কে যেন এক আলো-কৈশরী
পাঠাল এক মূষ্ঠি স্বর্ণালী রং,
চঞ্চুর খামে প্রিয় বর্ণমালার উচ্চারণ ।
আমি সেই বর্ণ লুটেরা বীর,
ব্যক্ত অব্যয়ের ঊর্দি জড়িয়ে
ভেঙেছি অবরূদ্ধ কন্টক প্রাচীর ।
তুলেছি বঙ্গ বিদ্রোহের মশাল-আঙ্গুলি ।
একদিন পাজরে আটকানো ছিল নীল কষ্ট,
গেরুয়ার কোনায় বাঁধা বিবর্ণ গোলাপ,
একদিন বিষ ট্রিগারের নিশানা ছিল মাতৃ-ঠোঁট,
নিদ্রায়িত শব্দাবলীতে স্পটিক রক্ত জমাট,
অতঃপর তোমার রূপসী বর্ণমালার
কোমর ছূঁয়ে ছুঁয়ে আপ্লিত ঠোট,
বক্ষ-বন্ধনীর ঘ্রাণে বিমুক্ত মহূয়া,
লজ্জানীল প্রকাশে উচ্চারিত- 'ভালোবাসি' !
এই চারটি বর্ণের মাতাল আগ্রাহায়ণে -
মূহর্তেই মূছে গেল কৃষ্ণের কফিন ; মুছে গেল দাসত্ব মন্দিরা,
বোবা অরন্যে ঘন্টি বাজল ; বাজল সুর নিদ্রা জাগানিয়া,
নষ্ট সময় হয়েছে মুঠো-বন্ধী ; চুষে নিয়েছে অন্ধকার
শ্বশাণ আগুণে পূড়েছে শিকল; জেগেছে আজ মুক্ত মিনার ,
আমি দুঃখ-শোক জমা রেখে এই গর্বিত মিনারে,
শ্রেয়সী, তোমার কপালে একেছি প্রজন্ম চিহ্ন,
কন্ঠে ছেটেছি উন্মুক্ত বাহুর শ্লোগান ।
না হয়
তোমার নষ্টা অপবাদ থাক পরে নীল-রঙা কাগজে ;
তোমার ধর্মহীন সত্তাটা খাক পুড়ে চেতনা-বিরাগী শ্বাপদে,
তবু দেখবে কোনদিন,
মুষ্ঠি করে তুলে শাড়ির কুচি ,
নগ্ন চরণের দু-হাট্ট দূরে রেখেছি কলঙ্কহীন সিড়ি ,
তোমার পা থেকে রক্তের দাগ মাথায় নিয়ে
ফুলেল নূপুরে বানাব, শুভ এক প্রভাত ফেরী ।
তারপর না হয় একদিন,
বসন্ত মৃত্যূর কফিনে এলিয়ে দেব গা ,
আমায় নিয়ে শুরু হবে শঙ্খের শোভাযাত্রা ,
তুমি থেক প্রিয়তমা 'বর্ণমালাটা' হয়ে ,
বিজয়ী সূখ পৃষ্ঠার সোনালী অক্ষরে ।
( ছবি কৃতজ্ঞতায়: ২০১১-এর ইউনেস্কো প্রচারিত পোস্টার )
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:১৮