প্রবাসে বাংলাদেশের রক্তের উত্তরাধিকারী গুণীগন - ৮
প্রবাসে বাংলাদেশি বা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অসংখ্য কৃতী প্রজন্ম আছেন যাদের পুনঃপুনঃ সাফল্যে বিশ্ব দরবারে উজ্জ্বল হচ্ছে বাংলাদেশের মুখ ।
সেইসব সফল প্রজন্মের কীর্তিগাথায় নতুন প্রজন্ম খুঁজে পায় এগিয়ে চলার রসদ , এরা ''বাংলাদেশের রক্তের উত্তরাধিকারী'' জেনে
আমরা পুলকিত হই ।
প্রবাসে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করা এমনই একজন কীর্তিমান সুমাইয়া কাজী ।
যিনি সুমাজি ডট কম প্রতিষ্ঠা করে লন্ডনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান 'ব্রিটিশ বাংলাদেশি পাওয়ার অ্যান্ড ইন্সপিরেশন' প্রকাশিত বিশ্বের ১০ জন প্রভাবশালী বাংলাদেশির তালিকায় স্থান করে নেন ।
২০০৫ সালে নিজেই প্রতিষ্ঠা করেন ‘কালচারাল কানেক্ট ডট কম’ (টিসিসিসি) নামের প্রতিষ্ঠান।
‘কালচারাল কানেক্ট ডট কম’ এ তিনি সপ্তাহে ৮০ থেকে ১০০ ঘণ্টা করে শ্রম দিয়ে আসছেন। ৩৫ বছরের কম বয়সী কর্মোদ্দীপক যুবক-যুবতীদের নিজস্ব সংস্কৃতির অবগাহনে উজ্জীবিত করতে তার প্রতিষ্ঠানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। বর্তমানে সুমাইয়া কাজীর প্রতিষ্ঠান টিসিসিসি থেকে প্রকাশিত হচ্ছে পাঁচটি সাপ্তাহিক ই-ম্যাগজিন। ম্যাগাজিনগুলো হচ্ছে, 'দ্য দেশি কানেক্ট', 'দ্য মিডলইস্ট কানেক্ট', 'দ্য এশিয়া কানেক্ট', 'দ্য ল্যাটিন কানেক্ট', 'দ্য আফ্রিকান কানেক্ট'। বিশ্বের শতাধিক দেশে এসব ম্যাগাজিনের গ্রাহক সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি। ২০০৫ সালে মাত্র তিনজন স্টাফ নিয়ে যাত্রা করা এসব ম্যাগাজিনে বর্তমানে ৫০০ জন কাজ করছেন। ম্যাগাজিনগুলো দ্রুত জনপ্রিয় হওয়ায় বর্তমানে দুটি দেশের আটটি অঙ্গরাজ্যের ১৮টি শহরে এর অফিস করতে হয়েছে।
কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন বহু পুরস্কার ও সম্মাননা ।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে 'মিস ইনল্যান্ড এমপায়ার' খেতাব জেতেন সুমাইয়া। পরে তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার শীর্ষ পাঁচ 'ডিস্টিঙ্গুইশড ইয়াং উইমেন' প্রতিযোগিতায় জিতে যান।
তিনি সংবাদসংস্থা রয়টার্স এবং ক্লাউট প্রকাশ করা বিশ্বের সেরা প্রভাবশালী ৫০ উদ্যোক্তার তালিকায় ১৬ নম্বরে অবস্থান কারী এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ।
২০০৬ সালেও বিজনেস উইক ম্যাগাজিন কর্তৃক আমেরিকায় অনুর্ধ ২৫ বছর বয়সী সেরা উদ্যোক্তার তালিকায় নিজের স্থান স্থান করে নেন সুমাইয়া কাজী।
ওই বছরই সেই ম্যাগাজিনে প্রকাশিত বিশ্বের সেরা ৭৫ জন মহিলা উদ্যোক্তার একজন নির্বাচন হন সুমাইয়া। এছাড়াও তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিজনেস উইক ম্যাগাজিন ও কালার লাইট ম্যাগাজিন থেকে ‘সেরা তরুণ উদ্যোক্তা’ পুরস্কারসহ বেশ কয়েকটি পুরস্কার অর্জন করেছেন।
পেয়েছেন সিএনএনের ‘ইয়ং পারসন হু রকস’ এবং কালার লাইট ম্যাগাজিনের সেরা তরুণ উদ্যোক্তা পুরস্কার।
সিলিকন ভ্যালির বিজনেস জার্নাল দিয়েছিল 'প্রবাবশালী নারী'র খেতাব। ২০১২ সালে ফোর্বসের তালিকায়ও নাম ছিল তার। সর্বশেষ ২০১৪ সালে বিবিপাওয়ার ডটকমের বিশ্বব্যাপী অনুপ্রেরণাদায়ক ১০ বাংলাদেশির তালিকায় নাম উথে সুমাইয়া কাজীর ।
সুমাইয়া সানফ্রান্সিসকো মুসলিম উইমেনস গিভিং সার্কেলের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য। বাংলাদেশের জলকণা ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা সদস্যও তিনি। পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবে মানবাধিকার, পরিবেশ, শিক্ষা, রক্তদানসহ নানা ধরনের স্বেচ্ছাসেবী কাজের সঙ্গেও যুক্ত আছেন।
পুরোনাম: সুমাইয়া আন্দালিব কাজী । জন্মসূত্রে বাংলাদেশী মার্কিন নাগরিক ।
বাবা ডক্টর নিজাম উদ্দিন কাজী, মা মেরিনা কাজী তটিনি। দুই ভাই, দুই বোনের মধ্যে সুমাইয়া সবার বড়। সুমাইয়া কাজীর পৈত্রিক বাড়ি বাংলাদেশে ফেনীর জেলার মাথিয়ারা গ্রামে ।
জন্ম, বেড়ে ওঠা যুক্তরাষ্ট্রের লস এনঞ্জেলেস। কর্মসূত্রে এখন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সানফ্রান্সিসকো বে-তে ।
পড়াশোনা করতেন ক্যানিয়ন স্প্রিং হাই স্কুলে। তিনি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে থেকে। ২০০৪ সালে মার্কেটিং অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন সুমাইয়া কাজী।ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে থেকে মার্কেটিং এবং স্ট্যাটেজিক প্লানিংয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করে , সান মাইক্রোসিস্টেম্স নামক একটি প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র সোস্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হিসেবে কাজে যোগ দেন ।
বিশ্ব এবং বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় অলাভজনক একটি আইসিটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ইচ্ছা আছে তার। সব মিলিয়ে নিজের স্বপ্নের পথে এগিয়ে যাবেন তিনি সেই সাথে নতুন দিনের পথ দেখাবেন এই প্রজন্মকে এমনটাই প্রত্যাশা।
''নিত্য নতুন আইডিয়া মানেই সফলতার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া।'' সাফল্যেকে এভাবেই সংজ্ঞায়িত করা সুমাইয়া কাজীর
পথ চলা মসৃণ হোক ।
গো এহেড সুমাইয়া ।
সপ্তম পর্ব ষষ্ঠ পর্ব পঞ্চম পর্ব চতুর্থ পর্ব
তৃতীয় পর্ব দ্বিতীয় পর্ব প্রথম পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৩