প্রবাসে বাংলাদেশের রক্তের উত্তরাধিকারী গুণীগন - পর্ব ১১১ হইতে ১১৫
( এই পর্বে আরো আছেন -
** ক্যানাডা কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ শ্রেষ্ঠ গবেষনা গ্রন্থের জন্য গোল্ড মেডেল প্রাপ্ত প্রকৌশলী ডক্টর সুবোধ বড়ুয়া ।
** মাইক্রোসফটের গ্লোবাল বিজনেস সাপোর্ট বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার ( জাপান), মোস্তাক আহমেদ শাকিল ।
** যুক্তরাষ্ট্র বিমান বাহিনী বিশেষ সম্মাননা বাইশ জন "Living Eagles" এর একজন - গ্রুপ ক্যাপ্টেন সাইফুল আজম ।
** মিস ওয়ার্ল্ড কানাডার ফটোজেনিকে বাঙালি মেয়ে নির্ঝূম ।
১১১ / মিস ওয়ার্ল্ড কানাডার ফটোজেনিকে বাঙালি মেয়ে নির্ঝূম
কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে অনুষ্ঠিত মিস ওয়ার্ল্ড কানাডা ডেলিগেট ২০১২-তে বাঙালি মেয়ে নিশীথ প্রশান্তি নির্ঝুম ফটোজেনিক এবং সেরা নৃত্য টপটেন তালিকায় স্থান পেয়েছেন।
অনলাইন ভোটের মূল প্রতিযোগিতাতেও অংশ নিয়ে নির্ঝুম চূড়ান্ত পর্বে ড্যান্স পারফর্ম করেন । এর আগে মিস ফোবানা ২০০৫ এবং ফটোজেনিকে রানার আপ হয়েছিলেন নিশীথ প্রশান্তি নির্ঝুম ।
টরন্টোতে বাঙালি কমিউনিটির সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অত্যন্ত পরিচিত মুখ তিনি ।
BIOGRAPHIES OF Nirjhum Click This Link
( বিস্তারিত ও পরিচিতি মুলক কিছু সংগ্রহ করা যায়নি )
http://www.hollywoodbanglanews.com/news/7595.html
১১২ / ক্যানাডা কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ শ্রেষ্ঠ গবেষনা গ্রন্থের জন্য গোল্ড মেডেল প্রাপ্ত প্রকৌশলী ডক্টর সুবোধ বড়ুয়া ।
প্রকৌশলী ডক্টর সুবোধ বড়ুয়া ১৯৬৮ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অত্যন্ত কৃতিত্বের সাথে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী লাভ করেন । তিনি ১৯৭৩ সালে যুক্তরাষ্টের আলাবামা অউবার্ন ইউনিভার্সিটিতে স্কলারশিপ নিয়ে ভর্তি হন এবং ১৯৭৫ সালে মেধা তালিকায় শীর্ষ স্থানে থেকে মাস্টার ডিগ্রী শেষ করেন। ঐ বছরই তিনি কানাডা সরকারের স্কলারশিপ নিয়ে বিখ্যাত ওয়াটারলু ইউনিভার্সিটিতে পি,এইচ, ডিগ্রীর গবেষনা শুরু করেন ।
তাঁর পি,এইচ, ডি, গবেষনার থিসিসটি সে বছর সমগ্র ক্যানাডার মধ্যে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ শ্রেষ্ঠ গবেষনা গ্রন্থ হিসাবে পুরস্কৃত হয় এবং ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে গোল্ড মেডেল প্রদান করে। তাঁর পুরস্কার ফলকটি বর্তমানে ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে শোভা পাচ্ছে ।
তিনি কানাডা থেকে বিশেষ কমিশন প্রাপ্ত হয়ে সিংগাপুরে তিন বছর একটি পেট্রোলিয়াম কোম্পানিতে কাজ করেন ।
প্রকৌশলী ডক্টর সুবোধ বড়ুয়া তাঁর জন্মস্থান চট্রগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার (শিলক) বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছাত্র -ছাত্রীদের জন্য তাঁর মাতা-পিতার নাম মেধা বৃত্তি চালু করে যান । তিনি এবং তাঁর এক বন্ধু কানাডা প্রবাসী কীর্তিমান বিজ্ঞানী তপন চক্রবর্তী যৌথ ভাবে ঢাকার বুয়েটে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মেধা বৃত্তি চালু করেন । তা ছাড়াও ডক্টর সুবোধ বড়ুয়া বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত এবং ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত একজন অসচ্ছল পরিবারের সন্তানের আজীবন চিকিত্সা খরচের ব্যবস্থা করে যান ।
প্রয়াত প্রকৌশলী ডক্টর সুবোধ বড়ুয়ার বড় মেয়ে ডাক্তার মৌমিতা বড়ুয়া কানাডা জেনারেল হসপিটাল এবং ইউনিভার্সিটি হেল্থ নেট ওয়ার্ক -এ সহযোগী অধ্যাপক এবং একজন কিডনী রোগ বিশেষজ্ঞ্। ঢাকার এস,কে,বড়ুয়া এন্ড কম্পানীর সত্বাধিকারী বিশিষ্ট চাটার্ড একাউন্টেন্ট সুহৃদ বড়ুয়া এবং চট্রগাম গণপূর্ত বিভাগের প্রধান হিসাব কর্মকর্তা সুজিত বড়ুয়া প্রয়াতের দুই (সহোদর) ভাই ।
কানাডা প্রবাসী ও চট্রগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়ার শিলক গ্রামের প্রয়াত সুশান্ত মহাজন বড়ুয়ার দ্বিতীয় পুত্র বিশিষ্ট রসায়ন প্রকৌশলী ডক্টর সুবোধ বড়ুয়া চলতি সালের ৫ই জুন কানাডার প্রিন্সেস মার্গারেট হাসপাতালে পরলোক গমন করেন । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর ।
১১৩ / / মাইক্রোসফটের গ্লোবাল বিজনেস সাপোর্ট বিভাগের আহমেদ জেনারেল ম্যানেজার ( জাপান), মোস্তাক শাকিল
প্রথম বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে মোস্তাক শাকিল আহমেদ বিশ্ববিখ্যাত আইটি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের গ্লোবাল বিজনেস সাপোর্ট বিভাগের জাপানে জেনারেল ম্যানেজার পদে, নিয়োগ পেয়েছেন ।
শাকিলের অধীনে মাইক্রোসফট জাপানের এন্টার প্রাইজ আর প্রিমিয়ার ইঞ্জিনিয়াররা মাইক্রোসফটের সাতিয়া নাদেলার 'ক্লাউড ফার্স্ট মোবাইল ফার্স্ট' এ শ্লোগান নিয়ে কাজ করবেন ।
মোস্তাক শাকিলের জন্ম যশোরে । তিনি শিঙহুয়া ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার এ উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে গত ১৪ বছর ধরে মাইক্রোসফট এ কর্মরত আছেন । এর আগে তিনি এশিয়ার কনজুমার সাপোর্ট বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর হিসেবে জাপান মাইক্রোসফটে কর্মরত ছিলেন । এছাড়া সিয়াটলে মাইক্রোসফটের প্রধান কার্যালয়ে বিভিন্ন ইনঞ্জনিয়ারিং বিভাগে ম্যানেজমেন্টে কর্মরত ছিলেন ।
জীবনের বেশিরভাগ সময় দেশের বাইরে থাকলেও তিনি দেশের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ভবিষ্যতে কাজ করবেন বলে আশা করেন । উইন্ডোজ এক্সপির বাংলা সংস্করণের সময় শাকিল উইন্ডোজ বিভাগে কর্মরত ছিলেন এবং প্রত্যক্ষ ভাবে এর সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন ।
১১৪ / যুক্তরাষ্ট্র বিমান বাহিনী বিশেষ সম্মাননা বাইশ জন "Living Eagles" এর একজন - গ্রুপ ক্যাপ্টেন সাইফুল আজম
এখন পর্যন্ত আধুনিক যুদ্ধের ইতিহাসে প্রথম বিশবযুদ্ধ থেকে শুরু করে এপর্যন্ত সর্বোচ্চ সংখ্যক শত্রুপক্ষের বিমান ঘায়েল করার রেকর্ড এর তালিকায় গ্রুপ ক্যাপ্টেন সাইফুল আজম শীর্ষে অবস্থান করছেন ।
আরব-ইস্রায়েল যুদ্ধে অসাধারণ অবদান রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ জর্দান-ইরাক-পাকিস্তান তাকে বীরত্ব সূচক পদকে ভূষিত করে । তিনটি দেশের সম্মান সূচক সামরিক পদক অর্জনের ঘটনা সামরিক ইতিহাসে বিরল । একই সাথে তিনটি দেশের হয়ে যুদ্ধ করা এবং একই ব্যাক্তির দ্বারা একের অধিক শ্ত্রু রাষ্ট্রের বিমান ভূপাতিত করার বিরল রেকর্ডের অধিকারীও এই একই ব্যাক্তি।
সাইফুল আজম একমাত্র সামরিক পাইলট যিনি যুদ্ধে চারটি বিমান বাহিনীর (বাংলাদেশ, জর্ডান, ইরাক ও পাকিস্তান) জন্য কাজ করেছেন। সেসাথে দুইটি ভিন্ন প্রতিপক্ষের(ভারত ও ইসরায়েল) বিরুদ্ধে লড়াই করার অনন্য কৃতিত্ব তার রয়েছে২০০১ সালে তাকে যুক্তরাষ্ট্র বিমান বাহিনী বিশেষ সন্মান বাইশ জন "Living Eagles"এর একজন সম্মাননা প্রদান করে ।
সু ত্র - উইকিপিডিয়া অ্যান্ড-
১১৫ / জার্মান গাড়ী নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বিএমডব্লিউ (BMW)'র প্রকৌশলী সুমিত পাল , যিনি নিজেকে প্রকৌশলীর চেয়ে 'আইরনম্যান' পরিচয় দিতেই ভালোবাসেন
দুর্গম রাস্তা পাড়ি দিয়ে পাহাড়ে আরোহণ কিংবা খরস্রোতা নদী সাঁতরে লক্ষ্যে পৌঁছানো- ট্রায়াথলনের এসব অভিযান এখন আর বাঙালির কাছে শুধুই বইয়ে পড়া কাহিনীতে আটকে নেই। জার্মানির প্রবাসী এক বাংলাদেশি অভিযাত্রী এমনই এক ট্রায়াথলনে অংশ নিয়ে নজর কেড়েছেন।
সুমিত পাল নামের এক তড়িৎ প্রকৌশলী সম্প্রতি নেদারল্যান্ডসের লিমবুর্গে অনুষ্ঠিত আইরনম্যান ডিসেন্ট ট্রায়াথলন সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। কোনো বিরতি ছাড়াই টানা ৪২.২ কিলোমিটার ম্যারাথন, ১৮০.২৫ কিলোমিটার সাইকেল চালানো এবং ৩.৮৬ কিলোমিটার সাঁতার সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন সুমিত। ম্যারাথনে তার সময় লেগেছে পাঁচ ঘণ্টা ৩৪ মিনিট।
সাইকেলিং শেষ করেছেন সাত ঘণ্টা ২৯ মিনিটে এবং সাঁতার শেষ করেছেন এক ঘণ্টা ২৯ মিনিটে। মোট ৯০০ জনের মধ্যে তিনি হয়েছেন ৬৬০তম। এমন কঠোর অভিযান সম্পন্ন করাটাই যে অনেকের জন্য চ্যালেঞ্জ। সেখানে তিনি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এ কৃতিত্ব দেখালেন সুমিত।
জার্মানিতে তিনি বিএমডব্লিউতে প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত। বুয়েট থেকে তড়িৎ প্রকৌশলীতে ব্যাচেলর ডিগ্রি সম্পন্ন করে তিনি জার্মানিতে মাস্টার্স এবং পিএইডি করেন। কাজের ফাঁকেও প্রতি সপ্তাহে তিনি ১৫ থেকে ২০ ঘণ্টা অনুশীলন করেন। ২০১০ সাল থেকে তিনি বার্লিন, রোম, জেনেভা ও ফ্রাঙ্কফুর্ট ম্যারাথনে অংশ নিয়ে আসছেন। এখন তিনি নিজেকে প্রকৌশলীর চেয়ে 'আইরনম্যান' পরিচয় দিতেই ভালোবাসেন ।
প্রবাসে বাংলাদেশের রক্তের উত্তরাধিকারী গুণীগন - পর্ব ১ হইতে ১০০ , এখানে ।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১০