আগে অনেক নিয়ম করে মুভি দেখা হতো, নতুন কোনো ভালো মুভির ব্লু রে বের হলেই ডাউনলোড করে সাথে সাথে দেখে ফেলার একটা বাতিক ছিলো, কিন্তু বেশ কয়েকমাস ধরেই সেইটা মেইনটেইন করা সম্ভব হচ্ছে না। এর পিছনে ব্যক্তিগত জীবনে কিছুটা ব্যস্ত হয়ে পড়াটাই একমাত্র কারণ। তাই বলে মুভি দেখা কিন্তু থেমে নেই, নিয়ম করে না হলেও ফাঁকেতালে কিছু মুভি দেখা হয়।সময়ের অভাবে সেগুলোকে নিয়ে সামুতে লেখা হয়ে উঠে না, কিন্ত ঠিক করেছিলাম এইবার ঈদের ছুটিতে কিছু একটা লিখবো। তাই আজকে কিবোর্ডটা নিয়ে বসে পড়লাম।গত কয়েকদিনে দেখা বেশ কিছু মুভি নিয়ে আজকে দুই চার লাইন লিখবো। ছোট্টো করে রিভিউ আর সাথে ডাউনলোড লিংক।অনেকদিন পর লিখছি, তাই টাইপিংটা কেমন জানি আস্তে আস্তে এগুচ্ছে, লেখার সময়ও কেমন জানি ভোঁতা অনুভূতি হচ্ছে। যাই হোক, শুরু করা যাক, মুভি নিয়েই যখন লিখছি তখন ফ্লো আসতে কতোক্ষণ !!!
১।রানওয়ে (২০১০) :
প্রথমে বাংলা মুভি দিয়েই শুরু করি। এই মুভিটি দেখার জন্য অনেকদিন ধরেই অপেক্ষায় ছিলাম।শেষমেষ যখন ডিভিডিতে মুভিটি রিলিজ দেয়া হলো, সাথেসাথেই কিনে দেখে ফেলি।
একটি ছোট্ট প্লটের সাথে প্যারালালি বেশ কিছু বিষয়কে মিশিয়ে গোটা মুভিকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার মতোন মুন্সীয়ানা তারেক মাসুদের বিশাল একটি পজিটিভ দিক। মাটির ময়নার ক্ষেত্রেই দেখুন, মুক্তিযুদ্ধ ও ধর্মকে এইভাবে মিশিয়ে এতোটা চমৎকার ভাবে উপস্থাপন করা আর কয়জনার পক্ষেই বা সম্ভব। রানওয়েতেও একই জিনিসটি পরিলক্ষিত হয়। জঙ্গীবাদের সাথে ইসলামকে নিয়ে ভূল ইন্টারপ্রিটেশানের সরাসরি লিংকটিকে চমৎকার ভাবে দেখানো হয়েছে। সবমিলিয়ে বেশ শক্তিশালী একটা মুভি।
২০০৫-০৬ সালের জঙ্গীবাদের উপর বেস করে ঢাকার এয়ারপোর্টের নিকটেই বস্তিতে বসবাসরত একটি পরিবারকে ঘিরে মুভিটির প্লট আবর্তিত হয়েছে। কিভাবে সহজ সরল মানুষকে ধর্মের ভূল ব্যাখ্যা দিয়ে ব্রেইনওয়াশ করে জঙ্গীবাদের মতোন ভয়াবহ কাজে ব্যবহার করা হয়---সেটা বেশ চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তারেক মাসুদ।
এই মুভিটি আমাকে আবারো মনে করিয়ে দিলো তারেক মাসুদ আর মিশুক মুনীরের অকালপ্রয়াণ আমাদের কতোটা ক্ষতি করে দিয়ে গেলো, সাধারন স্টোরিকে এতোটা অসাধারনভাবে ফোটানো সম্ভব হয়েছে কেবল অসাধারন মিউজিক আর চমৎকার সিনেমটোগ্রাফির কারণে। সেই পথশিশুর গুলতি মেরে প্লেনে লাগানোর চেষ্টা আর সবশেষে মা যখন রুহুলের মুখটি দুধ দিয়ে ধুয়ে দিচ্ছিলো এই ধরণের কিছু কিছু দৃশ্য ছিলো যা মনে বেশ দাগ কাটানোর মতো। নেগেটিভ বলতে গেলে দুইটি জিনিসের কথাই বলতে হয়, একটি হচ্ছে গল্পের ডেপথ, আরেকটি হচ্ছে এডিটিং, অন্যান্য মুভিগুলোর তুলনায় আমার কাছে মনে হয়েছে রানওয়ের স্টোরিলাইনটা আরেকটু বিস্তৃত হতে পারতো।কেমন জানি একটা ইনকমপ্লিট ভাব ছিলো।আর এডিটিংটা আমার কাছে একটু অগোছালো লেগেছে।
গুলতি মেরে প্লেনে লাগানোর চেষ্টা:
তারেক মাসুদের এই মুভিতে কাস্টিং খুবই আন্ডাররেটেড, এইরকম নতুন কাস্টিংয়ে কারো কাছ থেকে হাই স্ট্যান্ডার্ড প্রফেশনাল অভিনয় আশা করা ঠিক না, তারপরেও যা হয়েছে বেশ ভালোই বলতে হবে।
সব মিলিয়ে রানওয়ে মুভিটিকে দশে সাত দিবো।
মুভিটি সবাই দেখুন, জঙ্গীবাদ আর ইসলামকে নিয়ে এইরকম স্ট্রং মুভি বানানো কেবল তারেক মাসুদের পক্ষেই সম্ভব। স্যালুট তাঁকে। অনেক সাইটেই দেখেছি, মুভিটির ডাউনলোড লিংকে সয়লাব হয়ে গেছে, যারা মুভিটি দেখতে চান তাদের কাছে অনুরোধ রইলো দয়া করে মুভিটি ডাউনলোড করে দেখবেন না, ডিভিডি কিনেই দেখুন।
২। Prometheus (2012)
প্রথমত, এই মুভিটি নিয়ে অনেক আগে থেকেই অনেক উচ্চাশা ছিলো, কারণ পরিচালক স্বয়ং রিডলি স্কট। তাছাড়া মুভিটির যতোগুলো ট্রেইলার দেখেছি আগ্রহ দিনকে দিন বেড়েই চলছিলো, ট্রেইলারে একটা অসাধারণ সাউন্ডট্র্যাক ইউজ করা হয়েছিলো, যেটা ছিলো ভয়াবহ লেভেলের ক্রিপি আর সাসপেন্স ইনডিউসিং। যাই হোক, মুভিটি অবশেষে দেখে ফেললাম। দুঃখজনক হলেও বলতে বাধ্য হচ্ছি মুভিটি দেখে বেশ হতাশ হয়েছি।
সায়েন্স ফিকশান এই মুভিটির রানিংটাইম পাক্কা দুই ঘন্টার মতো। অনেক আগে থেকেই (২০০০ সালের দিকে) রিডলি স্কট আর জেমস ক্যামেরুন চেয়েছিলেন ১৯৭৯ সালের রিডলি স্কট পরিচালিত বিখ্যাত মুভি এলিয়েনের প্রিক্যুয়েল মুভি বানানো হবে, তবে প্রোডাকশান আর স্ক্রিপ্টের নানাবিধ ঝামেলায় রিডলি স্কট ২০০৯ সালে অবশেষে এই প্রমিথিউস মুভিটি বানানোর পরিকল্পনা করেন। তবে এই মুভিটিকে তিনি এলিয়েন ফ্র্যাকন্চাইজি বলতে নারাজ, বরং প্রমিথিউসকে তিনি নিজস্ব আইডোলজি হিসেবেই গণ্য করতে বলেছেন সবাইকে।
হিউম্যান রেসের অরিজিনালিটি খুঁজতে একবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে একদল সায়েন্টিস্ট "প্রমিথিউস" নামক স্পেসশিপে করে উপস্থিত হন বহূদূরের এমন একটি গ্রহে, যেখানে প্রাচীন মানবসভ্যতার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সেখানে গিয়ে তারা একটি এলিয়েন লাইফ ফর্ম আবিষ্কার করেন এবং ক্রমেই তারা বুঝতে পারেন সেই সিভিলাইজেশানটি যথেষ্ট অ্যাডভান্স যা কেবলমাত্র প্রমিথিউসের যাত্রীদেরই নয় গোটা পৃথিবীর মানব সভ্যতাকে ধ্বংস করতে সক্ষম। এমন একটি প্লটের উপর পুরো মুভিটি এগিয়ে চলে সামনের দিকে।
মুভিটি বেশ হাই বাজেটের মুভি, এবং ১৩০ মিলিয়ন ডলারের এই হাই বাজেটের পজিটিভ দিকটিও চোখের সামনে অবধারিতভাবেই ধরা দেয়, আর তা হলো আউটস্ট্যান্ডিং ভিজ্যুয়াল ইফেক্টস আর সিনেমাটোগ্রাফি।তবে গল্পের প্লট আর সেই স্টোরিলাইনের এক্সিকিউশান আমার কাছে বেশ দূর্বল লেগেছে। কাহিনীর মধ্যে অনেক অসামজ্ঞস্যতা ছিলো, যেমন একটা ত্রিলিয়ন ডলার বাজেটের একটি প্রজেক্ট, সেখানে যেই ধরণের রিসোর্স নেয়া উচিত তার সাথে প্রমিথিউসের কিছু কিছু সায়েন্টিস্টদের কিছুতেই মিলাতে পারলাম না, একজনতো সিম্পলি গান্জাখোর, হেলমেটের ভিতরে টোবাকো টানে--- রিডিকুলাসলি ননসেন্স, এইরকম আরো কিছু প্লটহোল ছিলো গোটা মুভিটি জুড়ে।
মুভিটির স্টোরিলাইন এতোটাই কমজোরি ছিলো যে বিশেষ কোনো ক্যারেক্টারের উপর হাইলাইট করতে পারে নি।আর ট্রেইলারে যেই অসাধারণ ক্রিপি সাউন্ডট্র্যাক ছিলো তার কোনো অ্স্তিত্বই পেলাম না গোটা মুভিতে।
যাই হোক, অন্য কোনো পরিচালক হলে আমি মুভিটিকে ১০ এ ৭.৫ দিতাম, কন্তু যেহেতু এটিতে "ডিরেক্টেড বাই রিডলি স্কট" ট্যাগলাইন রয়েছে, তাই ৭ এর বেশি দিতে পারছি না। মুভিটির আইএমডিবি রেটিং ৭.৩/১০ এবং মুভিটি ওয়ার্ল্ডওয়াইড ৪০০ মিলিয়ন ডলারের মতো ব্যবসা করেছে।
ডাউনলোড লিংক: https://safelinking.net/p/70490e8fb5
৩।Madagascar 3: Europe's Most Wanted (2012) :
অ্যালেক্স, মার্টি, মিলম্যান আর গ্লোরিয়ার কথা মনে আছে? আর সেই পেইঙ্গুইন গুলো? মাডাগাস্কারের এনিমেশান মুভিগুলো আমার চরম লাগে।শুধু মুভিই নয়, এদের টিভি সিরিজটাও বেশ মজার।মুভিগুলোর মধ্যে আগের দুইটি পার্ট নিশ্চয়ই অনেকেই দেখে ফেলেছেন। এই বছরের ৮ জুন রিলিজ পায় তিন নাম্বার পার্ট, কিছুদিন আগেই এটির ব্লু রে বের হয়, আপনারা যারা মুভিটি এখনো দেখেন নি, তাদের কাছে একটা অনুরোধ, পারলে মুভিটির ১০৮০ পিক্সেল রেজ্যুলেশানের ব্লু রে প্রিন্টে দেখুন। কারণ গোটা মুভিরিট ভিজ্যু্য়ালস অদ্ভূত রকমের সুন্দর, আর যেইরকম কালার কম্বিনেশান ইউজ করা হয়েছে তাতে ঐ প্রিন্টে একটা আলাদা ফ্লেভার পাবেন।
মুভিটি নিয়ে বেশি কিছু বলার নাই, আগেরগুলোর মতোনই বেশ ভালো টাইম পাস, লাইট, ফ্রেশ এন্ড ভেরি মাচ এন্টারটেইনিং।কাহিনী এজ ইউজ্যুয়াল, অ্যালেক্স, মার্টি, মিলম্যান আর গ্লোরিয়া তাদের নিজ মাতৃভূমি নি্উ ইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্ক চিড়িয়াখানায় ফিরবার চেষ্টা করছে, সাথে আছে সেই পেঙ্গুইনরা আর একপাল সার্কাস এনিম্যাল।আর এদিকে অ্যালেক্সদের পথের কাঁটা হয়ে আছে ইউরোপের অ্যানিমেল কন্ট্রোলের দূর্ধর্ষ ক্যাপ্টেন ও তার বাহিনী, গোটা মুভিটিতে অন্যান্য চরিত্রগুলোর পাশাপাশি এই ক্যাপ্টেন আর ভিটালি নামক ক্যারেক্টারটাকে বেশ ভালো লেগেছে।
ক্যাপ্টেন চ্যানটেল ডুব্যোঁ:
সবচেয়ে বেস্ট পার্ট লেগেছে, কেটি পেরির ফায়ারওয়ার্ক গানটি,চমৎকার সেই গানের সাথে অসাধারণ কালারফুল গ্রাফিক্স---এক কথায় দুর্দান্ত। আমার ধারণা এই গানটি এইবার অস্কারের জন্য নমিনেশান পেতে পারে। গানটির ভিডিও লিংকটি দিলাম, যাদের ইউটিউব চলে তারা দেখে নিতে পারেন,
মুভিটির আইএমডিবি রেটিং ৭.১/১০, আমার পার্সোনাল রেটিং ৭.৫/১০।
ডাউনলোড লিংক:
৭২০পিক্সেল: https://safelinking.net/p/485c9318ab
১০৮০: https://safelinking.net/p/7adf0a6dc1
৪।The Expendables 2 (2012)
এই মুভির প্রথম পার্টটি যখন দেখেছিলাম তখন মনে হয়েছিলো ধুমধারাক্কা অ্যাকশাননির্ভর এই মুভিটির ফ্র্যান্চাইজি শুরু হয়ে ভালোই হল, কাহিনীর মারপ্যাঁচ নাই, মারমারকাটকাট কিছু অ্যাকশান সিকোয়েন্স দেখা যাবে, আর যেখানে মুভির কাস্টিংটাই এইরকম সেইখানে ফুল অ্যাকশানপ্যাক না হয়ে যাবে কই!!! কিন্তু দ্বিতীয় পার্টে এসে মুভিটি দেখে একটু কেমন জানি লাগলো। অ্যাকশান প্যাক হবে ঠিক আছে, তাই বলে অ্যাকশান সিকোয়েন্সগুলো শুধুমাত্র কাবঝাপটাইপ শ্যুটিংনির্ভর ফায়ারিং আর আনরিয়েলিস্টিক হিরোইজম হতে হবে কেন? সেকেন্ড পার্টে এসে প্লট, স্টোরিলাইন, ডায়ালগ আর এডিটিং এতোটাই গার্বেজ হবে ভাবিনি। হ্যাঁ, মুভির বেশ কয়েকজায়গায় সূক্ষ্ণ কিছু হিউমার ছিলো, যেমন চাক নরিসের এন্ট্রি কিংবা যখন ব্রুস উইলিস শোয়ার্জেনেগারকে বলছিলো, “You've been back enough – this time I'll be back!" ---- কিন্তু এইধরণের স্মার্ট-উইটি মুহূর্ত ছিলো নিতান্তই হাতে গোণা, এছাড়া অ্যাকশান সিকেোয়েন্সগুলো তেমন একটা জমে নাই।তবে বেশ কিছু দৃশ্য মনের খোরাক জুগিয়েছে, এইটা সত্য। আর সাইমন ওয়েস্টের মেকিং স্টাইলটা ছিলো আশির দশকের টিপ্যিক্যাল অ্যাকশান মুভিগুলোর মতো।এইটা যদিও ইচ্ছাকৃত, তবে আমার মন ভরাতে পারেনি।
অন্যদের এই মুভি কেমন লেগেছে বলতে পারবো না, তবে আমার একেবারেই ভালো লাগে নি।আইএমডিবি রেটিং ৭.২/১০ হলেও আমার পার্সোনাল রেটিং ৩/১০।
১০০ মিলিয়ন ডলারের বাজেটের এই মুভিটি ওয়ার্ল্ডওয়াইড ২৬৮ মিলিয়ন ডলারের মতোন ব্যবসা করেছে।একটা কথা বলা দরকার, যতোটাই খারাপ বানাক না কেন তৃতীয় পার্ট রিলিজ হলে যে আবার হামলে পরে দেখতে বসে যাবো এতে কোনো সন্দেহ নেই।
ডাউনলোড লিংক: https://safelinking.net/d/0c0f35785e
৫। Exam (2009) :
অনেকদিন ধরেই এই মুভিটির বেশ নামডাক শুনে আসছিলাম। অনেকেই সাজেস্ট করছিলো, ছোট্টো সিম্পল এই থিমের উপর বেশ উত্তেজনাপূর্ণ সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার মুভি এটি। আজকে দেখে ফেললাম।সবমিলিয়ে ভালোই লেগেছে, বিশেষ করে ফার্স্ট হাফটা দূর্দান্ত ছিলো।
মুভিটি ২০০৯ সালের, ব্রিটিশ পরিচালক Stuart Hazeldine এর ডেব্যুট্যান্ট ফিল্ম এটি। মুক্তির পর এটি বেশ প্রশংসিত হয়েছিলো, এবং বাফটাতে Outstanding Debut by a British Writer, Director or Producer ক্যাটাগরিতে নমিনেশান পান Stuart Hazeldine। তবে তার আইএমডিবি প্রোফাইল ঘাঁটতে গিয়ে কিছুটা অবাক হলাম, কারণ এই এক্সামের পর গত তিন বছর তিনি আর কোনো প্রোডাকশান করেন নি। জিনিসটা বেশ দুঃখজনক।
যাই হোক, এবার আসি এক্সাম মুভিটির ব্যাপারে। মুভিটির রানিংটাইম খুবই কম, মাত্র দেড় ঘন্টার মতো, কিন্তু গোটা সময়টাই বেশ উত্তেজনাকর এবং ইনটেন্স। কাহিনীটা খুবই সিম্পল আর সংক্ষিপ্ত। একটি মিস্টিরিয়াস আর পাওয়ারফুল একটি অরগানাইজেশানের একটি নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, এজন্য অনেক সিলেকশান প্রসেস পেরিয়ে ফাইনাল স্টেজের জন্য আটজনকে নির্বাচিত করা হয়।তাদেরকে একটি বদ্ধ ঘরে ঢোকানো হয়। রুমের কোনো জানালা নেই, কেবল একটি দরজা রয়েছে, আর আটটি ডেস্ক ও চেয়ার রাখা। সেই ডেস্কের উপর তাদের ক্যান্ডিডেট না্ম্বার আর একটি করে পেন্সিল রাখা। শুরুতে তাদের সাথে একজন ইনভিজিলেটার প্রবেশ করেন এবং কিছু স্পেসিফিক নির্দেশাবলী দিয়ে দেন, কোনোক্রমেই সেগুলো ভাঙা যাবে না, নাহলে অটো ডিসকোয়ালিফিকেশান। সেই ইনভিজিলেটার আটজনকে সর্বমোট আশি মিনিট সময়সীমা বেধে দেন উত্তরপত্রে সঠিক উত্তরটি লিখার জন্য। কিন্তু অদ্ভূত ব্যাপার হলো, সেইখানে কোনো প্রশ্নপত্র নেই।এইভাবে কাহিনী এগুতে থাকে সামনের দিকে, আর যতোই সামনের দিকে আগাতে থাকে ততোই কাহিনীর জট আরো বেড়ে যেতে থাকে।
এইবার মুভিটিকে ঘিরে আমার কিছু বিশ্লেষণের দিকে আসা যাক।প্রথমত মুভিটির প্লট খুবই ইম্প্রেসিভ।খুবই ক্লেভার আর স্মার্ট এক্সিকিউশান। বেশ আন্ডাররেটেড কাস্টিং, আর খুবই লো বাজেটের মুভি। সেই তুলনায় রাইটার ও ডিরেক্টর হিসেবে একটা আলাদা ধন্যবাদ অবশ্যই স্টুয়ার্ট হ্যাজেলটাইনকে দিতে হবে। মুভিটির এন্ডিংটি অবশ্য আমাকে খুব একটা মুগ্ধ করতে পারে নি, তার কারণ হতে পারে, মুভিটির প্রথম ভাগে যেই পরিমাণ মিস্ট্রি আর টেনশানের এটমোস্ফিয়ার তৈরি হয়েছিলো, তার শতভাগ এক্সিকিউশান এন্ডিংয়ে এসে পেলাম না। একটু বেশি সিম্পল লেগেছে।
মুভিটির মেকিং বেশ ভালো। অনেক স্মার্ট রিপ্রেজেন্টেশান। ডিরেকশানে Stuart Hazeldine এর কাজ ছিলো অনবদ্য।মুভিটিতে সাসপেন্স ছিলো, থ্রিল ছিলো, কনফিউজিং এলিমেন্ট ছিলো---যা একটি সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারের জন্য অবশ্য দরকারী।
সবমিলিয়ে বলা যায়, এক্সাম একটি ভেরি ডিসেন্ট থ্রিলার মুভি, এন্ডিংয়ে আরেকটু কারিশমা দেখানো গেলে মাইলস্টোন বলা যেতো। মুভিটির আইএমডিবি রেটিং ৬.৮/১০, যেহেতু এটি পরিচালকের নির্মিত প্রথম মুভি, সেই হিসেবে আমি মুভিটিকে দশে সাড়ে সাত দিবো।
ডাউনলোড লিংক: http://safelinking.net/p/16575ee6cb
সবশেষে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা, সবার ঈদ ভালো কাটুক, আনন্দে কাটুক।