নেপাল যাওয়ার প্ল্যানটা হঠাৎ করেই করলাম। খুব সম্ভবত যাওয়ার ৭ দিন আগে। বাই রোডে গেলে আবার ওই দাদা মশাইদের কাছে যেতে হবে, নাহ ! এর থেকে প্লেনে যাওয়াই উত্তম। প্লেনের খোঁজ করতেই পাওয়া গেল দারুন একটি খবর, US-Bangla দেশের বাইরে প্লেন পরিচালনা করতে যাচ্ছে তাও আবার কাঠমান্ডুতে। বেশ ভাল অফার দিয়েছে, মাত্র ১৩৯৯৯ টাকায় নেপাল যাওয়া আসার টিকিট। লুফে নিলুম দাদা , একেবারে লুফে নিলুম!!
মে মাসের ১৭ তারিখ, ২০১৬
ঢাকার যানজট ঠেলে বিমানবন্দরে আমি উপস্থিত হলাম, সাথে একটা ব্যাক প্যাক আর ক্যামেরার ব্যাগ। ও বলা হয়নি , আমি কিন্তু একাই যাচ্ছি। এমন একা যেতে আমার ভাল লাগে। সাথে নিয়ে যাচ্ছি ক্যামেরা, বই ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। আমি কিছুটা আগেই চলে এসেছিলাম কারন আমার দরকার প্লেনের বাম দিকের সিট। আগে থেকেই খোঁজ খবর নিয়েছি, যে যাওয়ার সময় বাম আর আসার সময় ডান পাশে বসলে হিমালয় দেখা যেতে পারে। কখন বোর্ডিং শুরু হবে তারি অপেক্ষা করছি, এই সময় পরিচয় হল ইমরান ভাইয়ের সাথে। কথা বলে জানতে পারলাম আমার মত উনিও একাই নেপাল যাচ্ছেন। আগেই এসেছেন আমার মত, যাতে বাম পাশের সিট মিস না হয়। তারপর যা হয় আরকি, বোর্ডিং শুরু হলে আমরাই প্রথম আর দ্বিতীয় হলাম। এবং আমরা চাহিদামত বাম পাশের সিট জোগাড় করলাম।
বোর্ডিং কমপ্লিট
ভর দুপুরে এ্যারপোর্ট ইমিগ্রেশনে অফিসার মহাদয় চক্ষু বন্ধ করে বিশ্রাম নিতেছিলেন, আমি হালকা কাশি দিয়ায় উনি চক্ষু মিলিয়া তাকাইলেন। নাম কি ? কি করেন ? এই সব খেজুরে কথা বলে উনি একটা সিল দিয়ে দিলেন। ইমিগ্রেশনে পার হলেই অনেক দোকানের দেখা মিলে, যার বেশির ভাগী মদের দোকান। প্লেন দুপুর ৩ ঘটিকায় যাত্রা শুরু করবে তাই আমরা হালকা কিছু খেয়ে নিলাম। দুপুর ২ঃ৫০ মিনিটে আমাদের একটা বাসে বসিয়ে প্লেনের কাছে নিয়ে যাওয়া হল। আমি শুরুতেই ধাক্কা খেলাম, বিজ্ঞাপনে দেখলাম বড় প্লেন
( বি-৭৩৭)আর বাস্তবে কিনা ডেস ৮ !! এত অনেক ছোট প্লেন যা বাংলাদেশের বিভিন্ন যায়গায় যাতায়াত করে। প্রশ্ন করলেই ফেললাম এমন কেন ?? সুন্দরী এক আপা বললেন " আমাদের নতুন প্লেনের অর্ডার করা হয়েছে, ২/৩ মাসের মধ্যেই তা চলে আসবে স্যার"। ওকে, কি আর করা নিজ আসনে বসে পড়লাম। মন কিছুটা খারাপ হলেও এদের পরিবেশন করা খাবার অনেক জোস ছিল। মুরগির মাংশ সাথে সবজি আর ভাত, এক কথায় অসাধারণ ছিল। এর মধ্যে আমি বার বার বাইরে লক্ষ্য রাখছি হিমালয়ের দেখা মিলছে কিনা নজর রাখার জন্য।
মেঘের রাজ্য
এরমধ্যে প্লেনের ভিতরে দেখা হয় গেল তানযিল ভাইয়ের সাথে, উনি আমার MBA ক্লাসের সহপাঠী, উনি পরিবার সহ নেপাল ভ্রমণে যাচ্ছেন। হঠাৎ করেই প্লেনের কাপ্তান জানালেন, নেপালের ত্রিভুবন এয়ারপোর্ট বন্ধ করে দিয়েছে খারাপ আবহাওয়ার কারনে। বাইরে তাকিয়ে দেখি কাল মেঘ , আর বজ্রপাত হচ্ছে। কাপ্তান সবাইকে সিট বেল্ট বেঁধে ফেলতে বললেন, আর জানালেন কিছুক্ষণ আকাশেই অপেক্ষা করা হবে, আর যদি আবহাওয়া ঠিক না হয় তো আমরা ফিরে যাবো। এর পরেই শুরু হল প্লেনের সাথে বাতাসের লড়াই, প্লেন স্থির থাকতে পারছিল না। একবার ডান দিকে তো আরেকবার বাম দিকে ঝুকে যাচ্ছিল। সবচেয়ে ভয় লাগছিল যখন প্লেন মাঝে মাঝেই নীচের দিকে নেমে যাচ্ছিল, আবার উপরে । এইভাবে চলতে চলতে হঠাৎ লক্ষ্য করলাম প্লেন নীচের দিকে নামছে। পাহাড়ের উপরের বাড়িগুলি বেশ পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, আমরা কি ক্রাশ করতে যাচ্ছি ??? দুয়া দরুদ পড়া শুরু করে দিয়েছি, এমন সময় দেখি আমরা অনেক নিচে চলে এসেছি। শহর! অনেক দালান দেখা যাচ্ছে, তারপরেই ঝাকি খেয়ে বুঝলাম প্লেনের চাকা মাটি ছুঁয়েছে। সবাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন, আমরা নিরাপদে নেপালে নামতে পেরেছি। কাপ্তান ইন্টার কমে জানালেন তিনি প্লেন ল্যান্ড করা নিয়ে এতটাই বেস্ত ছিলেন যে নামার আগে ঘোষণা দিতে পারেন নি। নামার আগে আমি কাপ্তানকে ধন্যবাদ দেয়েছিলাম নিরাপদে আমাদের গন্তবে নিয়ে আসার জন্য। তারপর পা রাখলাম নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে, ঝড় থেমে তখন বৃষ্টি পরছিল।
ঢাকা - কাঠমান্ডুর প্লেনের ভিডিও
বিমানবন্দরটি তেমন বড় নয়, ঢাকার বিমানবন্দরের সাথে তুলনা করলে অনেক ছোট। কিন্তু নেমেই নজরে পড়লো পাহাড়, বিশাল সব পাহাড় পুরু কাঠমান্ডু শহরকে ঘিরে রেখেছে। নেপালে বাংলাদেশীদের কোন ভিসার দরকার হয়না, বিমানবন্দরেই একটা ফর্ম ফিলাপ করতে হয়, সাথে এক কপি ছবি আর পাসপোর্ট। এই সব জমা দিতেই ১ মাসের ভিসা পেয়ে গেলাম। বাইরে তখনো বৃষ্টি চলছে, আমি আর ইমরান ভাই একটা ট্যাক্সি নিয়ে চললাম থামেলে। থামেল কাঠমান্ডুর পর্যটক জোন। এখানেই বেশির ভাগ পর্যটক থাকেন। ট্যাক্সি থামেলে পৌঁছালে আমি একটি মানি এক্সচেঞ্জ থেকে ডলার কনভার্ট করতে গেলাম, ১ $ এ পাওয়া গেল ১০৬ নেপালি রুপী। কিন্তু টাকার অবস্থা খুব খারাপ, অনেক পুরুন, ময়লা , আমি তো গুনে নিতেই পারছিলাম না। ট্যাক্সি মামাকে বিদায় করে একটা হোটেলে উঠে পড়লাম, এক রাত্রির জন্য ৬০০ রুপী। আমরা কাল সকালেই পোখারার উদ্দেশে চলে যাবো। রাতেই বাসের টিকিট কেটে ফেললাম, ৫০০ রুপী করে, বলা হল এটা AC বাস। কিন্তু সকালে গিয়ে খেলাম ধাক্কা, দেখি এটা AC বাস নয় ! কি আর করা, বসে পরলুম। আমি আর ইমরান ভাই আলাদ সিট নিয়েছি, ডান দিকের জানালার সিট। কারন জানতে পেরেছিলাম ছয় ঘন্টার এই ভ্রমন অসম্ভব সুন্দর পাহাড়ি নদীর নীল পানির স্রোত, মেঘের মধ্যে হারিয়ে যাওয়া পাহার সব দেখতে পাওয়া যায়।
এই সেই বাস
বাসে আমরা মোট যাত্রী ৮ জন! গাড়ি চলতে শুরু করল, যে পাহারগুলির কথা বলেছিলাম তা ধীরে ধীরে অতিক্রম করল। আমি ভাবছিলাম এই বুঝি পাহাড়ের শেষ, কিন্তু নাহ, এটা শেষ নয় এটা শুরু। পাহাড়ের পাশ দিয়ে সুরু রাস্তা দিয়ে বাস বেশ ভালই চলতে শুরু করল। আঁকা বাকা পথ, পাহাড়ের অসাধারণ দৃশ যা এক কথায় মনমুগ্ধকর। লিখে ঠিক বুঝানো মুশকিল, তার থেকে ছবিতেই দেখে নিন কেমন তাহার রুপ।
পোখারা পৌছাতে তখনো ৪০ মিনিট বাকি, হঠাৎ ডানদিকে লক্ষ্য করলাম সাদা চাদরে মোরা কিছু একটা আস্তে আস্তে পরিষ্কার হচ্ছে। OMG মাউন্ট অন্নপূর্ণা !! ধীরে ধীরে পরিষ্কার হয়ে গেল।
অন্নপূর্ণা
এই সময় সাধারণত পরিষ্কার দেখা যায়না, কিন্তু যা দেখতে পেয়েছি তাও কম কিসের। দেখতে দেখতে কখন যে পোখারা পৌঁছে গেলাম টের পায়নি। আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি মেঘ ধীরে ধীরে ঢেকে ফেলছে অন্নপূর্ণাকে।
কাঠমান্ডু থেকে পোখারার বাস ভ্রমনের ভিডিও
ফিউয়া লেক পোখারার অন্যতম আকর্ষণ, তাই লেকের পাশেই একটা হোটেলে উঠলাম। হোটেল রুমের বারান্ধা থেকেই ফিউয়া লেক আর পাহাড় ২ টাই দেখা যায়।
হোটেল রুম থেকে পোখারা শহর
ওইদিন সূর্য ডুবার আগে লেকের পাশে গিয়ে বসে ছিলাম, অসাধারণ সে দৃশ। সূর্য ডুবার সাথে সাথে লেকের রুপ পরিবর্তন মনমুগ্ধকর।আমি একা নই, এখানে অনেক ভিনদেশের মানুষ এই দৃশ উপভোগ করছিল।
ফিউয়া লেক
ফিউয়া লেকের ভিডিও
এখানে অনেক রেস্তোরা আছে , যা লেকের সাথেই। কনটাতে গান চলছে, কেও ড্রিঙ্ক করছে, কেও শুয়ে আছে, যে যার মত আছে, কিন্তু কেউ কাওকে বিরক্ত করছে না। নেপালিরা পর্যটকদের অনেক সম্মান করে, কখনই বিরক্ত করে না। আমাদের দেশে এই সাদা পর্যটকরা কম আশে এই কারনে। তারা যা চায় তা আছে নেপাল , থাইল্যান্ডে। পোখারা লেক সাইডটি জমজমাট। যেন এক ভিন্ন পৃথিবী।রাস্তার ২ পাশে নানা দোকানপাট, রেস্টুরেন্ট আর বার, অসম্ভব প্রানপ্রাচুর্যপূর্ন একটা শহর। অনেক দেশের মানুষ এখানে পড়ে থাকে, আমার মত ২ দিনের বান্দা নয় তারা। প্রাকৃতিকভাবে এই শহরটা শান্তিময়। রাতের শহরটা হয়ে উঠে আর উপভোগ্য। সব দেশের খাবারের পাশাপাশি লাইভ গান শুনার বেবস্থা আছে অনেক রেস্তরায়।
রাতের লেক ভিউ
রাতেই একটি ট্যাক্সি ভাড়া করলাম ভোরে সারাং কোট যাবো ,এটা অন্নপূর্ণা দেখার পয়েন্ট। ভোর ৫ টায় ট্যাক্সি চলে এলো হোটেলে, তখনো অনেক অন্ধকার। হেড লাইট জ্বালিয়ে আমরা চললাম সারাং কোটের দিকে, সাথে ইমরান ভাই। ড্রাইভার সাহেব নানা গল্প শুনাচ্ছেন,ঘুম তখনো চোখে কিন্ত ভদ্রতার কারনে জী জী করছি, কিন্তু তিনি বলেই চলেছেন নেপালের রাজনীতি, অর্থনীতি ,সামাজিক সমস্যা, ভারতের সাথে তাদের সম্পর্ক! সকাল সকাল কার ভাল লাগে এসব শুনতে? পাহাড়ের একা বাকা রাস্তা দিয়ে আমরা একটা যায়গায় নেমে পড়লাম। বাকি পথ সিরি বেয়ে যেতে হবে। দেখলাম ইমরান ভাই তর তর করে আমাকে ছাড়িয়ে অদৃশ্য হয়ে গেল, আমি হাফাতে হাফাতে গিয়ে হাজির হলাম টপ পয়েন্টে। অসাধারণ ! অপূর্ব! পুরা পোখারা শহর দেখা যাচ্ছে।
সারাং কোটের উপরে
তারপর শুরু হল আমাদের অপেক্ষা কখন অন্নপূর্ণা আমাদের দর্শন দেবেন। একসময় তিনি ধীরে ধীরে পরিষ্কার দেখা দিলেন বটে কিন্তু বেশিখনের জন্য নয়। কিছুটা হতাশ হয়ে আমরা ফিরে গেলাম। এই ট্যাক্সিওয়ালাকেই আমরা ২৫০০ রুপীতে সারাদিনের জন্য ভাড়া করলাম পোখারা শহর ঘুরার জন্য। তিনি আমাদের ডেভিস ফলস,ব্যাট কেভ, মাহেন্দ্র নাথ কেভ, সেটি রিভার ও গোর্খা মিউজিয়ামে নিয়ে গেলেন।
ব্যাট কেভ
ব্যাট কেভের ভিডিও
ব্যাট কেভ হচ্ছে বাদুড়ের ঘুহা, টিকিট করলে সাথে একটা বড় টর্চ দিয়ে দেয়, আনন্দের সাথে সেখানে প্রবেশ করে বুঝলাম এক হাতে ক্যামেরা আর টর্চ নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব নাহ। ২/৩ টি বারি খেয়ে এগিয়ে চললাম, এখানেও ইমরান ভাইয়ের জয় জয়কার, দারুন দক্ষতায় তিনি এগিয়ে চলেন। আর আমি মাথায় একবার নয় ৩ বার বারি খেলাম। দুঃখের বিষয় বাদুড়রা মনে হয় ওই সময় বাসায় ছিলেন না, তাই দেখা পেলাম না।
গোর্খা মিউজিয়াম
মিউজিয়ামে যেতে আমার সব সময় ভাল লাগে, একটা দেশ- জাতিকে যানতে হলে মিউজিয়ামে যাওয়া উচিৎ। আমি তাই মনে করি। গোর্খা মিউজিয়ামে রয়েছে গোর্খা সৈনিকদের গৌরবের ইতিহাসের কথা।তারা শুধু নেপালের জন্যই নয়, ব্রিটিশ , ভারত সহ নানা দেশের হয়ে পৃথিবীর অনেক যুদ্ধে লড়াই করেছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তারা অংশ নিয়েছে। এই শতাব্দীর ইরাক, আফগানিস্থান যুদ্ধে লড়েছে তারা। ইংল্যান্ড এর রানীর বেক্তিগত গোর্খা সৈনিক আছে। বলা হয় গোর্খা সৈনিক মারা যাওয়ার আগে ১০ জনকে মেরে মরে।
কি বুঝলেন?
ওয়ার্ল্ড পিস প্যাগোডা
ওয়ার্ল্ড পিস প্যাগোডার ভিডিও
ওয়ার্ল্ড পিস প্যাগোডার কথা আলাদা করে বলতেই হয়।পোখারা শহর থেকেই দেখা যায়, পাহাড়ের চুড়ায় তার অবস্থান। রাস্তার অবস্থা খুব একটা ভাল না, এটা কোন সমস্যা নাহ। সমস্যা হচ্ছে ৩৫০ টি সিঁড়ি!! হা ভাই ৩৫০ টি সিঁড়ি। এইবার ইমরান ভাইও হাফিয়ে দম হারালেন। আমি ৩ বার ব্রেক নিয়ে, পানি পান করে এগিয়ে যেতে থাকলাম। এইটাই বুঝি শেষ সিঁড়ি , নাহ আর আছে। এইভাবে আমরা পৌঁছে গেলাম উপরে। জাপান সরকার বানিয়েছে এই মন্দিরটি, সাদা রঙের মন্দিরটি দেখে মন ভাল হয়েগেল। জুতা খুলে উপরে যেতে হয়, উপরে গিয়ে দেখি কিছু মানুষ প্রার্থনা করছে, আর কিছু মানুষ দেয়ালে হেলান দিয়ে জিরিয়ে নিচ্ছে। ৩৫০ টি সিঁড়ির ধকল মনে হয় এখনো সামলে উটতে পারেনি! দুপুর বেলার রোদে চমৎকার দেখা যায় শহরটা, সেই সাথে ফিউয়া লেকও দেখা যায় এখান থেকে।
সাইকেলিং এর ভিডিও
পরের দিন একটা সাইকেল ভাড়া করে ফেললাম। এখানে সাইকেল আর বাইক ভাড়া পাওয়া যায়। সাইকেল ৫০০- থেকে শুরু করে ২০০০ রুপী পর্যন্ত আছে। সারাদিন ও ঘণ্টা হিসাবে ভাড়া দেয়।আমি আমার জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দিয়ে সারাদিনের জন্য নিলাম, শহরের আশে পাশে, অলিতে গলিতে ছুটে চললাম, শহরটি যানজট মুক্ত হয়ায় সাইকেল চালিয়ে অনেক মজাই পেয়েছিলাম। ট্যুরিস্ট এলাকা ছেরে সাধারন মানুষদের এলাকায় গিয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাম অনেক সস্থায়। বলা হয়নি লেক সাইডে খাবারের দাম বেশ চরা! মুসলিম কিছু খাবারের হোটেল আছে কিন্তু দাম আগুনের মত। এক দোকানি বাংলাদেশি বুঝতে পেরে বলল আপনাদের দেশের আশরাফুল আমার রেস্তরায় খেয়েছিল গতবছর।
ওইদিন বিকালে ফিউয়া লেকে নৌকা ভ্রমন করলাম, ১ ঘণ্টার জন্য ৫০০ রুপী আর লাইফ জ্যাকেটের জন্য ২০ রুপী। মাঝি আমাকে ফিউয়া লেকের চারপাশে ঘুরিয়ে দেখাল, মাঝে আমি তাকে বিশ্রাম দিয়ে নিজেও মাঝি হওার চেষ্টা করলাম। যানা গেল মাসে তার আয় ২০-৩০ হাজার নেপালি রুপী। ১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছে। ঘাটে ফিরলে আমার সাথে ফেসবুকে অ্যাড হয়ে গেল, তার অনুরধে আমি তাকে বাংলাদেশি ব্যাংক নোট উপহার দিলাম। তার চোখ মুখ বলছিল বেশ খুশি হয়েছে।
ফিউয়া লেকে নৌ ভ্রমনের ভিডিও
পরের দিন কাঠমান্ডুর উদ্দেশে আবার বাসে উঠলাম, ইমরান ভাই থেকে গেলেন। বাস ছাড়বে ছাড়বে করছে এই সময় দেখি তিনি আবার উকি দিচ্ছেন! কে আবার? দেখা দিল অন্নপূর্ণা! প্রথম দিনের মত পরিষ্কার না হলেও দেখার জন্য যথেষ্ট বলা যায়। ছবি তুলার চেষ্টা না করে ২ চোখ ভোরে দেখার চেষ্টাই করলাম, যতক্ষণ সম্ভব। ভেবেছিলাম ঘুমাব কিন্তু তারপরেই শুরু হল পাহাড়ের হাতছানি, পাহাড় আমাকে ঘুমাতে দিল কোথায়! অপূর্ব তাহার রুপ। দেখতে দেখতেই চলতে লাগলাম কাঠমান্ডুর দিকে।
পোখারা থেকে কাঠমান্ডু যাওয়ার ভিডিও
নেপাল ভ্রমন- যত কাণ্ড কাঠমান্ডুতে ( শেষ পর্ব)
পোখারার সম্পূর্ণ ছবির এ্যালবাম
কাঠমান্ডুর সম্পূর্ণ ছবির এ্যালবাম
আমার ইউটিউব লিংক
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:৩১