১।
পথে-ঘাটে মাইকিং করে ভ্যানগাড়িতে ৩ কেজি আম ১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেলেও ১০০ টাকায় ৩ কেজি চাল বা আটা বিক্রি হতে কেউ কোথাও সাম্প্রতিককালে দেখেনি । অথচ গরীব এই জাতির জন্য ঐটাই দরকার ছিল সবচে বেশি ।
কৃষক যদি অধিক লাভের আশায় আবাদি জমিতে ধান ও গমের বদলে ব্যাপকভাবে ফুল, কুল, মাল্টা, তরমুজ, স্ট্রবেরী, রামবুটান, ড্রাগন ফল চাষ, এবং আম বাগান, লিচু বাগান, পেয়ারা বাগান করা শুরু করে, তবে অর্থনৈতিকভাবে তারা হয়তো লাভবান হবে, কিন্তু জাতির খাদ্যসংকট শুরু হবে । এবং হয়েছেও ।
চালের দামের উর্দ্ধগতি ঠেকাতে মাঝেমাঝে ভারত থেকে চাল আমদানি করতে হয় । ইউক্রেনে বোমা হামলা হলে এ দেশে সেদিনই গম ও আটার দাম বেড়ে যায় । টিসিবি’র মাধ্যমে কমমূল্যে নিম্নবিত্ত মানুষদের চক্ষুলজ্জা হরণ করে, তাদেরকে লাইনে দাঁড় করিয়ে চাল কেনাতে হয় ।
ভাত আমাদের প্রধান খাদ্য, আটাও কম-বেশি ইদানিং । বাংলাদেশে খাওয়ার মুখ বেশি, কিন্তু আবাদি জমি সীমিত । তাহলে আবাদি জমিতে প্রধান ও অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য আবাদ না করে শৌখিন এবং লাভজনক ফসল আবাদ করা জাতির জন্য কতটা উপকারি ?
২।
একটা সময় ছিল এ দেশের গ্রামগুলিতে অবস্থাসম্পন্ন গৃহস্থ ভাবা হতো তাদেরকে যাদের গোলায় সারা বছর খাওয়ার মতো ধান-চাল সংরক্ষিত থাকতো । দু এক মাস কিনে খাওয়ার ভাবনা মাথায় থাকলেও গৃহস্থরা উদ্বেগে সময় কাটাতো, নিজেদেরকে অভাবী ভাবতো ।
একইভাবে, এ দেশের খাদ্যগুদামে সারা বছর জাতির খাওয়ার মতো পর্যাপ্ত ধান-চাল-গম মজুদ থাকলে, আর সেগুলি সহজে ও সস্তায় খেতে পারলে এখনও এ জাতি নিজেদেরকে অবস্থাসম্পন্ন ও সুখি জাতিই ভাববে ।