যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ড ফর এডুকেশনাল এক্সেলেন্স’ বিজয়ী আনিকা জাহান
আনিকা জাহান আহমেদ, অল্প বয়সেই যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি প্রদেশের দ্বাদশ শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষায় মেধাবী সব শিক্ষার্থীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সর্বোচ্চ রেজাল্টধারী ১০ শিক্ষার্থীর একজন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন ।
জিতে নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ড ফর এডুকেশনাল এক্সেলেন্স’ । এই কৃতিত্বের জন্য প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও অভিনন্দনপত্র পাঠিয়েছেন তাকে। তার এই সাফল্যে আনন্দিত যুক্তরাষ্ট্রের গোটা বাঙালি কমিউনিটি।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার প্রতিবছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ সাফল্যের জন্য ১০ মেধাবী শিক্ষার্থীকে প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ড ফর এডুকেশনাল এক্সেলেন্স পদক প্রদান করে থাকে ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা স্বাক্ষরিত অভিজ্ঞানপত্র ও পদক তুলে দেওয়া হয় আনিকার হাতে। শুধু উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সাফল্যই নয়, তিনি প্রতিটি শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষায় অর্জন করেছেন একের পর এক বিজয়মুকুট ।
১৯৯৯ সালে নিউইয়র্ক প্রদেশের বাঙালি-অধ্যুষিত এলমাস্ট এলাকার পিএস.৮৯.কিউ কিন্ডারগার্টেনে আনিকার শিক্ষায় হাতেখড়ি। ওয়ালটার এইচ ক্লোরে স্কুল অ্যান্ড লিডারশিপ, ফ্লাশিং স্কুল প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভালো ফলের জন্য স্বর্ণপদকসহ বহু সম্মানজনক পুরস্কার জিতে নেন আনিকা। সর্বশেষ তার ঝুলিতে জমা হলো প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ড ফর এডুকেশনাল এক্সেলেন্স।
আনিকা এখন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের শিক্ষাবৃত্তি পেয়ে বিশ্বের অন্যতম সেরা স্ট্রোনি বুক বিশ্ববিদ্যালয়ে নিউরো সায়েন্সে পড়াশোনা করছেন ।
আনিকার গ্রামের বাড়ি সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার চান্দারপাড়া গ্রামে। তার বাবা আমিন আহমেদ ১৯৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। ১৯৯৩ সালে আনিকার দেড় বছর বয়সে স্থায়ীভাবে তারা যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান ।
ভবিষ্যতে আনিকা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিশ্বের বুকে উজ্জ্বল করতে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি নামকরা একজন চিকিত্সক হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি বাংলাদেশের দারিদ্র্যপীড়িত মানুষের সেবা করতে চান। আনিকা জাহান আহমেদ ।
প্রবাসে বাংলাদেশের রক্তের উত্তরাধিকারী গুণীগন-১৯
নাফিস বিন জাফর - প্রথম অস্কারজয়ী বাংলাদেশি
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে নাফিস বিন জাফর অস্কার পুরস্কার পেয়ে ইতিহাসের পাতায় নিজেকে অমর করে রাখেন ।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের একাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্স বিভাগে অস্কার পেয়েছেন ।
হলিউড ব্লকবাস্টার মুভি 'পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান : অ্যাট ওয়ার্ল্ডস অ্যান্ড'-এ ফ্লুইড ডাইনামিক্সে অসাধারণ কাজ করায় ২০০৭ সালে তাকে এ পুরস্কারে সম্মানিত করা হয় ।
জাতীয় স্মৃতিসৌধের স্থপতি একুশে পদকপ্রাপ্ত সৈয়দ মইনুল হোসেনের ভাগ্নে এবং বরেণ্য চিত্রশিল্পী মুস্তফা মনোয়ারের নাতি , নাফিস বিন জাফরের বাবা জাফর বিন বাশার ও মা নাফিসা জাফর । বাবা মার একমাত্র সন্তান নাফিস ১৯৭৭ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন ।
তাদের গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ী ।
জাফর কলেজ অব চার্লসটন থেকে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এ পর্যন্ত তিনি হলিউডের কয়েকটি ফিল্মে কাজ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে 'পার্সি জ্যাকসন অ্যান্ড অলিম্পিয়ানস : দ্য লাইটিং থিফ', 'দ্য সিকার : দ্য ডার্ক ইস রাইজিং', 'ফ্লাগস অব আওয়ার ফাদার', 'স্টিলথ'।
প্রবাসে বাংলাদেশের রক্তের উত্তরাধিকারী গুণীগন-২০
রাজশাহীর মেয়ে আনিকা পেলেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি পুরস্কার
রাজশাহীর সন্তান অনিকা হাতেম আমেরিকার রাষ্ট্রপতি পুরস্কার অর্জন করেছেন।
আমেরিকার ফ্লোরিডার হারন্যানডো হাইস্কুলে ১২ ক্লাশ কৃতিত্বের সাথে গ্রাজুয়েজন সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত ,কখনো কোন ক্লাশে অনুপস্থিত না থাকার কৃতিত্ব অর্জন করা্ ২০১২ সালে তাকে আমেরিকার রাষ্টপ্রতি পুরস্কার প্রদান করা হয়।
সে ওই প্রতিষ্ঠান থেকে বোর্ড মেধাভিত্তিক দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে।
এছাড়া অ্যামেরিকার মেধাভিত্তিক বহু পুরস্কার অর্জন করেছে সে। রাজশাহী তথা বাংলাদেশের গর্ব অনিকা হাতেম নগরীর মহিষবাথান নিবাসী আমেরিকা প্রবাসী মোহাম্মদ হাতেম ও গুলশান হাতেমের একমাত্র কন্যা।
আনিকা হাতেম ২০১৪ সালের ২০ ডিসেম্বর অ্যামেরিকার ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডার হতে একই সাথে ব্যাচেলর অব আর্টস সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ে ও ব্যাচেলর অব সাইন্স মনোবিজ্ঞান বিষয়ে দক্ষতার সাথে উর্ত্তিণ হয়েছে।
বর্তমানে সে ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডায় গবেষণারত। আনিকা বর্তমানে অ্যামেরিকার ‘বাংলাদেশ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন’ এর সভাপতি।
প্রবাসে বাংলাদেশের রক্তের উত্তরাধিকারী গুণীগন-২১
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের রূপকার কুমিল্লার কৃতিসন্তান রফিকুল ইসলাম
১৯৯৮ সালের ৯ জানুয়ারি রফিকুল ইসলাম জাতিসংঘের তৎকালীন মহাপরিচালক কফি আনানকে একটি চিঠি লেখেন। সেই চিঠিতে রফিকুল ১৯৫২ সালে ভাষাশহীদদের অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রস্তাব করেন, একুশে ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে যেন স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
সেসময় এ চিঠিটি মহাপরিচালকের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত হাসান ফেরদৌসের নজরে আসে।
তিনি ১৯৯৮ সালের ২০ জানুয়ারি রফিকুল ইসলামকে অনুরোধ করেন, তিনি যেন জাতিসংঘের অন্য কোনো সদস্য রাষ্ট্রের কারো কাছ থেকে একই ধরনের প্রস্তাব আনার ব্যবস্থা করেন।
সেই পরামর্শ অনুযায়ী রফিকুল ইসলাম তার সহযোদ্ধা আবদুস সালামকে সঙ্গে নিয়ে ‘এ গ্রুপ অব মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ নামে একটি সংগঠন দাঁড় করান। আর সেই সংগঠনের প্রচেষ্টার ফসল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
একুশকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি এনে দেওয়া রফিকুল ইসলাম কুমিল্লার ছেলে। ১৯৫৩ সালের ১১ এপ্রিল তিনি জন্ম নেন কুমিল্লা শহরের উজিরদীঘির পাড় এলাকায়। পিতা আবদুল গণি ও মাতা করিমুন্নেসা।
স্থানীয় হরেকৃষ্ণ স্কুলেই শুরু তার শিক্ষাজীবন। ১৯৫৮ সালে কুমিল্লা হাইস্কুল থেকে পাশ করেন মেট্টিক। এরপর এইচএসসি ও ডিগ্রি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে।
রফিকুল ইসলাম একাত্তরে ২নং সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধ করেন ।
সেসময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় সম্মুখযুদ্ধে তার ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম সাফু শহীদ হন।
১৯৯৫ সালে কানাডায় পাড়ি জমানো একুশের চেতনাদৃপ্ত এ প্রবাসী বাঙালি ২০১৩ সালের ২০ নভেম্বর কানাডার ভ্যাঙ্কুভার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
প্রবাসে বাংলাদেশের রক্তের উত্তরাধিকারী গুণীগন-২২
কোরিয়ায় জনপ্রিয় চিত্রাভিনেতা সজল ।
২০১০ সালের নভেম্বরে উচ্চতর পড়াশোনার জন্য কোরিয়া যান সজল ।
অভিনয়ের চেয়ে ক্রিকেটের প্রতি প্রচন্ড আগ্রহ ছিল ১৯ বছর বয়সী সজলের । কোরিয়া আসার পর থেকেই সজল কোরিয়া ক্রিকেট লিগে নিয়মিত খেলে আসছিলেন।
তবে কোরিয়ায় ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা না থাকায় অনেকটাই অভিনয়ের দিকে ঝুকে পড়েন সজল ।
২০১২ সালে জুংআং বিশ্ববিদ্যালয় নির্মিত একটি শর্ট ফিল্মে অভিনয় করার সুযোগ পান ।
যা বুসান ফিল্ম ফেস্টিভালে পুরস্কারও পেয়েছে ।
প্রথম ফিল্মে অভিনয় করেই চলচিত্র বোদ্ধাদের নজর কাড়তে সক্ষম হন সজল ।
তার অভিনীত আরেকটি বানিজ্যিক মুভি ‘সোরি’ (বাংলা অর্থ, শব্দ) মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে ।
বর্তমানে তিনি কোরিয়ার একটি জনপ্রিয় ড্রামা সিরিয়াল ‘Rude Miss Young-Ae’ (막돼먹은 영애씨) এ অভিনয় করেছেন । কোরিয়ান সময় প্রতি বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ১০ মিনিটে টিভিএন (tvN) চ্যানেলে জনপ্রিয় এই ড্রামা সিরিয়ালটি প্রচারিত হচ্ছে ।
পূর্বের পর্ব সমুহ-
১/ রাশিয়ার শ্রেষ্ঠ জিমন্যাস্টিক রিতা
২/ ওবামার উপদেষ্টা , বিজ্ঞানী ড. এন নীনা আহমাদ
৩/ কানাডার ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট ও ভাইস চ্যান্সেলর ড. প্রফেসর অমিত চাকমা ।
৪/ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জাপানি সুপার মডেল রোলা ।
৫/ বাংলাদেশি মেয়ে প্রিয়তি যখন 'মিজ আয়ারল্যান্ড' ।
৭/ ইউটিউব এর প্রতিষ্ঠাতা জাভেদ করিম।
৮/ বিশ্বের সেরা ৫০ উদ্যোক্তার একজন সুমাইয়া কাজী
৯/ পৃথিবীতে প্রেরণার আলোক ছড়ানো সাবিরুল
১০/জাতিসংঘের আন্ডারসেক্রেটারি জেনারেল আমিরা হক ।
১১/ সৌদি আরবের শ্রেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম
১২/ মার্কিন সেরা সংবাদ প্রযোজক তাসমিন মাহফুজ
১৩/ কাতার আমিরের উপদেষ্টা ডক্টর হাবিবুর রহমান ।
১৪/ ইউরোপে নিউক্লিয়ার গবেষণায় প্রথম বাংলাদেশি অনন্যা ।
১৫/ যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎশক্তি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট -আরশাদ মনসুর
১৬/ কৃত্রিম মানব ফুসফুসের উদ্ভাবক; জিনবিজ্ঞানী আয়েশা আরেফিন টুম্পা
১৭/ বিশ্বের সেরা ৫০ বিজ্ঞানীর একজন , ড. আনিসুর রহমান ।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:২১