৭৬ / ২০১৪ সালে ব্রিটেনের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য ''কুইনস অ্যাওয়ার্ড'' জয়ী প্রতিষ্ঠান ''লন্ডন ট্রাডিশন'', প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশী মামুন চৌধুরী ।
প্রায় দুই যুগ আগে কপর্দকশূন্য অবস্থায় লন্ডনে পাড়ি জমান মামুন চৌধুরী ।
সেখান থেকে এখন তিনি পূর্ব লন্ডনের উৎপাদন শিল্প পুনর্জাগরণের অগ্রদূত হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন ।
অনলাইন গার্ডিয়ানের একটি প্রতিবেদনে বাংলাদেশী মামুন চৌধুরীর অসামান্য সেই সফলতার গল্প উঠে এসেছে । পোশাক শিল্পের এ উদ্যোক্তা বৃটেনে তার কর্মজীবন শুরু করেন নিজ দেশ থেকে তৈরী পোশাক আমদানি করার মাধ্যমে । কয়েক বছর পর তিনি পশমী কোট উৎপাদনে মনোযোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন ।
প্রতিষ্ঠা করেন ''লন্ডন ট্রাডিশন'' নামক পোশাক নির্মাতা প্রতিষ্ঠান । কারখানা পূর্ব লন্ডনের হ্যাকনি উইকে । এখানে তৈরী পশমী কোট রপ্তানি হয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে । পূর্ব লন্ডনের ছোট্ট একটি কারখানা দিয়ে যাত্রা শুরু করে এখন তার প্রতিযোগিতা বিশ্বব্যাপী ।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অবদান রাখায় ব্রিটেনের রানির বিশেষ পদক '' কুইনস অ্যাওয়ার্ড'' এ ভূষিত হয়েছে মামুনের কোম্পানি লন্ডন ট্র্যাডিশন।
এছাড়া, লন্ডনের সাবেক ও বর্তমান মেয়র কেন লিভিংস্টোন ও বরিস জনসন থেকে শুরু করে ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী জর্জ অসবোর্নেরও প্রশংসা পেয়েছেন বাংলাদেশের মামুন চৌধুরীর এই ব্যবসায়িক উদ্যোগ ।
বর্তমানে ব্রিটেনের অধিবাসী মামুন চৌধুরী , হবিগঞ্জ জেলার চুনারু ঘাঁটের ময়নাবাদ গ্রামের সন্তান ।
আরও জানতে -
৭৭ / হলিউডের অভিনেত্রী আফসান আজাদ
হ্যারি পটারের জাদুবিদ্যার স্কুলে হ্যারি পটারের সহপাঠির চরিত্রের জন্য কয়েকজন ছেলেমেয়ে প্রয়োজন । এদের মধ্যে দুজনকে হতে হবে আবার জমজ । তাই হ্যারি পটার সংশ্লিষ্ট সবাই ছড়িয়ে পড়ল তাদের খোঁজে । একদিন ম্যানচেস্টারের হোয়েলি রেঞ্জ হাই স্কুলে হাজির হলো একটি ইউনিট । চলতে থাকল অডিশন ।
এই স্কুলেরই শিক্ষার্থী আফসান আজাদ । অডিশন দেওয়ার কোনো ইচ্ছাই ছিলো না আফসান আজাদের । বন্ধুদের সাথে মজা করতে করতে লাইনে দাঁড়িয়ে যান । কাকতালীয়ভাবে পদ্মা পাতিল চরিত্রের জন্য নির্বাচিত হয়ে যান ।
আফসান আজাদ হ্যারি পটার সিরিজের ৪টি ছবিতে পদ্মা পাতিল চরিত্রে অভিনয় করেছেন । এ তালিকায় আছে হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য গবলেট অব ফায়ার (২০০৫), হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য হাফ ব্লাড প্রিন্স (২০০৯), হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ডেথলি হ্যালোস পার্ট-১ (২০১০) ও ২০১১ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দ্য ডেথলি হ্যালোস’-এর পার্ট-২ এ ছাড়া হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য অর্ডার অব দ্য ফিনিক্সের ভিডিও গেমে কণ্ঠ দিয়েছে আফসান ।
আফসান আজাদের জন্ম ১৯৮৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি । লন্ডনের শহর ম্যানচেস্টারের লংসাইটে। বাবা আবদুল আজাদ চট্টগ্রামের সন্তান । বহু দিন আগে বিলেতবাসী হয়েছেন । ‘হোয়েলি রেঞ্জ হাই স্কুল’ থেকে স্কুলজীবন শেষ করেছে আফসান । এখন রাশহোমের ‘জ্যাভেরিয়ান কলেজ’-এ রসায়ন, জীববিজ্ঞান ও ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করছেন ।
সুত্র - উইকিপিডিয়া ও -
৭৮ / হ্যারি পটার ও তামিল মুভির অভিনেত্রী শেফালী চৌধুরী
৭৭ নং ক্রমিকে আগেই লিখছি , হ্যারি পটারের জাদুবিদ্যার স্কুলে হ্যারি পটারের সহপাঠির চরিত্রের জন্য কয়েকজন ছেলেমেয়ে প্রয়োজন । এদের মধ্যে দুজনকে হতে হবে জমজ । তাই হ্যারি পটার সংশ্লিষ্ট সবাই ছড়িয়ে পড়ল তাদের খোঁজে । একদিন ম্যানচেস্টারের হোয়েলি রেঞ্জ হাই স্কুলে হাজির হলো একটি ইউনিট ।
সেখানে অডিশন পরব সেরে তারা সেখানকার শিক্ষার্থী শেফালী চৌধুরীকে নির্বাচিত করেন হ্যারির সহ পাঠির এক জনের চরিত্রে ।
পরবর্তীতে আফসান ও শেফালীকে পাশাপাশি করে পাতিল যমজের জন্য ‘মনের মতো রসায়ন’এর সন্ধান পেয়ে যান পটার টীম । লন্ডনের দুই প্রান্ত থেকে সংগ্রহ করা পাতিল যমজের এই দুজন কাকতালীয়ভাবে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ।
শেফালী হ্যারি পটার ধারাবাহিক চলচ্চিত্রে প্রভাতী পাতিল চরিত্রে অভিনয় শুরু করেন ২০০৫ সালের হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য গব্লেট অব ফায়ার সিনেমার মাধ্যমে । তখন তিনি ওয়েভারলী বিদ্যালয়ে শেষ বর্ষের ছাত্রী । হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য গবলেট অব ফায়ার (২০০৫), হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য অর্ডার অব দ্য ফিনিক্স (২০০৭) এবং হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য হাফ ব্লাড প্রিন্স (২০০৯) ছবিতে অভিনয় করেছে শেফালী চৌধুরী।
শেফালীর অভিজ্ঞতার ঝুলিতে আগেই যোগ হয়েছে একটি সিনেমা । ২০০২ সালে নির্মিত ‘কান্নাথিল মুথামিত্তাল’ নামে এক তামিল সিনেমায় একটি গুরুত্ব পূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন শেফালী ।
১৯৮৮ সালের ২০ জুন বার্মিংহামে শেফালী চৌধুরীর জন্ম । মা-বাবা ১৯৮০ সালে সিলেট থেকে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান ।
‘ওয়েভারলি’ থেকে স্কুল পাঠ শেষ করে ‘দ্য সিক্সথ ফর্ম কলেজ’-এ চারটি বিষয়ের ওপর ‘এ লেভেল’ সম্পন্ন করেছেন। তার বিষয় ছিল ইংরেজি ভাষা, সাহিত্য, সমাজবিজ্ঞান ও ধর্ম শিক্ষা । বর্তমানে ‘ফটোগ্রাফি’র ওপর শিক্ষা নিচ্ছে পাঁচ ফুট চার ইঞ্চি উচ্চতার এ অভিনেত্রী ।
উৎস - উইকিপিডিয়া ও ।
৭৯ / কানাডায় ২০১৩ সালের বর্ষসেরা মাল্টি ইঞ্জিন গ্রাজুয়েট বৈমানিক বাংলাদেশি তরুণ অনিন্দ রেজা
ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশি তরুণ অনিন্দ রেজা ।
অনিন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্লাইট সেন্টারের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ২০১৩ সালের
বর্ষসেরা মাল্টি ইঞ্জিন গ্রাজুয়েট বৈমানিক হিসেবে সাফল্য অর্জন করেছেন ।
আমার প্রাপ্ত সকল সূত্রেই এর চেয়ে বেশি কিছু লিখা নাই ।
৮০ / ব্রিটেনে প্রযুক্তিপণ্যের উদ্ভাবনে শীর্ষ ষোলো তে অবস্থান কারী প্রতিষ্ঠান স্যাভোরটেক্স , মালিক ''বিজনেসগ্রিন লিডার অ্যাওয়ার্ড'' জয়ী তরুণ ব্যবসায়ী সৈয়দ আহমেদ।
সৈয়দ আহমেদ । নিজের জমানো ২০ হাজার পাউন্ড নিয়ে মাঠে নেমে প্রতিষ্ঠা করলেন ইলেকট্রনিক পণ্য তৈরির প্রতিষ্ঠান স্যাভোরটেক্স । তাদের আবিষ্কৃত সাড়া জাগানো পণ্যটি হলো হ্যান্ড ড্রায়ার বা ভেজা হাত শুকানোর যন্ত্র । তবে এটি শরীর শুকানোর কাজেও ব্যবহার হয় । আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট বা সংস্কৃতিতে অপ্রয়োজনীয় কিছু একটা বলেই মনে হবে । কিন্তু উন্নত বিশ্বে এর গুরুত্ব রয়েছে ।
ছোট আকারের যে প্রতিষ্ঠান তিনি শুরু করেন, তা আজ ব্রিটেনের অন্যতম সেরা প্রযুক্তিসেবা প্রদানকারী একটি প্রতিষ্ঠান । এই যন্ত্রগুলো এখন অতিপ্রয়োজনীয় বস্তু ।
ব্রিটেনে একটি প্রতিষ্ঠানে প্রতিবছর প্রায় আড়াই হাজার পাউন্ড গুণতে হয় টিস্যু বা পেপার টাওয়েলের জোগান দিতে । অথচ এই ইলেকট্রিক হ্যান্ড ড্রায়ারের পেছনে বছরে খরচ হয় মাত্র ১৪ পাউন্ড । আবার প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ টিস্যু বা পেপার টাওয়েলের পাহাড় সমান স্তূপ জমা হয় । এর পরিষ্কারকরণব্যবস্থা করাও দুরূহ একটি কাজ । তাই হ্যান্ড ড্রায়ার দুই দিক থেকেই বিশাল সমাধান বয়ে আনছে ।
তিন বছরের গবেষণার ফসল স্যাভোরটেক্সের রয়েছে কয়েক প্রকার প্রোটোটাইপ হ্যান্ড ও বডি ড্রায়ার । আহমেদের এই পণ্যের ভক্ত ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, ম্যারিয়ট হোটেল, এভরিথিং এভরিহোয়্যার, দ্য রয়েল ব্যাংক অব স্কটল্যান্ডসহ আরো বহু বড় মাপের প্রতিষ্ঠান ।
মানুষের জীবনমানের উন্নয়নসহ সময়োপযোগী প্রযুক্তিপণ্যের উদ্ভাবনে যে কয়টি প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাপী খ্যাতির দাবিদার, সেগুলোর মধ্যে স্যাভোরটেক্স রয়েছে ব্রিটেনের সেরা ষোলোর তালিকায় । ইতিমধ্যে এসব পণ্য বাগিয়ে নিয়েছে বেশ কয়েকটি পুরস্কার ।
সৈয়দ আহমেদের নেতৃত্বে স্যাভোরটেক্সসহ নানা কার্যক্রম সম্মাননা ও স্বীকৃতি কুড়িয়ে বছরের পর বছর সংবাদমাধ্যমের খবর হয়েছে। ব্রিটিশ-বাংলাদেশি পাওয়ার অ্যান্ড ইন্সাইরেশন জরিপে ১০০ জনের মধ্যে উঠে এসেছে তাঁর নাম ।
২০০৭ সালে বিবিসি হিট বিজনেস শো দি অ্যাপ্রেনটিসের শেষ পাঁচজন প্রতিযোগীর একজন আহমেদ ।
২০১২ সালে তাঁর স্যাভোরটেক্স ব্রিটেনের উদ্ভাবনী এবং দ্রুত বেড়ে ওঠা প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম একটিতে পরিণত হয় ।
বিদ্যুৎ বাঁচানোর ক্ষেত্রে দারুণ কার্যকর প্রযুক্তি উদ্ভাবনের স্বীকৃতি হিসেবে ইলেকট্রিক্যাল টাইমস ইন্ডাস্ট্রি অ্যাওয়ার্ডস পায় স্যাভোরটেক্স ।
২০১৩ সালে বিজনেস গ্রিন লিডারসের তালিকায় আহমেদ পান 'লিডার অব দ্য ইয়ার' অ্যাওয়ার্ড ।
সে বছরই এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড এনার্জির 'এনার্জি প্রডাক্ট অ্যাওয়ার্ড' পায় স্যাভোরটেক্স ।
আর এ বছর ওয়েস্টমিনস্টারে হাউস অব পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত বিবি পাওয়ার অ্যান্ড ইন্সপায়ারের সেরা ১০০ জন উদ্ভাবকের মধ্যে তাঁকে নির্বাচিত করা হয় ।
আহমেদ এর জন্ম ১৯৭৪ সালে সিলেটে । ১১ মাস বয়সে বাবা মার সাথে পাড়ি জমান ইংল্যান্ড । স্যার জন ক্যাস রেডকোট স্কুলের ছাত্র ছিলেন আহমেদ। সতেরো বছর বয়সে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ৭ জিসিএসই স্কোর নিয়ে স্কুল ছাড়েন ।
পরে ভর্তি হন হ্যামারস্মিথ কলেজে। সেখানে বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি এডুকেশন কাউন্সিল থেকে বিজনেস ও ফিন্যান্স বিষয়ে ডিগ্রি লাভ করেন ।
এই বণিক ব্রিটিশ মিডিয়ার বেশ জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব । বিশেষ করে কিছু হাইপ্রোফাইল রিয়ালিটি শোর অংশগ্রহণকারী হয়ে বেশ নাম কুড়িয়েছেন । রেডিও-টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন অনেক । দি অ্যাপ্রেনটিস, সারকি দ্য সেলিব্রেতে, দ্য ম্যাচ এবং এয়ার ট্রেনিং করপস (এটিসি) রিয়ালিটি শোতে ঝলমলে উপস্থিতির কারণে পরিচিতি পেয়েছেন গোটা বিশ্বে।
সৈয়দ আহমেদ বেশ কিছু চ্যারিটি কাজের সঙ্গে জড়িত। এর মাধ্যমে নিজের দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনসেবামূলক কাজ করে যাচ্ছেন। চিলড্রেন প্লাস এবং ওয়াটার এইডের মতো বেশ কিছু চ্যারিটি ফান্ডের অ্যাম্বাসাডর হয়ে কাজ করছেন আহমেদ। তিনি চ্যারিটির ব্যক্তিত্ব অ্যামেলিয়া নায়োইকোর সাথে পৃথিবীজুড়ে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে গবেষণা এবং অর্থ জোগানোর কাজ শুরু করেন ২০০৮ সাল থেকে।
সৈয়দ বাংলাদেশে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ ও এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে নানা কর্মসূচি শুরু করতে ফান্ড জোগানোর লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন ।
সুত্র - উইকিওয়ান্ড ।
পূর্বের পর্বগুলির লেজ
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:২৬