আমি বলছিনা ভালোবাসতেই হবে,আমি চাই
কেউ একজন আমার জন্য অপেক্ষা করুক,
শুধু ঘরের ভিতর থেকে দরজা খুলে দেবার জন্য।
বাইরে থেকে খুলতে খুলতে আমি এখন ক্লান্ত।
নির্মলেন্দু গুণ সাহেবের এই কবিতা কম বেশি সবাই জানি। কিন্তু আজকাল বড় বেশি রকমের লেখালেখি হচ্ছে এই কবিতাকে ঘিরে। আসল কবিতাটা পুরো দিলাম না। লম্বা হয়ে যাবে। আর মূল যে কবিতা সেটা যখন তখন পাওয়া যাবে, কিন্তু সেটা বদলে যে লেখাগুলো করা হয়েছে, সেটাই এই পোস্টের ক্ষেত্রে মুখ্য। তাই আগেভাগে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, বোথ ফ্রম নির্মলেন্দু গুণ অ্যান্ড হিজ পোয়েম লাভারস।
প্রথমেই ফেসবুকে কে কথা কয় নামে পরিচিত শাহ্রিয়াজ ভাইয়ের লেখা ঃ
আমি বলছি না আমার সাথে গোসল করতেই হবে ,
আমি চাই কেউ একজন আমার জন্য লুঙ্গী,
গামছা নিয়ে অপেক্ষা করুক,
শুধু আলনা থেকে লুঙ্গী,গামছা খুজে দেবার জন্য।
একা একা লুঙ্গী,গামছা খুজতে খুজতে আমি এখন
ক্লান্ত ।
আমি বলছি না আমার সাথে গোসল করতেই হবে,
আমি চাই কেউ আমার গোসলের পানি গরম করে দিক ।
আমি কষ্ট করে কাউকে টিউবওয়েল চেপে পানি ভড়তে বলছি না,
আমি জানি, এই বাথটাব শাওয়ারের যুগ
নারীকে মুক্তি দিয়েছে টিউবয়েল চাপার দ্বায়
থেকে।
আমি চাই কেউ একজন জিজ্ঞেস করুক : আমার সাবান লাগবে কি না,শ্যাম্পু লাগবে কি না,
পিঠটা ডলে দিতে হবে নাকি।
নিজের লুঙ্গী,গামছা আমি নিজেই ধুতে পারি ।
আমি বলছি না আমার সাথে গোসল করতেই হবে,
আমি চাই কেউ একজন আমার গোসলের পানি গরম করে দিক।
কেউ আমাকে তারাতারি গোসল করতে বলুক।
গোসলের সঙ্গী না হোক,কেউ অন্তত আমাকে জিজ্ঞেস করুক : ''তুমি এত গোসল কর কেন ?''
তারপর ট্রায়াল ভার্সন এর টাইমলাইন থেকে নেয়া এই লেখা ঃ
আমি বলছিনা লাইক দিতেই হবে, আমি চাই
কেউ একজন সিঙ্গল থাকুক
শুধু আমার রিলেশনশীপ স্ট্যাটাস চেঞ্জ করার জন্য
“ইন এ রিলেশনশীপ” “এনগেজড” দেখতে দেখতে আমি ক্লান্ত
আমি বলছিনা লাইক দিতেই হবে, আমি চাই
কেউ আমার জন্য ইনবক্সে অপেক্ষা করুক
আমি কমেন্টের ফুলঝুরি নিয়ে
স্ট্যাটাসে বসে থাকতে বলছিনা
আমি জানি, এটা ইন্টারনেটের যুগ
নারীকে মুক্তি দিয়েছে একটিমাত্র রিলেশনে আবদ্ধ থাকার দায় থেকে
আমি চাই কেউ একজন জিজ্ঞেস করুক;
আমার পেজ লাগবে কিনা, আমার গ্রুপ লাগবে কিনা
প্রোফাইল-টাইমলাইন...ওসব নিজেই সামলাতে পারি
আমি বলছিনা লাইক দিতেই হবে, আমি চাই
কেউ একজন আমার ভেতরের স্ট্যাটাস দেখুক, কেউ আমাকে পোক দিক
ভার্চুয়াল ইমো'তে চুমু না দিক, কেউ অন্তত আমাকে জিজ্ঞাসা করুক;
“তোমার রিলেশনশীপ স্ট্যাটাস এখনো সিঙ্গল কেন ?”
নেক্সট, স্যুডো ল্যাব থেকে নেয়া হাসান মাহমুদ তুষার এরঃ
আমি বলছিনা আমার উপর ক্রাশ খেতেই হবে, আমি চাই
কেউ একজন আমার জন্য পেজের ইনবক্সে মেসেজ করুক,
শুধু মনের দরজা খুলে দেবার জন্য।
পেজের পোষ্টে নিজের নাম খুঁজতে খুঁজতে আমি এখন ক্লান্ত।
আমি বলছিনা আমার উপর ক্রাশ খেতেই হবে, আমি চাই
কেউ আমাকে হাই হ্যালো বলুক। আমি ল্যাপটপ হাতে নিয়ে
কাউকে আমার পাশে বসে থাকতে বলছিনা,
আমি জানি, এই লুলামীর যুগে
নারীকে মুক্তি দিয়েছে একজনের উপর ক্রাশ খাওয়ার দায় থেকে।
আমি চাই কেউ একজন জিজ্ঞেস করুক:
আমি ভালো আছি কিনা, ফেসবুকে আমার একা লাগে কিনা।
নিজের খেয়াল আমি নিজেই রাখতে পারি।
আমি বলছিনা আমার উপর ক্রাশ খেতেই হবে, আমি চাই
কেউ একজন আমার জন্য পেজের ইনবক্সে মেসেজ করুক,
কেউ আমাকে পোক দিতে বলুক।
ভালোবাসার সঙ্গী না হোক, কেউ অন্তত আমাকে
জিজ্ঞেস করুক: তুমি এত কিউট কেন?
ফাইনালি, একজন আরমান ভাইয়ের লেখা। অবশ্য অন্যদের মতো তিনি কথাগুলো বদলে দেননি। উৎসাহিত হয়ে লিখেছেন। সরি আরমান ভাইয়ের, অনুমতি ব্যতীত কবিতা পোস্টে ইনক্লুড করে দিয়েছি। আই থিংক বড় ভাইয়ের কবিতা চুরির অপরাধে আর যা কিছুই হোক, ফাঁসী হবেনা।
আমি বলছিনা আমাকে ভালবাসতেই হবে,
আমি চাই তুমি শুধু আমার পাশে থাকো।
দুঃখের সময় অন্তত আমার হাতটা চেপে ধরো।
আমি বলছিনা আমাকে ভালবাসতেই হবে,
আমি চাই যখন আমার চোখদুটো লাল-
তখন আমার বুকে তোমার মাথা রাখো।
আমি বলছিনা আমাকে ভালবাসতেই হবে,
আমি চাই তুমি আমার সাথে অনেকটা পথ হাঁটো।
যখন ক্লান্ত হবে আমার কাঁধে তোমার মাথা রাখো।
আমি বলছিনা আমাকে ভালবাসতেই হবে।
তবুও মনের মাঝে সুপ্ত এক আকাঙ্খা,
তুমি আমাকে নিখাদ ভালোবাসো !
অল ক্রেডিট গোজ টু নির্মলেন্দু গুণ দাদা। এরকম একটা লেখা যেটা সবাইকে কম বেশি কবি বানিয়ে দেয়।
( একজন আরমান আর শাহরিয়াজ ভাই ছাড়া বাকিদের চিনি না। সবার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী )