সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় বিএনপির সাংসদ রেহানা আক্তার স্পিকারকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘শোনা যাচ্ছে, আপনি নাকি নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হবেন।’ তিনি দাবি করেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। এ সময় ফেনীর ভাষায় তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়া কোনো চুদুর বুদুর চইলত ন।’
আজ রোববার জাতীয় সংসদে সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় এসব কথা বলেন সাংসদ রেহানা আক্তার। এ সময় সরকারি দলের সদস্যরা আপত্তি জানাতে থাকলে স্পিকার রেহানা আক্তারের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি সম্পূরক বাজেট নিয়ে কথা বলুন।’
সাংসদ রেহানা সে বিষয়ে কথা না বলে বলেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য টিফিনের টাকা নেওয়া হলো, চাঁদাবাজি করা হলো। সেই চাঁদাবাজির টাকার ভাগ নিয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগের মারামারিতে রাজশাহীতে একজন খুন হলো। পদ্মা সেতু তৈরির আগেই ১২ শতাংশ কমিশন দেওয়ার কথা ফাঁস হওয়ার পর বিশ্বব্যাংক ঋণচুক্তি ঘ্যাচাং করেছে। ১০ পারসেন্টের সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁদের নাম পত্রিকায় এসেছে। দুই পারসেন্টের সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁদের নাম পত্রিকায় আসেনি। সম্প্রতি কানাডিয়ান টেলিভিশনের প্রতিবেদনে ওই দুই পারসেন্ট কমিশনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যরা জড়িত বলে বলা হয়েছে।’
কিন্তু সম্পূরক বাজেটের দিকে না গিয়ে সাংসদ রেহানা তাঁর বক্তব্য দিতেই থাকেন। কেউ যেন গায়ের জোরে একদলীয় নির্বাচন করতে না পারে, সে ব্যাপারে স্পিকারের হস্তক্ষেপ চেয়ে রেহানা আক্তার বলেন, ‘কেউ বলছেন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হবেন। আর বাতাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে আপনি নাকি নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হবেন। কিন্তু নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। আমি আমার ফেনীর ভাষায় বলতে চাই, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কোনো চুদুর বুদুর চইলত ন।...তারেক রহমানকে ইন্টারপোল দিয়ে ধরে আনা হবে, এটা সরকারের রাজনৈতিক শয়তানি এবং আইনমন্ত্রীর ডিজিটাল পাগলামি। তারেক রহমানের পিছনে সময় ব্যয় না করে নিজেদের চামড়া বাঁচানোর কাজে সময় ব্যয় করেন। জামায়াত আর হেফাজতের সঙ্গে যা করেছেন—আপনাদের খবর আছে। পিঠের চামড়া থাকবে না বলে দিলাম।’
রেহানা আক্তার আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নৌকা মার্কার ভোটার বিশ্বজিতের বাড়িতে না গেলেও রাজীবের বাড়িতে গিয়ে প্রমাণ করেছেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নাস্তিকদের উসকানিদাতা।’
সাংসদ রেহানা আক্তারের বক্তব্যের সময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী নমনীয় ছিলেন। নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পরও তিনি দুই মিনিট সময় বাড়িয়ে দেন। তবে রেহানা আক্তারের বক্তব্য শেষে স্পিকার সাংসদদের সতর্ক করে অসংসদীয় বক্তব্য দেওয়া।