বর্তমান সময়ের নাট্যকারদের মধ্যে ব্যক্তিগতভাবে জনাব বৃন্দাবন দাসের রচিত/পরিচালিত নাটকের আমি ভক্ত। সহজ, সরলভাবে ঘটনা আর চরিত্রের মাধ্যমে সমাজের অসঙ্গতিসমূহ উপস্থাপন আর তীর্যক ও ব্যঙ্গাত্মক সংলাপের মাধম্যে কোন বক্তব্য প্রদানের জন্য তার জুড়ী মেলা ভার। তো, জনাব বৃন্দাবন দাসের একটা নাটক ইউটিউবে দেখেছিলাম, নামটা বোধহয় 'মামলাবাজ'। এই নাটকে চঞ্চল চৌধুরী একজন ঘরজামাই জুয়াড়ীর অভিনয় করেন। হাস্যরসের মাধ্যমে নাট্যকার ঘটনাটি উপস্থাপন করলেও সচেতন মানুষমাত্রই জেনে থাকবেন যে, জুয়ার কারণে আজ অনেক ব্যক্তি, পরিবার সীমাহীন ক্ষতির শিকার। অনেক বাবা-মা, অভিভাবকবৃন্দ তাদেঁর উঠতি বয়সী সন্তানদের নিয়ে উদ্বিগ্ন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আপনাদের সাথে নিচের বিষয়টি শেয়ার করছি।
বাংলাদেশের নানা স্থানে ইনড়োর গেমস এর নামে জুয়া, হাউজি ইত্যাদি বেশ ভালোভাবেই চালু হয়েছে। নওঁগা জেলার বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ক্লাবে ইনড়োর গেমস এর নামে "নিপুন খেলা ১-১০, ১-৮, ছরছরি, ডাইস, হাউজি" ইত্যাদির বৈধতা দাবী করে বাদী বাংলাদেশের মহামান্য হাইকোর্টে আসেন। বাদীর দাবী অনুযায়ী তিনি বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ক্লাবের সাথে ৫ বছরের নবায়নযোগ্য চুক্তি করেছেন এবং উক্ত ক্লাবের নির্ধারিত স্থানে তিনি এইসব খেলা (!!!) চালাতে পারেন। কিন্তু পুলিশ বা আইন শৃংখলা বাহিনীর অত্যাচারে (!!!) তার আইনগত ব্যবসা ব্যহত হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মহামান্য হাইকোর্ট, The Public Gambling Act, 1867; The Penal Code; The Places of Public Amusement Act, 1933; the National Sports Council Act, 1974, আইনগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে গত জুন, ২০১৪ এর ১৮ তারিখে রায় প্রদান করে যে, ডাইস এবং হাউজি হচ্ছে জুয়া, যেখানে টাকা খাটানো হয় আরো বেশী টাকা কামানোর জন্য। আদালতের রায়ে বলা হয় যে, "নিপুন খেলা ১-১০, ১-৮, ছরছরি, ডাইস, হাউজি" ইত্যাদি 'জুয়া এবং যারা তা খেলবে বা উক্ত স্থানে উপস্থিত থাকবে [টাকা দিয়ে খেলার জন্য হোক বা না হোক] এবং যারা এইরকম খেলার জন্য কোন স্থান বরাদ্ধ দিবে, তারা আইনতঃ দোষী এবং আইন শৃংখলা বাহিনী এক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিতে পারবে।'
তাই আপনার আশপাশে এই রকম কিছু হলে এই মামলার রায়ের ভিত্তিতে আইন শৃংখলা বাহিনীকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ করতে পারেন।
মামলার সম্পূর্ণ রায় দেখতে পারেন এখানে ।
সবাইকে ঈদ এর অগ্রীম শুভেচ্ছা।