কিছুদিন থেকে উর্মির (ছদ্ম নাম) কাছে আজে বাজে ফোন আসছিল। এক পর্যায়ে ও সিমটা পাল্টায়ে ফেলতে বাধ্য হয়। কিছুদিন পর একই সমস্যা। নতুন সীমে আবার পুরানো ফোন। পরে জানাগেল এরা ইন্টারনেট থেকে ওর নাম,,পরিচয়সহ সকল তথ্য পেয়েছে। এমন কি এরা ঊর্মির সাথে নাকি ম্যাসেন্জারে চ্যাট ও করেছে। অবশেষে এক ব্যক্তির কাছ থেকে জানাগেল একটি ওয়েবসাইটের ঠিকানা যেখানে ঊর্মির পর্নোছবি দেয়া হয়েছে। ওয়েবসাইটে ঢুকে দেখি ওর বাসা,,বাবার ফোন নাম্বার,,কোন ডিপার্টমেন্টে পড়ে,,কোন ব্যাচ,,কোথায় বাড়ি-----সব কিছুই সেখানে আছে। অনেককেই ওর ফ্রেন্ড লিস্টে এড করা হয়েছে। এটা দেখে ও অনেক ভেঙে পড়ে।
আমাদের দেশে যেটা সাধানরত ঘটে---- ছেলেরা প্রেমের অভিনয় করে শারীরীক সম্পর্ক গড়ে তুলে এবং ভিডিও করে নেটে ছেড়ে দেয়। এক মেয়ের পর্নো ছবি তুলে ওক এখন ব্লাকমেইল করছে, অনেকে মিলে ইউজ করছে এবং ওর কাছ থেকে টাকাও নিচ্ছে। অনেক সময় আবার ভিন্ন চিত্র ও দেখা যায়। কিছু কিছু সাইবার ক্যাফে তে বসার ব্যবস্থা এমন যেন একএকটা অালাদা রুম। সেখানে জুটিগুলির একান্ত দৃশ্যগুলি গোপনে ভিডিও করে নেটে ছেড়ে দেয়া হয়। যেটা ঐ ছেলে-মেয়েদের কেউই হয়ত জানতে পারছেনা।
কিন্তু ঊর্মীর ক্ষেত্রে ঘটেছে এর থেকেও ভিন্ন ঘটনা। ওর ডিপার্টমেন্টে একটি গ্রুপের সাথে ওর একদিন তর্ক হয় এবং এর প্রতিশোধ নিতে ঐ গ্রুপের ছেলে-মেয়েগুলি এই জঘন্য কাজটি করে। ওরা সবাই ঢাকার। কারও বাবা ভার্সিটির টিচার কিন্তু এদের নৈতিকতাবোধ?
আমাদের মাঝে সততা, নৈতিকতা, মূল্যবোধ--এই শব্দগুলির তাৎপর্য এখন অনেক কমে গেছে। আধুনিকায়নের নামে আমরা আজ উগ্র হয়ে যাচ্ছি। ভালবাসার নামে নোংরামি করে বেড়াচ্ছি। যেহেতু এইসবের শিকার হচ্ছে মেয়েরা,,বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ছেলেদের চেহারাকে আড়াল করে রাখা হয়,,,,তাই মেয়েদেরকে সবকিছুর দায়ভার নিতে হয়।
মেয়েদের সচেতন হবার দরকার। যদিও ঊর্মী কিছু না করেও রেহাই পায়নি। তারপারও মেয়েদের কে নিজেকে নিয়ে ভাবা উচিত। ভালবাসার মানুষটিকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করা ঠিক নয়। কারন মুখোশের আড়ালের পিশাচটাকে তো আর দেখা যায়না। সাময়ীক মোহের বশবর্তী হয়ে সারা জীবনের হীনমন্যতায় ভোগার থেকে একটু সাবধান হওয়াটাই কি ভাল নয়?
আর যে ছেলেগুলি এমন কাজ করে চলেছে তাদের কঠোর শাস্তি হওয়াটা জরুরী। যদিও বাংলাদেশে বসে এদের শাস্তি দাবী করাটা সর্বোচ্চ বোকামি। এক্ষেত্রে পরিবার গুলি গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখতে পারে। আমরা জীবনের একটা বড় সময় বাবা-মায়ের আদরে বেড়ে উঠি। ভাল-মন্দের জ্ঞান তাদের কাছ থেকেই প্রথমে পেয়ে থাকি। বাবা-মাকে শুধু সন্তানকে আগলে রাখলেই হবেনা। সন্তানকে ছোট বেলা থেকেই শেখাতে হবে খারাপ টা না নিতে--- ছেলে -মেয়েকে আলাদা ভাবে নয়, মানুষ হিসেবে অন্য মানুষকে শ্রদ্ধা করতে। অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ই পারে আমাদের পশুত্বকে দমন করতে।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০০৯ রাত ৯:৫২