জীবন যেখানে যেমন (পার্ট - ২)
কোন মানুষই সভ্যতার উত্তারাধিকারের দায় থেকে মুক্ত নন ।
এ জীবন ঘাস ফড়িংয়ের নয়, কীটের । এ জীবন শীতকুয়াশার নরম-পেলব স্নিগ্ধতার গন্ধও নয় , এ জীবন নর্দমার পূঁতিগন্ধে ভরা । অনেকেই হয়তো এসবের খোঁজও রাখেন না । সর্বনাশা সময়ের সিঁড়ি বেয়ে উঠতে গিয়ে এসবের কোনও কিছুই হয়তো আমাদের মনে দাগও কাটেনা । দাগ কাটবেই বা কি করে ! মানুষ এখন যে এক সর্বনাশা দৌড়ের মাঠে ঘাম ঝরায় । দৌড়ে সবাইকে পিছে ফেলে এগিয়ে যাবার তাড়নায় তার পরিপাশ বেমালুম ভুলে যায় মানুষ । তাকে হয়ে উঠতে হয় স্বার্থপর । জনমানুষের এই স্বার্থপরতার নিঠুর থাবার নীচে মানুষের সম্পর্কের অনেক ছিঁটেফোঁটাই যে বেঁচেবর্তে নেই, মানুষ যে বেঁচে রয় অমানবিক এক আবর্তের নোংরা জলে, এ তারই গল্প ।
ছোট ছোট , খন্ড খন্ড এক একটি চিত্রগল্প হয়তো জীবন নামের কূহকী বাস্তবতা নিয়ে বায়স্কোপের মতো একে একে সরে সরে যাবে । তবুও এ বায়স্কোপ থাকবে চলমান, নিত্যদিন । দৃশ্যের পর দৃশ্য । আমি - আপনি না চাইলেও তার দৃশ্যপট হররোজ একই রকম ভাবে ক্যালেন্ডারের পাতার মতো উল্টে উল্টে যাবে । অন্তবিহীন ।
এ লেখা সে দৃশ্যপটের তুমুল কাহিনীকে স্মরণ করে ।
১ - জীবনের চাকা ঘোরাই , ঘোরেনা ভাগ্যের চাকা ...
আমাদের সব দিন কেটে যায় ধীরে
তোমাদের নষ্ট নীড়ে
শুধু ঘুরাই ভাগ্যের চাকা,
পোড়া হাতে সব লেনদেন শেষে
জীবনটাই শুধু পড়ে থাকে ফাঁকা......
ছবি - ১. হায়রে ! যদি ঘোরাতে পারতাম দুঃখের যতো দিন - যায়রে……
ছবি - ২. খেটে যাই দিন থেকে রাত , জোটেনা শুধু একফোঁটা আলোর প্রভাত ......
ছবি -৩. সুতোয় সুতোয় গেঁথে যাই, তবুও ভাগ্যের ফুঁটো হয়না সেলাই....
ছবি -৪. পুরনোরে ঘসেমেজে নতুন বানাই , পারিনা নিজেরে শুধু .....
ছবি -৫. একেক্কে এক, দুই দু’গুনে চার , আর কতো বইবো এই জীবনের ভার .....
ছবি - ৬. নিশীথে জেগে রই কষ্টের দীপ জ্বালি ......
ছবি -৭. করিনা ভয়, পেটের জ্বালায় সব সয়ে যেতে হয় ...
ছবি -৮. ঝুঁকে রয় মাথা, চাকা ঠেলে যাওয়া পথে আঁকি জীবনের যতো শোকগাঁথা .....
ওরা নরকের দেবদূত। এ্যাঞ্জেল অব হেল । নরকসম এক একটি কর্মযজ্ঞের অগ্নিকুন্ডে ওদের শৈশবকাল পুড়ে যেতে থাকে নিয়ত । এ থেকে রেহাই নেই তাদের। দু’মুঠো অন্নের কাছে ওদের জীবনটা যে বাঁধা পড়ে আছে । একমুঠো ভাতই যে তাদের কাছে ঈশ্বর ! এ রকমই ভাগ্য তাদের, জন্ম থেকেই কন্ঠলগ্ন । মায়া-মমতাহীন একটি পৃথিবীর কাছে এদের চাওয়ার কিছু নেই । আমাদেরই অজান্তে , আমাদেরই অলক্ষ্যে সুতীব্র শ্রমের নারকীয় সূর্য্যে ভরে ওঠে ওদের এক একটি সকাল । রাতও যায়না বৃথা । এসব নিদারুন ছবি বায়োস্কোপের মতো আমাদের দৃশ্যপট থেকে হারিয়ে যায় একে একে । শৈশবের সব স্বপ্ন ভেঙে ওরা গড়ে যায় আর এক সভ্যতার ইতিহাস । সে সভ্যতায় সে যে নিজেই অপাংতেয় ! সভ্যতার অমৃতস্যপূত্র মানুষ, সে ইতিহাসের চাকার নীচে পিষে যায় এইসব মানুষের ঘামভেজা প্রহর । ‘মানুষ’ নামটি ভেসে যায় কালের দ্রুততম রথে ।
রাষ্ট্র-সমাজের অবহেলা , কর্ম-সংস্থানের অনুপস্থিতি, অর্থনৈতিক বৈসাম্যের সকল ছলাকলার যাতাকল যে পিষে মারে ওদের চক্ষু উন্মীলনের আগেই ! এই নরকের ঘানি টেনে টেনে ঐসব দেবশিশুরা খুঁইয়ে ফেলে ওদের শিশুকাল ,ওদেরই কৈশোর !
২ - বসে থাকা পথ চেয়ে, যদি আসে সুখ দিনের পথ বেয়ে .....
জীবনের বেসাতি খুলি সুখের লাগিয়া,
প্রানপাত হয় শুধু সারা
তবুও সুখ কেন যে নাহি দেয় ধরা ।
ছোট ছোট যতো আশা মনে
শুকায় নিভৃতে, নিরজনে .......
ছবি -৯. আর কতোকাল রহিবো বন্ধু পন্থের পানে চাইয়া .....
ছবি -১০. কি যাতনা বিষে, বুঝিবে সে কিসে, পথে নামা হয়নি যার .......
ছবি -১১. সন্মুখে সাজায়ে পসরার ডালি , পথ চেয়ে থাকা কেবলি .....
ছবি -১২. একটুখানি পুঁজি যদি এনে দেয় নিত্যদিনের রুজি ...........
ছোট ছোট সাধ, ছোট ছোট সাধ্য। স্বপ্ন-অলস যত সাধ, এখানে একে একে অদৃশ্য সকলি। পসরা সাজাতে হয় তাই তেমন করেই । সীমিত সাধ্যের যতো পসরা । এ থেকেই কেঁচো-কেন্নোর এই জীবনের রসদ জোটাতে বসে থাকতে হয় দিনভর । যদি কেউ জুটে যায় ,আমারি মতন, কেবল দুঃখ পকেটে - আঁচলে বেঁধে কাটায় জীবন । জীবনের অনেকটা প্রহর এই আশায় আশায় থাকা। প্রানের নিভু নিভু সলতে জ্বালিয়ে রাখতে কি অপেক্ষা প্রানান্তকর ...................
৩ - এ কেমন জীবন যাপন দিনের সিঁড়ি বেয়ে .....
এ কেমন জীবন যাপন
সমান্তরাল রেল লাইনের মতোন,
অজানা কোথায় কোনখানে হবে তার ঠাঁই
জানা নাই -
নাই উত্থান, নাই পতন !
শুধু টেনে নিয়ে যাও
দুঃখের গাঙে ভাসিয়ে জীবনের যতো নাও ...
ছবি -১৩. উদোম আকাশের তলে, ঘরকন্না চলে ......
ছবি -১৪. রাখি কোন কুল , জন্মই কি তবে আজন্ম ভুল ? ........
ছবি -১৫. আহা ! কী সুশীতল পানি , প্রানভরে নেই টানি................
ছবি -১৬. দু’হাতে ঠেলে কৈশোর, ভরে যেতে হয় ক্ষুধার জঠর............
ছবি -১৭. দিনভর কষ্টের সেলাই, আর জীবনের হিসেব মেলাই ......
ছবি -১৮. শ্রান্তি শেষে, এতোটুকু ঘরে প্রশান্তির ঘুম নেমে আসে ................
এ জীবন স্বপ্নের তুমুল আন্দোলন নয় , এ জীবন মিছে কিছু স্বপ্ন আর নিঠুর বাস্তবের সমান্তরাল এক রেললাইন । কখনও কেউ কাউকে ছুঁয়ে যায়না, না স্বপ্ন - না বাস্তব ! শুধু বয়ে চলে সময়ের প্রান্তর ছাড়িয়ে জীবনের এক ষ্টেশন থেকে আরেক ষ্টেশনে ......
৪ - বেলা যে পড়ে এলো নিজেকে নিয়ে বসিবার.....
দু’দন্ড জিরোবার আশে
বিলি কেটে যাই পরম আবেশে
সময়ের গায়ে ,
দিনের সকল যাতনা শেষে
বেলা যে পড়ে আসে
ভিরু ভিরু পায়ে .................
ছবি -১৯. খোলা আকাশের নীচে সখি ; জিরোই দু’দন্ড বসি ..........
ছবি -২০. অবসাদ ধেঁয়ে আসে, বেলা শেষে ........
ছবি -২১. দুঃখের প্রহর বেয়ে বেয়ে সাধ যায় যে মরে, তবুও তারি টানে সাজাই নিজেরে .....
ছবি -২২. বাতায়নে বসি সুখের হিসেব কষি ....
এ ছবি নিত্যকালের । হাড়ভাঙা খাঁটুনি শেষে একটু অনাস্বাদিত সুখের বিলাস । না -পাওয়ার দীর্ঘশ্বাসে ভরে থাকা জীবনে এ এক স্বস্তির শ্বাস টানা । এক আনন্দক্ষন । দিনের সব জমে থাকা ক্লেদ ঝড়িয়ে আসছে দিনটিতে আবারও নতুন করে ক্লেদ জমানোর এ এক পূর্ব প্রস্তুতি............
৫ - একটুকু ছোঁয়া লাগে .....
কোথাও কিছু নেই -
আনন্দ বিলাস,
শুধু নিজেদের মনে নিজেরাই
মেটাই একটুখানি আশ................
ছবি -২৩. এমনি করে যায় যদি দিন যাকনা ......
ছবি -২৪. বিমল আনন্দে ভাসি , সকল অপ্রাপ্তি নাশি ........
ছবি -২৫. দূর্গন্ধ মাঝে একটু সুবাসের খোঁজে ..............
ছবি -২৬. এতো নোংরার মাঝেও একটু স্নানের পানি , কতো সুখ দেয় যে আনি .................
পুঁতি-দূর্গন্ধময় ঘেরাটোপের মাঝেও একটুকু ছোঁয়া যেন লাগে ওদের প্রানে -প্রানে । যে জীবন কিছু দেয়নি তাদের , যে জীবনের কাছে নেই তাদের কোনও প্রত্যাশাও ; তেমন অস্পৃশ্য জীবনের অন্ধকারের ভেতর থেকেও ওরা তুলে আনে নির্মল আনন্দের ফোঁয়ারা । নিজেদের মনে নিজেরাই । এতোটুকুতেই যেন পৃথিবীর সব সুখ ধরা দিয়ে যায় অনায়াসে .....
৬ - বসি পথ পাশে বিপুল ক্রন্দনে .....
অঙ্গারে পুড়ে যায় শুধু ভাগ্যের প্রাসাদ
যা কিছু রচেছিনু ঘাম নিঙারি
তার সবি গেছে পুড়ি ,
তবুও আশায় আশায় থাকি
যদি খুঁজে পাই সামান্য সম্বলখানি .....
ছবি -২৭. অনলে বারে বারে পুড়ি , কেবলই পথ থেকে পথে ঘুরে মরি ......
ছবি -২৮. বৃথা খুঁজে যাই , তোমাদের কাছে মূল্যহীন অভাগীর সঞ্চয় কিছু , যদি পাই ......
ছবি -২৯. সম্বল মোর কম্বলখানি , দাও হে দাও হাতে আনি .................
ছবি -৩০. যা কিছু ছিলো তা সবই গেছে পুড়ে, ছিঁটেফোঁটা যা তাকেই তুলি যতন করে .....
পেটের লেলিহান ক্ষুধার মতোই আগুনের লেলিহান গ্রাস থেকেও রেহাই নেই তাদের । মানুষের ঈশ্বরও বন্ধ করে রাখেন তাঁর চোখ । এমনই ভাগ্য তাদের, শীর্ণ বসত দীর্ণ করে ভাগ্য বারেবার আগুনে ঝলসে দিয়ে যায় তাদের সব আশা । তবুও জীবন থেমে থাকার নয় , আবারও গড়ে যেতে হয় দুঃখের প্রাসাদ; পরবর্তী আগুনের লেলিহান ক্ষুধার কাছে জীবনের সব সঞ্চয় সঁপে দিতে ................
৭ -ক্লান্তি আমার ক্ষমা করো প্রভু ...... শ্রান্তি দাও ধুঁয়ে
দিনমান খাঁটুনির পরে
অঘোরে পেতে দিই মাথা ঘুমের কোলে
শরীরে শরীরে শ্রান্তি মেলে তার ডানা
কতোকাল ঘুমাইনি যেন,
এবার একটু ঘুমাই আমি সব ভুলে .............
ছবি -৩২. ক্লান্ত দেহ আসে নুয়ে , চোখের পাতা ছুঁয়ে .......
ছবি -৩৩. ঠাই নাই ঠাই নাই ছোট এ টুকরী , আমারি শ্রান্ত দেহে গিয়েছে ভরি .....
ছবি -৩৪. নিশ্চিত মৃত্যু ভুলে, ডুবে যাই ভয়ঙ্কর এক নিদ্রার কোলে .......
ছবি -৩৫. কী পরম আদরে, একীভুত হই মানুষ ও কুকুরে ...........
দু’মুঠো অন্ন জোগাড়ে যে দেহ ঢালে শ্রম , ঝরায় মূল্যবান ঘাম তবুও ফুরসৎ মেলেনা দু’দন্ড জিরোবার । সে অবসন্ন দেহ কখনও কখনও মানেনা বাঁধা কোনও । ক্লান্তি যখন ধেঁয়ে আসে বিশাল থাবা মেলে, তখনি একটুখানি নিদ্রা বেয়ে ওঠে শরীর বেয়ে । ক্লান্তিতে বুজে আসে চোখ। শ্রান্তদেহের প্রতিটি কোষ ডেকে ডেকে বলে যায় - ক্লান্তি আমার ক্ষমা করো প্রভু !
৮ ---আর কতকাল রহিব পন্থের পানে চাইয়া ....
রাজা রানী আসে
চৌদিক উদ্ভাসে
শুধু অন্ধকারে
থাকে পড়ে
আমাদের দিন........
ছবি -৩৬. এতোটুকু জীবনে, একটুখানি স্নেহও জোটেনা গোপনে ......
ছবি -৩৭. চোখ মেলে রই , বুঝিনা কিছুই , জীবন ধাইবে কোনখানে ....
ছবি -৩৮. বিষাদে ভরে থাকে চোখ-মুখ , নিয়ে এটুকু জীবনের যতো দুখ.......
ছবি -৩৯. এপারে নিদ্রিত চারিদিক,তবুও পথের মাঝে আজো বেঁচে আছি ঠিক.........
ছবি -৪০. শুনি নি কখনও স্বপ্নের ডাক, শুধু অপেক্ষায় থাকি আশ্চর্য নির্বাক.......
এ পৃথিবীতে বেঁচে থাকাটাই হলো সবচেয়ে দূর্লভ । একবুক হাহাকার নিয়ে ওরা শুধু থেকে যায় , বেঁচে নয় । বেঁচে থাকার যাবতীয় অনুষঙ্গ ওদের নাগালের বাইরে । তাদের ছিন্ন চটের দেয়ালের ওধারের পৃথিবীর সব রূপ-রস-গন্ধ ওদের অচেনা । অবাক চোখ মেলে ওরা তাকিয়ে রয় এক অনির্দিষ্ট জীবনের দিকে , যে স্বপ্নের জীবন ওদের কখনও দেয়না ধরা । বস্তির ছাল ওঠা এঁদোগলি পথ ধরে ওদের সব স্বপ্ন নিয়ে জীবনের রেলগাড়ীখানি হুশ করে সুদূরে মিলায় । বাঁশ ঝাড়ের অন্ধকার নিয়ে ওদের চোখ যেন বলে যায় -আর কতকাল রহিব পন্থের পানে চাইয়া ....
৯ --- এইতো জীবন ...... ক্ষুধার করাল গ্রাসে ...
তুমি আমি একদিন বয়েসী হবো
সবকিছু দেখতে দেখতে পুরাতন, আর
গায়ের পাৎলুন, গৃহী শরীর
ক্রমশঃ হারাবে নধর কান্তি তার,
শুধু কুমারী বুকের মতো
বেড়ে যাবে জেল্লা ক্ষুধার।
ছবি -৪১. বিধি ! নিয়ে গেছো সব রুদ্র অনলে , কেন নিলে না ক্ষুধা ......
ছবি -৪২. সহসা সবাই, নিবারিতে ক্ষুধা ; একটি থালায় ঝাপাই -
ছবি -৪৩. খর্বদেহ নিঃসহায়, তবু তার মুষ্ঠিবদ্ধ হাত, বাড়ায় একটুখানি ভাত ...........
( খানিকটা সুকান্ত ভট্টাচার্য থেকে নেয়া )
ছবি -৪৪. ক্ষুধা কেন যায়না মরে , যেমন গিয়েছে পুড়ে ঘরবাড়ী হেই সুদূরে........
ছবি -৪৫. মিলেমিশে খাই , .... উচ্ছিষ্ট ? এও তো মেলেনা সদা-ই !
ছবি -৪৬. ভাত দে হারামজাদা .......
এ এক দৈব উচ্চারণ, ক্ষুধা.... ক্ষুধা .... ক্ষুধা । মৃত্যুতাড়িত মানুষের কপালে সেঁটে দেয়া প্রকৃতির অমোঘ বাণী । একদিন এই মাটিও পুরাতন হবে , পুরাতন হবে যাবতীয় কোলাহল কিন্তু কেবল ক্ষুধা,একমাত্র ক্ষুধাই তার নিত্যকার সহবাস শেষে আবার নতুন মনে হবে।
তাই , কতোবার বাতাস টেনে নেয়া হলো তা দিয়ে ছবির ঐ মানুষগুলো জীবন মাপেনা । মুহূর্তগুলি কতোবার ওদের ক্ষুধায় কাতর করে দিয়েছে মাপে তা দিয়ে ।
ওদের দুঃস্বপ্নের এক একটি দিন , এক একটি রাত কেটে যায় শুধু জীবনের বিনিময়ে একটু খাবারের আশায় । খাদ্য যেন ওদের কাছে এক পরীর গল্প, এক স্বপ্ন । এই নিষ্ঠুর নিয়তি থেকে নিস্কৃতি নেই ওদের । এ এক দূরারোগ্য ব্যাধি । ক্ষুধা খাদ্যের স্বাদ চেনেনা, চেনে -পরিমান । সে পরিমানটুকু যথেষ্ট কি ?
শুরুতেই বলেছি - কোন মানুষই সভ্যতার উত্তারাধিকারের দায় থেকে মুক্ত নন । কিন্তু এই যে আমাদের তৈরী করা সভ্যতা যেখানে প্রতিটি সকালই রাতের মতো অন্ধকার , তার দায় কার ?
এ এক শবের শহর , ঝুলে আছে
তীব্র গন্ধে ভরা ,
ভয় পেওনা , যাবেনা ট’লে
পড়ে যাবেনা তোমার পদতলে !
এর চে’ আতঙ্ক অধিক
কী আর আছে ?
কার বুকের দুঃখ ছিঁড়ে
নির্মেদ এক শহর কে গড়াতে পারে ,
ভাগ বসাতে পারে সভ্যতার উত্তারাধিকারে ?
ছবি – ইন্টারনেট থেকে ।
প্রতিটি ছবির জন্যে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি তাঁদেরই যারা ছবিগুলোর প্রকৃত দাবীদার ।
জীবন যেখানে যেমন (পার্ট - ১).............. দেখুন এখানে -জীবন যেখানে যেমন................ ১
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:০৭