আগের অংশের সারমর্ম: ভিসা ফি জমা, হেলথ ইনস্যুরেন্স করানো, অনলাইনে ফরম ভরা, তারপর সুইশ এম্বেসী থেকে ভিসা পাওয়া সব ঝক্কির কাজ শেষ করে এমিরেটস এর ঢাকা জেনেভা ঢাকা টিকেট কিনে ঢাকা থেকে বিকেলে রওয়ানা হয়ে প্লেনে দুবাই এলুম। দুবাই এয়ারপোর্টের দক্ষ স্টাফদের জন্য দ্রুত এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে শহরে চমৎকার এক পাঁচতারা হোটেলে রাত কাটিয়ে পরদিন আবার এয়ারপোর্টে প্রচুর হেঁটে ট্রনে চেপে তারপর প্লেনে উঠে দুবাই এয়ারপোর্ট থেকে ছঘন্টার উড়াল দিয়ে জেনেভা।###
বেল্ট থেকে লাগেজ নিয়ে যাবার জন্য ট্রলি আনতে গিয়ে দেখি টাকা নেই মানে দু ফ্রাংকের মুদ্রা নেই। সুন্দরী সুইশ রমনীর বদান্যতায় দু ফ্রাংক মিলল আর ট্রলি মিলল, তবে তার দু'ফ্রাংক আমার কাছে রয়েই গেলো। এরপর ভাগ্নের গাড়ীতে করে জেনেভা এয়ারপোর্ট থেকে লুজান, প্রায় ষাট কিলোমিটার দুরে তার বাসা। এরপর পরের অংশ নীচে পড়ুন:
সুইজারল্যান্ড সুন্দর পড়েছিলুম, কিন্তু গাড়ীতে যেতে যেতে সামনে চমৎকার স্বপ্নের ছবির মত রাস্তা, দুপাশে পাহাড়ের কোল ঘেষে লাল ছাদওয়ালা ছোট ছোট বাড়ীগুলো আর সমস্ত জায়গা জুড়ে মখমলের মত ঘাস বিছানো দেখলে মনে হবে যে এসব সৌন্দর্য আমার মত আনাড়ি লেখকের বর্ণনা করার ক্ষমতার বাইরে। বিশ্বাস করুন।
নাতি আর লেখক নীচে:
উপরে ভাগ্নেবৌ সিনথিয়া চৌধুরী আর লেখক।
পথের দুপাশে ঘাসে মোড়ানো বিশাল মাঠের দিকে তাকিয়ে অবাক হতে হয় ঘাসগুলো কে কখন কিভাবে কাটে! আমি দেড় মাসেও খুজে পাইনি, কোনদিন কাউকে কাটতেও দেখিনি!
এয়ারপোর্ট থেকে যাবার পথে এক জায়গাতে ট্রফিক কিছুটা শ্লো হয়ে এসেছিল। জিজ্ঞেস করে জানলুম কিছুক্ষন আগে একটা দুর্ঘটনা ঘটেছিল, পুলিশ কয়েক মিনিটের মধ্যে এসে সামান্য বেরিকেড দেয়, গাড়ি দুটো রেকার দিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে সরায়। তবে গাড়ি চলাচল কিন্চিত শ্লো হলেও থেমে যায় নি আর দুপাশে কয়েক শ বাস ট্রাক আটকে যাত্রীদের চরম ভোগান্তিও হয় নি!! স্পীড ঘন্টায় সত্তর মাইলের জায়গাতে ত্রিশ চল্লিশে ঠেকেছিল। কয়েক মিনিটের মধ্যে সব ফরসা মানে অল ক্লিয়ার, ট্রাফিক স্বাভাবিক। পুলিশের পাশ দিয়ে যেতে যেতে শুনলুম -পাখদোঁ পাখদোঁ (মাফ করবেন)। মানে আপনার কিন্চিৎ অসুবিধা ঘটোনোর জন্য পুলিশ ক্ষমা চায়? মনে পড়ল দেশের চরম অদক্ষ বাজে ট্রফিক ব্যাবস্হাপনার কথা।
লুজানে একটা পাহাড়ি এলাকার উচু জায়গাতে ভাগ্নে সুজনের বাসা, মানে ৬ তলা ভবনের তিন তলায় একটা এপার্টমেন্ট। চারিপাশটা চমৎকার ফাঁকা আর ঘাসে মোড়ানো জমিন। ওখানেই একটা রুমে আমার ঠাঁই হল আগামী মাস কয়েকের জন্য।
বাথরুমে যেতে গিয়ে দিখি ওখানে দরজা খুলতে হাতল উপর দিকে মানে এন্টি ক্লকওয়াইজ ঘোরাতে হয়, একটু অভ্যেস করতে হয়। প্রথম দুএকবার তো নাতি ডাকতে হয়েছে, দরজা লক নাকি জানতে!
বাথরুমের ব্যাপারে ইউরোপীয়রা কন্জুষ। সারা ফ্লোরে একটাই বাথরুম আর স্নান করার জন্য গোসলখানা বাথটাব বেসিন হতে পারে আরেক রুমে। আমরা বাংলাদেশীরা মনে হয় অল ইন ওয়ান এটাচ বাথরুমেই অভ্যস্ত। বাথরুম কম হওয়ার কারণটা হল ওটা আপনাকেই ধুতে হবে যে, মানে আপনাকেই ধুতে হবে, আর বাথরুম ভিজা রেখে আসা চলবেনা। বাড়ীর মালিকের বা গেরস্তের কষ্ট কমাতেই এ ব্যাবস্হা।
প্রায় পন্চাশ ষাট বছর আগে পড়া একটা শংকরের লেখা মনে পড়ল, আমেরিকাতে গিয়ে এরকম সিস্টেম মানে বাথরুম ভিজা রেখে আসা যাবেনা দেখে তিনি বলেছিলেন বাথরুম ব্যাবহারের পর ভিজা না রেখে কিভাবে আসে সেটা ভজাদাকে বললে তিনি তেড়ে আসবেন! (হুবহু কথাটি মনে নেই, সহৃদয় পাঠক শুধরে দিলে বাধিত হবো)।
খেয়াল করলুম বাথরুমের লাইটের সুইচ সব ভেতরে, ঢুকে জ্বালাতে হয়। আমাদের দেশে কিন্তু সব বাইরে থাকে, সুইচ টিপে বাতি জ্বালিয়ে ঢুকতে হয়। বাথরুমের দরজাতে কোন টিপ লক তালা থাকেনা, দরজা লক করতে কিছু লিভার ঘোরাতে হবে বা অন্য কোন সিস্টেম আটকাতে হবে, ঢুকেই টিপ দিয়ে দরজায় তালা দিবেন তা হবেনা। বাচ্চারা যাতে ভেতরে না আটকে যায় এজন্যই এই ব্যাবস্হা মনে হয়!
বাসাতে বাথরুমের ভেতর কমোডের পাশে পুশ শাওয়ার বা মায় বদনাও নেই, গোদের উপর বিষফোঁড়া হল কমোডের পায়ের নীচে কার্পেট থাকে! মর জ্বালা! কি দারুন সমস্যা না? হারপিকের বোতলে পানি ভরে ...খুব সাবধানে ....হা হা হা।
সুইজারল্যান্ডের সব শহরে এয়ার কন্ডিশনড বাস ভোর ৫-৬ টা থেকে রাত বারোটা একটা অবধি ২০ মিনিট পর পর প্রতি স্টপেজে আসছে আর কয়েক সেকেন্ড থেমেই চলে যাচ্ছে। শনিবার আর রোববারে সময়ের পরিবর্তন মানে তখন গ্যাপটা আরো একটু বেশী। ভেতরে ক্যাপাসিটির অর্ধেক মানুষও নেই, খালি সকালে আর বিকেলে একটু মানুষ হয়। প্রতিটা বাস ইলেকট্রিসিটিতে চলে। মাথার উপরে তার থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে নিঃশব্দে চলছে। দরজা গুলো অটোমেটিক খুলছে লাগছে।
বাসের টিকিট অটোমেটিক মেশিনে ধাতব মুদ্রা দিয়ে কাটতে হয়, কগজের নোট নেয়না। বাস স্টপে একটা চার্ট আছে সেখানে লেখা তাকে আপনার বাস কখন কখন আসবে। সময়টা পড়ে প্রথমে তেমন গা করলুম না, লেখা আছে ৭-৩২, পরেরটা ৭-৫২ পরেরটা ৮-১২ মিনিট! পরে খেয়াল করে দেখলুম, বিশ্বাস করুন ঠিক কাঁটায় কাঁটায় ৭-৩২ মিনিটেই বাসটি আসছে!! এবার তো ঢাকার বাসিন্দার 'হা' মুখ বন্ধ হয় না। বাস এরকম কাঁটায় ঘড়ি ধরে আসে? একবার বাসে না উঠে দাড়িয়ে থাকলুম, পর পর ৫ টা বাসের সময় দেখলুম, এক মিনিট এদিক ওদিক হয় নি!
ভাল কথা সুইজারল্যান্ডে কোন প্রাইভেট মালিকের বাস নেই সব সরকারী বাস আর ট্রাম।
ভাড়া? দুরত্ব হিসেব করে সব স্টপেজে মেশিনের গায়েই ভাড়ার চার্ট লেখা আছে সেই মোতাবেক স্লটে কয়েন দিন টিকিট নিন। টিকিটে দুরত্ব বা স্টপেজ লেখা থাকেনা সময় লেখা থাকে। আপনি টিকিট কেনার পর থেকে এক ঘন্টা পর্যন্ত ঘুরতে পারবেন যে কোন দিকে, দাম ৩.৮০ ফ্রাংক, মানে প্রায় সাড়ে তিনশো টাকা। মাসিক টিকিট কিনলে সস্তা পড়বে।
টিকিট ছাড়া উঠলে? ভুলেও ও কাজটি করতে যাবেননা, ধরা পড়লে নগদ ১০০ ফ্রাংক জরিমানা। টাইম ছিলনা, মেশিন কাজ করেনি, ভাংতি ছিলনা.. ভুল অয়া গেসে এসব বলে রেহাই পাওয়া যাবেনা, নিশ্চিত। তর্ক করেছেন তো জরিমানা বেড়ে যাবে। আজ পর্যন্ত কেউ করেছে বলে শুনিনি, মায় বাঙালীরা পর্যন্ত! আমি নিজেই ভাংতি ছিলনা বলে পাহাড়ের উঁচু নীচু ঢালু রাস্তায় পোয়া মাইলখানেক হেঁটেছি, মাগার টিকিট ছাড়া উঠার সাহস করিনি বাপু। ভাংতি নেই তো বাস জার্নী শিকেয় উঠবে। আরো সমস্যা হল, কোন দোকানে গিয়ে ভাংতি চাইতেই পারবেননা, মানে আমি পারিনি! মনে করবেননা যে আপনার টাকা আছে কুছ পরোয়া নেহি ট্যাক্সিতেই যাবেন। পারবেন তবে তাতে সময়ের ব্যাপার আছে, টাকার কথাটি বললুম না, টাকার অংকটা ভয়ংকর, আমার জন্য। ফোন করে ট্যাক্সি আনতে হবে, রাস্তায় হাত দিয়ে ট্যাক্সি পাওয়া কঠিন, ম্যালা হ্যাপা।
ওখানে দেখেছি যাদের বাড়িতে দুএকটা মার্সিডিজ অডি বিএমডব্লিউ আছে তিনিও বাসে চড়েন বা সাইকেলে চড়েন।
ঐ যে আগে বলেছি পার্কিং একটা মহান সমস্যা, পয়সা নেয় ঘন্টায় দু তিন ফ্রাংক আবার বাঁচায়! ভাল কথা আপনি এক ঘন্টার টিকিট কেটে গাড়ী পার্কিং এরিয়াতে রেখে ভুলে গেলে চলবেনা, কারণ এক ঘন্টা ওভার হয়ে গেলে জরিমানা গুনতে হবে ম্যালা টাকা, পঁচিশ ফ্রাংক। তবে কেউ করেনা, সবাই সময় শেষ হবার আগেই টিকিট কেনে!
একবার একদিন বিকেলের দিকে রাস্তায় হাঁটছিলুম দেখি একটা জ্যাকেট পড়া মাঝবয়সী লোক একা একা হাঁটছে। আশে পাশে কেউ ছিল না। লোকটাকে দেখিয়ে ভাগ্নে বলল ঐ যে লুজানের মেয়র। আমি তো খানিকটা অবাক, তবে খুব বেশী অবাক হইনি কারণ এর আগে অস্ট্রেলিয়াতে বা আমেরিকাতে বা নিদেন পক্ষে সিঙ্গাপুরে এরকম বড় পদের মানুষদের দেখেছি ফুটানী ছাড়াই চলতে। ভরা কলশী শব্দ করেনা। মেয়রের ছবি নীচে:
মেয়র ভদ্রলোক বাস স্টপে এসে একটা টিকিট কিনে দাড়ালেন তারপর বাস আসলে উঠে বসলেন। ঘড়িতে পাঁচটা চল্লিশ মানে তিনি অফিস শেষে বাড়ি বা অন্য কোথাও যাচ্ছেন।ঐ যে আগে বলেছি পার্কিং একটা মহান সমস্যা, পয়সা নেয় ঘন্টায় দু তিন ফ্রাংক আবার বাঁচায়!
ভাল কথা আপনি এক ঘন্টার টিকিট কেটে গাড়ী পার্কিং এরিয়াতে রেখে ভুলে গেলে চলবেনা, কারণ এক ঘন্টা ওভার হয়ে গেলে জরিমানা গুনতে হবে ম্যালা টাকা, পন্চাশ থেকে একশো ফ্রাংক। তবে ওখানে ওটা কেউ করেনা, সবাই সময় শেষ হবার আগেই টিকিট কেনে! তবে দুএকটা ক্ষেত্রে ভুল হতেই পারে। পাঁচ দশ মিনিটের জন্য পুলিশ কিছু বলেনা, সতর্ক করে। তবে পথে দেখবেন মাঝে মাঝে একটা পুলিশ একটা পার্ক করা গাড়ীর পেছনে দাড়িয়ে চুপচাপ কি যেন লিখছে, বুঝবেন গাড়িওয়ালার কপাল পুড়ল, তাকে বেশ কিছু ফ্রাংক দন্ড গুনতে হবে আর কি! হয় নো পার্কিং এরিয়াতে পার্ক করেছে বা ওভারটাইম পার্ক হয়েছে আর কি।
বাসে করে বাজারে গেছি মাছ তরকারি কিনতে। গাড়ী নিইনি কারণ-- পার্কিং। দোকানটার নাম কূপ (Coop) । মানে পাঁচ ছতলা শপিং মল, আমেরিকার ওয়ালমার্ট (Walmart) বা কসটকোর (Costco) মতোই প্রকান্ড। একেকতলায় একেক আইটেম। সময়টা বিকেল, সবাই অফিস থেকে ফেরার পথে কেনাকাটা করছে, প্রচুর ভিড়।
একটা বড় মাছের ফিলে সুন্দর করে কাচের ভেতর রাখা আছে। দাম লেখা আঠারো ফ্রাংক প্রতি কিলো। আধ কিলো সাইজের একটুকরো কিনলুম, দাম পড়লো বারো ফ্রাংক, প্রায় হাজার খানেক টাকা! সুইশরা এভারেজে প্রচন্ড ধনী হয়!
আরো কিছু জিনিস কিনে কাউন্টারে গেলুম পেমেন্ট করতে। খেয়াল করিনি পকেটে শ্রেফ ইউরো, ফ্রাংক নেই! ক্রেডিট কার্ডও ছিল না। খাইসে! অন্যদিকে পেছনে লম্বা লাইন, আরো লম্বা হচ্ছে। তাড়াতাড়ি একশো ইউরোর নোটটা বাড়িয়ে দিলুম চুপচাপ। মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে কি বুঝল, একটা মেশিনে নোটটা চেক করে তারপর হিসেব করে আমাকে বাকি পয়সা ফ্রাংকেই ফেরৎ দিল, বলল মেখসি (ধন্যবাদ)। আমিতো হাঁপ ছেড়ে বাঁচলুম। মেয়েটি মুখে মিস্টি হাসি দিয়ে আমার দিকে একটা পলিথীনের ব্যাগ বাড়িয়ে দিলো, সদাইপাতিগুলো ভরে নেয়ার জন্য। আমিও প্রকান্ড এক মেখসি বলে জিনিসগুলো নিয়ে কেটে পড়লুম। আর হ্যাঁ ঐ মেয়েটির ঐ হাসিটার দাম? আজ্ঞে লাখ ইউরো। দোকানে ফ্রাংক ছাড়া চলেনা, মেয়েটি দয়া না করলে বেশ বিব্রতকর অবস্হা হতো।
শপটাতে আরো দু তিনটে সেলফ পেমেন্ট কাউন্টার আছে যেখানে আপনি নিজেই সব দাম যোগ করে টাকাটা দিতে পারেন। তবে দুহাত কোমরে রেখে একজন শকুনের চোখ দিয়ে সব খেয়াল করছে, কম বেশি দুনম্বরি ট্রাই করলেই খবর হয়ে যাবে। চারিদিকে সব দামী সামগ্রী পড়ে আছে আপনি পকেটে পুরুন আর ট্রলিতে রাখুন কিসসু বলবেনা। কিন্তু দাম না দিয়ে বেরুতে গেলেই এক্কেবারে বেজ্জতি হয়ে যেতে পারেন। তবে ওরকম ঘটনা কখনো ঘটতে দেখিনি।
শনিবারে 'কুপ' সন্ধ্যে ৬ টায় বন্ধ করে দেয়। একবার তো কিনতে কিনতে সন্ধ্যে ৬ টা পার হলো, কিন্তু আমাদের কেউ কিছু বলছেনা দেখে অবাক হলুম। যাক কেনাকাটা সেরে এসকেলেটারে উপরে উঠে দোকানের বাইরে বেরুচ্ছি দেখি একজন পালোয়ান টাইপ কৃষ্ণাঙ্গ ভদ্রলোক দুহাত দুদিকে ছড়িয়ে তৈরী অবস্হায় ঠিক গেটের মুখেই দাড়ানো। কাউকে ঢুকতে দিচ্ছেনা। অর্থাৎ যারা ভেতরে ঢুকেছো তারা কাজ সারো কিন্তু নতুন ক্রেতা কেউ ঢুকতে পারবেনা! কোন ঘন্টা বাজানো নেই শব্দ দূষন হবে যে! ক্রেতাদেরও কোন হুড়োহুড়ি নেই! দুর এটা কোন কিছু হলো? পানসে!
চলবে--
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০১৬ রাত ৮:৩২