আল্লামা ইবন রুশদ
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
আবুল ওয়ালীদ মুহাম্মদ ইবন আহমদ ইবন রুশদ (১১২৬ – ১১৯৮)। জ্ঞান ও প্রতিভার জ্যোতিষ্ক। মুসলিম বিশ্বে ‘আল্লামা’ ও বাকি দুনিয়ায় ‘দ্য কমেন্টেটর’ উপাধিতে ভূষিত। কর্ডোভার ক্বাযী ছিলেন দীর্ঘকাল। পাণ্ডিত্যের ফিরিস্তির দিকে তাকালে তাঁকে অতিমানব বলে ভ্রম হয়। কুরআন, হাদীস, ফিক্বহ, ইসলামিক ও অ্যারিস্টটলীয় দর্শন, চিকিৎসাবিজ্ঞান, ধর্মতত্ত্ব, আইন, যুক্তিবিদ্যা, মনস্তত্ত্ব, পদার্থবিদ্যা, জ্যোতির্বিদ্যা, ভূবিদ্যা, গণিত, মহাকাশবিজ্ঞান, ভাষাতত্ত্ব, অধিবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ধ্রুপদী সঙ্গীততত্ত্ব প্রভৃতি বহু বিচিত্র বিষয়ে সমকালীন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পণ্ডিত। তাঁর বিখ্যাত রচনা ‘বিদায়াহ আল-মুজতাহিদ ওয়া নিহায়াহ আল-মুক্বতাসিদ’ মালিকী মাযহাবের প্রামাণ্য আইনগ্রন্থ। আলাদা আলাদা তিনটি ধাপে ও বহু খণ্ডে তিনি অ্যারিস্টটলের ‘পোস্টেরিয়র অ্যানালিটিক্স’, ‘ডি অ্যানিমা’, ‘ফিজিক্স’, ‘ডি কায়লো’ ও ‘মেটাফিজিক্স’-এর ব্যাখ্যা লেখেন: সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা (জামি’), সাধারণ ব্যাখ্যা (তালখীস) ও বিস্তারিত ব্যাখ্যা (তাফসীর)। ‘কিতাব আল-কুল্লিয়াত ফী আত-ত্বীব’ নামে লিখেছেন চিকিৎসাবিজ্ঞানের বিশাল বিশ্বকোষ। ইমাম গাযালী (১০৫৮ – ১১১১)-এর ‘তাহাফুত আল-ফালাসিফা’ – ‘দার্শনিকদের জবাব’-এর জবাবে লিখলেন ‘তাহাফুত আত-তাহাফুত’ – ‘জবাবের জবাব’। গাযালী প্রচলিত দর্শন বিশেষত অ্যারিস্টটলীয় দর্শনকে স্ববিরোধী ও ইসলামবিরোধী বলে অভিযোগ তুলেছিলেন। ইবন রুশদ বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন, অভিযোগগুলির ভিত্তি ছিল না। কারণ যাঁর রচনার মাধ্যমে গাযালী অ্যারিস্টটলীয় দর্শন অধ্যয়ন করেছিলেন সেই ইবন সিনাই অ্যারিস্টটলের দর্শনভাবনা উপস্থাপন করেছেন ভুলভাবে। আদতে ধর্ম ও দর্শনে দ্বন্দ্ব নেই। ইবন রুশদের বহু মূল্যবান গ্রন্থ আজ আর পাওয়া যায় না। পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে সেসব। প্রথাবিরোধী চিন্তা ও শাসকের সমালোচনার প্রতিক্রিয়ায় শেষকালে তিনি রক্ষণশীল ধার্মিকদের ষড়যন্ত্র ও বিক্ষোভ এবং খলীফা ইয়াকূব আল-মনসূরের রোষানলে পড়েন। তাঁকে পাঠানো হয় নির্বাসনে, আর তাঁর বইগুলি ফেলা হয় পুড়িয়ে। উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে, ১২২৪ সালে আবদুল ওয়াহিদ আল-মারাকুশী লিখেছেন: “আমি তখন ‘ফেস’-এ ছিলাম, দেখলাম, ইবন রুশদের গ্রন্থাবলি বহু ঘোড়ায় করে বয়ে এনে এক জায়গায় জড়ো করা হচ্ছে এবং সেগুলি পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে।” গবেষক জামালুদ্দীন আল-’আলাওয়ী (১৯৪৫ – ১৯৯২) ইবন রুশদের ১০৮টি গ্রন্থের তালিকা করেছেন, তারই কয়েকটি হলো: ‘কিতাব মানাহিজ আল-আদিল্লা’, ‘ফাসল আল-মাক্বাল ফীমা বাইনা আল-হিকমাহ ওয়া আশ-শারীয়াহ মিন আল-ইত্তিসাল’, ‘কিতাব আল-হায়ওয়ান’, ‘আল-মাসাইল ফী আল-হিকমাহ’, ‘রিসালা আন-নাফস’, ‘শারহ কিতাব আল-ক্বিয়াস’, ‘মাক্বালা ফী হারকাহ আল-ফালাক’, ‘তালখীস ওয়া শারহ কিতাব মা বা’দ আত-ত্বাবীয়াহ, ফাসল আল-মাক্বাল’, কিতাব আল-কাশফ’।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।
এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?
সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী
বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন
জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন
=বেলা যে যায় চলে=
রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।
সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন