জনতার কমিশনারকে কে যেন এক গুজব রটিয়ে দিছে। দুই দিন পর পর তিনি ১০সদস্য বিশিষ্ট স্পেশালিষ্টদের রাস্তা খুড়ে নিচে নামিয়ে গুপ্তধন সন্ধান করছেন। বিভিন্ন জায়গায় সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড টানানো হয়েছে। ‘জরুরী ব্যাক্তিগত উন্নয়নের জন্যে রাস্তার কাজ চলছে, সাময়িক অসুবিধার জন্যে আনন্দিত’। এখনো পর্যন্ত চিপসের প্যাকেট আর পলিথিন ছাড়া রাস্তার নিচে উল্লেখযোগ্য তেমন কিছুর সন্ধান পাওয়া যায়নি।
বদি চোরা এই ওয়ার্ডের বিখ্যাত চোর। সে অবশ্য জনগনের স্বার্থের কথা চিন্তা করে ইদানিং বাড়িতে চুরি-চামাড়ি বন্ধ করেছে। বিপরীতে সে সরকারি জিনিসপত্র চুরির দিকে মননিবেশ করেছে। রাস্তার পাশে ময়লা ফেলার ডাস্টবিন চুরি করে বিক্রি করে মালু মিস্ত্রীর দোকানে। বিনিময়ে যত টাকা পায় তা দিয়ে নেশাপানি করে আনন্দ করে। কমিশনার সাহেবও আনন্দ করে তবে এই মুহুর্তে সে অনেক চিন্তিত, তার গুপ্তধনের খোজ মিলছেনা। বদি চোরা এই ওয়ার্ডের সবগুলা ডাস্টবিন সাবাড় করে ফেলেছে। কমিশনার সাহেব গুপ্তধনের খোজে নতুন কোন ডাস্টবিন বসাননি। এ খবরটা বদি চোরার জন্যে অত্যন্ত দুঃখজনক। সে খুজে বের করার চেষ্টা করছে রড বা স্টিলের কোন সরকারী জিনিসপত্র। রাস্তা মেরামতের সতর্কতামুলক সাইনবোর্ড বাদে আর কিছুই পেল না। অবশেষে বদি সাইনবোর্ডগুলোই মেরে দিলো। মালু মিস্ত্রীর দোকানে চড়া দামে বিক্রি করে মনের সুখে নেশাপানি করতে লাগল।
মালু মিস্ত্রী দোকানপাট বন্ধ করে রাতের আঁধারে গান গাইতে গাইতে বাড়ির উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো। সরকারী পন্য যদি পানির দামে পাওয়া যায় আনন্দটাতো একটু বেশিই থাকবে। হাটতে হাটতে আর গাইতে গাইতে মালু মিস্ত্রী ধপাস করে পরে গেল নিচে। অবশেষে সে আবিষ্কার করল জনতার কমিশনার সাহেবের গুপ্তধন প্রজেক্টের খোড়া রাস্তায় তিনি পরে গেছেন। সতর্কতামুলক সাইনবোর্ডটি তিনি ভুলে দোকানেই রেখে এসেছেন। রাগে দুঃখে কমিশনার সাহেবকে চোর, বাটপার, দুর্নিতীবাজ বলে গালিগালাজ করে একটা পলিথিনের মধ্যে সৌচকর্ম সম্পাদন করে রেখে দিলেন একটা বক্সের ভেতরে।
পরদিন সকালে স্পেশালিষ্ট টিম এসে আবিষ্কার করল একটি গুপ্তধনের বক্স। কে কমিশনার সাহেবের কাছে এটি উপস্থাপন করবেন তা নিয়ে চলছে কাড়াকাড়ি। অবশেষে কমিশনার সাহেব নিজেই আসলেন গুপ্তধন পরিদর্শনে। শত শত উৎসুক জনতার মাঝে উনি বক্সটি খুলে সোনালি রঙের গুপ্তধনগুলো হাত দিয়ে পরখ করে দেখলেন। গুপ্তধনটির সত্যতা যাচাই করার জন্যে তিনি এক চিমটি চেটেও দেখলেন। অবশেষে তিনি আবিষ্কার করলেন, গুপ্তধনের পেছনে মানুষ অযথাই দৌড়ায়, আসলে গুপ্তধন ‘গু’ এর মতই।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:০৬