এক সরকারি প্রতিষ্ঠানে মাঝারি মাপের কর্মকর্তা ছিলেন তিনি | নজরকাড়া সুন্দরী, হাসিখুশি বৌ তাঁর | সাথে পুতুলের মতো দেখতে পাঁচ-ছয় বছরের এক কন্যাশিশু, আর কিশোর বয়সের এক ছেলে | সীমিত আয় হলেও খারাপ চলছিল না টোনাটুনির সংসার | এ দম্পতির ভালোবাসা রীতিমতো ঈর্ষা জাগানো | পৃথিবীর খুব সুখী দম্পতিগুলোর একটি এরা, সন্দেহ নেই ..
সংসারে আরো স্বাচ্ছন্দ্য আনতে কার যেন বুদ্ধি ধরে ভদ্রলোক চলে গেলেন স্বপ্নের দেশ জাপান | ওদেশে থেকে গেলেন অবৈধ পন্থায় | মাঝে মাঝে দেশে টাকা পাঠাতেন | এভাবে টানা দশ বছর পেরিয়ে গেলো | জাপান থেকে দেশে বেড়াতে আসা লোকজনের কাছে স্বামীর খোঁজখবর পান ভদ্রমহিলা; ভালোমন্দ নানা কিসিমের খবর আসে তাঁর কানে | এদিকে তাঁর স্ত্রীও ধীরে ধীরে সাথে থাকা দেবরের দিকে ঝুঁকে পড়েন | শরীরের চাহিদা বলে একটা কথা আছে তো!
অসুস্থতার কারণে ভদ্রলোককে প্রবাস জীবনের যবনিকা টানতে হলো এগারো বছরের মাথায় | ডায়াবিটিস, ব্লাড প্রেসারসহ নানা রোগ বাসা বেঁধেছে শরীরে | দেশে ফিরেই বুঝতে পারেন, এক দশক আগে রেখে যাওয়া সেই মায়াময়ী স্ত্রী আর আগের মতো নেই | বাচ্চারাও বেড়ে উঠেছে যে যার মতো | একমাত্র ছোট ভাইটিও, যাকে কোলে-কাঁধে করে সন্তানস্নেহে মানুষ করেছেন, সেও আজ এক অচেনা যুবক..
ব্রেইনস্ট্রোক হয়ে পক্ষাঘাতগ্রস্থ তিনি এখন | ক'মাস আগে মেয়েটা প্রেম করে এক বেকার যুবকের সাথে পালিয়েছে | আর, ছেলেটার মানসিক ভারসাম্যও আগের মতো নেই | তবে, মন্দের ভালো, স্ত্রী তাঁকে ছাড়ে যাননি | ছোট ভাইটিও সাথেই আছে | সবমিলে এক জগাখিচুড়ি সংসার তাদের |
হাসপাতালের বেডে শুয়ে এপাশ-ওপাশ করছেন ভদ্রলোক | চোখ বুজে ঘুমের ভান করছেন মাঝে মাঝে | ঘুম কিছুতেই আসে না | ভেবে কিনারা পান না: এক জাপান কতোটা বদলে দিলো এতগুলো মানুষের জীবন ..
ML Gani @ FaceBook
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৭