প্রবাসে বাংলাদেশের রক্তের উত্তরাধিকারী গুণীগন- ৮১ ,৮২ ,৮৩ ,৮৪ ,৮৫ ।
৮১ / হলিউড ও বোম্বের মুভিতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অভিনেতা অর্ক দাশ ।
অস্ট্রেলিয়ার অভিনয়জগৎ তথা মঞ্চ-টিভি-চলচ্চিত্র তিন মাধ্যমেই অর্ক কাজ করছেন সমানতালে । বোম্বের চলচ্চিত্রকার অনুপম শর্মার ছবি আনইন্ডিয়ান । বলিউডের বিখ্যাত অভিনেতাদের সঙ্গে এই ছবিতে অভিনয় করেছেন চট্টগ্রামের ছেলে অর্ক । এই সিনেমার বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন তন্বিষ্ঠা চ্যাটার্জি, স্টিফেন হল্টার, গুলশান গ্রোভার, সুপ্রিয়া পাঠক । একটি অতিথি চরিত্রে আছেন সালমান খান ।
এই ছবিতে অন্যতম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন বিশ্বনন্দিত ক্রিকেটার ব্রেট লি । ছবিতে অর্ক ব্রেট লির বন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন । অভিনয়ের পাশাপাশি টিভি সিরিজ পরিচালনায়ও হাত লাগিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই তরুণ ।
সম্প্রতি পা রেখেছেন হলিউডেও । হলিউডের ছবি দ্য লায়ন এ লিড সাপোর্টিং রোল অর্থাৎ শীর্ষ পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেছেন এই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অর্ক ।
ছবিতে তিনি দেব প্যাটেল ও নিকোল কিডম্যানের সঙ্গে অভিনয় করেছেন ।
২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়া আঞ্চলিক শেক্সপিয়ার উৎসবে অর্কের অভিনয় জীবন শুরু । এর পরের বছর ওই উৎসবেই অভিনয়ে সাফল্যটাও এল । ২০০৪ সালের উৎসবে সংলাপ বিভাগে প্রথম হলেন অর্ক । এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েও অভিনয়ের চর্চা অব্যাহত থাকল । মঞ্চে নিয়মিতই দেখা গেল অর্ক দাশকে । অভিনয় করলেন বেশ কয়েকটি নাটকে । এর মধ্যে গ্রিফিন ইনডিপেনডেন্ট থিয়েটারের হয়ে সিডনিতে করলেন রেফারেন্সেস টু সালভাদর দালি, মেক মি হট নাটক । এই নাটক দর্শকপ্রিয়তা যেমন পেল, তেমনি সমালোচকদের প্রশংসাও কুড়াল ।
অর্ক ২০১০ সালে যোগ দেন সিডনির এনসেম্বেল থিয়েটারে । এই নাট্যদলের হয়ে মঞ্চে অ্যানিমেলস আউট অব পেপার নাটকে অভিনয় করেন সে বছর । এই নাটকে অভিনয় করে মঞ্চে সেরা নতুন মুখের মনোনয়ন পান সিডনি থিয়েটার পুরস্কারের জন্য । পরের বছর ক্যাসানোভা নাটকে অভিনয় করেন ।
২০১৩ সালে গ্রিফিন থিয়েটারের তারকাসমৃদ্ধ নাটক বিচড-এ অভিনয় করেন । মঞ্চের পর টেলিভিশনের পর্দায়ও হাজির অর্ক । অভিনয় করলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রশংসিত ও পুরস্কারপ্রাপ্ত মিনি সিরিজ দ্য কোড-এ । দরজা খুলল চলচ্চিত্রজগতেরও । গুড মর্নিং চলচ্চিত্রে অভিনয় করলেন পার্শ্বচরিত্রে । অভিনয়ের পাশাপাশি লেখালেখি ও নিজের লেখা নাটকের নির্দেশনাও দেন এই তরুণ ।
দ্য ক্যাজুয়ালস নামের একটি কমেডি সিরিজের যৌথ নির্মাতা তিনি । এই টিভি সিরিজটি পরিচালনার পাশাপাশি এতে অভিনয়ও করেছেন তিনি । খুব শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রে অনলাইনে ছাড়া হবে তাঁর এই প্রযোজনা। পাশাপাশি লস অ্যাঞ্জেলেসের হলি ওয়েভ ফেস্টিভ্যালেও দেখানো হবে এটি ।
মাটিতে নাম-যশ যতই হোক না কেন, নিজের মাতৃভূমিকে ভুলতে পারেন না অর্ক। এখানে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। সবচেয়ে বড় কথা, অভিনয়টা শুরু এই বাংলাদেশেই। চট্টগ্রামের সামার ফিল্ড স্কুলে পড়ার সময় জুতা আবিষ্কার নাটকে তাঁর প্রথম অভিনয় ।
অর্কের বাবা অজয় দাশ গুপ্ত , মা দীপা দাশ , আদি নিবাস চট্টগ্রামের লাভ লেইনে ।
Click This Link
৮২ / কানাডায় দ্য টরন্টো স্টার অ্যাওয়ার্ড জয়ী অনন্যা রাফা
প্রতিশ্রুতিশীল সাংবাদিকতার জন্য অত্যন্ত সম্মানজনক পদক দ্য টরন্টো স্টার হাইস্কুল নিউজ পেপার অ্যাওয়ার্ড । বৃহত্তর টরন্টোর হাইস্কুলগুলো থেকে প্রকাশিত স্কুল পত্রিকাগুলোর সঙ্গে জড়িত সংবাদকর্মীদের মধ্য থেকে বাছাই করে সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ সাংবাদিকের স্বীকৃতি হিসেবে এই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয় ।
কানাডার মূলধারার অত্যন্ত প্রভাবশালী পত্রিকা টরন্টো স্টার গত ১৯ বছর ধরে স্কুল পত্রিকার ২১টি ক্যাটাগরির প্রতিটিতে দুজন করে সংবাদকর্মীকে পুরস্কৃত করছে ।
সেরা ইলাস্ট্রেশনের জন্য ২০১৫ সালের সন্মান জনক এ পদকটি ছিনিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অনন্যা রাফা । চলতি ২০১৫ সালের অ্যাওয়ার্ডের জন্য টরন্টোর বিভিন্ন হাইস্কুলের ছয় শ জন প্রতিযোগী ছিলেন । টরন্টো স্টারের একটি জুরি বোর্ড যাচাই বাছাই করে সেরা সংবাদকর্মীদের অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত করেন ।
সেরা ইলাস্ট্রেশনের জন্য অ্যাওয়ার্ড পাওয়া রাফা অনন্যা রায়ার্সন ইউনিভার্সিটিতে ফটোগ্রাফি মেজর নিয়ে ফাইন আর্টসে পড়ছে । দশম শ্রেণিতে পড়াকালে রাফা তার স্কুলের পত্রিকা রেকনারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয় । অল্পদিনের মধ্যেই তার ফটোগ্রাফি ও ইলাস্ট্রেশন সবার দৃষ্টি কাড়ে ।
রাফা টরেন্টো প্রবাসী আজিম উদ্দিন আহমেদ ও আনজুমান আরার কন্যা ।
৮৩ / গুগলের টেকনিক্যাল প্রোডাক্ট ম্যানেজার প্রকৌশলী মোহাম্মাদ শিশির খান
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী ফরচুন কাজের পরিবেশের বিচারে প্রতি বছর ১০০টি সেরা প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করে, যে প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীরা সন্তুষ্ট ও অনুগত । এই তালিকায় গত তিন বছর টানা শীর্ষ অবস্থানটি গুগল ইনকরপোরেটেডের দখলে ।
তাই গুগলে চাকরি অনেকের কাছেই অনেকটা স্বপ্নের মতো ।
বর্তমানে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি গুগলে কাজ করলেও বিশ্বখ্যাত এই প্রতিষ্ঠানে ২০০৪ সালে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় গুগলের প্রধান কার্যালয়ে সফটওয়্যার প্রকৌশলী পদে যোগ দেন মোহাম্মাদ শিশির খান । তিনি এখন গুগলের কারিগরি পণ্য ব্যবস্থাপক (টেকনিক্যাল প্রোডাক্ট ম্যানেজার)।
১৯৯৫ সালে এসএসসি পরীক্ষা শেষে সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্র চলে যান শিশির । সেখানে দ্বাদশ শ্রেণির পড়াশোনা শেষে প্রথমে মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি ও পরে ওয়েন স্টেট ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার কৌশল বিষয়ে স্নাতক হন ।
পুরো পরিবার ও আত্মীয়স্বজনেরা যুক্তরাষ্ট্রে থাকায় বাংলাদেশে খুব একটা আসা না হলেও দেশকে নিয়ে সব সময় ভাবেন, দেশের সব খবর রাখেন ।
বললেন, বাংলাদেশের প্রযুক্তি জগৎ যেন শক্তিশালী হয়ে বেড়ে উঠতে পারে, সে জন্য গুগলে আমরা বাংলাদেশিরা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি । গুগলের সব সেবা বাংলায় রূপান্তর করা হচ্ছে । আমাদের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশে গুগলের নানা কার্যক্রম চালু হয়েছে । গুগল বাসের মাধ্যমে আমরা প্রায় সাড়ে তিন শ স্কুল-কলেজের প্রায় দেড় লাখ শিক্ষার্থীকে ইন্টারনেটের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি।’ এ কাজে গুগলকে সহায়তা করছে অনেকগুলো সংগঠন ।
মোহাম্মাদ শিশির খান এর বাড়ি বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জে ।
৮৪ / আরেকজন দ্য টরন্টো স্টার হাইস্কুল নিউজ পেপার অ্যাওয়ার্ড জয়ী - চিত্তা চৌধুরী ।
৮২ নং ক্রমিকে উল্যেখিত একই পুরস্কারে ফিচার লেখায় রানার আপ পদক পেয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত চিত্তা চৌধুরী ।
ফিচার রাইটিংয়ে রানার আপ অ্যাওয়ার্ড পাওয়া চিত্তা চৌধুরী নর্থ থর্নক্লিফ কলেজিয়েট স্কুলে গ্রেড টুয়েলভের ছাত্রী ।
মাত্র এক বছর আগে চিত্তা স্কুল নিউজ পেপারের সঙ্গে যুক্ত হয় ।লেখালেখি শুরুর এক বছরের মাথায় সে সম্মানজনক স্বীকৃতি ছিনিয়ে আনে ।
ফিচার লেখায় রানার আপ অ্যাওয়ার্ড পাওয়া চিত্তা চৌধুরী টরন্টোতে বসবাসরত রুবিনা চৌধুরী ও কবীর চৌধুরীর মেয়ে ।
৮৫ / ফ্রান্সে অ্যাম্বাসেডর অব বাংলাদেশ এন্ড ইন্ডিয়ান কন্টিনেন্ট সম্মাননা প্রাপ্ত বাংলাদেশি প্রকৌশলী ওসমান হোসেইন মনির
ফ্রান্সে সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজের মাধ্যমে বাংলাদেশের বাকেরগঞ্জের তরুণ ইঞ্জিনিয়ার ওসমান হোসেইন মনির ইতোমধ্যে বেশ প্রশংসিত হয়েছেন ।
ভাষাগত দক্ষতা, তারুণ্য ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে তার প্রাণবন্ত চেষ্টা দেখে বিমোহিত হয়েছেন ফরাসিরা । স্থানীয় ফরাসি রাজনীতির সাথে তাল মিলিয়ে চলছেন তিনি আপন গতিতে । তার বিশ্বাস ছিল শুধু বাংলাদেশি কমিউনিটিতে সীমাবদ্ধ না থেকে ফরাসি মূলধারার সাথে কাজ করলে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশিদের আরও বেশি উপকার করা যাবে।
নিজ বিশ্বাসে অটুট থাকা এ তরুণ ফ্রান্সে বসবাসরত দক্ষিণ এশিয়ার অভিবাসীদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতায় বিভিন্ন সময় ভূমিকা রেখেছেন ।
এর স্বীকৃতি হিসাবে ফ্রান্সের তুলুজ শহরের সিন্হর্কাত (মেয়রের) দপ্তর থেকে তাকে অ্যাম্বাসেডর অব বাংলাদেশ এন্ড ইন্ডিয়ান কন্টিনেন্ট সম্মাননা দেয়া হয়েছে । এটা ফ্রান্সে বসবাসরত বাংলাদেশিদের প্রথম অর্জন এবং ইউরোপের বাংলাদেশিদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয় । বাকেরগঞ্জের এ তরুণের অর্জন বাংলাদেশকে সম্মানিত করেছে ।
ফ্রান্সের université de toulouse le mirail থেকে উচ্চতর ডিগ্রি ধারী মনির একজন সফল ব্যবসায়ী হিসাবে তুলুজে বেশ পরিচিত । তুলুজ বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তার ছিল বেশ সুনাম, ইউরোপের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কাজ করেন ।
বাকেরগঞ্জের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে কাজ করার জন্য ইতোমধ্যে ফ্রান্স সরকারের সাথে কথা বলেছেন, এবং ফ্রান্স বাংলাদেশ সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট এসোসিয়েশন নিয়ে কাজ করছেন ।
ওই এসোসিয়েশনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার ওসমান হোসেইন মনির, সাধারণ সম্পাদক মিস্টার উইললি বার্দিন (তুলুজ সিটি মেয়রের উপদেষ্টা ও সভাপতি সিন্হর্কেত ) এবং কোষাধ্যক্ষ মিস্টার অন্দরে গালিগো (সাবেক পার্লামেন্ট মেম্বার ফ্রান্স ও সভাপতি জর্নাল দু তুলুজ ) নির্বাচিত করা হয় ।
যেখানে ফ্রান্স প্রতিনিধি দল থেকে প্রাথমিক পর্যায়ে একটি গ্রামের নামের প্রস্তাব চাইলে ইঞ্জিনিয়ার ওসমান হোসেইন মনির তার স্বপ্নের ঠিকানা আলোকিত বাকেরগঞ্জ নাম প্রস্তাব করেন ।
ওসমান হোসেইন মনির ১৯৮১ সালের ৪ এপ্রিল ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন । তার বাবা আব্দুল মান্নান মোল্লা ।
তথ্য - এখানে
পূর্বের পর্বগুলির লেজ
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৪২