আজ বিকেল বেলা আপনাকে দেখলাম। কালবিলম্ব না করেই, রিক্সা থেকে বাসার সামনে নেমে সোজা গেটের ভিতরে চলে গেলেন। দূর থেকে কয়েক সেকেন্ডের দেখাতেই আমি বলতে পারছি অনেক লক্ষণীয় পরিবর্তন আপনার মাঝে। এই যেমন চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল, স্বাস্থ্য টাও কেমন জানি শুকিয়ে গেছে। কেনো এমন হল শুনি?? আপনার কি এতোই পড়াশুনার চাপ?? নাকি রাতে ঠিক মত ঘুম হয় না আপনার??
মাথা উঁচু করলেই হয়তো আমাকে দেখতেন। আমি একটু দূরে আপনার সামনেই ছিলাম। জানেন আপনি আমাকে দেখেন নি বলে আমার খুবই মন খারাপ হয়েছিল। কি হতো একটু তাকালে। হয়তো এই যুবকের মনে শ্রাবণের ঝড় বয়ে যেতো, লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলতো কিংবা রচনা করে ফেলতো নতুন কোনো গানের লিরিক্স। আর সেই গান গেয়েই সারারাত পার করে দিতো ছেলেটা।
মজার কথাটা শুনুন এবার। গত কয়েক রাত থেকে আপনাকে স্বপ্নে দেখা হয়। আগেও দেখতাম। কিন্তু বিরতহীন ভাবে এতো দীর্ঘ সময়ের জন্য না। আপনার মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে, নীল শাড়ি পড়ে মাঝ কপালে ছোট্ট লাল টিপ দিয়ে ভালোবাসার ঝুম বৃষ্টিতে ভিজতে। আমিও ঠিক আপনাকে একই রূপে দেখি। পার্থক্য শুধুমাত্র ঐ লাল টিপে। আমি যে আপনার কপালে পর পর দুটো টিপ দেখতে পাই। কপালে দুটো টিপ দিলে কিন্তু আপনাকে দ্বিগুণ সুন্দর লাগে। কখনো ট্রাই করেন নি বুঝি...? একদিন অবশ্যই ট্রাই করবেন। শুনছেন, আমিও তখন ঘুমকে পাত্তা না দিয়ে লেগে পরি আপনাকে কাগজ পেন্সিলে আঁকতে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। তখন আরো মন খারাপ হয়ে যায়। কি দরকার স্বপ্নে আমার সাথে ছলনা করার। স্বপ্নে না এসে সরাসরি এলেই তো পারেন।
ভালো কথা। আপনার চশমা টা কোথায়?? অনেকদিন পড়তে দেখি না যে?? আপনি জানেন ঐ চশমা পড়া চোখ দুটি’র মায়াবী সৌন্দর্য আমার চারপাশ অন্ধকার করে দেয়। শুনেছি আপনাকে আপনার ভার্সিটি’র ফ্রেন্ডরা কি একটা অদ্ভুত নাম ধরে ডাকে। আমার কিন্তু এই নাম একদম ভালো লাগে না। ওদের কে না করে দিবেন ঐ নামে ডাকতে। আমি ওদের সাথে মারপিট করতে যেতে পারবো না। আমার বাংলা সিনেমার নায়কদের মত এতো শক্তি নেই। আপনার এতো সুন্দর একটা শব্দবহুল নাম থাকতে ওরা অন্য নামে ডাকতে পারবে না। আমার এক কথা আমি বলে দিলাম।
সবসময় চুলে খোপা করবেন। বেণী করলে আপনাকে একদমই ভালো লাগে না। তবে, হ্যাঁ। ভার্সিটিতে যেতে বেণী করে যাবেন। কারন, আমি চাই না অন্য কেউ আপনার খোপার দিকে তাকাক। আমিই শুধু চুপিসারে আপনার খোপাতে তেত্রিশ টি ঘাসফুল গুজে দেয়ার অধিকার রাখি। আর কেউ না।
আপনি এতো সকাল বাসা থেকে বের হন কেনো। ভার্সিটি বাসের জন্য সবার আগে লাইনে দাঁড়াতে হবে না। কাক ডাকা ভোরে আপনাদের পাড়ার রাস্তাটা বেশি সুবিধার না। বখাটে ছেলেদের আস্তানা একটা। ১০ মিনিট লেট করে বের হবেন। একটু দেড়ী করে বের হলে খুব একটা অন্যায় হবে না।
ক্লাশ শেষ করে একা একা মন খারাপ করে বসে কাকে ভাবছিলেন ঐদিন?? আমাকে বুঝি?? আপনার মন খারাপের চেহারা আমি যেনো আর না দেখি। মন খারাপ করা আপনাকে মানায় না। আপনার হাসিমুখ দেখলে সবকিছুই আমার কাছে রঙিন মনে হয়। মনে হয় সাদাকালো দিনগুলো বুঝি শেষ হতে চলল।
আমাকে ছাড়া আপনার চলবে না, সে আমি জানি। হ্যাঁ, চিঠিটা পাওয়ার পর এই উদাস মনের পাগল ছেলেটাকে কষ্ট করে খুঁজে নিয়েন। নির্দিধায় শর্তবিহীন ধরা দিবো। ছেলেটি আপনার বুকে মাথা রেখে পূর্ণিমার চাঁদ দেখতে চায়। ভিজতে চায় বর্ষার বৃষ্টিতে। দূর থেকে আর আপনাকে কেয়ার করতে পারবো না। ভালোবাসি বলে কি সব দায় আমারই।
ইতি,
বাউন্ডুলে ছেলেটা।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:০৪