ডায়াগ্রামটি বড়ো আকারে দেখতে চাইলে ক্লিক করুন এখানে।
অন্নপূর্ণা ফোর সামিট, হোয়াইট আউট এবং অন্যান্য
প্রপাগাণ্ডা ১ : ওপরের ছবিটি অন্নপূর্ণা ফোর সামিটের। বরফের ওপর ঘোলা ব্যাকড্রপের সামনে দাঁড়িয়ে মুসা ইব্রাহীম [বামে] আর তৌহিদ হোসেন। আমরা ঠিক কী দেখে বুঝবো যে, এটি একটি পর্বতশীর্ষের ওপর তোলা ছবি? অন্নপূর্ণায় আঠারো হাজার ফিটের পর থেকে সমস্তটাই বরফ, তার কোথায় দাঁড়িয়ে এ ছবি তোলা, তা কী করে বোঝা যাবে? এই ছবিটি কি প্রমাণ হিসেবেই দর্শকের কাছে উপস্থাপন করা হচ্ছে না? এই প্রমাণ কি যথেষ্ট?
অনুসন্ধান : একাধিক পর্বতারোহী নিশ্চিত করেছেন, পর্বতে হোয়াইট আউট (হঠাৎ করে মেঘ এসে চারদিক ঢেকে দেওয়া) হওয়া একটা স্বাভাবিক ঘটনা। হোয়াইট আউট হলে পাঁচ হাত দূরে কী আছে, তা দেখা যায় না, বোঝা যায় না। ইন্টারনেট ঘেঁটে পাওয়া এরকম কয়েকশত ছবি থেকে কয়েকটি নিচে তুলে দিচ্ছি-
প্রথম ছবি | দ্বিতীয় ছবি | তৃতীয় ছবি | চতুর্থ ছবি | পঞ্চম ছবি
ব্যাকগ্রাউন্ড ফিচার বিষয়ক জটিলতা
প্রপাগাণ্ডা ২ : হুম, তা না হয় বুঝলাম, কিন্তু পর্বতশীর্ষ জয়ের প্রমাণ হিসেবে ব্যাকগ্রাউন্ডে অন্যান্য ফিচারগুলো রাখা কি জরুরি নয়?
অনুসন্ধান : এখানে একটি পাল্টা প্রশ্ন রাখা যায় এরকম- আপনি যখন পর্বতের শীর্ষ জয় করবেন তখন যদি হোয়াইট আউট হয় তখন কী করবেন? হোয়াইট আউটের মধ্যেই ছবি তুলবেন নাকি হোয়াইট আউট কেটে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করবেন? হোয়াইট আউট এক মিনিটেও সরে যেতে পারে, আবার ঘন্টার পর ঘন্টাও থাকতে পারে। অনুসন্ধানে জেনেছি, অন্নপূর্ণা ফোর পর্বতাভিযানে ওই পর্বতের চূড়ায় যে সময়ে (১১টা ৫৪ মিনিট, স্থানীয় সময়) মুসা ইব্রাহীম আর তৌহিদ হোসেন পৌঁছেছিলেন, সে সময়ে পর্বতের চূড়ায় পুরোটাই হোয়াইট আউট ছিল। এ কারণে বরফের ঘোলা ব্যাকড্রপ বলে মনে হচ্ছে। আর অন্নপূর্ণায় আঠারো হাজার ফুটের পর থেকে সমস্তটাই বরফ, কিন্তু চূড়া একটাই। সেখানেই এ দুজন পর্বতারোহী ছবিটি তুলেছেন।
এভারেস্ট সার্টিফিকেট একটি মামুলি জিনিস
প্রপাগাণ্ডা ৩ : এদিক- সেদিক করে পর্বতে না গিয়েই যে কেউ নেপাল বা তিব্বত থেকে সার্টিফিকেট বাগিয়ে নিতে পারে।
অনুসন্ধান : না, সেটা সম্ভব নয়। এককথায়, হাস্যকর অনুমান। নেপাল ট্যুরিজম বোর্ডের নিয়ম অনুসারে ৭ হাজার মিটার অধিক উচ্চতার যে কোনো পর্বতে অভিযান পরিচালনা করতে গেলে নেপাল ট্যুরিজম বোর্ড (সরকারি প্রতিষ্ঠান) নিজের পছন্দমাফিক একজন লিয়াঁজো অফিসার অভিযাত্রী দলের সঙ্গে দিয়ে দেয় যে- অভিযাত্রী দলটি সত্যিই অভিযানে গেল কি না, অভিযাত্রী দলটি কবে বেস ক্যাম্পে পৌঁছাল, বেস ক্যাম্প পরিবেশবান্ধব রাখার নিয়মকানুন দলটি মানছে কি না, দলটি কবে কোন্ কোন্ ক্যাম্প স্থাপন করল, দলটি কবে পর্বত জয় করল, দলটির কোনো বিপদ হলো কি না, দলে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ল কি না ইত্যাদি সব বিষয় এই লিয়াঁজো কর্মকর্তা নিজ দায়িত্বে সরকারের কাছে রিপোর্ট করে থাকেন। তার রিপোর্টের ভিত্তিতেই অভিযাত্রী দলকে নির্দিষ্ট পর্বতারোহণের সনদ নেপাল ট্যুরিজম বোর্ড দিয়ে থাকে।
অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া গেছে, এনএসিবির (নর্থ আলপাইন ক্লাব) অন্নপূর্ণা ফোর অভিযানে লিয়াঁজো অফিসার নিজে সামিটের ছবি দেখে নিশ্চিত হয়ে নেপাল ট্যুরিজম বোর্ডে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। এর পরই নেপাল ট্যুরিজম বোর্ড এনএসিবি দলকে অন্নপূর্ণা ফোর পর্বতে সাফল্যসূচক সনদ দিয়েছে।
রুবল কাং ও মেরা পর্বত নিয়ে প্রশ্ন
প্রপাগাণ্ডা ৪ : নাহ্, তারপরও সন্দেহ থেকে যাচ্ছে। আচ্ছা, ওরকম উদাহরণ তো আর নেই। থাকলে না হয় একটা কথা ছিল।
অনুসন্ধান : কে বলল উদাহরণ নেই! বিদেশের কথা থাকুক, একেবারে খোদ ঘরেরই আছে তাজা দুটি উদাহরণ। যেমন, মুসা ইব্রাহীমের অন্নপূর্ণা ফোর পর্বত জয়ের ছবিকে যদি সন্দেহের চোখে দেখতে হয়, তাহলে মুনতাসির মামুন ইমরানের দাবিকৃত কেওক্রাডং বাংলাদেশ ক্লাবটির ভারতে রুবল কাং পর্বত জয়ের যে ছবি রয়েছে, সেগুলো নিয়েও প্রশ্ন তোলা যায়। ছবিটি দেখুন এখানে।
আরো জোরালো প্রশ্ন তোলা যায়, ইনাম আল হকের পরিচালনায় বিএমটিসির সদস্য সজল খালেদ, নিশাত মজুমদার, নূর মোহাম্মদ, এম এ মুহিতের নেতৃত্বে নেপালে মেরা পর্বত জয়ের দাবিকৃত ছবিগুলো নিয়ে। নিজেই দেখুন, ছবিতে বোঝা কি যাচ্ছে কিছু?
পর্বতের ঢালে ছবি, চূড়োয় ফুটবল মাঠ
প্রপাগাণ্ডা ৫ : ধুরো, বললেই হল! মুসা ইব্রাহীম অন্নপূর্ণা ফোর পর্বত জয় করেননি, কোনো এক পর্বতের ঢালে গিয়ে এই ছবি তুলেছেন।
অনুসন্ধান : অনুসন্ধানের স্বার্থে সন্দেহবাদীদের কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ঠিক কোন্ কোন্ পর্বতের চূড়ায় ঢাল নেই এবং কোন্ কোন্ পর্বতের চূড়া সমতল- তা কি দয়া করে জানাবেন? না, তারা জানাতে পারেননি। আমি আরো নির্দিষ্টভাবে জানতে চেয়েছিলাম, অন্নপূর্ণা ফোর পর্বতের চূড়ার ঠিক কতোখানি জায়গা সমতল? না, সন্দেহবাদীরা নিশ্চুপ থেকেছেন। ভবিষ্যতে হয়তো এ বিষয়ে তারা জবাব দেবেন। তবে এটা নিশ্চিত যে, পর্বতের চূড়া নিশ্চয়ই ফুটবল খেলার মাঠের মতো সমতল জায়গায় ভরপুর থাকে না!
দুদিনের ভেতরে চার হাজার একশো এক ফিট!
প্রপাগাণ্ডা ৬ : অন্নপূর্ণা-৪ এ আবহাওয়া মোটামুটি ভালো থাকলে দিনে এক হাজার ফুট উচ্চতা পাড়ি দেন পর্বতারোহীরা। আর মুসার অন্নপূর্ণা-৪ অভিযানে পোর্টার-শেরপারা দুদিনের ভেতরে চার হাজার একশো এক ফিট কিভাবে উঠে গেলেন? পরে মুসা যে গতির কথা দাবি করছেন, তুষারপাতের সময় কি পর্বতারোহণে সে গতি অর্জন করা আদৌ সম্ভব?
অনুসন্ধান : এনএসিবির (নর্থ আলপাইন ক্লাব) প্রমাণাদি পরীক্ষা করে দেখা গেছে, অন্নপূর্ণা ফোর অভিযান শুরু হয়েছিল ২৯ মে ২০০৯ তারিখে। অভিযাত্রীরা রওনা হওয়ার আগেই এদিন তিনজন শেরপা গাইড, ২২ জন মালবাহক এবং একজন ট্রেকিং অভিযাত্রী কাঠমান্ডু থেকে অন্নপূর্ণা ট্রেইলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন। তারা ভুলভুলে থেকে ট্রেকিং শুরু করে ৩ জুন ২০০৯ তারিখে অন্নপূর্ণা ফোর বেস ক্যাম্পে পৌঁছান। এনএসিবির অভিযাত্রীরা রওনা দেন ২ জুন। বেসক্যাম্পে এনএসিবির মূল পর্বতারোহী দলের তিন সদস্য গিয়ে পৌঁছান ৮ জুন। মাঝখানে সময় গিয়েছে ৫ দিন। এই পাঁচ দিনের মধ্যে তিনজন শেরপা গাইড আরও উপরে উঠে ক্যাম্প টু স্থাপন করে রেখে আবার এই বেসক্যাম্পে ফেরত আসে। দেখা যাচ্ছে, ধ্রুব জ্যোতি ঘোষ নিজেও ওই সময়ে শেরপাদের সঙ্গে ছিলেন। এই তিনজন শেরপা গাইডের মধ্যে একজন- কৈলাস তামাং সে সময় ছিলেন দুবার এভারেস্ট জয়ের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন (২০০৭ নর্থ ফেস, ২০০৮ নেপাল সাইড), সোম বাহাদুর পর্বতারোহণে গাইড পেশায় রয়েছেন ২৫ বছর ধরে। এনএসিবি দলের সদস্যরা আবহাওয়ার বিরূপ অবস্থা সম্পর্কে কিছুটা চিন্তিত থাকলেও সৌভাগ্যক্রমে ট্রেইলে দ্বিতীয় দিনে বৃষ্টি ছাড়া তেমন কোনো বৈরিতার মধ্যে পড়েনি। বেস ক্যাম্প, ক্যাম্প ওয়ান, ক্যাম্প টু ইত্যাদি জায়গাগুলোতে সকাল ও সন্ধ্যায় হোয়াইট আউট, সন্ধ্যার পর থেকে পুরো রাত তুষারপাত ইত্যাদি হলেও তা ছিল পর্বতের জন্য স্বাভাবিক। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবং তিনজন শেরপার সহযোগিতায় এনএসিবি দল ১৪ জুন অন্নপূর্ণা ফোর আরোহণ করতে সক্ষম হয়।
এটা খুব হাস্যকর কথা যে, সময় মেপে মেপে পর্বত আরোহণ করতে হবে কিংবা অনুমিত সময়ের চেয়ে কম সময়ে কোনো পর্বত আরোহণ করা যাবে না। তাহলে ৮ ঘণ্টায় যে পেমবা দরজি শেরপা এভারেস্ট জয় করেছে, তাও সম্ভব হতো না। এখানেও তো প্রশ্ন তোলা যায়, পেমবা কিভাবে দাবি করেন যে তিনি ৮ ঘন্টায় সামিট করেছেন? কিন্তু তিনি যে সামিট করেছেন তাতে কি কোন সন্দেহ আছে? যদি না থাকে তাহলে কেন নেই?
অন্নপূর্ণায় অলৌকিক গতি
প্রপাগাণ্ডা ৭ : প্রসঙ্গক্রমে আরো কিছু কথা কিন্তু থাকে। এর আগে লাংসিসা রি অভিযানে, মাত্র ৭ মাস আগে, ২১,০৮১ ফিট উঁচু লাংসিসা রি শীর্ষে পৌঁছতে মুসা ও তাঁর দলের লেগেছিলো ২৪ দিন। লাংসিসা রি আরোহণ খুব দুঃসাধ্যও নয়। আর মাত্র ৭ মাস পর তারা কিভাবে এমন দুর্দান্ত গতিবেগ অর্জন করলেন যে ট্রেইলে পা রাখার ১১ দিনের মাথায় ২৪,৬৮৮ ফিট উচ্চতার অন্নপূর্ণা-৪ এ পৌঁছে গেলেন? তার ওপর বেইসক্যাম্প থেকে যাত্রা শুরুর পঞ্চম দিনের মাথায় এবং অক্সিজেন ছাড়াই?
অনুসন্ধান : ২১,০৮১ ফুট উঁচু লাংসিসা রি পর্বত আরোহণ করতে সময় লেগেছে ২৪ দিন। কিন্তু অন্নপূর্ণা ফোর পর্বতে মাত্র ১১ দিনের মাথায় ২৪,৬৮২ ফুট উঁচু সামিটে মুসা ইব্রাহীমরা পৌঁছে গেছেন। কথার ভেতর একটা বড় ফাঁক রয়েছে। এই ফাঁকটাই যে কাউকে বিভ্রান্ত করে তুলতে পারে। এখানে লাংসিসা রি পর্বতাভিযানের সময়ের যে হিসাব দেওয়া হয়েছে সেটা ঢাকা থেকে লাংসিসা রি হয়ে আবার ঢাকায় ফেরার হিসেব। ঢাকা থেকে লাংসিসা রি চূড়া হয়ে আবার ঢাকায় আসতে মোট সময় লেগেছিল ২৪ দিন। আর ট্রেকিং শুরুর পর থেকে লাংসিসা রি সামিটে পৌঁছতে সময় লেগেছে ১০ দিন। একইভাবে ঢাকা থেকে অন্নপূর্ণা ফোর পর্বতাভিযান শুরু করে তা শেষ করে আবার ঢাকায় ফিরতে সময় লেগেছে ৩০ দিন। আর ট্রেক শুরু করে সামিটে পৌঁছতে সময় লেগেছে ১১ দিন। তবে এই অভিযানের সময় হিসাব করতে হবে, শেরপারা যেদিন কাঠমাণ্ডু থেকে রওয়ানা দিয়ে ট্রেক শুরু করেছেন, সেদিন থেকে (২৯ মে)। সেই হিসাবে সময় লেগেছে ১৫ দিন। তাহলে সময়ের গরমিলটা হলো কোথায়?
ব্লগে এবং অন্যান্য ওয়েবসাইটে যে রেফারেন্স টেনে কথা বলা হচ্ছে তা ১৯৫০ সালের রেফারেন্স। পর্বতারোহণ এখন আগের তুলনায় কৌশলগতভাবে অনেক সহজ হয়েছে। আগে যেসব রুটে হাঁটা ছাড়া গতি ছিল না সেসব জায়গায় এখন গাড়ি চলে। অন্নপূর্ণা ফোরেও তাই। একদিনের গাড়ি করে চলা পথ চারদিনের হাঁটার দুরত্ব কমিয়ে দেয়। মুসা ইব্রাহীমের নর্থ আলপাইন ক্লাবের অভিযাত্রীরাও গাড়িতে করে পায়ে হাঁটার দুই দিনের দুরত্ব কমিয়েছেন- এটা যেমন খুব স্বাভাবিক, ঠিক তেমনি ১৯৫০ সালের সঙ্গে ২০০৯ সালের হিসেব মিলবে না এটাও একেবারেই সাধারণ হিসাব।
সোম বাহাদুর তামাংয়ের সাক্ষ্য : বিশ্বাস-অবিশ্বাস
প্রপাগাণ্ডা ৮ : সোম বাহাদুর তামাং এমন একজন গাইড, যিনি সত্য সাক্ষ্য দেন না, এবং অসত্য সাক্ষ্যের ওপর ভিত্তি করে অনায়াসে একটি শৃঙ্গজয়ের সার্টিফিকেট কব্জা করা যায়। তাকে কিভাবে আমরা বিশ্বাস করতে পারি?
অনুসন্ধান : নেপালে পর্বতারোহণে শেরপা/গাইডকে কতোখানি বিশ্বাস করা যায়, এটা নির্ভর করে পর্বতারোহীর সততার ওপর। পর্বতারোহী সজল খালেদের ভাষ্যমতে সোম বাহাদুর তামাং যদি মিথ্যুক গাইড হয়েই থাকেন, তাহলে প্রশ্ন উঠতে পারে, চুলু ওয়েস্ট পর্বতাভিযানে (২০০৭) সেটা ‘বুঝতে পেরেও’ কেন তিনি বিএমটিসি’র সিঙ্গুচুলি পর্বতাভিযানে (২০০৮) তাকে শেরপা সর্দার কিংবা গাইড হিসাবে নিয়েছিলেন? রিয়াজ আহমেদ ও ওয়ালিদ আশরাফ সিঙ্গুচুলি পর্বত জয় না করলেও কেন তারা নেপাল মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশনের সনদ নিয়েছিলেন? এটা কি শুধু গাইডের দোষ? খোঁজ নিয়ে জেনেছি, রিয়াজ আহমেদ এই পর্বতাভিযান শেষ হওয়ার বহু আগেই দেশে ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু তাকে সনদ পাইয়ে দিয়েছিল কি শুধুই সোম বাহাদুরের অসততা? প্রশ্ন উঠতে পারে, সজল খালেদের এতে কি কোনো ভূমিকা ছিল না? একইভাবে চুলু ওয়েস্ট পর্বত জয়ের মিথ্যা দাবি করেও নেপাল মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশন থেকে সজল খালেদ ও এম এ মুহিত যখন সনদ নিয়েছেন, তখন সে সময়ে নেপাল মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশনে মুসা ইব্রাহীম উপস্থিত না থাকলেও তার সনদ কেন সজল খালেদ নিলেন? এটা সোম বাহাদুরের অসততা না কি সজল খালেদের অসততা? সবচেয়ে বড়ো কথা, সোম বাহাদুরের কি আর কোনো কাজ নেই যে, শুধু বাংলাদেশ থেকে পর্বতারোহী গেলেই তাকে একটা করে সনদ পাইয়ে দেন তিনি?
এমএ মুহিতের দেখা- না দেখা
প্রপাগাণ্ডা ৯ : মুসার একই সময়ে এভারেস্ট অভিযানে থাকা এম এ মুহিত তো মুসা ইব্রাহীমকে দেখেননি, তার নামই শোনেননি।
অনুসন্ধান : ভুল তথ্য। এম এ মুহিত যে এভারেস্ট অভিযানের সময় মুসাকে দেখেছেন, তা তিনি নেপালের কাঠমান্ডুতেই স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন চ্যানেল আইসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের কাছে। চাইলে এর ফুটেজও সংগ্রহ করা যাবে।
জিজ্ঞাসার দরজা খোলা
এরপরও যদি এই বিষয়ে ব্লগারদের কোনো জিজ্ঞাসা-প্রশ্ন থাকে, জানাতে দ্বিধা করবেন না। কোনো কোনো বিষয়ে অনুসন্ধানের খাতিরে জবাব দিতে কিঞ্চিৎ দেরি হতে পারে হয়তো, তবে কার্পণ্য থাকবে না। সামহোয়্যারের সদস্য নন যারা, তারা bolekoye[এট]gmail.com -এ মতামত-দ্বিমত জানাতে পারেন। সত্য উদঘাটনই এই অনুসন্ধানের মূল্য লক্ষ্য।
পরবর্তী পর্বে থাকছে-
কক্সবাজারে অবকাশ, ওয়েবসাইটে অস্বাভাবিক নোটিশ, ২৫ বনাম ৪৬ লাখ টাকা এবং অন্যান্য
মুসা ইব্রাহীমের এভারেস্ট অভিযান : অন্যান্য পর্ব
বামনকূলের ২০ প্রপাগাণ্ডা নিয়ে একটি পোড়ামাটি অনুসন্ধান - পর্ব : ২