জনাব তাজউদ্দিন আহমেদ
জনাব খন্দকার মোশতাক সাহেব,পররাষ্ট্র মন্ত্রী...............
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম একে একে মন্ত্রী পরিষদের সকল সদস্যদের নাম ঘোষনা করেন । ঘোষনা করেন সশস্ত্র বাহীনির প্রধানের নাম।এ সরকারের মাধ্যমে পরবর্তীতে নয় মাস মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়েছিল।আজ সেই ঐতিহাসিক ১৭ই এপ্রিল।১৯৭১ সালের ঠিক এ দিনেই মুজিবনগর সরকারের শপথগ্রহন অনুষ্ঠান হয় অনেকটা তাৎক্ষনিকভাবেই।মেহেরপুরের বৈদ্যনাথ তলার ঐ স্থানটি বেছে নেয়ার কারন কি?অবশ্যই যৌক্তিক কারন রয়েছে।সে সময় ভারত বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশেরে পক্ষে অবস্থান নেয়ার কারনে এরুপ স্থান খোজা হচ্ছিল যেখানে ভারত থেকে সহজেই প্রবেশ করা যায় কারন বেশিরভাগ লোক সীমান্তের ওপার দিয়ে আসবেন।যে এলাকা পাক হানাদার দ্বারা আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা কম,বিশেষ করে আকাশ থেকে।একটু যেন দুর্গম হয়,বৈদ্যনাথতলার আশেপাশে ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার রাস্তা-ঘাট ভাঙ্গা ছিল,বিশাল আম বাগানের কারনে দুর থেকে ভালো করে কিছু দেখা যায় না ফলে পাকিস্তান বিমান বাহীনির দৃষ্টিগোচরে থাকা তাছাড়া পাক বিমানবাহীনি আসতে হলে ভারতের ফ্লাইজোন অতিক্রম করতে হতো । এসব বিবেচনা করেই মেহেরপুরের বৈদ্যনাথ তলা (এখন যেটি মুজিবনগর নামে পরিচিত)স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের শপথ গ্রহন অনুষ্ঠানের স্থান হিসেবে নির্বাচিত হয়।
অনুষ্ঠান হবে সকালে,মঞ্চ প্রস্তুত হলো।কাছের মিশনারি হাসপাতাল থেকে চেয়ার আনা হলো।ছোট খাটো নিরাপত্তার ছক আকাঁ হলো অন্ত:ত আক্রান্ত হলে যেন সবাই নিরাপদে সীমান্তের ওপারে চলে যেতে পারেন।সকাল নয়টার দিকে অতিথিরা আসতে শুরু করলেন। মঞ্চে আটটি চেয়ার পাতা হলো।একটা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য খালি রাখা হলো । আম বাগানের সেদিন শপথ গ্রহন অনুষ্ঠানে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে কথা বলা শুরু করলেন“আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সাংবাদিক বন্ধুদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি এই জন্য,যে তারা আমাদের আমন্ত্রনে স্বাধীন বাংলাদেশের মাঝে শপথ অনুষ্ঠান দেখে যাওয়ার জন্য বহু কষ্ট করে বহু দুর দুরান্ত থেকে এখানে উপস্থিত হয়েছেন……………….সেখানে শ-খানেক সাংবাদিকদের সামনে স্বাধীন বাংলাদেশের মন্ত্রীদের শপথ সম্পন্ন হয় আর এই সরকার শত প্রতিকুলতার মধ্যে অতিক্রম করে কাঙ্খিত লক্ষে পৌছায় ১৬ই ডিসেম্বর ।আজ সেই ১৭ই এপ্রিল,বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি স্মরনীয় দিন।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৮:৫৪