ওই যে আকাশের ধ্রুবতারাটা!
আমায় পেড়ে দেবে?
বলতেই সে বললো,
"তবে আর মানুষেরা
পথ চলবে কি করে শুনি?"
"জানিনে আমি অতসব!
আমায় পেড়ে দাও!"
আমার ছেলে মানুষী বায়না শুনে,
সে ভীষণ হেসেছিলো সেদিন সাঁঝে।
বাগানে হাঁটছিলাম দুজন।
পাশের ঠাকুরবাড়ি তার নীড়।
তখন আমি দ্বাদশী আর
সে ষোড়শ বর্ষের দাপুটে অধিকারী।
গায়ে কাপড় জড়িয়ে
পাকা গিন্নী সেজে
তার সাথে বর বউ খেলতাম।
তাকে ভাত খেতে দিতাম,
পাশে বসে হাতপাখা দিয়ে বাতাস করতাম,
খাবার শেষে,
হাত ধোয়ার জল দিয়ে সেরে
কলকে সাজিয়ে দিতাম।
আরো কত কি!
বড্ড হাসি পায় মনে পড়লে!
তার বাড়িটা এখনো চোখে পড়ে।
ঘরের ভেতরের দুষ্টুমিষ্টি খুনসুটির
আবছা আওয়াজ কানে আসে।
আওয়াজটা তীব্র নয়,
তবুও এত তীক্ষ্ণ শোনায় কেন?
দু হাতে কানে কুলুপ দেই!
আমি যে ধ্রুবতারা করে তাকে চেয়েছিলাম,
সে বোঝে নি সেদিন?
সে সেদিন কেন বলেনি,
"তোকে পথ চিনিয়ে আমি বিদেশ ঘোরাব;
তুই কেবল চুপটি করে আমার হাতটা ধরিস।
ধ্রুবতারার আর দরকার কি বল্?" ?
সে এখন অন্য আকাশের ধ্রুবতারা।
একেবারে অন্য।
যদি কখনো
সত্যজিৎ এর ভুতের রাজা
আমার কাছে জানতে চায়
আমি কি চাই,
মৃদু বাতায়নের কোল হতে
মায়া ঋণ করে বলে দেবো,
"একটি ধ্রুবতারা!"
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৮:০৭