আমাগো সামনের পাড়ায় এক মাইয়া আছিল। তার নাম মনে লয় , বৃষ্টি। ত এই বৃষ্টির ফ্রেমে পড়ছিল আমাগো ছফিকুউল ভাই। একদিন দেখি ছফিকুউল ভাই বৃষ্টিরে নিয়া চাইনিজ হুন্ডা দিয়া ঘুরতাছে। আরেকদিন দেখি ছফিকুউল সেই বৃষ্টির বাসার নিচে যাইয়া খারাইয়া আছে। যেইখানে আছে থাকুক, আমি মাঝখান দিয়া দুইজনের কাহিনী পরিষ্কার কইরা কইতাছি ।
ছফিকুউল ভাই ছুট থেইকাই কবি হইতে চায়। কবি হওয়ার জন্য সে কী ফালাফালি। না, অন্য কিছু না, সে মাথার ঘাম পায়ে ফালায়। সে যখন কোথাও বসত তার আশেপাশে পুকুর হইয়া যাইত। ওই যে, মাথার তার কবিতা ঘুরতেছে। সে কবিতা এত ঠান্ডা যে বাতাসের জলীয় বাষ্প জল হইয়া মাটিতে পড়ত। ত এই ছফিকুউল ভাইয়ের কবিতা লেখার কাহিনী জানছিল আমাদের মোকাদ্দেস মামা। সে বড়ই ভিডিওর যাত্রাপ্রাণ। ছফিকুউল ভাইরে ডাক দিয়া কইল, “ তুমার খবিতার ভাষা সোন্দর হইলে, আমার নাটকে তুমারে এখটা চান্স দিমু। খবিতা ছুনাও। ” ত,ছফিকুউল ভাই শুরু করল তার কবিতা –
আগডুম বাগডুম ঘোড়াডুম সাজে
মনে আমার ভেড়ার পাল নাচে।
মাইয়া ভেড়ার খেমটা নাচ
কথার মধ্যে বড়ই ঝাঁজ।
তার আঙ্গুলির ইশারায় আমার প্যান্ট ভিজে গেল
বৃষ্টি আসে না কেন, সবাই ত ঘটনা বুঝে ফেলল।
তার অসামান্য কবিতার ঠেলায় মোকাদ্দেস মামা মুগ্ধ । ত, মোকাদ্দেস মামা তার নাটকে ছফিকুউল ভাইরে একটা চরিত্র দিল, “এক পাগলরে মানুষ দৌড়ানি দিব, তুমি ওই পাগল সাজবা।”
মোকাদ্দেস মামার বড় ভইনের ছোট মাইয়া আছিল বৃষ্টি। ত নাটকের শুটিং দেখতে সে আইত মাঝে মাঝেই। ওই দিন আবার ছফিকুউল ভাইয়ের শুটিং আছিল। ছফিকুউল ভাইরে যাদের তাড়া করার কথা, হেদের মাঝখান কেমনে কেমনে জানি একটা কুত্তাও জুইটা গেছে। হেই কুত্তা দেইখা, ছফিকুউল ভাই যে জানের দৌড়টা দিল, আবার সেইটা দেইখা বৃষ্টির জানের মধ্যে যে ধুকপুকানি বাইড়া গেল, সেইটাই হইল মেইন কাহিনী।
ত তাদের মধ্যে ইটিস পিটিস চলতে লাগল। বড়ই সুখের ঘটনা।
কিন্তু, কিন্তু এবং কিন্তু একটু ঘ্যাচাং আছে ভিতরে। বৃষ্টির সাথে ডেটিং মারতে আসলেই নাকি বৃষ্টি কয়, “ ওহ বেবি, ডিয়ার ছফিকুউউল, তুমি আরেকবার ওই রকম পাগল সেজে দেখাও না। দারুণ লাগে। পুরা রিয়েলিস্টিক। ” ত, ছফিকুউল ভাই তখন মুখ ব্যাজার কইরা পাগল সাজে। দৌড় টৌর, লাফ ঝাপ দেয়, বৃষ্টি খুশিতে হাত তালি দেয়। সব সময় এমন করতে করতে ছফিকুউল বিরক্ত হয়ে গেল। প্রতিবার তেল দিয়া চুল আঁচড়াইয়া আসে, আর পরে তারে পাগল সাজতে হয়। ধূররররর।
ত, বৃষ্টি একবার ওর এলাকায় ডাক দিল, “ও বেবি, ও ছফিকুউউল, আমার বাসার নিচে একটু দাঁড়াবা ?” ত ছফিকুউল এইবার আগে থেকেই পাগল সেজে বৃষ্টির বাসার নিচে দাঁড়াল।
ইয়ে, হইল কি, ইয়ে মানে, ইয়ে আমি আর কয়েকটা পুলা আবার ওই রাস্তা দিয়া যাইতেছিলাম। আমি ত বুঝি নাইক্কা যে এইটা ছফিকুউল ভাই। আমরা ত “ পাগলে মাইয়ারে বিরক্ত করে, ওরে ধর” কইয়া হেরে দৌড়ানি দিছি। কইত্তে জানি হেই কুত্তাটা জুইড়া গেছিল। সেইটা দেইখা ছফিকুউল ভাই অজ্ঞান।
দুইদিন পরে হের জ্ঞান ফিরে হাসপাতালে। উইঠাই কয়, “আমার বৃষ্টি কই?” আমরা কই, “হেরে দুইদিন এন্টারটেইন করতে পারেন নাই, দেইখা আরেক পোলার কাছে গেছে গা।” ছফিকুউল ভাই শুইনা আবার অজ্ঞান। এরও দুইদিন পরে যখন জ্ঞান ফিরে তখন সে সত্যি সত্যি পুরাপুরি পাগল।
খালি কয়, “ আমার বৃষ্টি কই গেল ? ওর আইতেই হইব। তবুও বৃষ্টি আসুক। ”
এখনও আমি মাঝে মাঝে বলগাইতে আইলে প্রতিটা দিন প্রথম পেইজে দুইবার কইরা হের বিলাপ শুনি, “ তবুও বৃষ্টি আসুক।” আমি এত বেশি বিরক্ত যে বুঝাতে পারব না।
[বাংলা ভইনের অবগতির জন্য জানানো হচ্ছে যে, এইখানে বানান ভুল থাকলে সেটা ইচ্ছাকৃত। এইটা নিয়া আবার পোস্ট দিয়েন না।]