অনলাইনে যারা টাকা আয় করতে ইচ্ছুক অথচ টেকনিক্যাল কোন কাজ জানেন না তাদের জন্য সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন নিয়ে কয়েকটি পর্ব লিখেছিলাম । যারা নিয়মিত পড়তে পেরেছেন তারা নিশ্চয়ই কিছু না কিছু শিখতে পেরেছেন, কিন্তু যারা মাঝামাঝি পর্ব থেকে পড়তে শুরু করেছেন বা যারা একটি পর্বের পর বাকিগুলো আর পড়তে পারেন নি তাদের জন্য সবগুলো পর্ব একসাথে সংকলন করে প্রকাশ করছি ।
অনলাইনে টাকা আয় । টার্মটা বেশ জনপ্রিয়, শুধু বাংলাদেশে নয় সারা পৃথিবী জুড়েই । আর এই জনপ্রিয়তাকে পুজি করে জালিয়াতিও হচ্ছে অসংখ্য । এটা ঠিক যে অনলাইনে আয়ের অনেক বাস্তব (লেজিট) সুযোগও রয়েছে । আমাদের মতো দেশের জন্যে তো এটি একটি অপার সম্ভাবনা।
যারা কম্পিউটার সায়েন্সের ছাত্র অথবা কম্পিউটার প্রোগ্রামিং এর খুটিনাটি জানেন, তারা সহজেই ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে ওয়েবসাইট ডিজাইনিং বা প্রোগ্রামিং এর কাজ পেয়ে যান । কিন্তু যারা আপনার আমার মতো আমজনতা অর্থাৎ প্রোগ্রামিং না জানা পাবলিক, তাদের উপায় কি?
অনেকেই অ্যাডসেন্স নিয়ে চেষ্টা করেন, কিন্তু সত্যিকার অর্থে অ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে আয় করা অনলাইনে অন্য যে কোনো মাধ্যম এর চাইতে কঠিন। View this link
অনেকে ডাটা এন্ট্রি'র কাজ করেন । কিন্তু ডাটা এন্ট্রিতে অনেক বেশি কম্পিটিশন । আর রেটও অনেক কম । একই কাজ দীর্ঘ সময় ধরে করতে হয় যা আসলেই চরম বিরক্তিকর ।
ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে বাংলাদেশী যারা কাজ করেন তাদের বেশির ভাগই হয় প্রোগ্রামিং নয়তো ডাটা এন্ট্রির কাজ করেন ।
আমি যে লাইনে কাজ করি সেটা হচ্ছে সেলস এন্ড মার্কেটিং । এর মধ্যে রয়েছে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, সোশাল মিডিয়া মার্কেটিং এবং ইমেইল মার্কেটিং । সবগুলো কাজই মোটামুটি সহজ এবং কোন টেকনিক্যাল জ্ঞানের প্রয়োজন নেই । তবে ভালো ইংরেজী জানাটা বাধ্যতামূলক । আর যে টাকা পাওয়া যায় তা ডাটা এন্ট্রি'র চাইতে কমপক্ষে দশগুণ বেশি ।
আমি মেইনলি সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের কাজ করি ।এই কাজটি মোটামুটি সহজ হলেও এর জন্য প্রচুর পড়াশোনা করতে হবে । আর অবশ্যই অধৈর্য হওয়া চলবে না ।
যদি এই লাইনে শুরু করতে চান তাহলে পড়াশুনা শুরু করে দিন । কয়েকটি জনপ্রিয় এসইও ফোরাম আছে যেমন ডিজিটালপয়েন্ট, সাইটপয়েন্ট, এসইওচ্যাট এগুলোতে অংশগ্রহণ করেন । রেগুলার পার্টিসিপেশন আপনার এসইও বেসিক টা তৈরি করে দিবে ।
আরেকটা কথা, ভুলেও ভাববেন না যে ৫-১০ দিন পড়াশোনা করেই এস ইও শিখে ফেলবেন । আগেও বলেছি, এখনও বলছি প্রচুর ধৈর্য লাগবে এ পেশায় সফলতা লাভ করতে । কিন্তু টানা ২-৩ মাস যদি পড়াশোনা + নিজের কয়েকটা সাইটের জন্যে কাজ করেন, আমার বিশ্বাস ততোদিনে আপনি একজন এসএও এক্সপার্ট হয়ে যাবেন ।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন শেখাটা খুব সহজও না আবার কঠিনও না । একটা জিনিস দরকার শুধু, লেগে থাকার মানসিকতা । আপনি যদি আগে কোন ফ্রিল্যান্সিং কাজ করে না থাকেন, তবে আপনি শুরু করতে পারেন এসইও এক্সপার্ট হিসেবে । কিন্তু এজন্যে আপনাকে সত্যি সত্যি এক্সপার্ট হতে হবে । যতদিন পর্যন্ত আপনি নিজেকে এসইও এক্সপার্ট মনে করতে না পারেন তত দিন পর্যন্ত ভুলেও কোন এসইও কাজে বিড করবেন না । একবার নেগেটিভ ফিডব্যাক পেয়ে গেলে কাটিয়ে উঠাটা অনেক কষ্টকর ।
প্রথমে আপনি কাজ শুরু করতে পারেন নিজের সাইট বা ব্লগ নিয়ে । ফ্রি ব্লগের জন্য ব্লগার এবং ওয়ার্ডপ্রেস ডট কম বেস্ট । যাদের ব্লগ নেই তারা সহজেই তৈরি করে নিতে পারেন । আপনি যে বিষয়ের উপর লিখবেন সেটা যেন অবশ্যই ইউনিক হয় । আপনি অন্যান্য সাইট থেকে তথ্য নিতে পারেন কিন্তু সেন্টেন্সগুলো অবশ্যই নিজের হতে হবে । অন্যথায় কারো কন্টেন্ট নকল করলে কখনোই আপনি সার্চ ইঞ্জিনে পজিশন পাবেন না ।
আপনার কন্টেন্ট থেকে উপযুক্ত কিওয়ার্ড নির্বাচন করুন । কিওয়ার্ড হচ্ছে সেই সকল ওয়ার্ড যেগুলো আপনার কন্টেন্টের মধ্যে আছে এবং এই কিওয়ার্ড গুলোর জন্যই আপনি সার্চ ইঞ্জিনে পজিশন পেতে চান । প্রথমে একটু কম প্রতিযোগিতা মূলক কিওয়ার্ড নির্বাচন করুন । উপযুক্ত কিওয়ার্ড নির্বাচনের জন্য অনেক টুল আছে । একটু কষ্ট করে গুগলে সার্চ দিয়ে বের করে নিবেন ।
এরপর সেই কিওয়ার্ডটির জন্য গুগলে সার্চ দিন । প্রথম দিকের কয়েকটা সাইট নিয়ে একটু রিসার্চ করুন । ঐ সাইটগুলোর পাশে আপনার সাইটটি তুলনা করেন । দেখেন ওদের সাইটে কি আছে যা আপনার সাইটে নেই । এটা হচ্ছে বাহ্যিক দৃষ্টির দেখা । এখন ইয়াহু সাইট এক্সপ্লোরারে ঢুকুন, প্রথম দিকের যে কোন সাইটের এড্রেস কপি করে এক্সপ্লোরারের বক্সে পেস্ট দিন । এর পর এক্সপ্লোর ইউআরএল বাটনে ক্লিক করুন । এই সাইটের দিকে যত ইনকামিং লিংক আছে সবগুলোর একটা তালিকা আসবে । সেই তালিকা দেখেই ঠিক করতে হবে আপনার লিংক বিল্ডিং এর কৌশল ।
আপনি ওই তালিকা দেখে ঠিক করতে পারেন কোন কোন সাইট থেকে আপনার লিংক নিতে হবে । তবে সব সাইট থেকেই যে নিতে হবে এমনও না । আপনি যদি ওর চাইতে ভালো কোয়ালিটির লিংক পান তাহলে গুগল অবশ্যই বাধ্য হবে আপনাকে ভালো পজিশন দিতে ।
সার্চ ইঞ্জিনে উপরের দিকে পজিশন পাওয়ার জন্য মেইনলি যে জিনিসটা দরকার, তা হচ্ছে ব্যাকলিঙ্ক । প্রথমে ব্যাখ্যা করা দরকার ব্যাকলিঙ্ক কি এবং কিভাবে ব্যাকলিঙ্ক অর্জন করা যায় ?
ব্যাকলিঙ্ক হচ্ছে অন্যান্য সাইট থেকে আপনার সাইটের দিকে আসা লিঙ্ক । একে ইনবাউন্ড লিঙ্কও বলা হয়ে থাকে ।
কিভাবে পাবেন ব্যাকলিঙ্ক?
গুগলসহ সকল সার্চ ইঞ্জিন কোন একটি সাইটের ব্যাকলিঙ্ক সংখ্যা এবং এদের কোয়ালিটি বিবেচনা করে রেংকিং দেয় । কোয়ালিটি ব্যাকলিঙ্ক বলতে বিবেচনা করে কোন সুপরিচিত সাইট থেকে পাওয়া ব্যাকলিঙ্ক অথবা হাই পেজরেঙ্ক ধারী সাইট থেকে পাওয়া ব্যাকলিঙ্ক ।
একেবারে নতুন সাইটের জন্য বিনাখরচে ব্যাকলিঙ্ক পাওয়ার বেশ কিছু উপায় আছে । একটা একটা করে ব্যাখ্যা করব ।
আর্টিকেল
সার্চ ইঞ্জিনগুলো এখন কন্টেন্ট এর মধ্য থেকে পাওয়া লিঙ্ক গুলো কে বেশী গুরুত্ব দেয় । কন্টেন্ট এর মধ্য থেকে লিঙ্ক পাওয়ার সবচাইতে ভালো উপায় হচ্ছে আর্টিকেল সাবমিশন । আপনার সাইট যে বিষয়ের উপর সে বিষয় এর উপর সে বিষয়ে ২৫০-৩০০ ওয়ার্ডের আর্টিকেল লিখুন । আর্টিকেলের জন্য কোয়ালিটি কোন গুরুত্বপুর্ণ বিষয় না, মোটামুটি শুদ্ধ ইংরেজীতে লেখা হলেই হবে । শুধুমাত্র কিওয়ার্ড যাতে আপনার সাইটের সাথে মিলে সেটা দেখবেন । গুগলে সার্চ দিয়ে যে কোন আর্টিকেল দেখে সেটা রি-রাইট করে নিজের ভাষায় লিখে দিলেও হবে । প্রতিটি আর্টিকেলের সাথে আপনি সর্বোচ্চ দুইটি লিঙ্ক অ্যাড করতে পারবেন । তো সেই লিঙ্কদুটি আপনার প্রয়োজন মত বসিয়ে দিলেই কাজ হয়ে যাবে । একই আর্টিকেল আপনি বিভিন্ন আর্টিকেল সাবমিশন সাইটে সাবমিট করতে পারেন । ৫-৭ টা ভালো সাইটে সাবমিট করলেই যথেষ্ট । ভালো আর্টিকেল সাবমিশন সাইটের মধ্যে রয়েছে ইজিনআর্টিকলস, গোআর্টিকেলস, আর্টিকল ড্যাশবোর্ড, আর্টিকল সিটি এগুলো ।
ফোরাম
সার্চ ইঞ্জন অপটিমাইজেশন সম্পর্কে জানার সবচাইতে ভালো উপায় হচ্ছে এসইও ফোরামগুলোতে অংশগ্রহন । ফোরামগুলো থেকে আপনি যে শুধু জানতে পারবেন তা-ই নয় । ফোরামগুলো থেকে আপনি ভালোমানের কিছু ব্যাকলিঙ্কও পেতে পারেন । বর্তমান সময়ে হাই পেজরেঙ্ক সাইটগুলোর প্রোফাইল লিঙ্ক সার্চ ইঞ্জিনে খুব ভালো কাজ করে । আর প্রতি পোস্টের নিচে দুইটি সিগন্যাচার লিঙ্ক যুক্ত করার সুযোগ তো পাচ্ছেনই ।
এবার এসইও'র বেসিক কয়েকটা টার্ম জেনে নেয়া যাক
ডু ফলো এবং নো ফলো লিংক
ডু ফলো লিংক হচ্ছে সেই লিংকগুলো যে গুলো বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন তাদের রেংকিং এর জন্যে বিবেচনা করবে । আর নো ফলো হচ্ছে যে লিংকগুলো সার্চ ইঞ্জিন রেংকিং এর জন্য বিবেচিত হবে না । অর্থাৎ আপনি যতবেশিই নো ফলো লিংক অর্জন করুন না কেন, সার্চ ইঞ্জিন রেংকিং এ আপনার অবস্থানের কোন পরিবর্তন হবে না ।
নো ফলো লিংক কোনগুলো?
সাধারণত অতিরিক্ত স্পামিং নিয়ন্ত্রণ করার জন্যই য়ে কোন লিংক এর সাথে নো ফলো ট্যাগ জুড়ে দেয়া হয় । জনপ্রিয় সাইট ফেসবুক, মাইস্পেস, ডিগ, ইয়াহু আনসারস এবং ব্লগস্পট এর ডিফল্ট কমেন্ট বক্স সহ আরও অনেক খ্যাতনামা সাইট এই ট্যাগ ব্যবহার করে । ফলে এসব সাইট থেকে আপনি যত লিংকই লাভ করুন না কেন, তাতে আপনার সার্চ ইঞ্জিনে পজিশন এ কোন উন্নতি হবে না । কিন্তু আপনি সরাসরি কিছু ভিজিটর অবশ্যই পাবেন ।
নো ফলো লিংক ডিটেক্ট করার জন্য অনলাইনে অনেক টুল পাওয়া যায় । ফায়ারফক্সের জন্য এসইও প্লাগিন ও পাওয়া যায় ।
এবার লিংক বিল্ডিং এর আরেকটি গুরুত্বপুর্ন উপায় নিয়ে আলোচনা করব ।
ডু ফলো ব্লগ কমেন্টিং
ডু ফলো ব্লগ কমেন্টিং ব্যাকলিংক বাড়ানোর একটি সহজ উপায় । এর জন্য প্রথমেই আপনাকে কমেন্ট করার উপযোগী সাইট বাছাই করতে হবে । ভালো পেজরেংক এবং ভালো কন্টেন্টধারী ডু ফলো ব্লগে কমেন্ট করতে পারলে ভালো ফল পাবেন । এজন্য ব্যবহার করতে পারেন গুগল ব্লগসার্চ, টেকনোরাটি, ডিগ স্টাম্বলআপন প্রভৃতি সাইট । বর্তমান সময়ে কেউ কমেন্ট এর সাথে কোন সাইট এর ইউআরএল জুড়ে দেয়াকে অ্যালাউ করে না । যদি আপনি আপনার কমেন্ট এর সাথে লিংক জুড়ে দেন সেক্ষেত্রে আপনার কমেন্ট মডারেশন এর মাধ্যমে বাদ পড়ে যাওয়ার আশংকাই বেশি । সেজন্য কমেন্ট সেকশনে ওয়েবসাইটের জন্য নির্ধারিত বক্সে আপনার ওয়েবসাইট অ্যাড্রেসটি প্রবেশ করিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে । লিংক ডুফলো হলে আপনি আপনার কাংখিত এসইও ভ্যালু ঠিকই পাবেন । আপনি যদি একটু চালাক হন তাহলে নামের বক্সে আপনার নামের পরিবর্তে অ্যাংকর টেক্সট ( যে কিওয়ার্ডের জন্য আপনি সার্চ ইঞ্জিনে অবস্থান চান )বসিয়ে দিতে পারেন । এতে আপনি অপেক্ষাকৃত ভালো ফল পেতে পারেন ।
সোশ্যাল বুকমার্কিং
ইদানিংকালে সোশ্যাল বুকমার্কিং সাইটগুলো থেকে পাওয়া ব্যাকলিংক সার্চ ইঞ্জিনে পজিশন নির্ধারনে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করে । মানুষ সাধারণত বুকমার্ক করে সেই সাইটগুলোকে যেগুলো তাদের ভালো লাগে । মানুষের এই পছন্দ অপছন্দের উপর সার্চ ইঞ্জিনগুলোরও আস্থা আছে । যে সাইট বেশি বুকমার্ক পাবে সে সাইট তাদের কাছে তত গুরুত্বপুর্ণ বিবেচিত হবে । সেজন্যে আপনি নিজে নিজেই শুরু করতে পারেন বুকমার্কিং । ভালো বুকমার্কিং সাইট যেমন ডিগ, স্টাম্বলআপন, মিক্স, রেডডিট এগুলোতে আপনার নিজের সাইটই বুকমার্ক করুন । যত বেশি সাইটে বুকমার্ক করবেন তত বেশি আপনার ব্যাকলিংকও বাড়বে । আর আপনার শেয়ার করা সাইটগুলো অন্যদের চোখে পড়বে, এতে আপনি সরাসরিও কিছু ট্রাফিক পাবেন ।
তবে অতিরিক্ত স্পামিং এর জন্য অন্যতম বড় সাইট ডিগ এরই মধ্যে লিংকগুলো নোফলো করে দিয়েছে । আরও কয়েকটি সাইটও শীঘ্রই এর অনুসরন করতে পারে ।
প্রোফাইল লিংক তৈরি
বর্তমান সময়ে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের জগতে আলোচিত একটি টার্ম হচ্ছে অ্যাঞ্জেলা পল লিংক বিল্ডিং । অ্যাঞ্জেলা পল লিংক বিল্ডিং হচ্ছে পিআর ২- পিআর ৭ সাইটে রেজিস্ট্রেশন করে প্রোফাইল লিংক তৈরি করা । সাইটগুলো অবশ্যই কিওয়ার্ড এর সাথে রিলেটেড হতে হবে । এটা ইতিমধ্যেই খুব কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে । কিন্তু যে হারে মানুষ এভাবে লিংক বিল্ডিং করছে তাতে এটা কতদিন কাজ করবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে । কিন্তু যতদিন ই থাকুক না কেন, আপনি এটার সুবিধা নিতে দ্বিধা করবেন কেন ?
ডিরেক্টরি সাবমিশন
যারা ইতিমধ্যেই একটু আধটু এসইও কাজ করেছেন তাদের মনে নিশ্চয়ই প্রশ্ন জাগছে ডিরেক্টরি সাবমিশন এত পরে আসল কেন?
আসলে আমার কাছে ডিরেক্টরি সাবমিশনের ততোটা গুরুত্ব নেই । কারন সবচাইতে ভালো ব্যাকলিংক পাওয়া যায় ডিমজ থেকে । কিন্তু এটার প্রক্রিয়া এত দীর্ঘ যে আপনি বিরক্ত হতে বাধ্য । আপনি লিংক সাবমিট করার পর হয়তো ৬ মাস একবছর কেটে যেতে পারে । আরেকটা ভালো ডিরেক্টরি হচ্ছে ইয়াহু ডিরেক্টরি, কিন্তু এটাতে লিস্টেড হতে গেলে যে পরিমাণ খরচ পড়বে এটা দিয়ে একটা সাইটের টোটাল এসইও কাজ শেষ করে ফেলা সম্ভব । অন্যান্য ডিরেক্টরি গুলো আপনাকে ব্যাকলিংক দিবে, কিন্তু সার্চ ইঞ্জিন রেংকিং এ পরিবর্তনে বড় কোন ভূমিকা রাখবে না । আপনার হাতে যদি অনেক সময় থাকে তাহলে করতে পারেন ডিরেক্টরি সাবমিশন, সাইটের কোয়ালিটি দেখে দেখে ।
প্রশ্ন উত্তরভিত্তিক সাইটে অংশগ্রহণ
অনলাইনে প্রশ্ন-উত্তর ভিত্তিক বহু সাইট রয়েছে । এসব সাইটে মেম্বাররা বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করে থাকেন । প্রশ্ন যে কোন বিষয়ের উপর হতে পারে । যারা এসব বিষয়ে ভালো জানেন তারা প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়ে থাকেন । এসব সাইটে সাধারণত যে কোনো মেম্বার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন । বেশীর ভাগ সাইট সোর্স ইউআরএল হিসেবে একটা অপশন রাখে, যেখানে উত্তর দাতা নিজের ইচ্ছামতো লিংক বসাতে পারেন । সেরা প্রশ্ন উত্তর ভিত্তিক সাইট বাছতে গেলে অবশ্যই প্রথমে আসবে ইয়াহু অ্যানসারস এর নাম । কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে ইয়াহু অ্যানসারস এর লিংকগুলো নোফলো অর্থাৎ এসব লিংকের কোন এসইও ভ্যালু নেই । তাই বলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই । ইয়াহু অ্যানসারস থেকে প্রচুর টার্গেটেড ট্রাফিক পাওয়া যায় এবং কনভার্সন রেট সবচাইতে বেশী । কনভার্সন রেট হচ্ছে ভিজিটরদের পার্সেন্টেজ যারা আপনার প্রোডাক্ট কিনবে অথবা আপনার অ্যাড এ ক্লিক করবে । ইয়াহুঅ্যানসারস এর মাধ্যমে সাধারণত নবীন এবং অনভিজ্ঞ ওয়েব সার্ফাররা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর পেয়ে থাকে । স্বাভাবিকভাবেই নবীনরা আপনার অ্যাড অথবা প্রোডাক্টের প্রতিও বেশী আকৃষ্ট হবে ।
তবে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন উপযোগী বহু ডুফলো প্রশ্ন-উত্তরের সাইট রয়েছে যেখান থেকে আপনি একই সাথে টার্গেটেড ট্রাফিক এবং প্রত্যাশিত সার্চ ইঞ্জিন ভ্যালুও পাবেন । একটু কষ্ট করে গুগল এ সার্চ দিয়ে খুজে নিবেন ।
প্রসঙ্গ: টুইটার
গত এক বছরে ইন্টারনেটের সবচাইতে আলোচিত সাইট কোনটি? এক বাক্যে বলতে হবে টুইটারের নাম । এত বেশী জনপ্রিয়তা, এত বেশী আলোচিত- সমালোচিত হয়েছে এই সাইটটি যা রীতিমতো অবিশ্বাস্য ।যারা টুইটার সম্পর্কে বেশী কিছু জানেন না তারা দেখতে পারেন View this link টুইটারে ১৪০ ক্যারাক্টারের স্ট্যাটাস আপডেটের সাথে লিংক জুড়ে দেয়া যায় । লিংকগুলো নো ফলো । সুতরাং সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনে এর কোন ভুমিকা নেই । কিন্তু তারপরও টুইটার গুরুত্বপুর্ণ কারণ টুইটারের নিজস্ব একটি সার্চ ইঞ্জিন আছে । এটাকে বলা হয় রিয়েল টাইম সার্চ ইঞ্জিন । এই সার্চ ইঞ্জিনের জনপ্রিয়তা এখন আকাশচুম্বি প্রধাণত অতি সাম্প্রতিক কোন খবর বা কোন ইভেন্ট জানার জন্য । গুগল বা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে যে কোন খবর ইনডেক্স হতে সময় লাগে । যে কোন অতি সাম্প্রতিক ঘটনার খবর আপনি গুগল থেকে পাবেন না । পক্ষান্তরে বড় বড় নিউজ সাইটগুলোর সবার ই নিজস্ব টুইটার অ্যাকাউন্ট আছে । যে কোন খবরের তাৎক্ষণিক আপডেট ওরা টুইটারে দেয় । আর উৎসুক টুইটারাররা সেইসব নিউজ রিটুইট করে পৌছে দেয় সবার কাছে । এছাড়া টুইটারাররা অন্য কোথাও নিউজ পেলে সে নিউজ লিংকস্হ টুইট করে দেন । ফলে প্রায় সকল নিউজ লিংক সহ আপডেট হতে থাকে টুইটারে । আর টুইটারের সার্চ ইঞ্জিন শুধূ সেইসব টুইটগুলো খুজে নেয় । আপনি যদি আপনার সাইটের লেটেস্ট পোস্টসহ টুইটারে রেগুলার স্ট্যাটাস আপডেট দেন তাহলে টুইটারের সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করেও মানুষ আপনার সাইটের খোজ পাবে ।
এর সাথে শেষ হল সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের বেসিক পর্ব গুলো । অনেক কিছুই ইচ্ছা করেই বাদ দিয়েছি আবার অনেক কিছু হয়তো আমার চোখ এড়িয়ে গেছে । কিন্তু যে কৌশলগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি সেগুলো ব্যবহার করলে আপনি সহজেই সার্চ ইঞ্জিনে পজিশন পেয়ে যেতে পারেন । তবে প্রথমেই কোন কঠিন কিওয়ার্ড টার্গেট না করে সহজ কিওয়ার্ড নিয়ে কাজ করুন । ৪০-৫০ দিন অপেক্ষা করতেই হবে, এর আগে পজিশন পাওয়া খুবই কঠিন ব্যাপার কিন্তু আপনি যদি যে কোন একটি কিওয়ার্ডের জন্য পজিশন পেয়ে যান তাহলে অব্যাহত কাজের মাধ্যমে রিলেটেড অন্যান্য কঠিন কিওয়ার্ডের জন্যও পজিশন খুব তাড়াতাড়িই পেয়ে যাবেন ।
যারা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন শুরু করেছিলেন তাদের কার কি অবস্থা , জানালে কৃতার্থ হব । আমার লেখার মাধ্যমে আদৌ কাউকে কিছু শিখাতে পেরেছি কিনা আমার নিজেরই বিশ্বাস হয় না । কেউ যদি অল্প একটুও উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলেই এ পরিশ্রম সার্থক ।