প্রবাসে বাংলাদেশের রক্তের উত্তরাধিকারী গুণীগন- ৯১ ,৯২ ,৯৩ ,৯৪ ,৯৫ ।
প্রবাসে বাংলাদেশের রক্তের উত্তরাধিকারী গুণীগন- ৯১ ,
পাঞ্জাবি মুভির নায়িকা , মিস ক্যালিফোর্নিয়া আরিয়ানা আয়েশা আরি ।
আরিয়ানা আয়েশা আফসার আরি ১৯৯১ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার সান ডিয়েগোতে তার জন্ম ,সেখানেই বেড়ে ওঠা । ছোটবেলা থেকেই সংস্কৃতিমনা মেয়েটি । পড়েন লস অ্যাঞ্জেলেসের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ায় । গ্র্যাজুয়েট হয়েছেন ওয়েস্টভিউ হাই স্কুল থেকে ।
মাত্র ১৪ বছর বয়সেই আউটস্ট্যান্ডিং টিন হিসেবে পরিচিতি পান তিনি ।
অনেক প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে ২০১০ সালে মিস ক্যালিফোর্নিয়া নির্বাচিত হন আরি ।
এখানেই থেমে নেই । পরবর্তীতে মিস আমেরিকার সেরা দশে অবস্থান করেন তিনি ।
লস অ্যাঞ্জেলেসের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার এ শিক্ষার্থী একে একে নিজেকে মেলে ধরা শুরু করেন এভাবেই । মিস ক্যালিফোর্নিয়া ও মিস আমেরিকা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার আগেই ২০০৯ সালে আমেরিকান আইডলের সেরা আট হিসেবে নির্বাচিত হন আরি
গানের সঙ্গেই তার যত প্রেম । গান লেখেন , নিয়মিত গেয়েও থাকেন । পড়াশোনাটাও গানের ওপর । বিশ্ববিদ্যালয়ে এথনোমিউজিকোলজি নিয়ে পড়েন আরি । এটি এমন বিষয়, যেখানে সংস্কৃতি ও সমাজ থেকে গান কীভাবে উঠে আসে তা-ই পড়ানো হয় । উল্টোটাও হয়, মানে গান দিয়ে সমাজকে বোঝার চেষ্টাও করা হয় ।
২০১৩-এর মে মাসে আরি তার সহপাঠী অ্যান্ড্রু সেডারের সঙ্গে ট্রেড হার্টস নামের একটি গান পরিবেশন করেন । হৃদয়ভাঙা বিষয়- কষ্টদায়ক গান ছিল সেটি । আরি নিজেই বলেছেন, গানটি খুবই হৃদয়স্পর্শী । যাদের হৃদয় ভেঙেছে, তারা সবাই গানটি পছন্দ করবেন। তার গাওয়া বনি রেইটের আই ক্যানট মেক ইউ লাভ মি গানটি ব্যাপক শ্রোতাপ্রিয়তা পায় । ২০১৩-এর জানুয়ারিতে গানটি প্রকাশ হয় ।
সেলিন ডিওন, এলা ফিটজেরাল্ড এবং রেজিনা স্পেক্টরের ভক্ত তিনি । ওয়াল্ট ডিজনির ‘মেক ইওর মার্ক অন্য দ্য ওয়ার্ল্ড’ ক্যাম্পেইনের তিনি লিড ভোকালিস্ট। গানের সঙ্গে সঙ্গে অভিনয়েও রয়েছে আরিয়ানার পদচারণা । এ বছরই তার অভিনীত ‘মৌজ মাস্তিয়া’ নামে একটি পাঞ্জাবি ছবি মুক্তি পেয়েছে । কমেডি ধাঁচের এ ছবিতে আরির চরিত্রের নাম ডলি ।
ওএমজি ! ইএমটি ! এবং আনইউজুয়াল সাসপেক্ট নামের আমেরিকান টিভি সিরিজেও অভিনয় করেছেন আরি । আসছে জানুয়ারিতে ইপি (এক্সটেন্ডেড প্লে-একটার বেশি গান থাকে, তবে অ্যালবাম বলা যায় না) নিয়ে আসছেন তিনি । এটি প্রযোজনা করেছে বিশ্বখ্যাত সংগীত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টিইকে, যারা মাইলি সাইরাস, সেলিন ডিওনের মতো শিল্পীর অ্যালবাম করে থাকে । শাশা নামের এক জুয়েলারি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের মডেলও আরিয়ানা ।
অধিকতর আগ্রহী হলে ।
প্রবাসে বাংলাদেশের রক্তের উত্তরাধিকারী গুণীগন- ৯২ ,
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসায় রুবাব ।
বাংলাদেশের ছেলে রুবাব খান এখন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসায় । সেখানে তিনি পোস্ট ডকটোরাল ফেলো হিসেবে কাজ ও গবেষণা করবেন মোট তিন বছর (আগস্ট ২০১৪-জুলাই ২০১৭) ।
রুবাবের দায়িত্ব ওয়াশিংটন ডিসিতে, নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারে । তিনি ও তাঁর দল মূলত কাজ করছেন জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ নিয়ে । এটি নাসার পরবর্তী প্রজন্মের মহাকাশ পরিদর্শক, যেটিকে ২০১৮-১৯ সালে মহাশূন্যে উৎক্ষেপণ করা হবে ।
রুবাবের কাজের মধ্যে আছে হাবল, স্পিটজার ও হার্শেল—এই তিনটি টেলিস্কোপ থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করা, যা মহাজাগতিক বস্তুর দৃশ্যমান হওয়ার বৈশিষ্ট্যগুলো বুঝতে আরও সহায়ক হবে । তাঁর এ গবেষণা জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের উৎক্ষেপণ পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ।
রুবাব ঢাকা উদয়ন স্কুল থেকে এসএসসি আর নটর ডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন । পড়ালেখায় সব সময়ই ভালো, অংশগ্রহণ করেছেন বিতর্ক, কুইজসহ নানা সহশিক্ষা কাজে। এইচএসসির পর তাঁর বাবার ইচ্ছা ছিল, ছেলে দেশেই ভালো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুক । কিন্তু ছেলের মনে যে আকাশছোঁয়ার স্বপ্ন, দূর নক্ষত্ররাজির রহস্য ভেদ করার লক্ষ্য ।
তাই তো তিনি বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে থাকেন । আর বাবা-মায়ের ইচ্ছেমতো দেশের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষা দেন । ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটে (আইবিএ) । কিন্তু এরই মধ্যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে বৃত্তিসহ অ্যাস্ট্রোফিজিকস (জোতির্পদার্থবিজ্ঞান) বিষয়ে পড়ার সুযোগ পান । ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে।
রুবাবের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক নূরুর রহমান খান ।
সংবাদটির উৎস -
প্রবাসে বাংলাদেশের রক্তের উত্তরাধিকারী গুণীগন- ৯৩ ,
বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্র রোবটের কারিগর :যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়ের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ডঃ তাহের এ সাইফ
ছবিতে সোয়েটার গায়ে -
রক্তনালিতে রক্ত জমাট বেঁধে গেলে কিংবা ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর কোষে নির্দিষ্ট স্থানে ওষুধ দিতে গেলে প্রয়োজন হয় অতি ক্ষুদ্র কোনো একটি যন্ত্রের । চিকিৎসকদের এমন একটি উপকরণের স্বপ্ন অনেক দিনের, যা শরীরের ভেতরে ঠিক যেখানে প্রয়োজন সেখানেই ওষুধ দিতে পারবে কিংবা নিজে থেকে রক্তনালির ভেতরের জমাট বাঁধা রক্তকে সরিয়ে দিতে পারবে ।
চিকিৎসকদের সেই স্বপ্নের স্বচালিত উপকরণটি তৈরির পুরো গবেষণাটি হয়েছে বাংলাদেশি অধ্যাপক তাহের এ সাইফের নেতৃত্বে । গবেষক দলটি তৈরি করেছে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্র রোবট । সম্প্রতি প্রথমবারের মতো এমন সাফল্যের খবরটি বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞান বিষয়ক জনপ্রিয় জার্নাল নেচার-এ প্রকাশিত হয়েছে। অতি ক্ষুদ্র এ বায়োরোবটটি মানুষের হৃৎস্পন্দনের মতোই বিভিন্ন বিষয় বুঝতে পারে । স্বশক্তিতে চালিত এ রোবট একটানা কয়েক বছর ধরে সাঁতারও কাটতে পারবে ।
বিষয়টা অনেকটা ষাটের দশকের বিখ্যাত কল্পবিজ্ঞান চলচ্চিত্র ফ্যানটাসটিক ভয়েজ-এর মতো । সেখানে অবশ্য চিকিৎসকের শরীরকে ছোট করে রোগীর শরীরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় । সিনেমার মতো না হলেও এই অতি ক্ষুদ্র চিকিৎসক রোবটটির নাম দেওয়া হয়েছে রোবটিক বায়োলজিক্যাল সুইমার (বায়ো-বট সুইমার) । যেহেতু এটি জীবন্ত কোষের সঙ্গে কাজ করেন তাই এটি চালাতে আলাদা কোনো ব্যাটারির দরকার হয় না ।
রোবট নিয়েই যে শুধু সাইফের কাজ তা কিন্তু নয়, তৈরি করেছেন মেশিনস অব মাইক্রো ইলেকট্রো মেকানিক্যাল সিস্টেমস (এমইএমএস) নামের অতি ক্ষুদ্রকায় যন্ত্র । তাঁর তৈরি রোবটের মতোই এগুলো এতই ক্ষুদ্র যে এর আকার মানুষের চুলের চেয়েও ছোট, দেখতে হলে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের প্রয়োজন হয় ! বিশেষ করে বর্তমানে গাড়ি, ক্যামেরা, টেলিভিশন, কম্পিউটারে এ যন্ত্র ব্যবহৃত হয় ।
তাঁর গবেষণাগারে ১০০ ন্যানো মিটারের চেয়ে ছোট নানা ধরনের যন্ত্রও তৈরি হয় । এমন সব গবেষণায় দীর্ঘদিন ধরেই যুক্ত রয়েছেন ন্যানো প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তাহের এ সাইফ । তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয়ের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
এ ছাড়া তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের এমইএমএস পরীক্ষাগারেরও পরিচালক। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে স্নাতক, ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর এবং কর্নেল ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি করেছেন তিনি ।
তাহের এ সাইফ এর গবেষণার মূল বিষয় হচ্ছে চিকিৎসা উপকরণ হিসেবে জীবন্ত মেশিন তৈরি করা । অর্থাৎ প্রযুক্তি এবং জীবনের যৌথ সমন্বয়ে এমন যন্ত্র তৈরি করা, যা নিজে থেকেই নিজস্ব কোষের শক্তিতে চলতে পারবে ।’
প্রযুক্তি দিয়ে যা তৈরি হয় সেটিকেই জীবনের সঙ্গে যুক্ত করার বিষয় নিয়েই গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি । আর এই গবেষণাগুলো হয় অতি ক্ষুদ্রকায় বস্তু, যেগুলোর আবার এক মিটারের ১০০ কোটি ভাগের এক ভাগ মাত্র ।
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তাহের সাইফ জেরক্স পুরস্কার, আমেরিকার জাতীয় বিজ্ঞান ফাউন্ডেশনের ক্যারিয়ার পুরস্কারসহ একাধিক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।
উচ্চমাধ্যমিকে ঢাকা বোর্ডে চতুর্থ হয়ে বুয়েটে ভর্তি হন সাইফ। পুরকৌশল বিভাগেও প্রথম হন এবং বুয়েটে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন।
তাহের এ সাইফের জন্ম ঢাকায়। বাবা সাইফুর রহমান সরকারি চাকরিজীবী । মা তাহেরা বেগম ।
শিক্ষক স্ত্রী শাহনীলা চৌধুরী এবং দুই সন্তান ফারযাদ সাইফ এবং ফাইজা সাইফ নিয়ে তাহের এ সাইফ যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন ।
বাংলাদেশের তরুণ শিক্ষার্থী এবং গবেষকদের জন্য তাঁর পরামর্শ হচ্ছে, এমন একটি গবেষণার বিষয় খুঁজে নেওয়া উচিত, যা সত্যিকার অর্থেই কাজের এবং যা নিজেই বিশ্বাস করেন। তৈরি করতে হবে নতুন প্রশ্নও। কারণ এমন একটি প্রশ্ন তার উত্তর নিজেকেই বের করতে হয়।
প্রবাসে বাংলাদেশের রক্তের উত্তরাধিকারী গুণীগন- ৯৪ ,
প্রবাসে সফল তরুণ আফতাব মনির ।
২০০৬ সালে ভ্রমণ ভিসা নিয়ে প্রথম দুবাইয়ে পা রাখেন আফতাব মনির । অল্প সময়ে ভাল লেগে যায় তার দুবাই শহর । সিদ্ধান্ত নেন দুবাইতে কাজ করার । একটি জার্মান ট্যুরিজম কোম্পানিতে আইটি সেকশনের নিয়োগ পত্রও পান তিনি । নিয়োগ পত্র হাতে পেয়ে চলে আসেন দেশে । ছয় মাস পর দুবাই ফিরে যোগ দেন কর্মস্থলে । চাকরি করেন ১৪ মাস । এরপর নিজেই খুলেন ইভেন্টেলর নামে একটি এলএলসি লাইসেন্স ।
ব্যবসায়িক ক্যারিয়ারের শুরুর কথা বর্ণনা দিয়ে বাংলাদেশি এ তরুণ ব্যবসায়ী জানান, ‘দুবাইয়ে চাকরির সুবাদে ইভেন্টের অনেক কিছুই আমি শিখি । যে কাজ আমি নিজে করতে পারি, সেই কাজ অন্যের অধীনে করার চেয়ে নিজে করা লাভজনক । ব্যবসার কিছু টেকনিকও আমি বুঝি । চাকরি ছেড়ে তাই নিজে লাইসেন্স করি । সময়ের চাহিদাকে কাজে লাগাতে ইভেন্টে চলে আসি । দুবাইতে অফিসও নিই । কিন্তু অভিজ্ঞতার জন্য অন্য একটি বিদেশি কোম্পানীতে প্রজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে এক বছরের চুক্তিতে কাজ করি । এতে কর্পোরেট লেভেলে বেশি কাজ করার সুযোগ হয় । চুক্তির একবছর শেষে শুরু করি নিজের বিজনেস ।’
ইভেন্ট ব্যবসার মার্কেট বিবেচনা করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশি তরুণরা মার্কেটিং, আইটি সাইটসহ যেকোন ক্ষেত্রে চায়না এবং ভারতীয়দের সাথে টক্কর দেয়ার মতো ক্ষমতা রাখে ।
ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টে ইভেন্টেলরের লাইসেন্সের পাশাপাশি ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে দুবাইতে ভেলু ইনফিনিটি কনসালটেন্সি নামে একটি আইটি ফার্ম খুলেন আফতাব মনির । যার কাজ হচ্ছে সোর্স কোড ডেভেলপমেন্ট ও মেডিক্যাল ট্রান্সক্রিপশনের কাজ করা ।
এ কাজ গুলো বেশির ভাগ আসে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা থেকে । এছাড়াও প্রিন্টিং এন্ড এডভারটাইজিং ফার্ম, আইটি কনসালটেন্ট হিসেবে আফতাবের নিজের ফার্ম আছে । কাজ করছেন ভিডিও প্রোডাকশনেও । ২০১৬ সালের মধ্যে 'ভিশন রায়া' নামে একটি প্রোডাকশন হাউজ খোলার কাজ পুরো দমে চলছে ।
উল্লেখ্য, আফতাব মনির বাংলাদেশে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে চলে যান ভারতের ব্যাঙ্গালোর সেখানে ব্যাচেলর অফ ইঞ্জিনিয়ারিং ইন কম্পিউটার সায়েন্স-এর ওপর চার বছরের ডিগ্রি শেষ করে আইবিএম-এ প্রথম চাকরি করেন ।
তিনি চট্টগ্রাম জেলার নজুমিয়া হাটের বাসিন্দা। তার বাবা রফিক আহমেদ ও মা আমিনা রফিক যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। এ সফল তরুণ ব্যবসায়ী ভ্রমণ করেছেন কুয়েত, ওমান, সিঙ্গাপুর, মালেশিয়া, থাইল্যান্ড, জাপান, চায়না, জার্মানী, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় ।
শুধু ব্যবসা নয় সংগীত ও সাংস্কৃতিক জগতেও আছে তার বিচরণের চিহ্ন । ১৯৯০ সালে নতুন কুঁড়ির পুরস্কার জিতেছেন তিনি । গান নিয়ে বিচরণ করেছেন শিশু একাডেমি ও শিল্পকলায় । একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে অরিন্দম নাট্য সম্প্রদায়ের সাথেও কাজ করেন তিনি ।
See more
প্রবাসে বাংলাদেশের রক্তের উত্তরাধিকারী গুণীগন- ৯৫ ।
ক্যানাডায় ৩৯টি পেটেন্টের অধিকারী বাংলাদেশি কীর্তিমান বিজ্ঞানী ও ম্যারাথন দৌড়বিদ তপন চক্রবর্তী ।
কানাডাপ্রবাসী বাংলাদেশি কীর্তিমান বিজ্ঞানী তপন চক্রবর্তী । বিশ্বের সাতটি মহাদেশে ম্যারাথন দৌড় শেষ করেছেন তিনি । দৌড়েছেন অ্যান্টার্কটিকার বরফ-রাজ্য, দুর্গম এভারেস্ট কিংবা আফ্রিকার গহিন জঙ্গলেও ।
১৯৬৫ সালে মতলব হাইস্কুল থেকে এসএসসিতে তৃতীয় ও ১৯৬৭ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে এইচএসসিতে দ্বিতীয় হন। তারপর পড়তে আসেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েটে। ১৯৭১ সালে মাসহ ভারতের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেন। ফিরে এসে ১৯৭২ সালে বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন ।
শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন সেখানে।
১৯৭৪ সালে ফরাসি বৃত্তি নিয়ে প্যারিস যান পড়তে। পরের বছর, প্যারিস থেকে কানাডার ওয়াটার লু বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যান মাস্টার্স ও পিএইচডি করতে। ১৯৮০ সালে যোগ দেন কানাডার সবচেয়ে বড় তেল কোম্পানি ইম্পেরিয়াল ওয়েলের গবেষণা বিভাগে । এই কোম্পানিটি উত্তর আমেরিকায় এক্সন মোবিল নামে পরিচিত ।
১৯৯৬-৯৭ সালে দুই বছরের জন্য হিউস্টনের ল্যাবে কাজ করেন। সেখানে দুজন বিজ্ঞানীর সঙ্গে দেখা হয়, যাঁরা ম্যারাথন দৌড়ান। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে তপন ফুটবল ও ভলিবল খেলতেন। কিন্তু ম্যারাথন দৌড়ানোর কথা ভাবেননি কখনো। হিউস্টন থেকে ফেরার পর ক্যালগারিতে একটা নতুন বাড়িতে ওঠেন। খেয়াল করে দেখলেন, তাঁর সহকর্মীদের কেউ কেউ সকালে দৌড়ে অফিসে আসেন। ভাবলেন, তিনিও সেটি করবেন।
পাঁচ কিলোমিটার দূরের বাসা থেকে একদিন দৌড়ে অফিসে এলেন। তেমন একটা সমস্যা বোধ হলো না। ভাবলেন, নতুন একটা লক্ষ্য ঠিক করা দরকার। ঠিক করলেন, ম্যারাথন দৌড়াবেন। যে ব্যায়ামাগারে তিনি মাঝেমধ্যে যেতেন, সেখানকার প্রশিক্ষক তাঁর লক্ষ্যের কথা শুনে হেসে বললেন, ‘তুমি ম্যারাথন দৌড়াবে? তাহলে ম্যাগাজিন পড়বে কে?’ কিন্তু তপন গায়ে মাখেননি সেসব।
২০০০ সালের ৭ মে ভ্যানকুবার ম্যারাথনে দৌড়ানোর জন্য ৭০ ডলার খরচ করে নিবন্ধন করে ফেললেন, আর প্রতিদিন একটু একটু করে প্র্যাকটিসের চৌহদ্দি বাড়ানো শুরু করলেন। তারপর ঠিক ঠিক সফলতার সঙ্গে শেষ করলেন জীবনের প্রথম ম্যারাথন। সেই শুরু। তারপর দুর্গম এভারেস্ট থেকে অ্যান্টার্কটিকা কিংবা আফ্রিকার জঙ্গল, তপন ম্যারাথন দৌড়ে জয় করেছেন বিশ্বের সব কটি মহাদেশ।
তেল তরলীকরণে নতুন এক দ্রবন আবিস্কার -
মধ্যপ্রাচ্যের খনিজ তেলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার তেলের একটা বড় পার্থক্য আছে। মাটির এক হাজার ৫০০ ফুট গভীরে কালো বালুর মধ্যে তেল থাকে। মধ্যপ্রাচ্যের তেলের সান্দ্রতা খুবই কম। বলা যায় সেটি থাকে তরল। পাইপ বসিয়ে দিলেই মোটামুটি উঠে আসে। কিন্তু কানাডার তেলকূপগুলোতে যে তেল, সেটির সান্দ্রতা কখনো কখনো প্রায় এক লাখ সেস্টিমিপস পর্যন্ত হয়। কাজেই সেখান থেকে তেল তুলে আনার খরচটা যেমন বেশি, তেমনি সেটি কঠিনও।
তিনি বিশ্বাস করেন, সমস্যার আশপাশেই প্রকৃতি তার সমাধানটা রেখেছে। তিনি উদ্ভাবন করেন একটা নতুন দ্রাবক। এটি তেল–মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিলে তেলের সান্দ্রতা এত কমে যায় যে তখন সেটিকে অনায়াসে তোলা যায়।
এখন পর্যন্ত মোট ৩৯টি পেটেন্টের অধিকারী এই বিজ্ঞানী । যার মানে, ৩৯টি বিশেষ সেবা ও পন্যের স্বত্ব আছে এই কীর্তিমান বিজ্ঞানীর ঝুলিতে।
তপন চক্রবর্তী কখনো নিজেকে একজন ‘বিশেষজ্ঞ’ মনে করেন না । তিনি বলেন -
‘আমি আমার সব উদ্ভাবনকেই মনে করি একটি সুন্দর গান বা কবিতার মতো । কোনো কিছু আবিষ্কার করতে হলে কখনো বিশেষজ্ঞ হওয়া যাবে না। বরং ভুল করতে হবে এবং খোলা মনের অধিকারী হতে হবে ।’
তপন চক্রবর্তী ১৯৫০ সালে কুমিল্লার মতলবে জন্ম গ্রহন করেন । তাঁর মাতার নাম হাস্য বালা চক্রবর্তী ,পিতা অশ্বিনী কুমার চক্রবর্তী ।
প্রকৌশলী পুত্র ও চিকিত্সক কন্যার জনক-জননী তপন ও মাধুরী চক্রবর্তী থাকেন ক্যালগারিতে । ইচ্ছা আছে বাংলাদেশের আর্সেনিক সমস্যা নিয়ে কাজ করার । এখন তার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ।
তপন চক্রবর্তী
আগের পর্ব গুলির চেইন -
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:২৪