ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় চলছিল। সুজন সারওয়ার চৌধুরী। কবি , প্রাবন্ধিক।
দেশে থাকতে সাপ্তাহিক অনুপম এর নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন।
অনুপম ছিল আমাদের আড্ডাস্থল।
সারওয়ার চৌধুরী এখন আবুধাবী প্রবাসী। দীর্ঘদিন পর সমকাল এর
কালের খেয়া'য় তার গল্প পড়ি।
ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে জানতে চাই , তার সাম্প্রতিক লেখালেখির কথা। তিনি জানান, এখন ব্লগে লিখেন। ব্লগঠিকানা জানান। আমি তার লেখা
পড়ি।ভালো লাগে।
আমি এর আগেও এই ব্লগ দেখেছি। দেখেছি সচলায়তন ও। আমার ক'জন অনুজ সাহিত্যিক ব্লগিং করেন সেখানে ও।
হঠাৎ আমার ও ইচ্ছের পালে হাওয়া লাগে। সারওয়ার চৌধুরীর আহবানে সাড়া দিই। ১৪ অক্টোবর ২০০৭। রেজিষ্ট্রেশন করি সামহ্যোয়ার ইন ব্লগে।
লিখি আমার ব্লগ জীবনের প্রথম লেখাটি।
Click This Link
দুই.
সামহ্যোয়ার ইন ব্লগে এসে অনেক নতুন অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার। শুরুতেই কজন ব্লগারের যে সহযোগিতা পাই , তা কোনোদিন ভুলা যাবে না। রাশেদ, মুকুল, এস্কিমো, অমি রহমান পিয়াল, মুজিব মেহদী,আরিফ জেবতিক এই কজনের কথা কখনোই ভুলা যাবে না। রাশেদ ভাই অনলাইনে থেকে আমাকে গাইড দেন। মুকুল ভাই তাৎক্ষণিক বিএনওয়েব টুলস এর ঠিকানা
দিয়ে আমাকে সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন। এস্কিমো, পিয়াল, মুজিব মেহদী , সারওয়ার চৌধুরী, হাসিব মাহমুদ, বিষাক্ত মানুষ, লাল দরজা, বিহংগ, না না ভাবে নৈতিক সমর্থন দিয়ে আমাকে এগিয়ে নিয়ে যান । আমি তাঁদের কাছে ঋণী।
তিন.
এই ব্লগে আমার এই একটি বছর কেটেছে খুবই বর্ণিল। এখানে না এলে
অনেক কেই আমার ভালো করে চেনা হতো না। একটি ঘটনা বলি।
একজন তরুণ লেখক। যাকে আমি দেখিনি, কিন্তু তার লেখালেখির সাথে
পূর্বপরিচিত ছিলাম। আমি যখন ঢাকার কাগজগুলোতে নিয়মিত লিখি ,তখন তিনি মফস্বল থেকে ঢাকা এসে পৌঁছুন নি। এই ব্লগে তিনি পুরনো
তা আমি জানতাম । আমি তাকে সমীহ ও করতাম। প্রখ্যাত লেখক দেবেশ
রায়ের একটি ঢাকা ভাষণ বিষয়ে আমি সামহ্যোয়ারে একটি ছোট্ট
লেখা লিখি। এর সূত্রধরেই ঐ ব্লগার একটি লম্বা পোষ্ট দেন তার ব্লগে। যেখানে আমার নাম ধরে তিনি তুই-তাকারি পর্যায়ে নেমে আসেন। তার আচরণে আমি চমকিত হই। এই তাহলে তার আসল
চেহারা ! তার এই উগ্র , জঘন্য মানসিকতা আমাকে আহত করে।পরে ঢাকার বন্ধুদের কাছ থেকে জেনে যাই তার আরো অনেক নৈতিক অবক্ষয়ের ফিরিস্তি । তার জীবনের অনেক বসন্ত-বর্ষার গল্প(?)। তার প্রতি
ঘৃনা আরো বহুগুণ বেড়ে যায় আমার।
চার.
এই ব্লগে আমি কখনোই অন্যায় ভাবে কোনো আচরণ কারো সাথে করিনি। আমার মৌলিক চেতনায় আমি সবসময় সুদৃঢ় থেকেছি। তারপরও
আক্রান্ত হয়েছি না না ভাবে। বিনা কারণে। ফলে , বাধ্য হয়ে বেশ কিছু
ব্লগার কে ব্যান করতে বাধ্য হয়েছি। এখনো কর্ণফুলি পাড়ের একজন
ব্লগার আছেন , যিনি আমার প্রতিটি লেখায় মাইনাস দিয়ে যান।আমি তাকে
সারমেয় শ্রেণীর ব্লগার বলেই মনে করি। তার আচরণে আমি মাঝে মাঝে
হাসি । আহারে ! বেচারা আর কিছু না পেরে মাইনাস অস্ত্রটির প্রয়োগ করছেন ! তার জন্য আমার করুণা হয় !!!!!
পাঁচ
এই ব্লগ, আমাকে এক বছরে অনেক কিছু দিয়েছে।আমি প্রতিদিন কিছু না কিছু লিখেছি। মত প্রকাশ করতে পেরেছি।এজন্য ব্লগ কর্তৃপক্ষ, মডারেটর,
এবং সম্মানিত ব্লগারবৃন্দকে অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন , আমি অন্যদের ব্লগে মন্তব্য করিনা । আমি তা খন্ডন করে বলতে চাই, আমি বিবেকের কাছে স্বচ্ছ থেকে মন্তব্য করতে সচেষ্ট থেকেছি।সময় দেয়া ও একটা ব্যাপার । তা আমার সীমাবদ্ধতাকে আরো সংকুল করে তুলেছে হয়তোবা।
আজ এক বছর পূর্তিতে যখন পিছন ফিরে তাকাই , তখন দেখি আমি যা লিখেছি তার সংখ্যা একেবারে কম নয়। কিছু লেখা এই ব্লগ থেকেই আমার
অনুমতি সাপেক্ষে অন্যান্য কাগজ ও ছেপেছে। তাদেরকে ও ধন্যবাদ।
আজ আমার নতুন বছরে যাত্রাশুরু উপলক্ষে , আমি সে সব ব্লগারদেরকে আবারো স্মরণ করি যারা মতের ভিন্নতা নিয়েও বিভিন্নভাবে আমার লেখায় সৃজনশীল মত বিনিময়ে ব্রতী হয়েছেন। রাফা, রামন, হায়দার কারিগর,ফারিহান মাহমুদ, আলী আরাফাত শান্ত, কালপুরুষ, মুয়ীজ মাহফুজ, শেখ জলিল, মাহবুব লীলেন, অশোক দেব, তারিক টুকু, ইফতেখার ইনান, মাহমুদ শাওন, রন্টি চৌধুরী,আন্দালীব,
শফিউল আলম ইমন, মাহমুদুল হক ফয়েজ, ইমরান খান ইমু, নেমেসিস,
ঘোর,
অপূর্ব সোহাগ, জুয়েল মোস্তাফিজ ,মুনীর উদ্দিন শামীম সহ আরো অনেকের নামই প্রণিধান যোগ্য। আমি সবাইকে বিনীত ধন্যবাদ জানাই।
ছয়
সবিনয়ে আবারো বলি , আমি লিখতে চাই। আমার কাজ আমি বিবেকী
সত্তায় করেই যাবো। যারা আমার সতীর্থ তাদের জন্য আমার দরোজা
সবসময় অবারিত থাকবে।
ফুলেল শুভেচ্ছা সবাইকে ।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৭:৩৭