সব চুপচাপ দেখছি। সুবর্ণ নাগরিক। সুবর্ণ নাগরিককে না বলুন। কত কি ছাই পাশ। আবেগ কাপা কাপা কন্ঠের কিছু ভাষন ইতিমধ্যে পড়া হয়ে গিয়েছে। বেশ কিছু লোকের নর্তন কুর্দনও দেখেছি। আসল কথা খুব অল্প। আমি কাওছার বা সালমার মত গুছিয়ে লেখতে পারি না। এতোটা লেখার আমার ক্ষমতাও নেই।
আমি ১৪ই ডিসেম্বরের দল নামে একটা সংগঠনের জন্মলগ্ন থেকে সদস্য। দলটার জন্ম হয় গত বছর অক্টোবর মাসে। অথচ মনির হাসান, নায়েফ , আমি এপ্রিল থেকে ইন্টারনেটে কাজ করার চেষ্টা করেছি। আই জাস্ট হেট পাকিস্তান, আই জাস্ট হেট পাকিস্তান, রাজাকার, এন্ড স্পেশালী জামায়াত, রাজাকারস স্যুড বি হ্যাঙ্গড ইত্যাদি গ্রপ তৈরী সহ অনেক গ্রপে সদস্য সগ্রহ করতে কাজ করেছি। ফলাফল অষ্টারম্ভা। বেশ সুন্দর একখানি ঘোড়ার ডিম। কিন্তু যেদিন থেকে নিজেদের কার্যপন্থা ঠিক করে মাঠে আমলাম তার দুই মাসের মাথায় ১৪ ডিসেম্বর ঢাকায় ১০০০ টি শার্ট বিলি করলাম, ২৭ ডিসেম্বর সংসদের সামনে মানব বন্ধন, ১০ই জানুয়ারী ক্রিকেট এন্ড ট্রায়াল ফর ওয়ার ক্রিমিনালস এক সাথে করলাম। এরপরে এই এক বছরে আরো অনেক কিছুই করেছি।
এখন আসি কেন এই কথা বলছি। ১ম কথা আপনাদের কার্যপন্থা ভুল। কি নাম দিচ্ছে তাতে কি আসে যায়? লক্ষ্য কি হওয়া উচিত না যে এই সুবিধা বঞ্চিত বাচ্চা গুলো, মানুষ গুলোর জন্যে সমাজ কিছু করুক?? নাকি বলবেন না নামই প্রধান। আশা করি বাংলা প্রবাদটা পড়েছেন “ বৃক্ষ তোমার নাম কি? ফলে পরিচয়।“ সুবর্ন নাগরিক নাম নিয়ে আন্দোলন না করে দোহাই লাগে এমনটা কি চিন্তা করতে পারেন এই নাম দিলে পরে সরকারের কাছ থেকে এদের জন্যে কি কি সুবিধা আদায় করা যায়?
বেয়াদপি নিবেন না আন্দোলনে নামার আগে হোমওয়ার্ক করেছেন তো? তবে কিছু প্রশ্ন করি আপনি কি জানেন বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৩০% অটিস্টিক বেবী জন্ম নেয়? আপনি কি জানেন বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী শিশুদের নামে মাত্র একটা স্কুল আছে? আপনি কি জানেন সরকারী কোন প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্র নেই? এমন হাজার জিনিস আছে। সরকারকে আগে এদের জন্যে কিছু করতে দেওয়া উচিত নাকি নাম নিয়ে আন্দোলন?? বাংলাদেশের কোন এনজিওটা কি করেছে আমাকে একটু বলবেন? ১০ টাকার কাজ করে যারা লাখ লাখ টাকা নিজের পকেটে ঢোকায় তাদের বড় বড় নীতি কথা শুনলে বড় হাসি পায়।
এখন বলবেন আপনি যে এতো বড় বড় কথা বলছেন আপনি কি জানেন একজন প্রতিবন্ধীর কষ্ট, জীবন!!! আপনার থেকে বেশি না জানলেও কম জানি না। আমার আপন ছোট ভাই একজন প্রতিবন্ধী। আমি জানি এদের কষ্ট কি। আমার কষ্ট এইখানে যে দুনিয়ার সব দেশে সরকার এদের জন্যে কিছু করে। যাতে এরা সুস্থ্য মানুষের মত জীবনযাপন করতে পারে আর আমাদের দেশের সরকার এদের কোন স্বীকৃতিই দেয় না। এদের জন্যে কোন সরকারী স্কুল নেই যেখানে এদেরকে কিছু শেখানো হবে। আমাদের দেশে প্রতিবন্ধী মানে সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকা ভিক্ষুক।
আবারো চলে আসে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের গল্প। এবছর বাংলা ব্লগেস্ফিয়ারের পিটিশন সিগনেচারে আমি একজন সক্রিয় কর্মী ছিলাম। আমি দেখেছি কিভাবে মিজান, অরন্য আনাম, রুবেলের মত অন্তঃপ্রান কিছু ছেলে খেটেছে এর জন্যে। আমি আরো দেখেছি কৌশিক, জামাল ভাস্করের মত তথা কথিত “ কমরেড”দের যাদের কারনে আজকে সাড়ে চার লক্ষ সিগনেচার রাহা মামার কিংবদন্তীতে পড়ে আছে? আমার বড় ভয় হয় আপনাদের এই “হুজুগে” আন্দোলন না এই সুবিধা বঞ্চিত মানুষ গুলো হয়ত যেই সুবিধা পেতে যাচ্ছিলো তা থেকে বঞ্চিত করে দেয়।