এইতো কিছুদিন আগে এসএসসি ২০১৬ এর ফলাফল বের হলো।ফলাফল এ সবাই অন্তত খুশি।এখন পড়াশুনা এতোটা সস্তা হয়ে গেছে যে বাবা-মায়ের আশাই থাকে আমার ছেলে গোল্ডেন এ+ পাবে শুধু এ+ পেলে বাবা-মায়েরা খুশি হতে পারে না।আগে বাব-মায়ের আশা থাকতো যে তার ছেলে বা মেয়ে শুধু পাশ করুক,পরে চিন্তাধারা পাল্টে বাবা-মায়ের আশা জন্মালো যে তার সন্তানেরা এ+ পাবে।আর বর্তমানে এসে বাবা-মায়ের আশা এতোটা উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে যে গোল্ডেন এ+ না পেলে মনে হয় তার সন্তান ফেল করেছে।আমাদের পরীক্ষার খাতার মূল্যায়ন যে কিভাবে হয় একমাত্র শিক্ষাব্যবস্থার সাথে যারা জড়িত তারাই জানেন।তবে আমি এইটুকু বলতে পারি মানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থা আমরা পাচ্ছি না।যে ছেলেটার এ+ পাওয়ার কথা সে নিজের যোগ্যতায় এ অর্জন করতে পারছে।আর যে ছেলেটা বাইরে আড্ডাবাজি করে বেড়াই,মোটর-সাইকেলে ঘুরে বেড়ায় সে অন্যের খাতা দেখে দেখে লিখে এ+ পেয়ে বসে আছে।তখন আমরা সবাই বলি ওর কপালে ছিলো কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে এইগুলা মেনে নিতে পারি না।আজকে খবরে দেখলাম বরিশাল শিক্ষাবোর্ডে এসএসসি পরীক্ষার খাতা পূনর্মূল্যায়ন করে ১১০০ এর বেশি শিক্ষাত্রী পাশ করেছে এবং এ+ এর সংখ্যা ১০০ এর কাছাকাছি বেড়েছে।বাংলাদেশে এইসব কি হচ্ছে?আপনাদের এইসব সামান্য ভুলের কারনে একটা পরিবার থেকে একটি সদস্য হারিয়ে যাচ্ছে।আমরা দূরে থেকে এই আত্নহত্যার খবর শুনে খুব খারাপ লাগে কিন্তু যার যায় সেই বুঝে।আমরা এই ব্যাপারগুলা তেমন গুরুত্ব দেই না।শুধু গোল্ডেন এ+,এ+ এবং পাশের খবর শুনেই এই মন খারাপ করা খবর গুলা ভুলে যায়।কিন্তু,এটা যেন আর না হয় এর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া অতীব জরুরী।
আর একটা ব্যাপার লক্ষনীয় যে ভালো স্কুল/কলেজ এবং খারাপ স্কুল/কলেজ।একটা ছেলে বা মেয়ে ভালো স্কুলে/কলেজে পড়লে পরীক্ষার হলে,খাতা মূল্যায়নের সময় সেই ছেলে বা মেয়ে যেই সুযোগ সুবিধা পাবে,খারাপ স্কুল/কলেজ এ ছেলে/মেয়েরা সেই সুযোগ সুবিধা পাবে না।আমি মনে করি পড়াশুনা বাদে তারা যদি শুধু পরীক্ষার সময় ঐ সুযোগ সুবিধাগুলো পেতো তাহলে তাদের রেজাল্ট অনেক ভালো হতো এমনকি তাদের মতোই হতো।আমরা এখনো আমাদের জনগনের মধ্য থেকে সঠিক মেধাসম্পন্ন ব্যক্তি বাছাই করতে পারি না।এর একমাত্র কারন হলো আমরা ইলেকশন এ খুব দক্ষ কিন্তু সিলেকশনে আমরা খুবই দূর্বল।কিন্তু,সিলেকশনের মাধ্যমেই সঠিক নেতৃত্ব বেড়িয়ে আসে।তারপরো আমাদের এমন ভঙ্গুর শিক্ষাব্যবস্থার মধ্য থেকেও যে আমাদের তরুনেরা মাইক্রোসফট,গুগলে কাজ করে,আমাদের তরুনেরা নোবেল পুরষ্কার পাই।এইসব দৃষ্টান্ত আমাদের তরুণদের ই অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল।এইজন্য তাদেরকে সম্মান দিতেই হবে।এবং তাদেরকেও সম্মান জানায় যারা বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের মাথা উঁচু করার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মে, ২০১৬ রাত ১:২৫