কর্তৃপক্ষ ও সকল ব্লগারদে প্রতি-
ব্লগের নীতিমালা অনুযায়ী সবাই সুন্দর ও সুষ্ঠু পন্থায় নিজ নিজ মত ও আদর্শের কথা বলার অধিকার রাখে। ব্লগার "সুশীল সমাজ" আমার মত ও আদর্শের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, তাই আমি আমার প্রাপ্য অধিকার নিয়েই এই লেখা দিয়েছি। এবং আমি আশা করবো র্কতৃপক্ষ তাদের ঘোষিত নীতিতে অটল থাকবেন ও ব্লগারবৃন্দ মানুষের সাধারণ নীতি-নৈতিকতার মানদণ্ডে আমার এ লেখার বৈধতা এবং এতে উঠে আসা বাস্তব সত্যকে উপলব্ধি করতে সচেষ্ট হবেন। ধন্যবাদ।
ভূমিকা: "আমি সত্য দ্বারা আঘাত হানি মিথ্যার উপর;ফলে তা মিথ্যাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেয় এবং তৎক্ষণাৎ মিথ্যা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। দুর্ভোগ তোমাদের! তোমরা যা বলছ তার জন্য।" -না, কথাগুলো আমার নয়; বরং আপনার-আমার সবার প্রতিপালক মহান আল্লাহ্ তা'আলার। কথাগুলো তিনি বলেন সূরা আল-আন্বিয়ার ১৮ নং আয়াতে। অতিমানবতাবাদী কিছু মানুষ আছেন যারা জগতের সবকিছুকে এক সরল রেখায় নিয়ে আসতে চান, কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো- তারা কি কখনো আলো এবং অন্ধকারকে একত্র করে দেখাতে পেরেছেন? দিন এবং রাত্রিকে মিশ্রিত করতে পেরেছেন? পারেননি। তেমনি জগতের দুই মেরুর মত দুই চিরপ্রতিদ্বন্ধি হলো সত্য এবং মিথ্যা। হাঁ, আজ আমি সত্য প্রভুর চাবুক হয়ে মিথ্যার হিংস্র মাথায় আঘাত করতে চাই! চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিতে চাই মূর্খতার সকল দম্ভকে! এবং তিনিই একমাত্র তৌফিকদাতা।
মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনীত ইসলাম: আল্লাহ্ তা'আলা প্রতি যুগেই প্রতি জাতির নিকট সত্যবাদী নবী-রাসূলগণকে প্রেরণ করেছেন আর আমাদের ভাগ্যে পড়েছেন সমস্ত নবী-রাসূলের নেতা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম; যাঁর নবুয়তের সীমানা গোটা বিশ্বব্যাপী এবং প্রেরিত হয়েছেন সমগ্র মানবজাতির প্রতি। যাঁর ব্যাপারে আল্লাহ্ তা'আলা বলেন:
وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا رَحْمَةً لِلْعَالَمِينَ
((আমি তো আপনাকে বিশ্বজগতের জন্য রহমতরূপেই পাঠিয়েছি।)) [সূরা আল-আন্বিয়া: ১০৭]
আসুন দেখা যাক দয়াময়ের পক্ষ হতে রহমতের নবী কি নে'আমত নিয়ে এসেছেন মানব জাতির জন্যে? এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ বলেন:
الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِينًا
((আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের জীবন ব্যবস্থাকে পরিপূর্ণ করে দিলাম ও তোমাদের প্রতি আমার নে'আমত সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জীবন বিধান হিসেবে মনোনীত করলাম।)) [সূরা আল-মায়েদা: ৩]
তাহলে উপরের দলীল দ্বারা আমরা এমন একটি নে'আমত আল্লাহর নিকট হতে রহমতের নবীর মাধ্যমে পেলাম যা পরিপূর্ণ, যাতে এক বিন্দু পরিমাণ কিছুও সংযোজন কিংবা বিয়োজনের কোন সুযোগ নেই এবং যা মানব জাতির জন্য একটি বিস্তারিত, সকল যুগের জন্যই সর্বাধুনিক ও সুসম্পন্ন জীবন পরিচালনার বিধান। আসুন জানা যাক যে, উপরের আয়াতে "তোমাদের" বলে কাদেরকে সম্বোধন করা হয়েছে-
هَذَا بَيَانٌ لِلنَّاسِ وَهُدًى وَمَوْعِظَةٌ لِلْمُتَّقِينَ
((এ হচ্ছে (সমগ্র) মানবজাতির জন্য সুস্পষ্ট বর্ণনা এবং মুত্তাকীদের জন্য হেদায়াত ও উপদেশ।)) [সূরা আলে-ইমরান: ১৩৮] মানুষেরা গ্রহণ করুক বা নিজেদের অজ্ঞতা-মূর্খতার জন্য অমান্য করুক; ইসলাম সকল মানুষের জন্যই এসেছে। পরন্তু এ জীবন বিধানকে মেনে চলার ক্ষেত্রে যদি মানুষেরা ছল-ছাতুরীর আশ্রয় নেয়, তাহলে তাদের ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে আল্লাহ্ জানিয়ে দেন যে-
أَفَتُؤْمِنُونَ بِبَعْضِ الْكِتَابِ وَتَكْفُرُونَ بِبَعْضٍ فَمَا جَزَاءُ مَنْ يَفْعَلُ ذَلِكَ مِنْكُمْ إِلَّا خِزْيٌ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ يُرَدُّونَ إِلَى أَشَدِّ الْعَذَابِ وَمَا اللَّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ
((তবে কি তোমরা কিতাবের কিছু অংশে বিশ্বাস কর আর কিছু অংশকে কর অবিশ্বাস? তাহলে তোমাদের যারা এরূপ করে তাদের একমাত্র প্রতিফল দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছনা ও অপমান এবং কেয়ামতের দিন তাদের ফিরিয়ে নেয়া হবে কঠিনতম শাস্তির দিকে। আর তোমরা যা কর আল্লাহ্ সে সম্পর্কে অমনোযোগী নন।)) [সূরা আল-বাকারাহ্: ৮৫]
সবমিলিয়ে আমরা আল্লাহ্ প্রদত্ত দ্বীন ইসলামকে পেলাম- পরিপূর্ণ হিসেবে, জীবন পরিচালনার পদ্ধতি হিসেবে এবং বিশ্বাসে ও মেনে চলার ক্ষেত্রে কেউ তাতে কোন রূপ কমবেশী করলে তার পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ হবে।
জামায়াতে ইসলামীর প্রচারিত ইসলাম: এবার আসুন দেখা যাক জামায়াতে ইসলামী ইসলামের এসব মৌলিক বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করে কি না?
জামায়াতের "সংগঠন পদ্ধতি" নামক বইয়ে তাদের প্রথম দফার উল্লেখ আছে 'দাওয়াত ও তাবলীগ', যেখানে বলা হয়েছে- "সর্বশ্রেণীর মানুষের নিকট ইসলামের প্রকৃতরূপ বিশ্লেষণ করিয়া চিন্তার বিশুদ্ধিকরণ ও বিকাশ সাধনের মাধ্যমে জীবনের সর্বক্ষেত্রে ইসলামের অনুসরণ ও ইসলাম প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অনুভূতি জাগ্রত করা।"
আরো অসংখ্য প্রমাণাদি থাকলেও এই একটি মৌলিক প্রমাণের প্রতিই লক্ষ্য করুন- "সর্ব শ্রেণীর মানুষের কাছে", "জীবনের সর্বক্ষেত্রে" -এ কথাগুলো দেখুন, যা ইতিপূর্বে আল্লাহর বাণীসমূহে আমরা দেখেছি। তাহলে এর দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, আল্লাহ্ যে পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা পাঠিয়েছেন এবং যে দ্বীন সর্বশ্রেণীর মানুষের জন্য পাঠিয়েছেন, জামায়াত হুবহু সেদিকেই তার পরিধিতে দুনিয়ার মানুষকে আহ্বান করছে এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনীত সত্য দ্বীনকেই প্রচার ও প্রতিষ্ঠার সাধনা করে যাচ্ছে।
(শেষ হয়নি)
পরের পর্ব পড়ুন।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৩:৩০