দীর্ঘ ৪ বছর কোন একজন শিক্ষার্থী অন্যসব বিষয় বাদ দিয়ে শুধুমাত্র হিসাববিজ্ঞান, মার্কেটিং, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইসলামিক স্টাডিজ, পরিসংখ্যান, দর্শন কিংবা এ ধরনের একক কোন বিষয়ে ব্যাপক অধ্যায়ন করার মাধ্যমে অনার্স কমপ্লিট করার পর সরকারি চাকরির জন্য বিসিএস পরীক্ষা দিতে গিয়ে দেখবে তার বিগত ৪ টি বছরের গভীর পড়াশুনা দিয়ে সে বিসিএস প্রিলিমিনারী পরীক্ষায়ও পাশ করতে পারবে না—লিখিত পরীক্ষায় পাশতো আরও বহু দূরের ব্যাপার ।
শুধুমাত্র এডুকেশন ক্যাডারে লিখিত পরীক্ষায় ২০০ নম্বর অনার্সে পড়া বিষয়ের উপর । বাকি ৭০০ নম্বর এমনসব বিষয়ে যেগুলির অধিকাংশকেই সে, যদি মেধাবি শিক্ষার্থী হয়ে থাকে, বিগত ৪ বছরে স্পর্শ করার সুযোগও পায়নি ।
শুনতে হাস্যকর মনে হলেও প্রস্তাব না রেখে পারছি না, কলেজ-ইয়ূনুভার্সিটিতে ৪ বছর মেয়াদি একটা অনার্স কোর্স চালু করা দরকার ‘বিসিএস প্রস্তুতি’ নামে । যাতে বাংলা, ইংরেজি, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জ্ঞান, সাধারণ গণিত, সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং বুব্ধিবৃত্তিক দক্ষতা—বিসিএসের এই বিষয়গুলি থাকবে ।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও পারে ৩ বছর মেয়াদি ডিগ্রি (পাস )-এর কারিক্যুলামে পরিবর্তন এনে এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে ।
তাহলে এ দেশে হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে অহেতুক নির্দিষ্ট একটি বিষয়ে ৪ বছর পড়াশুনা করে স্পেশালাইজড হওয়ার পরেও বিসিএস পরীক্ষার জন্য নতুন করে পড়াশুনা করতে হবে না । যে ৪ বছর একটি মাত্র বিষয় পড়ে তারা ‘অহেতুক সময় অপচয়’ করে, সেই ৪ বছর বিসিএসের বিষয়গুলি স্টাডি করে আয়ত্তে আনলে সরকারি চাকরিতে মসৃণভাবে প্রবেশ করতে পারবে । অনার্স পড়ার সময়ও তাদের আগ্রহ, মনযোগ, আন্তরিকতা এবং পরিশ্রমের তীব্রতা দেখা যাবে ।
কী লাভ কোন একটি বিশেষ বিষয়ে পড়ালেখা করে বিশেষজ্ঞ হয়ে, সেই বিষয়ের জ্ঞান যদি তাকে কর্মক্ষেত্রের জন্য উপযুক্ত করে তুলতে না পারে ? সেই জ্ঞান যদি কর্মক্ষেত্রে কাজেই না লাগে ? এটি কি মূল্যবান সময়, মেধা ও জনশক্তির অপচয় নয় ?