এখানে আমরা প্রায় সবাই লেখা পড়া করি। আর কেউ কেউ আছে জব আবার কেউ আছে কিছু করি না মানে MBBS

স্কুল,কলেজ,ইউনিভার্সিটি প্রত্যেক ক্ষেত্রেই কিন্তু একটা করে অরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠান করা হয়ে থাকে।
কিছুদিন আগে মার্ক জিকারবার্গের লাইভ পোষ্টে আমাদের বাঙালীদের কেউ একজন কমেন্ট করেছিল যে “তার কাছে চিকন পিনের চার্জার হবে কি না?” বিষয়টা হাস্যকর। আপনার হয়তো তাকে গালি দিতে ইচ্ছে করতেছে। আসলে ঐ এক জনের কমেন্ট কিন্তু শুধুমাত্র একজনকেই রিপ্রেজেন্ট করে না। ঐ কমেন্ট টা পুরো বাঙালী জাতিকেই রিপ্রেজেন্ট করে। আসলে ওখানে দোষটা ঐ কমেন্টকারীর না। দোষটা আমাদের সবারই। ফেসবুকে আসার আগে কিন্তু কোনো অরিয়েন্টেশন করা হয়নি যার ফলস্রূতিতে আমাদের এই অবস্থা। ঐ যে বললাম না অরিয়েন্টেশন, হ্যা অরিয়েন্টেশন! স্কুল কলেজে অরিয়েন্টেশন কেন করা করা হয় বলেন তো?? সবাই এক বাক্যে হয়তো বলবেন নতুনদের বরণ করার জন্য, কিন্তু শুধুমাত্র নতুনদের বরণ করার জন্যই এই অরিয়েনটেশন না। অরিয়েন্টেশন হলো স্কুল,কলেজ,ভার্সিটির নিয়ম শৃঙ্খলা এবং আদব কায়দা সম্পর্কে অবগত করা।
আসলে আপনাকে বুঝতে হবে যে ফেসবুক মানে হলো একটা চৌরাস্তা। যেখানে লক্ষ লোকের সমাগম হয় প্রতিনিয়ত। আর আপনি দাঁড়িয়ে আছেন ঐ চৌরাস্তার ঠিক একদম মাঝখানে। এবার আপনিই ভাবেন ঐ চৌরাস্তায় রিয়েল লাইফে দাঁড়িয়ে আপনি কি কি করতে পারবেন??? নিশ্চই জামা-কাপড় খুলে দাঁড়িয়ে থাকবেন না??? নিশ্চই জোরে জোরে গালি দেবেন না?? নিশ্চয় মুখে রঙ মেখে দাঁড়িয়ে থাকবেন না অথবা পাগলামি করবেন না?? শুধু এটুকুই ভাবলেই আপনি বুঝতে পারবেন যে ফেসবুকে অথবা ভার্চুয়াল লাইফে আপনার কি করা উচিত আর কি করা উচিত না।
আচ্ছা আপনার লেখাপড়ার সার্টিফিকেট গুলো কতো জনের কাছে যায় বলেন তো? হয়তো সর্বোচ্চ ১০০-২০০ জন হবে। যেখানে আপনার নাম আর জন্ম তারিখ লিখতে ৩দিন ব্যয় করেছেন। তারপরো জমা দেওয়ার আগে আরো কয়েকবার দেখে তারপর স্যারের কাছে জমা দিয়েছিলেন। আর আপনার ফেসবুক আইডিটা কত জনের কাছে যায় বলেন তো??? সেটা বোধহয় আর উল্লেখ করার দরকার নেই ইতিমধ্যেই বুঝে গেছেন হয়তো। এবার বলুন আপনি আপনার ফেসবুকের নাম টা লিখতে কতক্ষণ ব্যয় করেছেন?? ৩দিন তো বাদই দিলাম ৩ মিনিটও ভাবেন নি। যার জন্যই তো নামগুলো অবুঝ বালক,বদের মাস্টার,পদ্ম,মাঝি,নীলপরী,কষ্টের নদী ব্লা ব্লা ব্লা। হ্যা এখানে কিছু কিছু মানুষের অভ্যন্তরীণ সমস্যা থাকতে পারে আর বাকি পাবলিক গুলো কি কারনে রাখে আল্লাহ পাকই ভাল জানে।
এবার আসি প্রোফাইল পিকচারের ব্যাপারে, কেউ তার প্রফাইল পিকচারে শাহ্রুখ খানের একখান পিক লাগাই,আবার কেউ গোলাপ ফুলের, কেউ আবার ডানা কাটা পরীর পিকচার। যদি কারো ব্যক্তিগত সমস্যা থাকে সেটা আলাদা ব্যাপার। তবে আমরা এমন কোনো সেলিব্রেটি বা জঙ্গী নয় যে আমাদের নিজেদের পিক দিলে আহামরি কোনো প্রলয় ঘটে যাবে। তাই সবাই চেষ্টা করবো নিজের সুন্দর দেখে একটা পিকচার ব্যবহার করার। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে বলবো নিজের পিক না দিতেন পারে অনন্তো নিজের নামটা ব্যবহার করেন। কারন এরকম উলটা পালটা নাম আর পিকচার ওয়ালা প্রোফাইল দেখলে সবাই ভাববে আপনার প্রোফাইলটা নিশ্চয় কনো খারাপ মতলবের জন্য খোলা।
এবার আসি পোষ্টের ব্যাপারে। তার আগে একটা গল্প বলি, একবার আমার এক বন্ধু বিয়ে করবে বলে একটা মেয়ে পছন্দ করেছিল। আমাকে মেয়েটার একটা ছবি ইনবক্স করে বলেছিল “দোস্ত দেখতো মেয়েটা কেমন? আমি বলেছিলাম মেয়েটা ফেসবুক আইডীটা দিস তাহলে বলে দিতে পারবো মেয়েটা কেমন। মেয়েটার প্রোফাইল চেক করে দেখি পুরাই ক্ষ্যাত। ক্ষ্যাত বলতে তার নাম,প্রোফাইল পিক এবং পোষ্ট দেখে আমি বুঝে গেলাম মেয়েটার মন মানষিকতা কেমন। তো আমার বন্ধুকে বলেছিলাম মেয়েটার ব্যাপারে। অবশেষে তাদের বিয়েয়াটা আর সম্পন্ন হয়নি।” আপনাদেরকে বলি পোষ্ট দেওয়ার সময় একটু ভাবে চিন্তে দেবেন। কারণ আপনার প্রতিটি পোষ্ট আপনার মন মানসিকতা,রুচি,ব্যক্তিত্ব সবই প্রকাশ করে। এমন কিছু লিখবেন না যাতে আপনার ইমেজ নষ্ট হয়ে যায়। মনে রাখবেন চৌরাস্তায় দাডিয়ে আপনি সর্বোচ্চ একটা বিড়ি টানতে পারেন কিন্তু গাঞ্জা নয়।