উৎসর্গ: শহীদ বুদ্ধিজীবিদেরকে.......
জমিরের বাপ সগিরের ভাই এগিয়ে আসলো যখন,
বোনটাকে তোমার বাড়িতে আমার কোনমতে আনি তখন।
সেই থেকে তাকে চোখে চোখে রাখি অঘটন যদি ঘটায়!
সাধ্যমতো তারে আদর যত্ন করে সুস্থ করে তুলি সেবায়।
কিছুকাল বাদেই সেড়ে উঠে বোন যুদ্ধের ধকল থেকে,
ও মা! মেয়েকে সামলাও, মাকে আনলাম ডেকে।
বোনটি তোমার ঘরে বসে আর থাকবেনা গুটিয়ে হাত,
স্বাধীনতা যুদ্ধে সেও যেতে চায় মেলাবে সে কাঁধে কাঁধ!
বৃদ্ধ মাও আজ অমত করেনা যুদ্ধে যাবার কথায়,
পতাকার লড়াইয়ে ভাই-বোন থাক চিরকাল উপমায়!
আমাদের যা কিছু হারাবার তা হারিয়েছি নিমিষেই,
আগামীর দিন প্রত্যাশা-প্রাপ্তির স্বাধীনতা আবেশেই।
এভাবেই শত মা-বোন মিলে যুদ্ধের সাজে লড়ে,
স্বামী-ভাইদের হাতে হাত রেখে আনবে বিজয় ঘরে।
ডিসেম্বর এলে চারিদিকে শুনি বিজয়ের আগমনী,
বাঙালীর ত্যাগ বৃথা যাবে নাকো' মুক্তি পাবেনা খুনি।
সম্মূখ যুদ্ধে পাক হানাদার উঠছেনা আর পেরে,
আক্রোশে তারা কাপুরুষের মতো নানান ফন্দি করে।
মেধাহীন করে তুলবে এ জাতি বুদ্ধিজীবিদের আনে ধরে,
শত শত শিক্ষক গুলি করে মারে চৌদ্দোই ডিসেম্বরে!
মুনির চৌধুরী, জহির রায়হান, হুমায়ূন কবির, আনোয়ার,
বেছে বেছে মারে সব গুণীদের পাক বাহিনীরা জানোয়ার!
রায়ের বাজার বদ্ধভূমিতে শতশত লাশ দেখি,
নতুন সূর্যটা আমার দেশের স্বাধীনতা রোদ মাখি!
স্বজন হারানোর ব্যথা ভুলি সবে লাল-সবুজের পতাকায়,
ফিরে আসি ঘরে প্রিয় মা'র তরে যুদ্ধটা থেমে যায়!
স্বাধীন দেশে আজ একসাথে বাঁচি সুখের স্বপন বুনি,
ছেলেটার হাতে শোভা পায় বেশ দেশের পতাকা খানি।
প্রিয়তমা আজ বিজয়ের খুশিতে চোখে মুখে আনন্দ ধারা,
নয় মাস পরে প্রিয় স্বামী দেখে খুশিতে আত্মহারা!
মা আজো বেঁচে ছেলেটার চোখে বিজয় দেখবে বলে,
বিজয়ের গল্প শুনে মা'র চোখ ভরে উঠে নোনা জলে!
অবশেষে পতাকা আমাদের হলো একান্ত আপন করে,
পতাকার মান রাখবো সবাই স্বাধীনতা রাখবো ধরে।
প্রতি ইঞ্চি জমি এ দেশের ভূমি রক্তের দামে কেনা,
পতাকারে অবহেলা স্বাধীনতা হেলাফেলা কিছুতেই মানবোনা!
নয় মাস মায়ে পেটে রেখে যেমন জন্ম দিয়েছে সন্তান,
তেমনি এ দেশ নয় মাসে পেল স্বাধীন দেশের সম্মান!
.................................................................
একটি পতাকার জন্য-০২
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৩৩