গত ২২ জুলাই জি আর ই'র পর্ব শেষ করলাম।
কিন্তু জি আর ই'র প্রস্তুতির জন্যে দীর্ঘদিন পড়াশোনা এবং প্রচুর ঘাটাঘাটি করতে হয়েছে । কিছুদিন পর হয়তো ভুলে যাবো, কিন্তু এই অভিজ্ঞতা গুলো হয়তো অনেকের কাজে লাগতে পারে, তাই যতোটা পারি এতোদিনের লব্ধ জ্ঞান সবার সাথে শেয়ার করার প্রয়াস নিচ্ছি ।
আমি পরীক্ষা দিয়েছিলাম পুরনো পদ্ধতিতে, সো নতুন পদ্ধতি সম্পর্কে খুব ভালো হয়তো লিখতে পারবো না, কিন্তু গুরুত্বপুর্ন কিছু তথ্য দিতে পারবো আশা রাখি ।
প্রয়োজনীয় বইসমুহঃ
১. ব্যারন'স নিউ জি আর ই ( কোন বিকল্প নাই)
২. ওয়ার্ডস্মার্ট ফর নিউ জি আরই
৩. নোভা জিআরই ম্যাথ বাইবেল ( এই বই এর ম্যাথ সলভ করে গেলে ভালো স্কোরের নিশ্চয়তা দেয়া যায় )
৪. আরকু'স জি আরই (শুধুমাত্র এসে'র জন্য )
এই কয়টি বইই আপনার জি আর ই'র প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট । তাই মনোযোগ দিয়ে এই বইগুলোই শেষ করেন । বেশি বইয়ের পিছনে অযথা সময় নষ্ট করে লাভ নেই ।
অ্যানালাইটিক্যল রাইটিং: নতুন জি আরই তে শুধুমাত্র এই অংশটাই অপরিবর্তিত আছে । তাই এটা নিয়ে নতুন করে খুব বেশি কিছু বলার নেই । আরকু'র স্যাম্পল গুলো দেখে যাবেন কিন্তু পরীক্ষায় সম্পুর্ণ নিজস্ব চিন্তাভাবনা থেকে লিখতে হবে । কারও সাথে মিলে গেলে সেটা plagiarism হিসেবে গণ্য হবে ।
ভার্বালঃ এ
ই অংশের জন্য প্রায় সবারই প্রশ্ন ওয়ার্ড মুখস্ত করতে হবে কি না? যদিও সরাসরি অ্যান্টনিম অ্যানালজি'র মতো প্রশ্ন থাকবে না তার পরও ভোকাবুলারি মুখস্ত অ্যাভয়েড করার কোন উপায় নেই । কারণ ভোকাবুলারি স্ট্রং করে না গেলে সেন্টেন্স কমপ্লিশন, কম্প্রিহেনশন সব জায়গাতেই অপরিচিত শব্দের বাহার দেখে ভিমড়ি খেতে হবে ।
এজন্যে, ওয়ার্ড শেখার জন্য পড়তে পারেন ওয়ার্ড স্মার্ট ১ এবং ২ । মোটামুটি এটা মুখস্ত করলেই ৯০% ওয়ার্ড কমন পাওয়ার কথা ।
সেন্টেন্স ইকুইভালেন্টঃ নতুন জিআরই'র সবচাইতে সহজ পার্ট বোধ হয় এই টা । একটি ব্ল্যাংকের জন্যে ৬টি থেকে উপযুক্ত ২টি ওয়ার্ড বেছে নিতে হয় । একই ব্ল্যাংকে তো ২ টি সিনোনিমাস শব্দই বসার কথা । তাই আগেই অ্যানসার চয়েস থেকে সিনোনিমাস ওয়ার্ড ২ টি বের করে ফেলুন এরপর প্রশ্ন দেখুন ।
রিডিং কম্প্রিহিনসনঃ এই পার্টটা সকল জিআরই পরীক্ষার্থীর জন্যই অত্যন্ত কঠিন । কিন্তু তাই বলে তো ছেড়ে দেয়ার উপায় নেই ! এজন্যে আসলে প্র্যাকটিস এর কোন বিকল্প নেই । অনলাইনে প্র্যাকটিসের জন্য কিছু সাইট আছে, ওখান থেকেই প্র্যাকটিস শুরু করতে পারেন কারন পরীক্ষায় তো আপনাকে স্ক্রিনেই পড়তে হবে । বড কমপ্রিহিনশন সলভ করার জন্য সবচাইতে উপযুক্ত টেকনিক হচ্ছে একটানে পুরো কম্প্রিহিনসন টা পড়ে ফেলা । জি আর ই পরীক্ষায় সাধারণত সরাসরি কোন প্রশ্ন থাকে না, তাই আপনাকে কম্প্রিহিনসনে ব্যাক করতে হবেনা বেশিরভাগ সময়ই । আপনি যদি মুল থিমটা বুঝে নিতে পারেন তাহলে বেশিরভাগ প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেয়া আপনার পক্ষে সম্ভব হবে । এজন্য দ্রুত বুঝে পড়ার অভ্যাস করতে হবে । প্রচুর প্র্যাকটিসের প্রয়োজন । ৫ মিনিটের মথ্যে বড় কম্প্রিহিনসন পড়ে বুঝে ফেলতে হবে । অনেকদিন প্র্যাকটিস করলে এটা খুবই সম্ভব ।
আর মাল্টিপল ব্ল্যাংক সেন্টেন্স কম্প্লিশনের জন্য প্রচুর প্র্যাকটিসের কোন বিকল্প নেই । ড. রাজু তে প্র্যাকটিস টেস্ট দিতে পারেন ( নতুনটার জন্যে এসেছে কিনা জানি না), পুরনো ফরম্যাটেও যদি হয় তারপরও । টেস্টগুলো দিলে আপনার পারফরম্যান্স অনেক বাড়বে, এতে কোন সন্দেহ নাই ।
কোয়ান্টিট্যাটিভঃ
এই পার্টটাও অনেকটা আগের মতোই রয়ে গেছে, শুধু ২৮ টার জায়গায় ২০ টা প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে ৪৫ মিনিটের জায়গায় ৩০ মিনিটে ।
ম্যাথ এর জন্য নোভা'র জিআরই ম্যাথ বাইবেল সলভ করবেন । এটাতে সহজ থেকে শুরু করে অনেক কঠিন কিছু ম্যাথও আছে । এটা সলভ করলে সব লেভেল এর ম্যাথ এর সাথে পরিচিত হবেন । এখনকার পরীক্ষায় অনেক কঠিন কিছু ম্যাথ আসে ।
ম্যাথ পার্টের মধ্যে সবচাইতে কনফিউজিং হচ্ছে কম্পারিজন গুলো । প্রচুর প্র্যাকটিস করুন আর আনসার করার আগে নানা ভাবে মান বসিয়ে চেক করে নিবেন । এছাড়া আর যেটা কঠিন আসে তা হচ্ছে ডাটা ইন্টারপ্রিটেশন । অনেক সময় খায় । এটার বিষয়েও সতর্ক থাকবেন ।
নতুন জিআরই'র সবচাইতে বড় পেইন হচ্ছে ২টা করে সেট অ্যানসার করা । একটা করে সেট অ্যানসার করার পর শক্তি বা মানসিক অবস্থা কোনটাই থাকে না । এসময় ১০ মিনিটের একটা ব্রেক পাবেন । এই ব্রেকটাকে ভালোমতো কাজে লাগাতে হবে । সাথে স্ন্যাকস কিছু নিয়ে নিবেন । চকলেট হলে আরো ভালো হয় ।
এই হচ্ছে নতুন জি আর ই নিয়ে মোটামুটি আলোচনা । যদি কিছু মিস করে থাকি প্লিজ ধরিয়ে দিবেন ।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০১১ রাত ১:৪০