প্রবাসে বাংলাদেশের রক্তের উত্তরাধিকারী গুণীগন- ২৮,২৯,৩০,৩১,৩২ । [/su
২৮/ সানডে টাইমস অ্যাওয়ার্ড, ছোটগল্পের সংক্ষিপ্ত তালিকায় বাংলাদেশি তাহমিমা আনাম।
লিখালিখির জগতে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান পুরস্কার 'দ্য সানডে টাইমস ইএফজি সর্ট স্টোরি অ্যাওয়ার্ড'-এর সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশি-বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখিকা তাহমিমা আনাম।
ছোটগল্পের জন্য সংক্ষিপ্ত এ তালিকায় তাহমিমা আনামের পাশাপাশি আরও পাঁচজন লেখক-লেখিকা, গল্পকার রয়েছেন। এরা হলেন: পুলিৎজার পুরস্কারবিজয়ী লেখিকা এলিজাবেথ স্ট্রাউট ও লেখক অ্যাডাম জনসন, ব্রিটিশ লেখিকা আন্না মেটক্যাফে ও লেখক জোনাথান টেল এবং কানাডীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান লেখিকা মারজোরি সেলোনা।
ছোটগল্প 'আনওয়ার গেটস এভরিথিং'-এর জন্য তাহমিমা এই পুরস্কারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থান পেয়েছেন। এর আগে তার 'এ গোল্ডেন এজ' বইটি কমনওয়েলথ রাইটার্স প্রাইজের 'বেস্ট ফার্স্ট বুক' পুরস্কার জিতে নেয়।
শৈশব-কৈশোর কেটেছে বাংলাদেশে। উচ্চশিক্ষা লন্ডনে। ক্রিয়েটিভ রাইটিংয়ে এমএ রয়েল হলওয়ে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন এবং নৃতত্ত্বে পিএইচডি যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির মাউন্ট হলিউক কলেজ থেকে।
দ্বিতীয় উপন্যাস দ্য গুড মুসলিম। এ উপন্যাসের বিষয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সমাজের অভিঘাত। তাঁর এ গ্রন্থ উইমেন এশিয়ান লিটারারি প্রাইজের জন্য ২০১১ সালে তালিকাভুক্ত হয় ।
বিশ্বমানের বিভিন্ন সাহিত্যপত্রে তাঁর প্রকাশিত অন্যান্য লেখার মধ্যে সেইভিং দ্য ওয়ার্ল্ড, বাংলাদেশ এট দ্য ক্রসরোড, হেপি ৪০ বার্থডে বাংলাদেশ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরস লিগেসি লাইজ ইন দ্য ফ্রিডম, সিকিং উইমেন অব হিজ ফিকশন, এন এডুকেশন ইনসাইড বাংলাদেশেজ মাদ্রাসা, মাই হিরো রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন উল্যেখ যোগ্য ।
তার বাবা বাংলাদেশের ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার-এর সম্পাদক মাহফুজ আনাম । দাদা রাজনীতিক ও খ্যাতিমান রম্যলেখক আবুল মনসুর আহমদ ।
২৯/ যুক্তরাষ্ট্রে লিডারশীপ এ্যাওয়ার্ড বিজয়ী সামিহা উদ্দিন।
যুক্তরাষ্ট্রের আগামী দিনের নেতৃত্ব বাছাই প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠত্বের পুরষ্কার পেয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সামিহা উদ্দিন ।
শিকাগো শহরে ইলিনয়েস স্টেট আয়োজিত 'ইয়ুথ এক্সেল এ্যাওয়ার্ড' অনুষ্ঠানে সামিহা উদ্দিনকে এ পুরষ্কারে ভূষিত করেন ইলিনয়েস অঙ্গরাজ্যের সেক্রেটারি অব স্টেট জেসি হোয়াইট ।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত এশীয় আমেরিকানদের মধ্যে নেতৃত্বে ও মানবসেবায় অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ প্রতি বছর এ পুরষ্কার প্রদান করা হয় ।
সামিহা উদ্দিনের পিতা কয়েস উদ্দিন , তাদের আদি নিবাস সিলেটে ।
৩০/ দুর্ধর্ষ গতির রেসিং ট্র্যাকে বিশ্ব মাত করা জুবায়ের হক ।
দুর্ধর্ষ গতির রেসিং ট্র্যাকে বিশ্ব মাত করা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ১৭ বছর বয়সী জুবায়ের হক বর্তমানে ব্রিটেনের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় মটোরেসার হিসেবে বিবেচিত । এই বয়সেই দুর্ধর্ষ গতির রেসিং ট্র্যাকে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের ঝলক দেখিয়ে বিশ্ব মাত করেছেন তিনি।
জুবায়েরের অদম্য সাহস আর রেসিং দক্ষতা দেখে মটোরেসিং জগতের নামি প্রতিষ্ঠান ডেটোনা কর্তৃপক্ষ নিজেদের জুনিয়র রেসিং স্কুলে ভর্তি করে নিল জুবায়েরকে । সেখান থেকেই তার ক্যারিয়ার শুরু ।
জুনিয়র রেসিং জগতের অন্যতম জমজমাট লড়াই ইনকার্ট চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথমবারেই ট্রাকে নেমে দ্বিতীয় স্থান জিতলেন জুবায়ের ।
২০০৬ সালে ম্যানচেস্টার চ্যাম্পিয়নশিপে অর্জন করেন তৃতীয় স্থান । ২০০৭ সালে ইনডোর ক্যাডেট ক্লাস চ্যাম্পিয়নশিপে হন দ্বিতীয় ।
এ জন্য মোট ১৮টি রেস সম্পন্ন করেতে হয়েছিল তাঁকে । ২০০৮ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে পেয়ে যান জাতীয় পর্যায়ের রেসিংয়ে অংশ নেওয়ার লাইসেন্স ।
নিজের কৃতিত্বের পুরস্কার স্বরূপ ডেটোনা কর্তৃপক্ষ থেকে পান অস্ট্রিয়ার বিখ্যাত রোটেঙ্ কম্পানির রেসিং ইঞ্জিন এবং চেসিস ।
তখন জুবায়ের ছাড়া বিশেষ এই ইঞ্জিন ও চেসিস পুরো যুক্তরাজ্যে ছিল মাত্র দুটি । ২০১১ সালে ব্রিটিশ স্কুলস কার্টিং চ্যাম্পিয়নশিপ বিজয়ী হন ।
২০১২ সালে এমএসএ ব্রিটিশ চ্যাম্পিয়নশিপে পঞ্চম হন জুবায়ের ২০০৯ সালে এশিয়ান ইমেজ অ্যাচিভমেন্টে স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিলেন তিনি।
এই বছর ব্রিটেনে বসবাসরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ডাকসাইটে ব্যক্তিত্বদের নিয়ে প্রতিবছর প্রকাশিত
''ব্রিটিশ-বাংলাদেশি পাওয়ার অ্যান্ট ইন্সপিরেশন ১০০'' নামের বার্ষিক প্রকাশনায় নাম উঠেছিল জুবায়ের এর ।
১৯৯৬ সালের ১৮ জুলাই ইংল্যান্ডে জন্ম জুবায়ের হকের। পিতা মাশুকুল হক , মাতা মা রহিমা খাতুন । দুজনেই ১৯৭০ সালে ব্রিটেন পাড়ি জমান ।
জুবায়ের এর পৈতৃক নিবাস সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলায় ।
৩১/ আমেরিকার ‘ইয়ং গভর্নমেন্ট সিভিল ইঞ্জিনিয়ার অব দ্য ইয়ার’ অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী প্রকৌশলী আশেক রহমান ।
২০১৩ সালে আমেরিকান সোসাইটি অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স (মেট্রোপলিটান সেকশন) ‘ইয়ং গভর্নমেন্ট সিভিল ইঞ্জিনিয়ার অব দ্য ইয়ার’ অ্যাওয়ার্ড জয় করেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রকৌশলী আশেক রহমান । মেট্রোপলিটন এলাকার পাবলিক সেক্টরে কর্মরত সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পেশায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখা একজন তরুণ ইঞ্জিনিয়ারকে প্রতি বছর এ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়ে থাকে। ১৯৯১ সাল থেকে এ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা শুরু করে আমেরিকান সোসাইটি অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স।
অসামান্য প্রতিভার অধিকারী আশেক রহমান শিক্ষা জীবনের শুরু থেকেই মেধাবী । তিনি ২০০৩ সালে আমেরিকার শ্রেষ্ঠ মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের একজন হিসেবে পান ‘ন্যাশনাল অনার রোল’। সে বছর ন্যাশনাল অনার রোল ম্যাগাজিন আশেক রহমানের ছবি এবং বায়োগ্রাফি আমেরিকার শ্রেষ্ঠ মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে প্রকাশ করেছিল ।
স্কুল জীবনে নিউইয়র্কের কুইন্সের হোরাসে গ্রীলে জুনিয়র হাইস্কুলে তিনি ১৯৯৭, ১৯৯৮ ও ১৯৯৯ সালে ‘প্রিন্সিপালস অনার রোল’ পেয়েছিলেন । বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই কৃতী ছাত্র প্রকৌশলী আশেক রহমান বর্তমানে নিউইয়র্ক মহানগরীর ডিপার্টমেন্ট অব ট্রান্সপোর্টেশনের ট্রাফিক ও প্ল্যানিং বিভাগে প্রোজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত আছেন ।
১৯৮৫ সালের ১৫ নভেম্বর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন আশেক রহমান । প্রবাসী শিশু সাহিত্যিক হাসানুর রহমান ও রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী পারভীন রহমানের ছোট ছেলে আশেক রহমান ১৯৯৬ সাল থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে স্থায়ীভাবে নিউইয়র্কে বসবাস করছেন।
তাঁদের গ্রামের বাড়ী বাংলাদেশের নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলায় ।
৩২/ কেমব্রিজ বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জামাল নজরুল ইসলাম - যার গ্রন্থ কেমব্রিজ, অক্সফোর্ড, প্রিন্সটন, হার্ভার্ডসহ নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্য ।
মহাবিশ্বের পরিণতি কী হতে পারে বা কী হবে, এই জটিল বিষয়টা নিয়ে লেখা ড. জামাল নজরুল ইসলাম এর লিখা 'দ্য আল্টিমেট ফেট অব দি ইউনিভার্স' (মহাবিশ্বের চূড়ান্ত পরিণতি) বইটি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস থেকে ১৯৮৩ সালে প্রকাশ হওয়ার পর বিজ্ঞানী মহলে বেশ হই চই পড়ে যায়।
বইটি পরে জাপানি, ফ্রেঞ্চ, ইতালিয়ান, পর্তুগিজ ও যুগোস্লাভ ভাষায় প্রকাশিত হয়। ১৯৮৪ সালে সম্পাদনা করেছেন 'ক্লাসিক্যাল জেনারেল রিলেটিভিটি' এবং ১৯৮৫ সালে 'রোটেটিং ফিল্ডস ইন জেনারেল রিলেটিভিটি'। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস তাঁর তিনটি বই প্রকাশ করেছে।
তিনটি বইই কেমব্রিজ, অক্সফোর্ড, প্রিন্সটন, হার্ভার্ডসহ নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্য।
তিনি স্টিফেন হকিং কিংবা প্রফেসর আব্দুস সালামের মতো খ্যাতিমান বিজ্ঞানীদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তাঁর প্রিয় বন্ধুদের মধ্যে ছিলেন আবদুস সালাম, জোসেফসন, অমর্ত্য সেন এবং স্টিফেন হকিং।
দেশপ্রেমী এই বিজ্ঞানীর কেমব্রিজে অধ্যাপক হিসেবে ১৯৮৪ সালেই এক লক্ষ আটাশ হাজার টাকা বেতন পেতেন । দেশ মাতৃকার টানে উচ্চবেতন ও সন্মান জনক এই চাকুরী ছেড়ে তিনি দেশে ফিরে আসেন ।
যোগ দেন বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে , বেতন একত্রিশ শত পঞ্চাশ টাকা ।
জামাল নজরুল ইসলাম কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে বি.এসসি. অনার্স শেষ করে কেমব্রিজে পড়তে যান , কেমব্রিজ থেকেই ১৯৬৪ সালে প্রায়োগিক গণিত ও তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যা বিষয়ের ওপর পিএইচডি করেন । একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮২ সালে অর্জন করেনএসসি.ডি. (ডক্টর অব সায়েন্স) ডিগ্রি ।
তিনি কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট অব থিওরেটিক্যাল এস্ট্রোনমির স্টাফ মেম্বার ছিলেন।
তিনি লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে আরম্ভ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন ইন্সটিটিউট ফর অ্যাডভান্সড সহ অনেক খ্যাতনামা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রভাষক, ভিজিটিং অ্যাসোসিয়েট বা মেম্বার হিসেবে কাজ করেছেন ।
ড. জামাল নজরুল ইসলামের জন্ম ১৯৩৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি, ঝিনাইদহ জেলায় । মৃত্যু ১৬ই মার্চ, ২০১৩ সাল ।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:২৮