন বিষয়গুলোকে তুচ্ছ করে তাকে নিয়ে বেশী বেশী ভাবার বিস্তীর্ণ ক্ষেত্র তৈরি করে, বাধ্য করে শুধুমাত্র তাকে নিয়ে আবিষ্ট থাকতে | এই একটা কারনেই এটা ভয়ঙ্কর |
চেহারা বই ও আমার পড়া আগেরত বইগুলোর আপেক্ষিক অসাধারনত্ব নিয়ে দুই শুক্লকেশপক্ক্বরা যতই তর্কাতর্কি করুক এর ভালো দিকটা নিয়ে কাজ করা সত্যিই কঠিন | বলছি না এর ভালো দিকটা নেই ,আছে এবং তা অসীম পরিমান ই আছে |
আমার মনে হচ্ছে আমি মোহাবিষ্ট হয়ে যাচ্ছি | যেকোন কিছুর প্রতিই মোহ জিনিষটা খারাপ | আমি চেহারা বইয়ে থাকতে চাই তবে মোহ আবিষ্ট হয়ে নয় |
তাই মোহবিভ্রট জয়ের প্রতীক্ষায়......