প্রবাসে বাংলাদেশের রক্তের উত্তরাধিকারী গুণীগন- ৫১,৫২,৫৩,৫৪,৫৫ ।
৫১/ আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাকসের ব্যবস্থ্যাপনা পরিচালক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক নওশাদ শাহ ।
লন্ডনের গোল্ডম্যান স্যাকসের সিকিউরিটি বিভাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক নওশাদ শাহ ।
২০১০ সাল থেকে টানা পাঁচ বছর ডয়েচে ব্যাংকে দায়িত্ব পালনের পর গোল্ডম্যান স্যাকসে যোগ দিলেন তিনি ।
ফিনান্সিয়াল টাইমসের তথ্য অনুযায়ী গোল্ডম্যান স্যাকসের একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বার্ষিক বেতন ১০ লাখ পাউন্ডের বেশি । বেতনের চেয়েও বড় অঙ্কের বাড়তি বোনাস পেয়ে থাকেন তারা ।
যুক্তরাজ্যে জন্ম নেওয়া নওশাদ বেড়ে উঠেছেন দক্ষিণপশ্চিম লন্ডনে। লেখাপড়াও করেছেন সেখানে। পরে ইউনিভার্সিটি অব ইয়র্ক থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক এবং লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিকস থেকে ফিনান্স অ্যান্ড একাউন্টিংয়ে স্নাতকোত্তর করেন।
২০০১ সালে নিউ ইয়র্কভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের বিপণন কর্মী হিসেবে আর্থিক খাতে কাজ শুরু করেন নওশাদ।
নওশাদের বাবা নাসির আলী শাহ যুক্তরাজ্যের একাউন্টিং ফার্ম মোহাম্মদ শাহ অ্যান্ড কোম্পানির অন্যতম অংশীদার। তাদের বাড়ি বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলায়।
৫২/ যুক্তরাষ্ট্রে সুন্দরী প্রতিযোগিতায় মিস নিউইয়র্ক হিসেবে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মৌমিতা খন্দকার এর মুকুট জয় ।
যুক্তরাষ্ট্রে সুন্দরী প্রতিযোগিতায় স্টেট পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতে নিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মৌমিতা খন্দকার। মিস ইন্টারকন্টিনেন্টাল প্রতিযোগিতায় নিউইয়র্কে বিজয়ী হয়েছেন তিনি। এই প্রথম বাংলাদেশি কেউ মিস নিউইয়র্ক হিসেবে মুকুট জয় করলো।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর মিস ইন্টারকন্টিনেন্টাল ইউএসএ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি রাউন্ড পেরিয়ে বহু প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে মিস নিউইয়র্ক মুকুট জিতে নিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মৌমিতা।
নিউইয়র্কের লংআইল্যান্ডের ডিক্সহিলে মা ডিনা খন্দকার ও বাবা খন্দকার মাহবুবের সঙ্গে বসবাস করেন তিনি। মিস ইন্টারকন্টিনেন্টাল মুকুট জয়ী হলেও মৌমিতা একজন চিকিত্সক হতে চান। আর বাংলা গান গাইতেও পছন্দ করেন তিনি। তাছাড়া বিশ্বব্যাপী আত্মহত্যার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরির জন্য কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে তার।
৫৩/ আমেরিকার ‘ইয়ং গভর্নমেন্ট সিভিল ইঞ্জিনিয়ার অব দ্য ইয়ার’ অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রকৌশলী আশেক রহমান ।
আমেরিকান সোসাইটি অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স ‘ইয়ং গভর্নমেন্ট সিভিল ইঞ্জিনিয়ার অব দ্য ইয়ার’ অ্যাওয়ার্ডের জন্য এ বছর নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রকৌশলী আশেক রহমান।
মেট্রোপলিটন এলাকার পাবলিক সেক্টরে কর্মরত সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পেশায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখা একজন তরুণ ইঞ্জিনিয়ারকে প্রতি বছর এ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়ে থাকে।
অসামান্য প্রতিভার অধিকারী আশেক রহমান শিক্ষা জীবনের শুরু থেকেই মেধাবী। তিনি ২০০৩ সালে আমেরিকার শ্রেষ্ঠ মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের একজন হিসেবে পান ‘ন্যাশনাল অনার রোল’। সে বছর ন্যাশনাল অনার রোল ম্যাগাজিন আশেক রহমানের ছবি এবং বায়োগ্রাফি আমেরিকার শ্রেষ্ঠ মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে প্রকাশ করেছিল।
স্কুল জীবনে নিউইয়র্কের কুইন্সের হোরাসে গ্রীলে জুনিয়র হাইস্কুলে তিনি ১৯৯৭, ১৯৯৮ ও ১৯৯৯ সালে ‘প্রিন্সিপালস অনার রোল’ পেয়েছিলেন। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই কৃতী ছাত্র প্রকৌশলী আশেক রহমান বর্তমানে নিউইয়র্ক মহানগরীর ডিপার্টমেন্ট অব ট্রান্সপোর্টেশনের ট্রাফিক ও প্ল্যানিং বিভাগে প্রোজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত আছেন ।
আশেক রহমানের আদি বাস নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার লালোর গ্রামে ।
পিতা হাসানুর রহমান , মাতা পারভীন রহমান ।তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে স্থায়ীভাবে নিউইয়র্কে বসবাস করছেন।
৫৪/ মার্কিন যুদ্ধবিমান এফ-১ ও এফ-২ এর প্রধান ম্যাটেরিয়াল ইঞ্জিনিয়ার ডঃ আব্দুস সাত্তার খান
ডঃ আব্দুস সাত্তার খান নাসা ইউনাইটেড টেকনোলজিস এবং অ্যালস্টমে কাজ করার সময়ে ৪০টিরও বেশি সংকর ধাতু উদ্ভাবন করেছেন। এই সংকর ধাতুগুলো ইঞ্জিনকে আরো হালকা করেছে, যার ফলে উড়োজাহাজের পক্ষে আরো দ্রুত উড্ডয়ন সম্ভব হয়েছে এবং ট্রেনকে আরো গতিশীল করেছে। তার উদ্ভাবিত সংকর ধাতুগুলো এফ-১৬ ও এফ-১৭ যুদ্ধবিমানের জ্বালানি সাশ্রয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তিনি ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছেন।
১৯৭৬ সালে সাত্তার খান অ্যামস ছেড়ে যোগ দেন ক্লিভল্যান্ড ওহাইয়ো জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরিতে, যা নাসা লুইস রিসার্চ সেন্টার নামে অধিক পরিচিত। তাঁর গবেষণার বিষয় হয় অতি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সংকর ধাতু নিয়ে। যে ধাতুর বহুল ব্যবহার হয় রকেট ইঞ্জিনে। ১৯৭৮ সালে এসে সাত্তার খান সরাসরি যুক্ত হন মার্কিন যুদ্ধবিমান এফ-১ ও এফ-২-এর জন্য নিকেল ও তামার সংকর ধাতু নিয়ে গবেষণায়। তাঁর পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানও বদলে যায় এ সময়। নাসার পরিবর্তে তাঁকে অর্থায়নে এগিয়ে আসে প্রাট অ্যান্ড হুইটনি। তিনি হন প্রধান ম্যাটেরিয়াল ইঞ্জিনিয়ার। এরই ধারাবাহিকতায় তাঁর আবিষ্কৃত উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন নিকেল এফ-১৬ ও এফ-১৫ যুদ্ধবিমানের হালকা ইঞ্জিন তৈরিতে ব্যবহার শুরু হয়।
২০০০ সালে সাত্তার খান প্রাট অ্যান্ড হুইটনি ছেড়ে চলে আসেন বিশ্বের সর্ববৃহৎ জ্বালানি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সুইজারল্যান্ডের আলসট্রমে। এখানে তিনি গবেষণা শুরু করেন টারবাইন ইঞ্জিন ও দ্রুতগতির ট্রেনের সংকর ধাতু তৈরির। এ সময় তাঁর নামের সঙ্গে যুক্ত হয় আরও ২৫টি প্যাটেন্ট।
আব্দুস সাত্তারের গবেষণা এবং মহাকাশে তার প্রয়োগের জন্য তিনি নাসা, আমেরিকান বিমানবাহিনী, ইউনাইটেড টেকনোলজি এবং অ্যালস্টম থেকে অসংখ্য পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ব্রিটেনের রয়েল সোসাইটি অব কেমিস্ট্রির একজন পেশাদার রসায়নবিদ এবং নির্বাচিত ফেলো।
এই বাংলাদেশি বিজ্ঞানীর জন্ম ১৯৪১ সালে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার খাগাতুয়া গ্রামে।
৫৫/ প্লাবনী'র যুক্তরাষ্ট্রে শ্রেষ্ঠ ওয়েব ডিজাইনার হিসেবে অ্যাওয়ার্ড লাভ ।
জর্জিয়া রাজ্যের শ্রেষ্ঠ ওয়েব ডিজাইনার হিসেবে অ্যাওয়ার্ড লাভ করে বাংলাদেশিদের মুখ উজ্জ্বল করেছে আটলান্টার নতুন প্রজন্মের একাদশ গ্রেডের ছাত্রী প্লাবনী ।
গত ২১ মার্চ ডাউন টাউনের একটি হোটেলে ফিউচার বিজনেস লিডার অব আমেরিকা সংক্ষেপে এফবিএলএ আয়োজিত জর্জিয়া রাজ্যের ওই প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন স্কুলের প্রায় কয়েক শ প্রতিযোগী অংশ নেয়। গুইনেট কাউন্টির মেডোক্রিক হাইস্কুলের ছাত্রী প্লাবনী এই বিজয়ের খবরটি প্রথম মূলধারার টেলিভিশনে ফলাও করে প্রচার এবং আটলান্টা জার্নাল কনস্টিটিউশন-এ প্রকাশিত হলে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে আনন্দের উচ্ছ্বাস বইতে থাকে।
উল্লেখ্য, প্লাবনী সম্প্রতি ভ্যারাইজন আয়োজিত আরও একটি প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়নশিপ অর্জন করেছিল, যা মূলধারার টিভি মিডিয়াতে অনেক বাংলাদেশির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল।
এর পূর্বে ষষ্ঠ গ্রেডের ছাত্রী থাকাকালে প্লাবনী ডেল কম্পিউটার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিল ।
প্লাবনীর বাবা আটলান্টার বলাকা ইনস্যুরেন্স ও ট্যাক্স রিটার্ন ব্যবসার স্বত্বাধিকারী এবং গল্পকার শরীফ ইসলাম , তিনি বাংলাদেশের ফরিদপুরের সন্তান ।
সকল পর্বের লিংক এখানে ।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:০৭