ঘুমছাপ চোখে সিন্যাপসের ছবি ..
নিশীথ রাতের ঘুমছাপ চোখের কবাট খুলে প্রাতঃআলোরা আঁধেকটা ঢুকে যায় । আঁধেকটা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে বাইরে । খটখট কড়া নড়ে । পিঁচুটির ঘেরাটোপ পেড়িয়ে তার যাত্রা অঙ্গারচোখা ট্রাফিক সিগন্যালে আটকে গেলে পিঁচুটির কোল গড়িয়ে জল নামে । সে জলে নিলীমার টুকরো-টাকরা ছবিরা সাঁতরে যায় । চোখের কুলুঙির চিত্রপটে তার ছায়া পড়লে মগজের গুদামঘর থেকে একটি দু’টি বিন্দু হয়ে আস্তে আস্তে বেড়িয়ে আসে নিলীমা । স্মৃতির সঙ্গতকালে বেহালার তার ঠিকঠাক করে নিলেও ছিঁটেফোটা কিছু সুর থেকে যায় এখানে ওখানে । হয়তো সবটুকু জড়ো করতে পারলে দেখা যেতো মগজঅলিন্দের অনেকখানি জায়গা জুড়ে দোল খাওয়ার জায়গা ছিলো তার । কৈতরের মতো তা উড়ে গেছে কোথায় কখোন ! বাকীরা মগজের লক্ষ কোষের ভেতরে ধাক্কাধাক্কি করতেই যেন সচল হয় দেহঘড়ি । আশ্চর্য্য ঘন্টাধ্বনি বেঁজে ওঠে কোথাও ।
নিলীমার ছাপ পাকাপোক্ত ভাবে শ্লেটে আটকে নেই যে তাতে শেকড় গজাবে ।
সিন্যাপসের উপত্যকায় যখোন স্নায়ুরস গাঢ় হতে থাকে কেবল তখোনই নিলীমার একটা আদল পাওয়া যায় । এক গ্রন্থি থেকে আরেক গ্রন্থি বেয়ে বেয়ে মগজের চিলেকোঠায় ঠাই হলে তবেই না নিলীমার কস্তুরীঘ্রান নাসারন্ধ্রের দেয়ালে ঠোকর খায় । দেহঘড়ি যে ভায়োলিনবাদকের মতো আবেশে চোখ মুদে থেকে দোল খায় এদিক থেকে সেদিক….. সেদিক থেকে এদিক, সে ও এক রসায়ন নির্মান । এর বেশী এগোয় না আর কারুকাজ । চিলেকোঠার হিসেব রাখনেওয়ালা এত্তেলা দেয়, এরচে’ বেশী তথ্য ভাঁড়ারে নেই ।
আঁতিপাঁতি করে খুঁজেও তার বর্ণচোরা চারকুঠরী ঘরখানার হদিশ মেলেনা তাই। অনেকবার হাতবদল হয়ে গেলে আবাসভূম থেকে এখোন নিশ্চিত উদ্বাস্তু নিজস্ব আদল । আলো জ্বেলে নিজের ছবি খুঁজে নিতে ভয় করে খুব । বাতাসে টান ধরলেই দক্ষিন অলিন্দের চাবিখানা পাক মেরে ওঠে দুদ্দার ।
এটুকুতেই তৃতীয় নিলয়ের গহীন ঝর্ণার জল ভেঙে ভেঙে ক্ষীন এক স্রোতধারা নাড়া দেয় খু্ব । গড়িয়ে গড়িয়ে নামতে থাকে মেরুরজ্জুর সফেদ গা বেয়ে বেয়ে । আয়নিত অনুভবগুলো অজস্র বৃষ্টিকনা হয়ে যেন ফুঁড়তে থাকে অস্থিমজ্জায় । শারীরবৃত্তিয় ছাঁকনিতে ছেঁকে অনেকখানি ভেজে তুলতে হয় তাকে, তবেই না ঘুমছাপ চোখে তার ছবি ফোঁটে। আড়মোড়া ভেঙে ছুটতে থাকে তরল যোজককলা । অঙ্গের ভেতরে ব্রীড়ানত হতে থাকে যাবতীয় ক্ষরন । পিঞ্জরের ভেতরে ফাজিল একটা দোয়েল শিষ দিয়ে পশ্চিমে উড়ে যায় বুঝি । বুকের মাঝপুকুরে টুপ করে ঘাই মারে পোনামাছ ।
নিলীমা আঁধেকটা জীবন্ত হয়ে ওঠে, পুরোটা ধরা দেয়না আর .......