কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী তনুকে সেনানিবাস এলাকায় ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। অনার্সে পড়ুয়া মেয়েটি নিজের পড়ার খরচ চালাতে টিউশনি করতো।
ঠিক কী জিঘাংসা থেকে বাচ্চা মেয়েটিকে এমন নৃশংসতার সাথে হত্যা করা হলো, কিছুতেই মাথায় ঢুকছে না।
তার মাথার চুল টেনে ছিঁড়ে ফেলা হয়েছিল, নাকে তীব্র ঘুষির আঘাত, গলা কাটা মৃতদেহ! এদিক সেদিক পড়ে থাকা মুঠো মুঠো ছেঁড়া চুল আর পড়ে থাকা পায়ের জুতো ধরে এগিয়ে কন্যার লাশ দেখতে পান হতভাগ্য পিতা।
কেবল ধর্ষনের লালসা চরিতার্থ করতেই কি এমন নির্মমতা করা হলো মেয়েটির সাথে? নাকি পুষে রাখা আগের কোন ক্রোধ ছিল? নাকি কেবলই বিকৃত কোনো পশুদের কাজ? হত্যাকাণ্ডের মোটিভ সম্পর্কে যতই ভাবছি, ততোই শিউরে উঠছি, অকুল পাথারে ভাসছি।
আমরা খুব আবেগি জাতি। এই আবেগ কি কেবল মাশরাফি-তাসকিন-সানিদের জন্য? মানুষের জন্য আমাদের আবেগ কোথায় গেল? ন্যায়বিচারের জন্য আমাদের প্রাণ জাগে না, কি-বোর্ড চলে না! একটি মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হলো, অল্প কিছু মানুষ বাদে আর কারো তাতে কিছু এসে যাচ্ছে না! কেউ কোনো প্রতিবাদ করছে না!
নাকি আমরা ধরে নিয়েছি এদেশে কিছুর বিচার হয় না, প্রতিবাদের কোনো ফল নেই, ন্যায়বিচার হয় না এখানে!! আইনের শাসনের প্রতি আস্থাহীনতা রাষ্ট্রের জন্য হুমকি, গণতন্ত্রের জন্য হুমকি।
আপনারা যারা অনেকেই ইভ টিজিং, ধর্ষণ, এসিড নিক্ষেপ, সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের পেছনে নারীদের পোশাক/চলাফেরাকে দায়ী মনে করেন, তাদের জ্ঞাতার্থে জানাই, তনু নামের মেয়েটি পর্দা করতো। ফুলহাতা জামার সাথে হিজাব পরতো। নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অমায়িক, বিনয়ী ব্যবহারের জন্য সবার প্রিয়মুখ ছিল তনু।
কাদের কোন মানসিক বিকার, হিংস্রতায় মেয়েটিকে এরকম নির্মম কষ্ট সয়ে মরতে হলো জানা নেই আমার। আমি কেবল বুঝি, এইসব নির্মমতার প্রতিবাদ না করাটা আমাদের মেরুদণ্ডহীনতার, ব্যর্থতার চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ। যতোবার ভাবি বিস্ময়ে বিমুঢ় হয়ে যাই।
সংরহঃ Muhammad Amir Hossain(fb)
ছবিঃ fb
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:৪৫