ভোলাগঞ্জের এক পয়সাঅলা ভদ্রলোকের বাড়িতে আমি দুদিন গিয়েছিলাম। নিজের কাজে নয়, অন্যের জন্যে। দুদিনই দেখলাম কোমরে গামছা বেঁধে তিনি ঝাড়ু দিয়ে ঘর ঝাঁট দিচ্ছেন, কাপড় ভিজিয়ে মেঝে মুছছেন, তারপর আঙুলে ত্যানা পেঁচিয়ে পরম যত্নের সঙ্গে ছিটকিনির নিচের ছিদ্র থেকে ধূলিকণা খুঁটে খুঁটে বের করে আনছেন। প্রথম দিন ভাবলাম, লোকটা নিজের ‘গৃহভৃত্য’। দ্বিতীয় দিন মনে হলো, ‘শুচিবায়ুগ্রস্ত’। পরে জানা গেল, দুদিন নয়, তিনশো পয়ষট্টি দিনই তিনি ঝাড়মোছ করে কাটান।
আরো এক ধরনের শুচিবায়ুগ্রস্ত লোক আছে। এদের শুচি ঘরের ধুলোয় নয়, বাইরের সত্যে। মানুষের দিকে তাকিয়ে এরা মানুষ দেখে না। দেখে খাঁটি ধার্মিক অথবা ভেজাল, হক কিংবা বাতিল, নেক বা গুমরাহ, দেওবন্দী নাকি সালাফী। নিজেদের ভাষায় তারা ‘বুযুর্গ’। কিন্তু আসলে এরা ‘বুঝ-রোগ’-এ আক্রান্ত। সত্য কী – তা না-বোঝার কারণে এদের মাথায় কেবলই ঘোরে ‘সত্যোৎকণ্ঠা’, إضطراب للحقّ , Fastidiousness for truth.