প্রবাসে বাংলাদেশের রক্তের উত্তরাধিকারী গুণীগন -পর্ব - ১৪৭,১৪৮,১৪৯,১৫০।
১৪৭/ রাশিয়ায় বাংলাদেশী বংশদ্ভূত জমজ শিল্পী
বাংলাদেশের ছেলে মনোয়ার হোসেন ২৭ বছর আগে পাড়ি দেন সে সময়ের সোভিয়েত রাশিয়ায়। বিয়ে করেন মস্কোর আন্না গুনচারোভাকে। দুই বছর পর মনোয়ার ও আন্নার কোল আলো করে আসে জমজ কন্যা, সাবিনা ও রুবিনা হোসেন। সেই দুই মেয়ে, নিজেদের চিত্রকলায় বিশ্ব মাতিয়ে এবার এসেছেন স্বদেশের মানুষের মন জয় করতে।
সাবিনা ও রুবিনা- অমিত প্রতিভাধর জমজ বোন। রাশিয়ার মস্কোতেই শিল্পশিক্ষা। এরই মধ্যে সুপার রিয়েলিস্টিক চিত্রকর্মে পেয়েছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি। দুজনই সমান দক্ষ তেল, জল, চারকোলসহ চিত্রকলার প্রাথমিক সব প্রকরণে। তাদের কুইক ড্রয়িংই প্রমাণ দিলো রাশিয়া, স্পেন ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাওয়া পুরস্কারগুলো এমনি আসেনি।
সুপার রিয়েলিস্টিক কাজের সঙ্গে, পশ্চিমা ঘরানার শিল্পবিশ্বে নিজেদের প্রভাব অক্ষুন্ন রাখতে কাজ করে যাচ্ছেন দুবোন। শিল্পকর্মের পরিকল্পনা করেন একসঙ্গে, এমনও হয়েছে একজনের শুরু করা কাজ শেষ করেছেন অন্যজন।
বিশ্ব মাতিয়ে, এবার দেশের মানুষের মন জয় করতে ছুটে এসেছেন ঢাকায়। জাতীয় চিত্রশালায় তাদের প্রদর্শনী- বাংলা নামে দেশ, ১৩ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
সুত্রঃ https://www.youtube.com/watch?v=xpZKXawGW64
১৪৮/ ২৫ কেজি স্বর্ণ ফিরিয়ে দুবাইয়ে প্রশংসিত বাংলাদেশি লিটন
৩.৫ মিলিয়ন দিনার(প্রায় ১২ কোটি টাকা) অর্থমূল্যের ২৫ কেজি স্বর্ণ ফিরিয়ে দিয়ে দুবাইয়ের গণমাধ্যমগুলোর আলোচনায় ওঠে এসেছেন বাংলাদেশি নাগরিক লিটন চন্দ্র পাল নেপাল। রাতে দুবাই বিমানবন্দর থেকে দেইরার মুরাক্কাবাতে চার যাত্রী পরিবহণের সময় ওই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে। যাত্রীদের রাত ২.৪৫ মিনিটে গন্তব্যে পৌঁছে দেন লিটন। লাগেজগুলো নামিয়ে দিতে চাইলেও যাত্রীরা তার সাহায্য নিতে অস্বীকৃতি জানান। তার ট্যাক্সিতে যে, ২৫ কেজি স্বর্ণ আছে তা বুঝতে পারেন তার ৪০ মিনিট পর।
লিটন বলেন, তখনকার মতো আমার ডিউটি প্রায় শেষ। ওই সময় আরটিএর কাস্টমার সাপোর্ট থেকে ফোন পাই। আমার ট্যাক্সিতে কোনো যাত্রীর ব্যাগ আছে কী না জানতে চায় দুবাই পুলিশ। বললাম, চেক করে দেখছি। পরে একটি ধূসর রঙের ল্যাপটপের ব্যাগ দেখতে পাই যার ভেতরে স্বর্ণের বারগুলো রাখা ছিল। তখনই কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাই। পরে আরটিএর কাছে ব্যাগটি হস্তান্তর করি।
লিটন আরো বলেন, ব্যাগের মধ্যে আটটি স্বর্ণের বার থেকে আমি অাশ্চর্য হয়ে যাই। কর্তৃপক্ষ মাপ দেয়ার পর দেখেন তাতে ২৫ কেজি স্বর্ণ আছে। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ আমরা স্বর্ণগুলো ফিরিয়ে দিই। স্বর্ণের মালিক শ্বেতাঙ্গ সেই লোকটি লিবিয়ার নাগরিক।
২০১০ সাল থেকেই দুবাইয়ের সড়ক ও পরিবর্হন কর্তৃপক্ষের (আরটিএ) অধীনে দুবাই ট্যাক্সি কর্পোরেশনের (ডিটিসি) সাথে যুক্ত লিটন। স্বর্ণের মালিক কিছু না দিলেও লিটন চন্দ্র পাল নেপালের এ সততা ও উদারতার স্বীকৃতি দিয়েছে দুবাইয়ের সড়ক ও পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (আরটিএ)। আরটিএর প্রধান নির্বাহী ডা. ইউসুফ আল আরি লিটন কে নগদ ১০০০ দিনার দিয়েছেন এবং এক বছরের জন্য আবাসন সুবিধা ফ্রি করে দিয়েছেন। দুবাই রেল যোগাযোগের প্রধান নির্বাহী আবুল মসহিন ইব্রাহিম ইউনুস দিয়েছে নগদ ৫০০০ দিনার। সাথে একটি প্রশংসাপত্রও দেয়া হয়েছে।
এখনো বিয়ে করেননি ওই বাংলাদেশী। তিনি বলেন, এ ঘটনায় মা আমাকে দোয়া করেছেন। বলেছেন, আমি তাকে গর্বিত করেছি। আমার তিন বোনও এতে ভীষণ খুশি হয়েছে।
সুত্রঃ Click This Link
১৪৯/আমেরিকায় ফটোগ্রাফিতে 'গ্রান্ড মার্শাল' এ্যাওয়ার্ড জয়ি বাংলাদেশি সেলিম
সারাবিশ্বের ফটোগ্রাফারদের চিত্রকর্মের আলোকে এ বছরের ‘গ্র্যান্ড মার্শাল’ এ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছেন বাংলাদেশি ফটোগ্রাফার মোহাম্মদ আলী সেলিম। ফটোগ্রাফি সোসাইটি অব আমেরিকা তথা পিএসএ প্রতি বছরই বিশ্বের সেরা ফটোগ্রাফারদের এ সম্মানে ভূষিত করে।
নিউইয়র্কে বসবাসরত ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার সেলিমকে গত ২২ অক্টোবর এক পত্রে এ তথ্য জানানো হয়। একইসাথে একটি সম্মাননাপত্রও প্রেরণ করা হয়।
১৯৯৮ সাল থেকে এ যাবত মোট ৪৯জন পেলেন এ স্বীকৃতি। অর্থাৎ সেলিম হলেন সর্বশেষ সেরা ফটোগ্রাফার। এ বছর আর কাউকে এ সম্মান জানানো হয়েছে বলে এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। এর আগেও এই বাংলাদেশি আলোকচিত্রী মর্যাদাসম্পন্ন কয়েকটি এ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। এর অন্যতম হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব ফটোগ্রাফিক আর্ট কর্তৃক ২০১২ সালে ‘মাস্টার অব ফটোগ্রাফি এ্যাওয়ার্ড’।
সুত্র: Click This Link
১৫০/ বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা সুবীর চৌধুরী
যে কোনো প্রতিষ্ঠানের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় পরামর্শদাতা হিসেবে বিশ্বব্যাপী সমাদৃত লেখক এবং কন্সালট্যান্ট বাংলাদেশি-আমেরিকান সুবীর চৌধুরী বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট ড. জিম ইয়ং কিম এর ৫ সদস্যের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য হলেন। অক্টোবর-২০১৫ থেকে এটি কার্যকর হয়েছে। এ কাউন্সিল কাজ করবে বিশ্বব্যাংকের এক্সিকিউটিভ লিডারশিপ টিমের উপদেষ্টা হিসেবে। উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের সন্তান সুবীর চৌধুরী হলেন প্রথম বাংলাদেশি যিনি এ দায়িত্বে অধিষ্ঠিত হলেন।
বিশ্বব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ এ দায়িত্ব পালনকালে মাতৃভূমির প্রতি তার ভূমিকা কতটুকু এ বিষয়ে
সুবীর চৌধুরী বলেন, বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বকে চরম দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করা। দৈনিক গড়ে ১.২৫ মার্কিন ডলারের সম-পরিমাণ অর্থের কম আয়কারী লোকদের চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে বাসবাসকারী বলে অভিহিত করা হচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, ‘বিশ্বকে দারিদ্র্যমুক্তির চলমান কার্যক্রমের অংশ হতে পেরে সম্মানিতবোধ করছি। বিশ্বব্যাংকের এই লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে যে কোন একটি প্রকল্পে সম্পৃক্ত হতে পারলেই আমি গৌরববোধ করবো। সকলেই জানি যে, বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে জীবন-যাপন করছে। আশা করছি, বিশ্ববাংকের এই লক্ষ্য অর্জনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশেও চরম দারিদ্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা একেবারেই শূন্যে নেমে আসবে।
চট্টগ্রামের সন্তান সুবীর চৌধুরীর মিলিয়ন ডলার অনুদানে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার বিশ্বখ্যাত বার্কলে ক্যাম্পাসে এ বছরের মার্চে চালু হয়েছে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিসহ বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নে গবেষণার জন্যে ‘সুবীর এন্ড মলিনী চৌধুরী সেন্টার ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ। ’
৪৮ বছর বয়সী সুবীর চৌধুরীর ১৪টি বই প্রকাশিত হয়েছে কোয়ালিটি ও ম্যানেজমেন্টের ওপর। সবকটি সমাদৃত হয়েছে সর্বমহলে এবং নিউইয়র্ক টাইমস তাকে ‘দ্য লিডিং কোয়ালিটি এক্সপার্ট’ এবং বিজনেস উইক ‘দ্য কোয়ালিটি প্রফেট’ হিসেবে অভিহিত করেছে। জানুয়ারি- ২০১৬ তে তার আরেকটি গবেষণামূলক বই ‘রোবাস্ট অপ্টিমাইজেশন’ প্রকাশিত হয়েছে। ষোড়শ গ্রন্থ ‘কোয়ালিটি ফর হিউম্যান মাইন্ডসেট’ নিয়ে কাজ করছেন তিনি।
ভারতের খড়গপুরে ইন্ডিয়ান টেকনোলজি অব ইন্সটিটিউট থেকে এ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আন্ডার গ্র্যাজুয়েশনের পর সেন্ট্রাল মিশিগান ইউনিভার্সিটি থেকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যানেজমেন্টে গ্র্যাজুয়েশন করেন। ১৯৯১ সালে উচ্চতর শিক্ষার জন্যে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন মেধাবি এই বাংলাদেশি। ২০০৪ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সিটিজেন হিসেবে শপথ গ্রহণের পর মিশিগানের ব্লুমফিল্ড হিলসে বসতি গড়েছিলেন। এএসআই কন্সাল্টিং গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সুবীর চৌধুরী।
শিক্ষা শেষে কর্মজীবন শুরু করেন ১৯৯৩ সালে মিশিগানে জেনারেল মটর্স কোম্পানির ডেলফি ডিভিশনে কোয়ালিটি অ্যান্ড সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। ১৯৯৮ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি আমেরিকান সাপ্লাইয়ার ইন্সটিটিউটের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তাদের ট্রেনিং প্রদানের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে বিশ্বখ্যাত ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত লেখক কেন জিমারের সঙ্গে ‘কিউএস-৯০০০ পাইয়োনিয়ার’ বই লিখে কল-করখানায় সর্বোৎকৃষ্ট পণ্য উৎপাদনমূলক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। সেই থেকে শুরু সুবীর চৌধুরীর ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত সুপরামর্শক জীবনের। আর থেমে থাকেননি। বিশ্বখ্যাত কোম্পানীগুলোর ব্যবস্থাপনায় গতি আনতে এখন সুবীর চৌধুরীকে অর্থের বিনিময়ে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে।
সুবীর চৌধুরী বেশ কয়েক বছর ধরে ক্যালিফোর্নিয়ায় বসবাস করছেন স্ত্রী মলিনী চৌধুরী, কন্যা আনন্দি এবং এক পুত্র নিয়ে।
সুত্র- Click This Link
প্রবাসে বাংলাদেশের রক্তের উত্তরাধিকারী গুণীগন,পর্ব ১ হইতে ১৫০ এখানে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:১১