ম্যানেজারের প্যানপ্যান আর কতো শোনা যায়। জরুরীভাবে দুই সপ্তাহের ছুটি দিয়ে দিয়েছে। জোর করে ছুটি দেওয়া আর কি। অনুরোধ করে কিছু ছুটি আগামী বছর নিয়ে নিয়েছি। নভেম্বরে এক সপ্তাহ ছুটি নেওয়া যাবে। ডিসেম্বরে ২৪ তারিখ থেকে পরের বছরের তিন তারিখ পর্যন্ত অফিস বন্ধ। এতো এতো ছুটি। ক্রিসমাসের ছুটিতে বন্ধুরা ঘুরতে আসলে আড্ডা জমবে। আমার সপ্তাহের ছুটিগুলো যেতেই মাথায় হাত। অবস্হা এমন না যে আমি কাজ করে ব্যাপক মজা পাই। বরং কাজে গেলে ফাকিবাজি করি বেশী।
বাসার নীচে দুজন গাড়ি রেখে গেছেন। আমার তত্তাবধানে। আমি নিজেরটাই খোজ নিচ্ছি না। উনারা দেশে গেছেন। হঠাত করে ঠান্ডা পড়ে যাওয়া আর সেই সকালে অফিস যেয়ে রাত করে এসে আর গাড়ি স্টার্ট দিতে ইচ্ছে হয় না। সপ্তাহান্তে ভাবলাম একটু স্টার্ট দেই। না হলে ঠান্ডায় যদি ব্যাটারী বসে যায়। তখন আরেক হ্যাপা। অবশ্য সবার গাড়িতেই এন্টিফ্রিজিং লিকুয়িড দেওয়া থাকে। উনারা দিয়ে গিয়েছেন কিনা জানি না। কপাল ভালো যে ঠিকমতো স্টার্ট নিয়েছে। চান্সে একটু ঘুরান দিয়ে আসলাম। যদিও আজকে একটু লং ড্রাইভে যাওয়া আছে।
সকালে ঘুম থেকে উঠে জানালা দিয়ে থাকিয়ে দেখি অন্যান্য বাসার উপরিভাগ একটু সাদা সাদা। বুঝতে বাকি রইল না যে আজকের তাপমাত্রায় খুবই খারাপ হবে। একটু সাদা হওয়া ফ্রষ্টের লক্ষন। তাপমাত্রা স্কেলে থাকিয়ে দেখি -৩। কম্বলের নীচে কতোক্ষন আর থাকা যায়। ঘুমাইতে ঘুমাইতে টায়ার্ড অবস্হা। প্রত্যেকদিন খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে অভ্যেস খারাপ হয়ে গেছে। ছুটিতেও ইচ্ছে করে বেশী ঘুমানো যায় না। বাইরের যে অবস্হা তাতে একটু হাটতে যেতেও ভয় হয়।
ছোটবোনেরও স্কুল বন্ধ। উনাকে বাসার কাজ দিয়ে বসে বসে পুরনো দিনের বাংলা, হিন্দি গান শুনতেছিলাম। স্কুলগুলোতে এতো পড়ার চাপ। সোলার সিস্টেম নিয়ে বিরাট প্রেজেন্টেশন করতে হবে। কিছু আইডিয়া দিলাম। এম.এস.সি তে আমারও একটা টপিক ছিলো এই বিষয়ে। বেশ কিছু পেপার ঘাটাঘাটি করেছিলাম। উনি মাঝেমাঝে এসে ডিসটার্ব করেন। আর আমার গানের চয়েজ দেখে নাক সিটকান । আমি নাকি ওল্ড ডেটেড(।
বাসায় কাজ একটাই। বসে বসে কার্টুন ছবি গেলা আর সন্ধ্যার পর টিভির চ্যানেল টেপা। কার্টুন সাধারনত রাত ৮টার পর বন্ধ হয়ে যায়। বাচ্চারা ঘুমুবে। গতরাতে টিভিতে একটা অনুষ্টানে দেখাচ্ছিলো বিভিন্ন দেশের টিনেজ ছেলেমেয়েদের মেলামেশা নিয়ে। আমেরিকা, জাপান, জার্মানির তুলনা। আমেরিকাতে মেয়েছেলে পছন্দ হলে ৩য় দিনেই সেক্স মাষ্ট। অন্যথায় ঐ রিলেশন আর টিকবে না। জার্মানিতে ওরা একটু কনজারভেটিক। অনেক সময় নেয়। ভাবি কনজারভেটিভ হয়েই এই অবস্হা। আমার বোন একদিন এসে বলে, ভাইয়া ব্লু চোখ খুব সুন্দর। আমি বলি কালো চোখই সুন্দর (আমাদের গ্রামে এক/দুইজন ছিলো যাদের চোখ ব্লু। আমরা তাদের বলতাম বিলাই চোখ)। মনে মনে বল্লাম, এখনি এই অবস্হা। কয়েকদিন পর একটা জার্মান ধরে নিয়ে এসে বলবে এইটা আমার বয়ফ্রেন্ড। পুরনো দিনের প্রেমের ছবিগুলোর সাথে বর্তমানের ছবিগুলোতো প্রেম অথবা কিছ ফুলে ফুলে টক্কর (তামিমের বান্দরবেলা) আর বর্তমানে ডাইরেক্ট কিছ। তাও অনেক্ষন ধরে দেখাবে। সবকিছুই কতো এ্যাডবান্স।
এই ছুটিতে বেশ কিছু ছবি দেখার ইচ্ছে আছে। ঠান্ডায় কোথাও বেড়ানোর ইচ্ছে নেই। যা আগামী দুই সপ্তাহে আলু হওয়ার জন্য উপযুক্ত সময়।