তার কাছে আছে প্রায় সীমাহীন ওজনের ভারী এক জীবন , নিশ্চিত পরাজয় জেনেও করতে হবে বলে না জেতার আশায়ই যুদ্ধ করে যাচ্ছে , আপ্রান প্রতি মুহুর্ত । ৫৫ বছর বয়সী বাবার রোগের চিকিৎসা , ছোট ভাইয়ের পরার খরচ , পরিবার চালান এবং ইত্যাদির বিরূদ্ধে যুদ্ধ করতেছে মাত্র ১২ হাজার টাকার বেতনের একটা চাকরী দিয়ে ( ছাটাইতে পরা চাকরী ) । সামনে নিজের জীবন পরে আছে । এখনও বিয়া শাদি বাকী , তার এই বয়স নতুন জীবন সাজানোর বয়স । কিন্তু মানুষের কস্টগুলো আসলে মাত্রাছারাই হয় সবসময় ।
২৫ লক্ষটাকারও বেশী খরচ হবে তার বাবার চিকিৎসায় । যেই বেতনের চাকরী করে তা জমালে কত বছর লাগবে ? জীবনের ঘোরতম দূর্দিনে যেই চাকরী তাকে লাথি মেরে বার করে দেয় তাকে নামকোবাস্তে চাকরী ছারা আর কি বলা যায় ? এই রকম একটা চাকরীর জন্য দিন রাত ঈশ্বেরর কাছে প্রার্থনা , এই রকম একটা চাকরীর জন্য যতদূর মাথা নীচু করা যায় করা পারলে ঘার থেকে ছিরে নীচু করা , কিন্তু লাভ নেই - কোম্পানী উইল নেভার বী ইন লস । ক্যাপিটালিজম । কোথায় পাবে ২৫ লক্ষটাকা ।
মানুষের কাছে সাহায্য চাবো- কিন্তু সেই বা আর কত ? সাহায্য করতে করতে মানুষও ত্যাক্ত , বিরক্ত । ২৫ লক্ষটাকা ও জীবনে চোখেও দেখেনি । তবে একটা মিরাকল এতদিন তার বাপ কে চিকিৎসা করাচ্ছে , ছোট ভাই ইন্জিনিয়ারিং পরতেছে - মাঝে মাঝেই কিডনী ডায়ালিসিসকরতে হয় । আমি চোখ বর বর করে শুনি আর ভাবি - এ তো লৌহমানব । ম্যানেজ করতেছে কিভাবে ? ভয়ে কোন কথা বলিনা ,চুপ করে মাথা নীচুন করে শুনে যাই ।
তবে গতকাল হাসপাতালে ভর্তি করার পর আজকের অবস্হা খুব খারাপ । আমাকে এমনি জানালো যে বাবার অবস্হা খুব খারাপ । কাল সারারাত বাসার কেউ ঘুমায়নি ।
তবে আজ আমি একটা কথা বলেই ফেলেছি " ভাইরে এই দেশের অবস্হা এখন এমন যে নিজের গর্ভের শিশুকে বয় ফ্রেন্ডের সাথে যৌন সম্পর্ককে আনডিস্টার্ব কনটিনিউয়েশনের জন্য হত্যা ও তার শাস্তি বা ভৎসনার নিউজ টিভি পত্রিকায় আসার পরেও এই ঘটনার পুনরাব্রিত্তি ঘটে । এইডা কি মানুষের দেশ ? যেই কোম্পানিতে ঐ ছেলে চাকরি করে ঐ কোম্পানীর প্রধান গোলামের মাসিক মদের খরচ দিয়ে ওর বাপের রক্ত কেনা যায় । আর কস্টমিনিমাইজের জন্য চাকরী যাচ্ছে ঐ পোলার ।
যেই কোম্পানীতে ঐ বন্ধু চাকরী করে ঐটা একটা মোবাইল কম্পানী । কি আশ্চর্য কথা !! বাংলাদেশের একটা মোবাইল কোম্পানী নাকি কর্মী ছাটাই করতেছে টাকার অভাবে , তাও আবার একজন কর্মীর এমন বিপদের দিনে !!!
একবার ঐ কোম্পানীর বড় গোলামরে ফোন দিছিলাম ।গোলামের ছাওয়াল গোলাম ফোন ধরেনাই । তখন মেজাজ চড়া ছিল । ভাবছি আরেকবার চেষ্টা করব । মন চায় গোলামের কলার ধরে ২ কানে গোটা পাচেক থাপ্পর দিয়ে তারপর বলব এই লোকের এই লোকের চাকরি গেলে তোর জান বার করে ফেলব শুয়োরেরবাচ্চা ।
বুঝি এসব আক্রোশ অনেক দূর্বল এবং বোকামী । এইসব গোলামরা অনেক ধূর্ত । এইসব গোলামদের রক্ষায় আছে পাপাচারী ব্যাভিচারী রক্ষা মেশিন । রাগে আমার শরীর কাপে , ব্লাড প্রেশার বেরে যায়- মনে হয় এইসব চামরদের ছিবরে ফেলি উপরে ফেলি--
আমার জানতে ইচ্ছা করে ঐ মোবাইল কোম্পানী শুধুমাত্র ঢাকা শহরে গ্রাহকদের ফোনসেক্সে বাবাদ কত টাকা পায় প্রতি রাতে ? কোম্পানির কথা আর কি বলব - যখন দেশের মানুষগুলোই এমন । আর যারা আছেন শুভমনা তারাও নাক পর্যন্ত ডুবে আছেন , সংখ্যায় খুবই অল্প এবং তারাও সীমাহীন ক্লান্ত । কি করব আমি ? ?
তবে একটা ঠুনকো আশ্বাস এই পারভার্টদের টাকায় যে ঐ বন্ধুর বাবার রোগের চিকিৎসা হচ্ছেনা , এবং তার পরেও ঐ বন্ধু তার সীমাহীন ওজোনের জীবন অন্ধকারপথে ঠেলে যাচ্ছে ইকটু আলোর আশায় - আই স্যালুট । সারদিন রাত টাকা টাকা , বাপকে বাচানোর জন্যে হন্যে হয়ে খোজে টাকা । কে দেবে টাকা , এত টাকা ? মদ খাবার জন্য টাকা পাওয়া যায় , সুন্দরী ভারা করার টাকা পাওয়া যায় , বোমা বানানোর টাকা পাওয়া যায় , ফোনসেক্সের রিচার্জের টাকা পাওয়া যায় - মানুষ বাচানোর টাকা কে দেয় , কয়জন দেয় ?? যারা দেয় তারাই দিতে দিতে আধমরা হয়ে আছে , নাক পর্যন্ত ডুবে আছে । একবারও বিরক্ত হয়না সে । বাপ আমারও আছে । কয়টা শব্দ আর আমি জানি , কয়টা কথা আর বলব , নিজের চোখের সামনে প্রতি মুহুর্তে ধুকে ধুকে বাপকে মরতে দেখছে । মানুষ কেন বেচে থাকে , আর ঈশ্বরই বা কোথায় ??
দেখেন এই চোখের দিকে তাকিয়ে :
সন্তান বড় হলে আয় উপার্জন করে নিজের জীবন সাজাবে - কোথায় সে ইকটু আশীর্বাদ করবে তার বদলে এই বুড়ো বয়সে সন্তানকে ঠেলে দিয়েছে এক অসম্ভবের সামনে । একবার কি তার এই বোধ হয়না ? অবশ্যই হয় । মানুষের অসাহায়ত্ব , মানুষের কষ্টগুলো মাত্রা ছারা । মানুষ নাকি পন্চাশ বছর আগে চান্দে গেছিল !!
আসেন আমরা সবাই হাত ঘষি , ঘষে প্রিপেআয়ার রাখি যেন উনি টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় মরার পরে মোনাজাত ধরতে পারি , ওনার জন্য দোয়া করতে পারি । গতকাল রাতে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে , অবস্হা খুবই আশন্কাজনক ।