ছবি: গুগল থেকে ধার নেয়া......
খুব সকালে ঘুম ভেঙে যায় মুয়াজ্জিনের ডাকে,
তখন কি আর বিছানাতে কেহ শুয়ে থাকে?
জলদি করে গামছা কাঁধে টয়লেটে যেই ছুটি,
ইশ্, সবগুলো তো আগেই ফিলাপ ছিলো মাত্র দু'টি।
কি আর করার খুব কষ্টে চেপে রাখি পায়ু,
কথাও বন্ধ, যদি আবার বের হয়ে যায় বায়ু!
মিনিট পাঁচেক পরে খালি টয়লেটে যেই যাই,
বাইরে থেকে আরেক জনে দরজা ঠকঠকায়।
কোন মতে বের হয়ে যেই গোসলখানায় যাবো,
সে কিরে ভাই অতো সোজা সিরিয়ালটা পাবো?
রুমে এসে হাতে নিলাম ক্লোজআপের টিউব,
বের হলোনা একটুও পেস্ট চেপেছিলাম খুব।
পেস্ট না পেয়ে ব্রাশটা রেখে নিমের ডালা খুঁজি,
এভাবেতেই দিন চলে যায় আনেক কষ্টে রোজই।
নিমের ডালে যেই উঠেছি সাজ সকালের কালে,
ডালা ভেঙে পড়ে গেছি বাড়িওলার চালে।
বাড়িওয়ালা জলদি আসে রেগে বলে ''কে রে....,''
হাতে লাঠি খালি পায়েই মারতে আসে তেড়ে।
কোন মতে বেঁচেছিলাম মাইরের হাত থেকে,
সারাবাড়ি মাতিয়ে ছিলো পাড়া-পড়শি ডেকে।
গোসল খানায় ঢুকে দেখি ট্যাপে পানি নাই,
কেছে অল্প সাবান ছিলো তাকেও নাহি পাই।
কি আর করা পানির আশায় যদি বসে থাকি,
বাসটা আবার চলে যাবে অল্প সময় বাকি।
না নাহিয়ে শার্ট পড়বো রুমে এলাম যেই,
হ্যাংগারে এক গোছানো শার্ট চেয়ে দেখি নেই।
রুমমেটকে ফোন দিয়েছি ''কিরে শালা আবুল,''
তোদের জ্বালায় ছাড়বো এ ম্যাস চলে যাব কাবুল।
রুমমেট কয় ''দোস্ত, শোন রে বন্ধু বলি,''
আজকে আমার ভাইবা আছে তাইতো এলাম চলি।
কেমন লাগে মেজাজ বলেন রাগে মাথা জ্বলে,
পান্জাবিটা পড়েই ত্বরা ভার্সিটি যাই চলে।
যাওয়ার আগে ভাবলাম আমি অল্প খেয়ে যাই,
খেতে গিয়ে দেখি সেথা আলু ভর্তা নাই।
রাখা আছে অল্প একটু পাতলা ডালের পানি,
রাগটা চেপে তাই গিলে খাই বুকে নিয়ে গ্লানি।
খেতে গিয়ে ওদিকে আবার বাসটা গেল নাকি!
এখনো তো ৯টা বাজার বারো মিনিট বাকি।
বাস প্রতিদিন আটকে থাকে মেন শহরের জ্যামে,
আজকে কেন এতো আগে কপালটা তাই ঘামে।
ভাতের থালা অমনি রেখে দিলাম একটা দৌড়,
পাছে দেখি দৌড়ে আসে বাড়িওলার কুকুর।
ইশ্, অল্পের জন্য বাসটা গেল এখন করি কি যে!
মধ্যে থেকে ঘামের চোটে পান্জাবিটা ভিজে।
ম্যাসে ফিরে বাইসাইকেল বের করবো যেই,
পিছের চাকা লিক হয়েছে একটু হাওয়াও নেই।
সাইকেল ফেলে অটোয় যাবো আছে কুড়ি টাকা,
রাস্তার পাড়ে লিলি আপা হয়ে গেল দেখা।
দু'জন মিলে রিক্সায় গেলে চল্লিশ টাকা লাগে,
পকেটে মাত্র কুড়ি টাকা নাকে লজ্জা জাগে।
ভার্সিটিতে নেমে দেখি প্যটন্টের চেইন খোলা,
দেখতো যদি আপায়? কেন যে মন ভোলা!
পান্জাবিটা লম্বা ছিলো মান গেল না তাই,
ক্লাশটা বুঝি শুরু হলো গেলাম দ্রুত পায়।
ক্লাশের শেষে ম্যাসে এসে গা এলিয়ে শোই,
ক্লান্ত দেহ চারটা আবধি ঘুমের মধ্যে রই।
উঠে দেখি ম্যাসের বুয়া রাতের খাবার রাধে,
একটা বাটি বেঁচেছিলো তাই দিয়েছে ভাতে।
খালি পেটে টিউশনিতে মন নাহি চায় যেতে,
ভেবে বললাম, ''যাই, চা যদি দেই খেতে!''
সাথে যদি টোস্ট বিস্কুট অল্প একটু আনে,
তাইনা ভেবে ছুটি আবার টিউশনিরঐ টানে।
ছাত্রের মা ডেকে বলে ''ভাত খাবেন নি স্যার?''
লজ্জায় আমি বলি শুধু ''থাক, কি আছে দরকার!''
টিউশনিটা শেষ করলাম চা নাহি আজ জোটে,
ক্ষুদার চোটে জিবটা শুকায় পানিও নাই ঠোঁটে।
হাত ঘরিতে সাতটা বাজে এলাম তখন রুমে,
রাতের খাবার খেয়ে এখন জলদি যাবো ঘুমে।
এভাবে যায় ম্যাসের জীবন শোক কষ্ট সুখে,
তবুও আজ ম্যাসের কথা স্মৃতিপটেই থাকে।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৪১